মাত্র আট বছরের এক শিশুশিক্ষার্থীকে হেফজখানার শিক্ষক বেদম প্রহার করছেন। কান ধরিয়ে ওঠ–বস করাতে করাতে প্রতি সেকেন্ডে শিশুটির গায়ে একটি করে বেত্রাঘাত করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল এই ভিডিও নিয়ে প্রথম আলো অনলাইনে ১৫ মে ‘২৩ সেকেন্ডে মাদ্রাসার শিশুশিক্ষার্থীকে ২১ বার বেত্রাঘাত করলেন শিক্ষক’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।

ঘটনাটি লক্ষ্মীপুর জেলার এক মাদ্রাসার। এই অমানবিক দৃশ্য যখন সবখানে ছড়িয়ে পড়ছে, তখনো দেশজুড়ে রেশ কাটেনি লক্ষ্মীপুরে হিফজখানায় আরও এক সাত বছর বয়সী শিশুর মৃত্যুর খবরের। গত মঙ্গলবার প্রথম আলোর সংশ্লিষ্ট সংবাদটির শিরোনাম ছিল, ‘মাদ্রাসার শৌচাগারে গলায় গামছা প্যাঁচানো শিশুর লাশ, শিক্ষক গ্রেপ্তার’।

সেই শিশুর বয়স ছিল মাত্র সাত বছর। যেসব শিশু এখনো মায়ের কোলে থাকার কথা, যারা ঠিকমতো এখনো সবকিছু বুঝতে শেখেনি, সব কথা বলতে জানে না, এমনকি ধর্মও যাদের পাপ ও পুণ্যের ঊর্ধ্বে স্থান দিয়েছে, সেই শিশুদের নির্মমভাবে পেটানো হচ্ছে। লক্ষ্মীপুরে শৌচাগারে যে শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে, সংবাদসূত্রে জানা যাচ্ছে, শিশুটির পরিবার ও সহপাঠীদের দাবি অনুযায়ী পড়া মুখস্থ করতে না পারায় শিশুটিকে মারধর করে সেই মাদ্রাসার শিক্ষক হত্যা করেছেন।

সপ্তাহ দুয়েক আগে ৩০ এপ্রিল প্রথম আলোয় প্রকাশিত আরও একটি খবরের শিরোনাম ছিল, ‘নোয়াখালীতে মাদ্রাসায় শিশুর মৃত্যু, পরিবারের দাবি হত্যা’। জুবায়ের ইবনে জিদান নামের নোয়াখালীর এই শিক্ষার্থীর মৃত্যু নিয়েও লক্ষ্মীপুরের নিহত শিক্ষার্থীর মতোই মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের দাবি ছিল, শিশুটি মাদ্রাসার একটি শৌচাগারে গিয়ে গলায় ফাঁস দিয়েছে।

অথচ প্রথম আলোকে পরিবার জানিয়েছে, মাদ্রাসার মুহতামিমই শিশুটিকে নির্যাতন করে হত্যা করেছেন। উপর্যুপরি এই কোমল প্রাণগুলোর চলে যাওয়া একেবারে বিচ্ছিন্ন কিংবা কালেভদ্রে ঘটে যাওয়া ঘটনা নয়। যদি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের এই অবাস্তব দাবিও তর্কের খাতিরে বিবেচনায় নেওয়া হয়, তবু কোন পরিস্থিতিতে একটি শিশু আত্মহত্যা করছে, সেই প্রশ্নের কোনো সদুত্তর কি তাদের কাছে আছে? কতখানি নির্যাতিত হওয়ার পর একজন শিক্ষার্থী খুন হয়ে যাচ্ছে!

হিফজখানা ও মাদ্রাসাগুলোয় যথাযথ তদারকির ঘাটতি এ ধরনের বহু ঘটনাকে অবাধে ঘটতে দিচ্ছে। উল্টো ছাত্রদের ওপর নির্যাতনকে স্বাভাবিক নিয়ম হিসেবে গ্রহণ করা হয়ে আসছে। বেত দিয়ে পেটানো, শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা নানাভাবে নির্যাতনের নানা ঘটনা প্রায়ই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যম সূত্রে সামনে আসছে। যৌন নির্যাতনের ঘটনাও গণমাধ্যমের শিরোনাম হচ্ছে। কিন্তু এ ব্যাপারে রাষ্ট্রযন্ত্র একধরনের অন্ধদৃষ্টি দিয়ে রেখেছে।

এ ব্যাপারে উল্লেখযোগ্য প্রতিকারমূলক কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে কোনো সরকারকেই সে অর্থে কখনোই আগ্রহী বলে মনে হয়নি। অথচ শিশুর সুরক্ষা রাষ্ট্রের প্রধানতম কর্তব্যগুলোর একটি। শিশুদের ওপর শারীরিক ও মানসিক সব রকমের নির্যাতন বন্ধে ২০১০ সালের ১৮ জুলাই হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন করে আইন ও সালিশ কেন্দ্র এবং লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট)।

এর পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত ২০১১ সালের ১৩ জানুয়ারি এক রায়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শারীরিক শাস্তিকে অসাংবিধানিক বলে ঘোষণা করে। বলা হয়, শাস্তি প্রদান শিশুর প্রতি ‘নিষ্ঠুর, অমানবিক, অপমানকর আচরণ ও মানবাধিকার পরিপন্থী।’ (রিট পিটিশন নম্বর ৫৬৮৪/২০১০)।

রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ২৫ এপ্রিল ২০১১ তারিখে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শারীরিক ও মানসিক শাস্তি প্রদান রহিত করে একটি পরিপত্র জারি করে। এতে স্কুল–কলেজে শারীরিক নির্যাতনের ঘটনা তুলনামূলকভাবে কমে এলেও পুরোপুরি নির্মূল হয়নি। কিন্তু বেসরকারি মাদ্রাসায় শিশু নির্যাতন বন্ধে এর তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি। তাই এ–সংক্রান্ত আরও কঠোর আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগ জরুরি।

শিশু নির্যাতনের ঘটনাগুলো অন্যান্য আইনে বিচারযোগ্য হলেও এ ব্যাপারেও রাষ্ট্রযন্ত্রকে নির্বিকার দেখা গেছে। কওমি মাদ্রাসাশিক্ষায় সরকারের অর্থায়ন নেই। ঐতিহ্যগতভাবেই এখানে সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই। সেই নিয়ন্ত্রণ না থাকার মানে এই নয় যে সরকার সব দায় থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে পারে।

মনে রাখতে হবে, স্কুলপড়ুয়া প্রতিটি শিশুর মতোই কওমি মাদ্রাসায় পড়ুয়া শিশুর সুরক্ষা প্রদানের দায়িত্বও রাষ্ট্রের। তেমনি শিক্ষার বাইরে থেকে শিশুর অধিকার নিশ্চিত করাটাও রাষ্ট্রের কর্তব্য। সরকারকে অবশ্যই এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা, কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ও অন্যান্যের সঙ্গে নিয়ে শিশুর জন্য নিরাপদ পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে। অভিভাবকদের সচেতন করতে হবে।

বাংলাদেশ জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদে অন্যতম স্বাক্ষরকারী রাষ্ট্র হিসেবে আন্তর্জাতিক আইনে শিশুদের অধিকার নিশ্চিত করতে আইনগতভাবেই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই সনদের ১৯তম অনুচ্ছেদে বলা আছে রাষ্ট্র, পিতা–মাতা বা শিশুর দায়িত্বপ্রাপ্ত অন্য কোনো ব্যক্তির তত্ত্বাবধানে থাকা অবস্থায় কোনো শিশুকে কোনো প্রকার আঘাত বা নির্মম আচরণের মুখোমুখি করা যাবে না। বাংলাদেশ সুস্পষ্টভাবেই এই প্রতিশ্রুতি রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে।

মনে রাখতে হবে, স্কুলপড়ুয়া প্রতিটি শিশুর মতোই কওমি মাদ্রাসায় পড়ুয়া শিশুর সুরক্ষা প্রদানের দায়িত্বও রাষ্ট্রের। তেমনি শিক্ষার বাইরে থেকে শিশুর অধিকার নিশ্চিত করাটাও রাষ্ট্রের কর্তব্য। সরকারকে অবশ্যই এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা, কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ও অন্যান্যের সঙ্গে নিয়ে শিশুর জন্য নিরাপদ পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে। অভিভাবকদের সচেতন করতে হবে।

কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থায় নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি এবং বেফাকের মতো শিক্ষা বোর্ডগুলোকে সক্রিয়ভাবে দায়িত্বশীল আচরণ প্রদর্শন করতে হবে। কওমি মাদ্রাসা শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেই, ইসলামিক ফাউন্ডেশন এ ব্যাপারে প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করতে পারে। যেসব ব্যক্তির বিরুদ্ধে শিশুর প্রতি অমানবিক আচরণের অভিযোগ রয়েছে, তাঁদের জন্য ন্যাশনাল ডেটাবেজ করা প্রয়োজন। যাতে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা—কোথাও তাঁদের নিয়োগ করা না হয়।

মাদ্রাসায় যে সন্তানকে মা তাঁর কোল থেকে রেখে যান, সে মা তাঁর সন্তান মানুষ হবে, এই আশাতেই রেখে যান; সেই সন্তানের নিথর দেহ কোলে করে নিয়ে যেতে নয়। শিশুর প্রতি যেকোনো প্রকারের সহিংসতা প্রবলভাবেই ধর্মবিরোধী আচরণ।

বর্তমান বিশ্বের খ্যাতিমান ধর্মতাত্ত্বিক জাস্টিস মুফতি ত্বকি উসমানী উপমহাদেশের সর্বজন শ্রদ্ধেয় প্রখ্যাত আলেম, কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থার অন্যতম প্রবাদপুরুষ হজরত থানভি (রহ.

) প্রণীত একটি নিয়মের কথা উল্লেখ করেছেন।

তিনি নিয়ম করেছিলেন, মক্তবে কোনো শিক্ষক শিশুদের আঘাত করতে পারবেন না। কেউ আঘাত করলে তিনি তাঁকে মসজিদের বারান্দায় দাঁড় করিয়ে ওই শিশুর দ্বারা সেই শিক্ষককেই বেত মারাবেন। এর ফলে কেউ কোনো কোমলমতি শিশুকে আঘাতের সাহস করেননি।

রাসুল (সা.) ছিলেন শ্রেষ্ঠ শিক্ষক। অথচ কখনোই তিনি কোনো শিশুর গায়ে হাত দেননি। আনাস (রা.) শৈশবে ১০ বছর তাঁর সাহচর্যে ছিলেন, কখনো তিনি তাঁকে ধমক পর্যন্ত দেননি। বাচ্চাদের প্রসঙ্গে রাসুল (সা.) কতখানি কোমল ছিলেন, এর উদাহরণ হচ্ছে ইমাম বুখারি বর্ণিত এই হাদিস।

উম্মে খালেদ (রা.) নিজেই তাঁর শৈশবের স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে বলেছেন, ‘আমার বাবা আমাকে নিয়ে রাসুল (সা.)–এর সঙ্গে দেখা করতে গেলেন। সেদিন আমি একটা হলুদ রঙের জামা পরেছিলাম। আমাকে দেখে তিনি হাসিমাখা মুখে বললেন, “সানাহ সানাহ।” (ইথোপিয়ান ভাষায় সানাহ মানে সুন্দর)। সেই শিশুমেয়েটিকে রাসুল (সা.) এতখানি কাছে টেনে নিলেন যে সে পেছন দিকে থেকে রাসুলের (সা.) কাঁধে ঝাঁপ দিয়ে গলা জড়িয়ে ধরছিল। তার বাবা এটা দেখে তাকে বাধা দিতে গেলে রাসুল (সা.) তাঁর পিতাকে হাতের ইশারায় থামিয়ে দেন। রাসুল (সা.) তখন মদিনা রাষ্ট্রের অধিপতি।

তাই শিশুর প্রতি এই চলমান সহিংসতা অধর্ম ও বেআইনি। শিশুর অধিকার সুরক্ষায় রাষ্ট্রের এই নির্লিপ্ততা দুর্ভাগ্যজনক। অনতিবিলম্বে রাষ্ট্রকে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। যে সমাজ ও রাষ্ট্র তার ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সুরক্ষা প্রদানে ব্যর্থ হয়, সেই রাষ্ট্র কখনো কোনো সূচকেই সফল হতে পারে না।

আরজু আহমাদ লেখক ও এক্টিভিস্ট

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ রহণ করত লক ষ ম প র প রথম আল র স রক ষ ব যবস থ কর ছ ন ঘ ত কর সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের

ভোলা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইফুল্লাহ আরিফকে (৩০) হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বাবা বশির উদ্দিন (মাস্টার) এই অভিযোগ করেন।

এ সময় বশির উদ্দিন বলেন, পুলিশ দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ার কোনো সুযোগ নেই; সেখানে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক।

এর আগে গত শনিবার পুলিশ সুপার শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক তদন্তের তথ্য অনুযায়ী অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে সাইফুল্লাহ আরিফ মারা গেছেন।

সাইফুল্লাহ আরিফ ভোলা পৌরসভার কালীবাড়ি রোডে নবী মসজিদ গলি এলাকার বশির উদ্দিনের ছেলে। গত ৩১ আগস্ট ভোরে নিজ বাড়ির সামনে থেকে সাইফুল্লাহ আরিফের লাশ উদ্ধার করা হয়।

আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে বশির উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে দুর্ঘটনায় নয়, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এর কিছু প্রমাণ আছে। আরিফের শরীরে একাধিক কাটা ও ভাঙা জখম ছিল, এমনকি হাতের রগ কাটা ছিল। পুলিশের দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যুর সুযোগ নেই, কারণ, ছাদে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশ সুপার আমার ছেলেকে নেশাগ্রস্ত আখ্যা দিলেও তাঁর কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া পুলিশ কীভাবে এমন কথা বলতে পারে। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

বশির উদ্দিন আরও বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফ কোনো ধরনের মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সে ছাত্রলীগের সহসভাপতি হলেও কখনো ক্ষমতার অপব্যবহার করেনি। হত্যাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ সত্য গোপন করছে। সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে মামলাটি সিআইডি বা পিবিআইয়ের কাছে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বশির উদ্দিন বলেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে অনেকের বিরোধ ছিল। তবে জমিজমার বিরোধ ও মাদক ব্যবসার বিরোধ নিয়ে তাঁর ছেলে খুন হয়নি। এগুলোর সঙ্গে সে জড়িত ছিল না।

শনিবার পুলিশ শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফের মৃত্যুর রহস্য উদ্‌ঘাটনে প্রাথমিক তদন্ত শেষে জানা যায়, তিনি অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন। ৩০ আগস্ট দিবাগত রাত অনুমান ১২টা ১৫ মিনিটে রাতের খাবার শেষে সাইফুল্লাহসহ পরিবারের সবাই নিজ নিজ ঘরে ঘুমাতে যান। ভোর ৫টা ১০ মিনিটে ফজরের নামাজের জন্য বের হওয়ার সময় তাঁর বাবা বশির উদ্দীন (৭০) বাড়ির সামনে গেটের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় ছেলের মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সুরতহালে দেখা যায়, আরিফের মাথা ও হাতে গুরুতর আঘাত ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, আরিফ দীর্ঘদিন ধরে নেশায় আসক্ত ছিলেন এবং হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রায়ই ছাদে যেতেন। ঘটনার দিন রাতেও তিনি ছাদে ওঠেন এবং অসতর্কতাবশত রেলিংবিহীন অংশ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়ে মারা যান।

পরিবারের অভিযোগ সম্পর্কে আজ দুপুরে পুলিশ সুপার শরীফুল হক মুঠোফোনে বলেন, ‘ওই ঘটনায় তদন্ত চলমান। সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক তদন্তের কথা জানানো হয়েছে। তদন্তে তথ্য সংযোগ-বিয়োগের সুযোগ রয়েছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আগামী সরকারের মন্ত্রীদের জন্য গাড়ি কেনার অতি আগ্রহের কারণ কী, প্রশ্ন টিআইবির
  • মুসলিম পরিবারে শিশুর নিরাপত্তা
  • পুরোপুরি বিলুপ্তির পর উগান্ডায় আবার ফিরল গন্ডার
  • ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের