বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ কর্পোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) আওতাধীন ফেরীসহ সব নৌযান শতভাগ ধূমপানমুক্ত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় ও পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতি থেকে সাধারণ মানুষকে রক্ষায় ও শতভাগ ধূমপানমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান মো. সলিম উল্লাহ্ এ ঘোষণা দেন। এছাড়া তিনি সঠিক কর্মপরিকল্পনা ও এটি বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানান।

বৃহস্পতিবার (২২ মে’২৫) বিআইডব্লিউটিসির সভা কক্ষে ঢাকা আহছানিয়া মিশন ও বিআইডব্লিউটিসির যৌথ আয়োজনে ‘শতভাগ ধূমপানমুক্ত নৌপরিবহন নিশ্চিতকরণে করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি এই ঘোষণা দেন।

আরো পড়ুন:

নৌবাহিনী প্রধান-মালদ্বীপ হাইকমিশনার সাক্ষাৎ

চট্টগ্রাম-সন্দ্বীপ নৌপথে ফেরি সার্ভিসের উদ্বোধন সোমবার

মো.

সলিম উল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব বেলায়েত হোসেন, নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মাশরুখ আহমেদ, বিআইডাব্লিউটিসির মহাব্যবস্থাপক (প্রশাশন) জেসমিন আরা বেগম, কারিগরি পরিচালক কাজী ওয়াসিফ আহমাদ, নৌপুলিশের হেলাল উদ্দিন এবং ঢাকা আহছানিয়া মিশনের স্বাস্থ্য সেক্টরের উপ-পরিচালক মোখলেছুর রহমান।  

মূল প্রবন্ধে ঢাকা আহছানিয়া মিশনের তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের সমন্বয়কারী শরিফুল ইসলাম জানান, গ্লোবাল এডাল্ট টোব্যাকো সার্ভে (গ্যাটস) ২০১৭ এর তথ্যমতে দেশে প্রায় ৩ কোটি ৭৮ লাখ মানুষ তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার করে। এর মধ্যে ধূমপান করে ১ কোটি ৯২ লাখ মানুষ এবং প্রায় ৪ কোটি মানুষ ধূমপান না করেও পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছে। পরোক্ষ ধূমপানের এই হার ৪২.৭ শতাংশ। এর মধ্যে গণপরিবহনে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছে ৪৪ শতাংশ। ফেরি ও যাত্রীবাহী জাহাজও এই গণপরিবহনের অন্তর্ভূক্ত, যেখানে প্রতিনিয়ত মানুষ পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে বক্তারা জানান, ফেরিতে যত্রতত্র ধূমপানের চিত্র দেখতে পাওয়া যায়। যাত্রীরা ফেরির ক্যান্টিনে খেতে গিয়েও পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হয়। পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতি থেকে সবাইকে রক্ষা করতে ফেরিসহ সব নৌযানকে শতভাগ ধূমপানমুক্ত রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।

পাশাপাশি, বিআইডাব্লিউটিসির নৌযান ধূমপানমুক্ত রাখতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান ও ধূমপানমুক্ত সাইনেজ লাগানো এবং এর সব কার্যালয়কে শতভাগ ধূমপান ও স্মোকিং জোনমুক্ত রাখতে সক্রিয় ভূমিকা পালনের আহ্বান জানানো হয়।

অনুষ্ঠানে বিআইডব্লিউটিসির অন্যান্য উর্দ্ধতন কর্মকর্তা, নৌপরিহন মন্ত্রণালয়, বিআইডব্লিউটিএ, নৌ পুলিশের এবং বিভিন্ন তামাকবিরোধী সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/হাসান/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন পর বহন পর বহন

এছাড়াও পড়ুন:

উত্তাল সাগরে ফেরি ও জাহাজ বন্ধ, ঝুঁকি নিয়ে চলছে স্পিডবোট

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড–সন্দ্বীপ নৌপথে সাগর উত্তাল থাকায় আজ শুক্রবার ফেরি ও যাত্রীবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ঝুঁকি নিয়েই চলছে স্পিডবোট।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের কারণে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এ সতর্কতা জারি থাকলে সন্দ্বীপ চ্যানেলে সব ধরনের যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল নিষিদ্ধ।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) জানায়, প্রতিবছর ১৫ মার্চ থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত এই নৌপথে স্পিডবোট চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকে। তবে এসব নির্দেশনা উপেক্ষা করেই চলছে স্পিডবোট। ফলে ঘটছে দুর্ঘটনা। গত ১৬ জুনও উত্তাল সাগরে একটি স্পিডবোট দুর্ঘটনায় পড়ে।

আজ বিকেল সোয়া চারটার দিকে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের বোয়ালিয়াকুল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সন্দ্বীপের গুপ্তছড়া ফেরিঘাট থেকে যাত্রী নিয়ে দুটি স্পিডবোট কুমিরার উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। তবে সাগর ছিল প্রচণ্ড উত্তাল। মাঝপথে স্পিডবোট দুটি সরাসরি কুমিরা ঘাটে না গিয়ে বাঁশবাড়িয়া এলাকায় এসে পৌঁছায়। পরে উপকূল ধরে কুমিরা ঘাটের দিকে যেতে দেখা যায়।

স্থানীয় জেলেরা জানান, সাগরের ঢেউ এতটাই প্রবল ছিল যে স্পিডবোট দুটি গতিপথ হারিয়ে কুমিরার বদলে বাঁশবাড়িয়ায় এসে পড়ে। তবে স্পিডবোটগুলোর মালিকানা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

বিআইডব্লিউটিএ সূত্র জানায়, সতর্কতা সংকেত থাকাকালে স্পিডবোট, ফেরি ও যাত্রীবাহী জাহাজ চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। সন্দ্বীপ চ্যানেলে স্পিডবোট চলাচলে মৌসুমি নিষেধাজ্ঞাও রয়েছে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) উপমহাব্যবস্থাপক (ভারপ্রাপ্ত) আবদুর নূর তুষার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আবহাওয়া অফিস ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত জারি করলে আমরা ফেরি ও যাত্রীবাহী জাহাজ চালাই না। আজও সব ধরনের চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।’

বিআইডব্লিউটিএর উপপরিচালক মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘ঘাটে আমাদের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা রয়েছেন। নির্দেশনা অমান্য করে যাঁরা স্পিডবোট চালাচ্ছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে খোঁজখবর নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • উত্তাল সাগরে ফেরি ও জাহাজ বন্ধ, ঝুঁকি নিয়ে চলছে স্পিডবোট