হরহামেশা ছিনতাই, প্রতিকার মেলে না অভিযোগেও
Published: 20th, May 2025 GMT
বগুড়ায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ছিনতাইকারীরা। আগে গভীর রাতে হলেও, এখন দিনেও প্রকাশ্যে ছিনতাই হচ্ছে। মানুষকে জিম্মি করে, অস্ত্র ঠেকিয়ে অথবা ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে সর্বস্ব লুটে নেওয়া হচ্ছে। এতে মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
এদিকে একের পর এক ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটলেও নেই পুলিশের জোরালো পদক্ষেপ। অভিযোগ করেও প্রতিকার মিলছে না বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ।
গত এপ্রিলে অন্তত ১৭টি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ২৫ এপ্রিল রাতেই পাঁচটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। গ্রেপ্তার হয়েছে ৯ জন। ওই দিন বগুড়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের আবদুল্লাহ আল কাফি নামে এক ছাত্র শহরের খোকন পার্কে বৈশাখী মেলা দেখতে যান। তিন যুবক তাঁকে মেলা চত্বরের পূর্বপাশে ডেকে নিয়ে ছুরি ধরে মোবাইল ফোন ও টাকা ছিনিয়ে নেয়। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক মেলা চত্বরে ডিউটিরত পুলিশকে জানালে তিনি থানায় অভিযোগ করতে বলেন। তাঁর কথামতো অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার মেলেনি বলে জানান আবদুল্লাহ আল কাফি।
রাত সাড়ে ১০টায় শহরের বড়গোলা ভূমি অফিসের পাশ দিয়ে যাওয়ায় শিবগঞ্জের রায়নগর এলাকার জাকির হোসেনের পথরোধ করে চার যুবক। ধারালো অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তাঁর মোবাইল ফোন ও ব্যাগ নিয়ে পালানোর সময় এক ছিনতাইকারীকে ধরে ফেলেন জাকির। আশপাশের লোকজন ওই ছিনতাকারীকে পুলিশে সোপর্দ করে। একই রাতে ফুলবাড়ি বটতলা এলাকার আজিজুল হক কলেজের নতুন ভবনের সামনে এবং সাবগ্রামের উদ্দিগোলা রোডে গণছিনতাই হয়।
২৪ এপ্রিল ১০টার দিকে শহরের সাতমাথার স্টেশন রোডের বিআরটিসি গেট এলাকায় গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে মিজান নামে এক যুবকের ব্যাগ তল্লাশি করে টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় ছিনতাইকারীরা। ১৯ এপ্রিল রাতে লাহিড়ীপাড়া বন্দর এলাকায় ব্যবসায়ী নান্নুকে ছুরিকাঘাত করে ৩৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় পাঁচ ছিনতাইকারী। একজনকে চিনে ফেলেন নান্নু। এ ঘটনায় মামলা করা হলেও কেউ ধরা পড়েনি।
১৬ এপ্রিল আলতাফুননেছা খেলার মাঠে ঢাকা থেকে আসা এক যাত্রীকে ছুরিকাঘাত করে টাকা ও ব্যাগ ছিনিয়ে নেয় ছিনতাইকারী। ১৪ এপ্রিল দুপুরে কাহালু রেলস্টেশনে শাহীন আলমকে ছুরিকাঘাত করে টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়া হয়। ১০ এপ্রিল জামিলনগর, নামাজগড় ও মাটিডালি এলাকায় ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে আহত হয়েছেন তিন ব্যক্তি।
গত ৯ এপ্রিল শহরের বনানী পর্যটন মোটেলের সামনে সকালে নীতেশ গাঙ্গুলী নামে এক ব্যক্তিকে ছুরিকাঘাত করে ৮০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় ছিনতাইকারীরা। মামলা করার পরেও কেউ গ্রেপ্তার বা টাকা উদ্ধার হয়নি। ৮ এপ্রিল চকসূত্রাপুর কসাইপাড়া এলাকায় চালক ইব্রাহিম হোসেনকে ছুরিকাঘাত করে তাঁর অটোরিকশা ছিনিয়ে নেয় দুর্বৃত্তরা।
গত ২২ ডিসেম্বর শহরের কলোনি বটতলা এলাকায় এক ব্যবসায়ীর ম্যানেজার তারেক আহম্মেদকে মুখোশ পরা ছিনতাইকারীরা ছুরিকাঘাত করে ১০ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়। সিসিটিভি ফুটেজে ছিনতাইকারীদের দেখা গেলেও তাদের গ্রেপ্তার করা হয়নি।
ছিনতাইয়ের হটস্পট
বগুড়ায় ছিনতাইয়ের হটস্পট হিসেবে ২৭টি এলাকাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে শহরের বড়গোলা, দত্তবাড়ি, টিনপট্টি, নামাজগড়, নুরানী মোড়, বিসিক, আজিজুল হক কলেজের নতুন ও পুরাতন ভবনের সামনে, কামারগাড়ি, জামিলনগর, জহুরুলনগর, কলোনি বটতলা, স্টেশন রোড, সেউজগাড়ী, সবুজবাগ, মালগ্রাম রোড, মালতিনগর, রহমাননগর, মোহাম্মদ আলী থেকে শজিমেক হাসপাতাল রোড, নাটাইপাড়া কৃষি অফিসের সামনে, নারুলী কৃষি অফিসের সামনে, উদ্দিগোলা রোড, ঠনঠনিয়া ব্যাংকপাড়া, চকফরিদ রোড, শাহ সুলতান কলেজের সামনে।
সুশাসনের জন্য প্রচারাভিযান (সুপ্র) জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক কেজিএম ফারুক আহম্মেদ বলেন, পুলিশের কার্যক্রম গতিশীল করতে হবে। পাড়ায় পাড়ায় গিয়ে অপরাধীদের শনাক্ত করে পরিবারের সঙ্গে বসতে হবে। কোনো ছেলে যেন অপরাধে জড়িয়ে না পড়ে সে জন্য পরিবারকে চাপে রাখতে হবে।
সদর থানার ওসি এসএম মঈন উদ্দিন বলেন, ছিনতাই ঠেকাতে পুলিশ আপ্রাণ চেষ্টা করছে। এ কারণে আগের চেয়ে অনেকাংশে ছিনতাই কমেছে।
টহল টিম সুপারভিশনের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) হোসাইন মুহাম্মদ রায়হান বলেন, ছিনতাই প্রতিরোধে মাঝেমধ্যে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি চালানো হয়। কয়েকটি সফল অভিযান চালানো হয়েছে। এ কারণে আগের তুলনায় ছিনতাই কমেছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ছ নত ই ছ র ক ঘ ত কর ন য় ছ নত য় ছ নত ই র স মন এল ক য় শহর র
এছাড়াও পড়ুন:
সোনারগাঁয়ে জমি সংক্রান্ত বিরোধে হামলা,আহত ৪
সোনারগাঁয়ে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে হামলায় ৪ জনকে আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। সোমবার দুপুরে উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নের গোলনগর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আমিনুল ইসলাম বাদি হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নের গোলনগর এলাকায় আব্দুর রশিদ মিয়ার সাথে তার ছোট ভাই মো: ফজলুল হকের সাথে দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলছে। এ নিয়ে এলাকার বিচার শালিস করলেও কোন সমাধান হয়নি।
সোমবার সকাল সার্ভেয়ার দিয়ে জমি মেপে সীমানা খুটি দেওয়া হয় কিন্তু সেই খুটি উপড়ে ফেলে দেয় মফিজুল ইসলাম গংরা। এনিয়ে কথা কাটাকাটি হয় আব্দুর রশিদের সাথে মফিজুল ইসলাম গংদের সঙ্গে।
এসময় মফিজুল ইসলামের নেতৃত্বে দেলোয়ার হোসেন, আজিজুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম, কবির হোসেন, ফজলুল হক দেশীয় অস্ত্রে সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হামলা চালিয়ে আব্দুর রশিদ, শাহজাহান, আমিনুল ইসলাম ও নাঈমকে পিটিয়ে আহত করে।
আহত আমিনুল ইসলাম বলেন, আমার বাবার পৈতিক সম্পত্তির ভাগবাটোয়ারা করার পরও দখল দিচ্ছেনা। আমাদের উপর হামলা করে আমি সহ চারজনকে পিটিয়ে আহত করেছে। আমরা এর বিচার চাই।
সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মফিজুর রহমান বলেন, এঘটনায় দুই পক্ষের লিখিত অভিযোগ নেওয়া হয়েছে। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।