ডিজিএফআইয়ের সাবেক মহাপরিচালকসহ ৪ জনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা
Published: 22nd, May 2025 GMT
প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) সাবেক মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) শেখ মামুন খালেদ, তাঁর স্ত্রী নিগার সুলতানাসহ চারজনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন আজ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।
অন্য যে দুজনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত, তাঁরা হলেন জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল (অব.
দুদকের পক্ষ থেকে আদালতকে বলা হয়েছে, ডিজিএফআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক শেখ মামুন খালেদের বিরুদ্ধে শেয়ার ব্যবসা করাসহ ক্ষমতার অপব্যবহার, বিভিন্ন অনিয়ম–দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করে নিজ নামে ও পরিবারের অন্য সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। তিনি স্ত্রীকে নিয়ে বিদেশে পালিয়ে যেতে পারেন বলে দুদক জানতে পেরেছে। পরে শুনানি নিয়ে আদালত তাঁদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন।
আরও পড়ুনএনএসআইয়ের সাবেক ডিজি জুবায়েরের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ, ডিজিএফআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক হামিদুলের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা২১ এপ্রিল ২০২৫জুবায়েরের আত্মীয়ের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা
এনএসআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল (অব.) টি এম জুবায়েরের ভায়রা খন্দকার আবদুল কাইয়ুম ও কর কমিশনার আবু সাঈদ মো. মুস্তাকের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করে দুদক।
আবেদনে দুদক বলেছে, এনএসআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক টি এম জুবায়েরের বিরুদ্ধে মোটা অঙ্কের ঘুষ গ্রহণ করে বিভিন্ন পদে চাকরি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। দুদক জানতে পেরেছে, টি এম জুবায়ের লন্ডনে অর্থ পাচার করে বাড়ি কিনেছেন। ওই বাড়িটির ক্রয়মূল্য ২৯ লাখ ৪৫ হাজার পাউন্ড। টি এম জুবায়েরের ব্যাংক হিসাব থেকে তাঁর আত্মীয় আবদুল কাইয়ুম ও আবু সাঈদ মো. মুস্তাক অর্থ হস্তান্তর বা রূপান্তরে সহযোগিতা করছেন। এই দুজন বিদেশে পালিয়ে যেতে পারেন বলে দুদক জানতে পেরেছে।
আরও পড়ুনএনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যানসহ ৪ জনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা২১ মে ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এম জ ব
এছাড়াও পড়ুন:
দুদকের মামলায় জুবাইদা রহমানের আপিল শুনানি আগামীকাল
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় তিন বছরের কারাদণ্ডাদেশের রায়ের বিরুদ্ধে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী জুবাইদা রহমানের আপিল শুনানির জন্য আগামীকাল বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বুধবার এই দিন নির্ধারণ করেন।
এর আগে ১৪ মে হাইকোর্ট জুবাইদা রহমানের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তাঁকে জামিন দেওয়া হয়। বিচারিক আদালতের ওই মামলায় জুবাইদা রহমানের দেওয়া অর্থদণ্ডাদেশ স্থগিত করা হয়। পাশাপাশি বিচারিক আদালতের নথি তলব করা হয়। জুবাইদা রহমানের আপিলের গ্রহণযোগ্যতা ও জামিন চেয়ে তাঁর করা আবেদনের শুনানি নিয়ে ১৪ মে ওই আদেশ দেওয়া হয়। এর ধারাবাহিকতায় জুবাইদা রহমানের আপিলটি আজ আদালতের কার্যতালিকায় ২ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।
আপিল শুনানির দিন ধার্যের জন্য বিষয়টি উপস্থাপন করেন আইনজীবী কায়সার কামাল, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী জাকির হোসেন ভূইয়া।
জানতে চাইলে আইনজীবী জাকির হোসেন ভূইয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘আপিল শুনানির দিন নির্ধারণের জন্য বিষয়টি উপস্থাপন করা হয়। হাইকোর্ট আগামীকাল বৃহস্পতিবার আপিল শুনানির জন্য দিন নির্ধারণ করেছেন।’
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা এই মামলায় ২০২৩ সালের ২ আগস্ট রায় দেন ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. আছাদুজ্জামান। রায়ে দুটি ধারায় তারেক রহমানের ৯ বছর কারাদণ্ড (৬ ও ৩ বছর, একসঙ্গে চলবে) এবং জুবাইদা রহমানের ৩ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে করা এই মামলায় জুবাইদা রহমানের সাজা স্থগিত করে গত বছরের ৪ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ প্রজ্ঞাপন জারি করে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সাজা স্থগিত চেয়ে জুবাইদা রহমানের করা আবেদন এবং আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মতামতের আলোকে তাঁর বিরুদ্ধে করা মামলায় তাঁকে দেওয়া দণ্ডাদেশ এক বছরের জন্য স্থগিত করা হলো।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে ৬ মে যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফেরেন জুবাইদা রহমান। তিনি তারেক রহমানের সঙ্গে ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর লন্ডনের উদ্দেশে বাংলাদেশ ছেড়েছিলেন। ১৭ বছর কেটে গেলেও দেশে ফিরতে পারেননি জুবাইদা রহমান।
দেশে ফিরে আপিল করার জন্য ৫৮৭ দিন বিলম্ব মার্জনা চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন জুবাইদা রহমান, যা ১৩ মে মঞ্জুর করেন আদালত। বিলম্ব মার্জনার আবেদন মঞ্জুরের পর তিনি আপিল করেন এবং জামিন চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি নিয়ে ১৪ মে হাইকোর্ট আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন এবং জামিন মঞ্জুর করেন। এখন আপিলের ওপর শুনানি শুরু হতে যাচ্ছে।
সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর তারেক রহমান, জুবাইদা রহমানসহ তিনজনের বিরুদ্ধে রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলাটি করে দুদক। পরের বছর তাঁদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।
আরও পড়ুনহাইকোর্টে জামিন পেলেন জুবাইদা রহমান১৪ মে ২০২৫আরও পড়ুনদণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে জুবাইদা রহমানের আপিল দায়েরের জন্য ৫৮৭ দিন বিলম্ব মার্জনা১৩ মে ২০২৫