পছন্দের ব্যক্তিকে সাইকেল গ্যারেজ ইজারা না দেওয়ায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. মোহসীন আলী ফরাজিকে গালিগালাজ ও দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন সোনাডাঙ্গা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ। বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হাসপাতালের পরিচালকের কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় আসাদের সঙ্গে থাকা নেতাকর্মীরা কক্ষে উপস্থিত অন্য চিকিৎসকদের দিকে তেড়ে যান। এ নিয়ে হাসপাতালের চিকিৎসকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। সূত্র জানিয়েছে- এ ঘটনায় শনিবার কলেজ ও হাসপাতাল খুললে কর্মসূচি ঘোষণা দিতে পারেন চিকিৎসকরা।

হাসপাতালে সিসিটিভি ক্যামেরায় দেখা যায়, দুপুর ১২টা ২৯ মিনিটে ৮ থেকে ১০ জন নেতাকর্মীকে নিয়ে পরিচালকের কক্ষে প্রবেশ করেন আসাদুজ্জামান আসাদ। পরিচালকের কক্ষে ডা.

মোহসীন আলী ফরাজির সঙ্গে আসাদসহ অন্য বিএনপি নেতাকর্মীদের কথোপকথনের একটি অডিও ক্লিপ সমকালের হাতে এসেছে।

অডিও ক্লিপে আসাদকে বলতে শোনা যায়, এতদিন আওয়ামী লীগের লোকজন কাজ করেছে, এখন আমাদের দিতে হবে। এ সময় পরিচালক কিছু দিন অপেক্ষা করতে বলেন। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন আসাদ। পরিচালককে উদ্দেশ্য করে আসাদ বলেন, ‘আপনার মতো লোক বহু দেখেছি, ১৬ বছর আওয়ামী লীগ পিটাইছি। সাহস থাকলে বাইরে বের হ’ তারপর দেখতেছি’। 

এ সময় অন্য চিকিৎসকরা তার কথার প্রতিবাদ করলে আসাদ বলতে থাকেন, ‘সাহস থাকলে বাইরে আয়, এখনই আয়, এরপর দেখাচ্ছি আমি কি করতে পারি না পারি। বাইরে বের হয়ে দেখ, দেখতেছি’। 

এ ব্যাপারে হাসপাতালের পরিচালক ডা. মোহসীন আলী ফারাজী বলেন, ‘হাসপাতালের সামনে গ্যারেজটি ‘অন্তিকা এন্টারপ্রাইজ’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে ভাড়া দেওয়া রয়েছে। জুন মাসে এর মেয়াদ শেষ হবে। কিন্তু এর আগেই তারা আরেকজনকে ভাড়া দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। তাদের বারবার বলা হচ্ছিলো, নির্ধারিত সময়ে দরপত্রে অংশ নেন। কিন্তু তারা কোনো ধরনের কথা শুনতে চাইছিলেন না। এরপরে যা ঘটেছে আমার তিন দশকের চিকিৎসা জীবনে এমন ঘটনার মুখোমুখি হইনি। এসব বলতেও বিব্রত লাগছে।’ 

তবে আসাদুজ্জামান আসাদ পুরো বিষয়টি অস্বীকার করেন। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘১৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির আহত এক নেতাকে দেখতে গিয়েছিলাম। তখন তত্ত্বাবধায়কের কাছে একটি কথা বলতে গিয়েছিলাম। তার ব্যবহার ভালো ছিল না। তাকে একটু ভালো ব্যবহার করতে বলেছি।’

এর আগে ২ মার্চ আউটসোর্সিং জনবল নিয়োগের দরপত্রকে কেন্দ্র করে সুন্দরবন গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজার শাহ আলম মোল্লার কক্ষে ভাঙচুর এবং তাঁকে লাঞ্চিত করেন আসাদুজ্জামান আসাদ। ওইদিনও তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেছিলেন।
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার রোবট দেবে ফিজিওথেরাপি

দেশে প্রথম রোবটিক রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার চালু হচ্ছে। বুধবার দুপুর ১২টায় রাজধানীর শাহবাগে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) সুপারস্পেশালাইজড হাসপাতালের বেজমেন্ট-১ এ নির্মিত কেন্দ্র উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। উপস্থিত থাকবেন ঢাকায় চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।
বিএমইউর একাধিক কর্মকর্তা ও চীনা দূতাবাস জানায়, চীনের সহায়তায় স্থাপিত রোবটিক রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারে মিলবে পক্ষাঘাতগ্রস্ত রোগের বিশ্বমানের সেবা। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতরা প্রথমে বিনামূল্যে সেবা নেওয়ার সুযোগ পাবেন। কারও সহযোগিতা ছাড়াই রোগীর চাহিদা অনুযায়ী সেবা দিতে সক্ষম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন (এআই) ২২টি রোবট কেন্দ্রে স্থাপন করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, কেন্দ্রটি চালুর জন্য প্রায় ২০ কোটি টাকা মূল্যের যন্ত্রপাতি দিয়েছে চীন সরকার। মোট রোবট রয়েছে ৬২, যার মধ্যে ২২টি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন। কেন্দ্রে জুলাই গণঅভ্যুত্থানসহ যারা দীর্ঘমেয়াদে সমস্যায় ভুগছেন ও যাদের পুনবার্সন প্রয়োজন, তাদের সেবা দেওয়া হবে। পর্যায়ক্রমে সাধারণ রোগীর জন্য উন্মুক্ত করা হবে। তবে কত টাকায় কী সেবা, সে তালিকা প্রকাশ করা হয়নি।
কেন্দ্রের প্রধান অধ্যাপক ডা. আব্দুস শাকুর বলেন, ‘এটি দেশের প্রথম রোবটিক ফিজিওথেরাপি কেন্দ্র। এআই রোবট নিজে রোগীর সমস্যা চিহ্নিত করে, সে অনুযায়ী সেবা দিতে পারবে। প্রয়োজন হলে চিকিৎসকরাও কাস্টমাইজ করতে পারবেন। এআই রোবট খুবই বুদ্ধিদীপ্ত, রোগীর নড়াচড়া দেখেই সে তার ফাংশন ঠিক করে।’
তিনি বলেন, ‘ফিজিক্যাল মেডিসিনের চিকিৎসকরা রোবটগুলো ডিল করবেন। এ জন্য চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে চীনের কারিগরি দল। আগামী ১০ দিন প্রশিক্ষণ চলবে। কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হলে গড়ে দিনে ৩০০ রোগী থেরাপি নিতে পারবেন।’

গণঅভ্যুত্থান-সংক্রান্ত বিশেষ সেলের তথ্য, জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ১১ হাজার ৩০৬ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে গুলিতে আহত ৮০ শতাংশের অবস্থা খুবই জটিল। উন্নত চিকিৎসার জন্য ইতোমধ্যে ৪৭ জনকে বিদেশে পাঠানো হয়েছে। তাদের মধ্যে ১২ জনকে ব্যয়বহুল রোবটিক ফিজিওথেরাপি দেওয়া হচ্ছে।
বিএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শাহিনুল আলম জানান, যেসব রোগীর ফিজিক্যাল ও নিউরোলজিক্যাল ক্ষতি হয়েছে, কেন্দ্রে তাদের কার্যকরী চিকিৎসা মিলবে। মেরুদণ্ডের ইনজুরির কারণে পক্ষাঘাতগ্রস্তরা নিতে পারবেন বিশেষভাবে কাস্টমাইজড রোবটিক সেবা। দুর্ঘটনায় পঙ্গুত্ব বা নার্ভ ইনজুরিতে যারা ভুগছেন, তাদের জন্য রয়েছে দীর্ঘমেয়াদি ফিজিক্যাল থেরাপির ব্যবস্থা।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অধূমপায়ীদের সুরক্ষায় সিগারেটের করকাঠামো সংস্কারের দাবি
  • সিগারেটের করকাঠামো সংস্কারের দাবি তরুণ চিকিৎসকদের
  • নিম্নমানের ওষুধ লিখতে ‘চাপে’ চিকিৎসকরা
  • কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার রোবট দেবে ফিজিওথেরাপি