গুরুতর অসংগতি ছাড়া আইনে আদালতের হস্তক্ষেপ নয়
Published: 21st, May 2025 GMT
ভারতে ওয়াক্ফ সংশোধনী আইন চ্যালেঞ্জ করা ১১টি পিটিশনের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দেশটির প্রধান বিচারপতি বিআর গাভাইয়ে নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে শুনানি হলেও কোনো অন্তর্বর্তী আদেশ দেননি আদালত। খবর এনডিটিভির।
শুনানিতে প্রধান বিচারপতি গাভাই বলেন, সংসদে পাস হওয়া যে কোনো আইন সংবিধানসম্মত হিসেবে গণ্য হয়। আদালত কেবল তখনই হস্তক্ষেপ করতে পারে, যদি কোনো গুরুতর অসংগতির প্রমাণ পাওয়া যায়।
গত মাসে এই আইনটি দেশটির সংসদে পাস হয়। আদালত আগে তিনটি মূল বিষয় চিহ্নিত করেছিলেন, যার ওপর শুনানি হবে। ওয়াক্ফ জমির ব্যবহার, ওয়াক্ফ কাউন্সিলে অমুসলিম সদস্যদের নিয়োগ ও রাজ্য ওয়াক্ফ বোর্ডগুলোর কার্যক্রম ও সরকারের জমি চিহ্নিতকরণ। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার এই তিনটি বিষয়ে তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। তারা আশ্বাস দিয়েছে, বিষয়গুলো নিয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
প্রায় চার ঘণ্টার কিছু কম সময় ধরে মামলাকারী পক্ষের আইনজীবীদের বক্তব্য শুনেছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। প্রশ্ন ওঠে, নতুন আইনের ৩ডি ধারার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে। ওই ধারাটির ওপর সম্পূর্ণ স্থগিতাদেশ জারির আবেদনও করা হয়েছে। তবে মঙ্গলবার দীর্ঘ শুনানির পরও কোনো অন্তর্বর্তী আদেশ দেননি সুপ্রিম কোর্ট। আজ বুধবার ফের মামলার শুনানি হবে।
এদিন পুরো শুনানি পর্বে মামলাকারীদের আইনজীবী কপিল সিব্বল ও প্রধান বিচারপতির মধ্য়ে একটা তর্কবিতর্ক দেখা যায়। সিব্বলের দাবি, সংশোধনী ওয়াক্ফ আইন সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৪, ২৫ ও ২৬-কে লঙ্ঘন করছে।
তাঁর কথায়, ‘এই আইন ওয়াক্ফ সম্পত্তিকে রক্ষা করার জন্য। কিন্তু ওয়াক্ফ সম্পত্তি দখল করার জন্য সংশোধনী আইনটি তৈরি করা হয়েছে। ওয়াক্ফ দানের সম্পত্তি। এটি অন্য কাউকে হস্তান্তর করা যায় না। একবার যেটি ওয়াক্ফ সম্পত্তি আওতাভুক্ত হয়, তা চিরকাল ওয়াক্ফই থাকে।’
তবে, সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানিয়েছেন, আবেদনকারীদের বক্তব্যে আরও অনেক বিষয় উঠে এসেছে, যা তিনটি মূল বিষয় থেকে বাইরে। তিনি আদালতকে অনুরোধ করেছেন, যেন শুনানি শুধু ওই তিনটি বিষয়েই সীমাবদ্ধ থাকে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের কিছু সুপারিশ নিয়ে রিটের ওপর আদেশ ২৬ মে
নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের কিছু সুপারিশ নিয়ে করা রিটের ওপর আদেশের জন্য ২৬ মে দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার শুনানি নিয়ে আদেশের এই দিন ধার্য করেন।
এর আগে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রওশন আলী আবেদনকারী হয়ে ৪ মে রিটটি দায়ের করেন। আদালতে রিটের পক্ষে তিনি নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক শুনানি করেন, সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আখতার হোসেন মো. আব্দুল ওয়াহাব। আদালতে উপস্থিত জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ শুনানিতে অংশ নেন, যিনি নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সদস্য।
পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আখতার হোসেন মো. আব্দুল ওয়াহাব প্রথম আলোকে বলেন, শুনানি নিয়ে আদালত ২৬ মে আদেশের জন্য দিন রেখেছেন।
রিট আবেদনকারীর ভাষ্য, নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনটি সম্প্রতি বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশিত ও আলোচিত হয়েছে। প্রতিবেদনের বিভিন্ন সুপারিশ ইসলামি শরিয়তের বিধানের পরিপন্থী। দেশের জনগণের ধর্মীয় অনুভূতির পরিপন্থী। দেশের সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও জাতীয়ভাবে স্পর্শকাতর। তাই এ বিষয়ে রিট করা হয়।
রিটের প্রার্থনায় দেখা যায়, নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের বিভিন্ন অধ্যায় অন্তর্ভুক্ত ১১.৩.১(ক), ৩.২.৩, ৩.২.৩.১.১ (ক, গ), ১০, ১২.৩.১.১ (জ), ৪.১, ১০.২, ৩.২.১.১.৩ (ক), ৩.২.২.১.৪ (খ) এবং ৬.৩.১ (ক) সুপারিশ বাস্তবায়ন ও কার্যকর করায় পদক্ষেপ নেওয়া থেকে বিরত রাখতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না—এ বিষয়ে রুল চাওয়া হয়েছে। রুল হলে তা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত উল্লেখিত সুপারিশ বাস্তবায়ন ও কার্যকর করা থেকে বিরত রাখতে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। সংস্কারের জন্য প্রস্তাবিত সুপারিশগুলো পুনর্বিবেচনার জন্য বিশেষজ্ঞদের নিয়ে কমিটি গঠন করার নির্দেশনাও চাওয়া হয়েছে রিটে। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইনসচিব, ধর্মসচিব এবং নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যানকে বিবাদী করা হয়েছে রিটে।