স্যাটেলাইট-ভিত্তিক ইন্টারনেট সেবা ‘স্টারলিংক’ আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করেছে। তিন মাস পরীক্ষামূলক বাণিজ্যিক কার্যক্রম চালাবে ইলন মাস্কের কোম্পানিটি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের গ্রাহকদের জন্য আপাতত দুটি প্যাকেজ চালু করেছে।

ইন্টারনেট সংযোগ পেতে ওয়েবসাইট থেকে লজিস্টিক সহযোগিতা ও পছন্দের প্যাকেজ কিনতে হবে। এই লজিস্টিক সহযোগিতা দেবে ছয় থেকে সাতটি দেশীয় প্রতিষ্ঠান। পাশাপাশি গ্রাউন্ড স্টেশন ঘিরে নেটওয়ার্ক তৈরিতেও দেশীয় উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে ফাইবার অপটিক সেবা নিচ্ছে স্টারলিংক।

সংযোগ নিতে অর্ডার যেভাবে
বাংলাদেশের গ্রাহকরা সরাসরি স্টারলিংকের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে অর্ডার করতে হবে। নিজের ঠিকানায় পছন্দের কিট এককালীন ৪৭ হাজার টাকায় অর্ডার করতে হবে। এর সঙ্গে ২ হাজার ৮০০ টাকা যুক্ত হবে শিপিং ও হ্যান্ডেলিং চার্জ হিসেবে। একটা সাধারণ কিটে ডিশ, ওয়াইফাই রাউটার, মাউন্টিং ট্রাইপড ও ক্যাবল থাকে। এরপর সংযোগ খরচ। তিন থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে এই কিট গ্রাহকের কাছে পৌঁছাবে।

নতুন দুই প্যাকেজ সম্পর্কে স্টারলিংক জানিয়েছে, রেসিডেনশিয়াল প্যাকেজ কিনতে খরচ হবে ৬ হাজার টাকা। আর রেসিডেনশিয়াল লাইটের জন্য মাসে খরচ হবে চার হাজার ২০০ টাকা। এ ছাড়া ঘুরতে গেলে অথবা চলন্ত অবস্থায় স্টারলিংক সংযোগ পেতে রোম নামের প্যাকেজে কিনতে হবে। যার জন্য প্রতি মাসে দিতে হবে নূন্যতম খরচ ৬ হাজার টাকা। রোমের ছয় হাজার টাকার প্যাকেজে ৫০ জিবি পর্যন্ত ডেটা পাওয়া যাবে। আর আন-লিমিটেড ডেটার জন্য নিতে হবে ১২ হাজার টাকার রোম আন-লিমিটেড প্যাকেজ।

ওয়েবসাইটে আরও বলা হয়েছে, গ্রাহক স্টারলিংক সংযোগ ৩০ দিন ব্যবহার করার পর সেবা ‘সন্তোষজনক’ মনে করলে সম্পূর্ণ টাকা ফেরত পাবে।

ব্যবসায়িক অংশীদার কারা
গ্রাউন্ড স্টেশন থকে আশেপাশের টাওয়ার পর্যন্ত নেটওয়ার্ক তৈরিতে প্রয়োজনীয় লজিস্টিক সহযোগিতা নেওয়া হবে এনটিটিএন কোম্পানি ফাইবার এটহোম থেকে। দেশের অভ্যন্তরে গ্রাহকদের ভবনে স্টারলিংক কিট স্থাপনসহ অন্যান্য লজিস্টিক সহযোগিতার জন্য ৬-৭টি কোম্পানির সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে বলে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে। এরমধ্যে দেশের তিন বেসরকারি মোবাইল অপারেটর– গ্রামীণ, রবি ও বাংলালিংক রয়েছে বলে জানা গেছে।

স্টারলিংককে স্থানীয় গেটওয়ে ব্যবহার বাংলাদেশে সেবা দিতে হবে। এজন্য একাধিক আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট গেটওয়ের (আইআইজি) সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হতে হবে।

ভাগাভাগি করে ব্যবহার
একটা ‘ডিভাইস’ থেকে ২০ থেকে সর্বোচ্চ ৫০ মিটার পর্যন্ত ইন্টারনেট পাওয়া যাবে। এই সীমার মধ্যে একাধিক ব্যক্তি মিলে একটা কিট কিনে তা ভাগাভাগি করে ব্যবহার করতে পারবে।

প্রসঙ্গত স্টারলিংক বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করছে ২০২১ সাল থেকে। সে বছর ও ২০২২ সালে তারা বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) সঙ্গে যোগাযোগ করে। তবে সে সময় সরকার থেকে কোনো সাড়া পায়নি। এরপর ২০২৩ সালের জুলাইয়ে বাংলাদেশে স্টারলিংকের প্রতিনিধিরা আসেন এবং তৎকালীন মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তখন স্টারলিংকের প্রযুক্তি এনে পরীক্ষাও করা হয়। তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার স্টারলিংকের বাংলাদেশে প্রবেশ নিয়ে আলোচনা শুরু করে। তবে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় এসে বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে দ্রুততম সময়ে লাইসেন্স দিয়ে স্টারলিংককে দেশে ব্যবসার সুযোগ করে দেয়, যা নিয়ে সমালোচনা রয়েছে। গত ২৯ মার্চ স্টারলিংককে বিনিয়োগ কর্তৃপক্ষ নিবন্ধন দেয়। বিটিআরসি ১০ বছরের জন্য লাইসেন্স দেয় ২৯ এপ্রিল।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব যবহ র র জন য সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

বন্দীদের ফুল দিয়ে বরণ, চালু হলো ফেনীর দ্বিতীয় কারাগার

সংস্কার শেষে ফেনীর দ্বিতীয় কারাগার চালু হয়েছে। আজ শনিবার সকালে বন্দীদের ফুল দিয়ে বরণ করার মধ্য দিয়ে এ কারার যাত্রা শুরু হয়। এতে চট্টগ্রাম বিভাগের আটটি কারাগারের সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের ও ফেনী জজ আদালতে বিচারাধীন মামলার আসামিদের রাখা হবে।

কারা সূত্র জানায়, দেশের পুরোনো চারটি কারাগারের মধ্যে ফেনী-২ কারাগার একটি। শত বছরের পুরোনো এ কারাগার ভবন ছিল জরাজীর্ণ। এ কারণে ২০১৯ সালে ১২ জানুয়ারি এ কারাগার থেকে বন্দীদের ফেনীর শহরতলির রানীরহাট এলাকার নতুন কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। এরপর থেকে কারাগারটি অনেকটা ‘পরিত্যক্ত’ অবস্থায় ছিল।

নতুন করে চালু হওয়া কারাগারটির অবস্থান ফেনী শহরের মাস্টারপাড়ায়। এটি ১৯১৫ সালে সাবজেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এরপর ১৯৯৮ সালে জেলা এটিকে কারাগারে উন্নীত হয়। এ কারাগারের বর্তমান ধারণক্ষমতা ১৭২ জন। এর মধ্যে ১৭০ জন পুরুষ ও ২ জন নারী। কারাগার চালু করার জন্য গতকাল কুমিল্লা জেলা কারাগার থেকে ২৪ জন ও চট্টগ্রাম থেকে চারজন বন্দীকে আনা হয়েছিল। তাঁরা সবাই সশ্রম সাজাপ্রাপ্ত। এ কারাগারে তাঁরা রান্নার দায়িত্বে থাকবেন।

কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, ধাপে ধাপে সাজাপ্রাপ্ত ও বিচারাধীন বন্দীদের ফেনীর দ্বিতীয় কারাগারে আনা হবে। আপাতত এতে কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ২৬ জন, কুমিল্লা থেকে ৭৪ জন, নোয়াখালী থেকে ১৫ জন, লক্ষ্মীপুর থেকে ৪ জন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ৩৩ জন বন্দী এখানে স্থানান্তর করা হবে। এতে সেল, রান্নাঘর, কিশোর ওয়ার্ড, মসজিদসহ প্রয়োজনীয় সুবিধা রয়েছে। এ কারাগার নিয়ে বর্তমানে দেশে কারার সংখ্যা ৭১।

জানতে চাইলে ফেনী-২–এর জেল সুপার মো. দিদারুল আলম বলেন, ‘রাষ্ট্র চায়, কারাগার শুধু শাস্তির জায়গা নয়, সংশোধনের কেন্দ্র হোক। এরই অংশ হিসেবে সংস্কার শেষে ফেনী কারাগার-২ চালু হয়েছে।’

কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেলার ফেরদৌস মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ কারাগারে স্থানান্তরিত বন্দীদের সব সুযোগ-সুবিধা ইতিমধ্যে নিশ্চিত করা হয়েছে। চিকিৎসক ও প্রশিক্ষিত নার্সও যোগদান করেছেন। বেশির ভাগ পদে কর্মচারীরাও কাজ শুরু করেছেন।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘দূরে থেকেও আমরা কাছে, এটাই বাস্তব’
  • বিলাসবহুল প্রমোদতরিতে খুন, এরপর...
  • ফাইনালে দ. আফ্রিকাকে ২৯৯ রানের টার্গেট দিল ভারত
  • শাহরুখকে ‘কুৎসিত’ বলেছিলেন হেমা মালিনী, এরপর...
  • প্রথম দেখায় প্রেম নাকি ঝগড়া? আসছে ইয়াশ–তটিনীর ‘তোমার জন্য মন’
  • জেমিনিতে যুক্ত হলো গুগল স্লাইডস তৈরির সুবিধা, করবেন যেভাবে
  • নড়াইলে ৩ দিন ধরে স্কুলছাত্রী নিখোঁজ
  • রোহিতের পর কোহলির রেকর্ডও কাড়লেন বাবর, পাকিস্তানের সিরিজ জয়
  • নাজমুলই থাকছেন টেস্ট অধিনায়ক
  • বন্দীদের ফুল দিয়ে বরণ, চালু হলো ফেনীর দ্বিতীয় কারাগার