মানুষের কর্ম প্রচেষ্টাই মানুষকে এগিয়ে দেয়। অনেক সময় কেউ কেউ কল্পনাতীতভাবে এগিয়ে যান। এমনই নজির গড়েছেন চীনের এক ব্যক্তি। তার নাম লি চুয়াঙ্গি। তিনি ছোটবেলায় সেরিব্রাল পালসিতে আক্রান্ত ছিলেন। এই রোগের প্রভাবে তার দৃষ্টিশক্তি, কথা বলা ও শেখা এবং পেশি নড়াচড়ার সমস্যাসহ নানা অসুবিধা দেখা যায়।
লি অসুস্থ থাকায় পরিবারের ওপর নির্ভর করছিলেন। কিন্তু এক সময় তিনি পরিবারের ওপর বোঝা হয়ে থাকতে চাননি। এজন্য চাকরি খুঁজতে শুরু করেন। একটা সময় চাকরি পেয়েও যান। কিন্তু লিকে যিনি চাকরি দিয়েছিলেন তার উদ্দেশ্য সৎ ছিল না।
৯ থেকে ১৬ বছর বয়স পর্যন্ত ওই ব্যক্তি লি–কে রাস্তায় ভিক্ষা করতে বাধ্য করেন। এর বিনিময়ে লি প্রতি মাসে মাত্র ১০০ ইউয়ান উপার্জন করতে পারছিলেন। এভাবে সাত বছর কেটে যাওয়ার পরে লিকে ভিক্ষাবৃত্তি থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কারণ ওই ব্যক্তি মনে করেন, লি-র বয়স বেড়ে গেছে, এখন মানুষের সিমপ্যাথি পাবে না।
আরো পড়ুন:
লিচু খাচ্ছেন, এই ফলের ভালো-মন্দ জেনে নিন
মানসিক চাপ তৈরি হয় কেন
এরপরে লি পড়ালেখা করতে শুরু করেন। ২৫ বছর বয়সে একটি মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। এবং ২০১৬ সালে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল প্রোগ্রামে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পান। তিনি নিজেকে সেরিব্রাল পালসির একটি কেস স্টাডি হিসেবে সহপাঠীদের সামনে নিজেকে উপস্থাপন করেন। ৩১ বছর বয়সে ২০১৯ সালে স্নাতক সম্পন্ন করেন তিনি। এরপর লি একটি মেডিকেল কোম্পানিতে কাজ শুরু করেন। কিন্তু বেশি দিন সেই কাজ করেননি। লি চেয়েছেন ছোট ক্লিনিকে কাজ করে নিজের প্রতিবেশিদের সহযোগিতা করতে।
লি সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টকে বলেন, ‘‘তিনি বড় কোনো হাসপাতালে কাজ করার স্বপ্ন দেখেন না। ছোট ক্লিনিকে কাজ করে প্রতিবেশীদের সেবা দিতে পেরে খুশি তিনি।’’
লি চীনের ইউনান প্রদেশে বসবাস করছেন। আর সেখানেই একটি ছোট ক্লিনিক চালু করে রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
পটুয়াখালীতে সৎমা ও দাদিকে গলা কেটে হত্যা
পটুয়াখালীতে কুলসুম বেগম ও মোসা. সাহিদা বেগম নামের দুই নারীকে গলা কেটে হত্যার অভিযোগ উঠেছে এক তরুণের বিরুদ্ধে। আজ শুক্রবার বেলা একটার দিকে সদর উপজেলার মাদারবুনিয়া ইউনিয়নের চারাবুনিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত আল আমিন (২৭) সম্পর্কে নিহত সাহিদা বেগমের সৎছেলে এবং বৃদ্ধা কুলসুম বেগমের নাতি। ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক। পুলিশ লাশ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
নিহত দুই নারীর স্বজন মো. আশ্রাফ খাঁ জানান, আল আমিন দীর্ঘদিন ধরে অস্বাভাবিক চলাফেরা করছেন। এরপর তাঁর পরিবার তাঁকে মানসিক হাসপাতালে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন। দুপুরে আল আমিনের বাবা রাজ্জাক খাঁ পাশের একটি মসজিদে জুমার নামাজ পড়তে গেলে আল আমিন দা দিয়ে গলা কেটে তাঁর সৎমা সাহিদা বেগম ও বৃদ্ধ দাদি কুলসুম বেগমকে হত্যা করেন।
বাহাদুর আলম খাঁ (৫০) নামের এক আত্মীয় বলেন, নিহত সাহিদা সম্পর্কে তাঁর চাচিশাশুড়ি এবং কুলসুম বেগম দাদিশাশুড়ি। দুপুরে বাড়ির সবাই জুমার নামাজ পড়তে গেলে মানসিক ভারসাম্যহীন ছোট ছেলে আল আমিন রান্নার কাজে ব্যবহৃত ধারালো দা দিয়ে প্রথমে সৎমা এবং পরে দাদিকে গলা কেটে হত্যা করেন। তিনি বলেন, আল আমিন মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাস করে পটুয়াখালী সরকারি কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন। এরপর তিন বছর আগে চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসায় পড়াশোনা করতে যান। সেখান থেকে বাড়িতে ফিরে অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করেন। পরে পরিবারের পক্ষ থেকে চিকিৎসক দেখালেও সুস্থ হননি।
পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইমতিয়াজ আহম্মেদ প্রথম আলোকে বলেন, দুই নারীকে হত্যার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। হত্যাকাণ্ড ঘটানো ব্যক্তি ওই পরিবারের সদস্য। ঘটনার পর মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে উদ্ধার করে পটুয়াখালী মর্গে পাঠানো হয়েছে। জড়িত তরুণ এখন পলাতক। তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন কি না, তদন্ত করে দেখা হবে।