চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড–সন্দ্বীপ নৌপথে সাগর উত্তাল থাকায় আজ শুক্রবার ফেরি ও যাত্রীবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ঝুঁকি নিয়েই চলছে স্পিডবোট।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের কারণে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এ সতর্কতা জারি থাকলে সন্দ্বীপ চ্যানেলে সব ধরনের যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল নিষিদ্ধ।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) জানায়, প্রতিবছর ১৫ মার্চ থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত এই নৌপথে স্পিডবোট চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকে। তবে এসব নির্দেশনা উপেক্ষা করেই চলছে স্পিডবোট। ফলে ঘটছে দুর্ঘটনা। গত ১৬ জুনও উত্তাল সাগরে একটি স্পিডবোট দুর্ঘটনায় পড়ে।

আজ বিকেল সোয়া চারটার দিকে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের বোয়ালিয়াকুল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সন্দ্বীপের গুপ্তছড়া ফেরিঘাট থেকে যাত্রী নিয়ে দুটি স্পিডবোট কুমিরার উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। তবে সাগর ছিল প্রচণ্ড উত্তাল। মাঝপথে স্পিডবোট দুটি সরাসরি কুমিরা ঘাটে না গিয়ে বাঁশবাড়িয়া এলাকায় এসে পৌঁছায়। পরে উপকূল ধরে কুমিরা ঘাটের দিকে যেতে দেখা যায়।

স্থানীয় জেলেরা জানান, সাগরের ঢেউ এতটাই প্রবল ছিল যে স্পিডবোট দুটি গতিপথ হারিয়ে কুমিরার বদলে বাঁশবাড়িয়ায় এসে পড়ে। তবে স্পিডবোটগুলোর মালিকানা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

বিআইডব্লিউটিএ সূত্র জানায়, সতর্কতা সংকেত থাকাকালে স্পিডবোট, ফেরি ও যাত্রীবাহী জাহাজ চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। সন্দ্বীপ চ্যানেলে স্পিডবোট চলাচলে মৌসুমি নিষেধাজ্ঞাও রয়েছে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) উপমহাব্যবস্থাপক (ভারপ্রাপ্ত) আবদুর নূর তুষার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আবহাওয়া অফিস ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত জারি করলে আমরা ফেরি ও যাত্রীবাহী জাহাজ চালাই না। আজও সব ধরনের চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।’

বিআইডব্লিউটিএর উপপরিচালক মো.

কামরুজ্জামান বলেন, ‘ঘাটে আমাদের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা রয়েছেন। নির্দেশনা অমান্য করে যাঁরা স্পিডবোট চালাচ্ছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে খোঁজখবর নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ইজারাদারদের দ্বন্দ্বে মেঘনায় ট্রলার চলাচল বন্ধ, দুর্ভোগে যাত্রীরা

মুন্সীগঞ্জের মেঘনা নদী পারাপারে গজারিয়া ও নারায়ণগঞ্জের চরকিশোরগঞ্জ নৌরুটের ইজারা নিয়ে দ্বন্দ্বে বন্ধ হয়ে পড়েছে নৌ-চলাচল। এর ফলে এই নৌরুট দিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করা শত শত যাত্রী দুর্ভোগের কবলে পড়েছেন বলে জানা গেছে।

মঙ্গলবার সকালে গজারিয়া থেকে ছেড়ে যাওয়া ট্রলারগুলো মাঝ মেঘনায় থামিয়ে খেয়া পারাপারের টাকা তুলছে সোনারগাঁও উপজেলার শম্ভুপুড়া ইউনিয়নের ইউপি সদস্য ও চরকিশোরগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা মোতালেব মিয়া ও তার লোকজন। ইউপি সদস্য মোতালেব মিয়া মেঘনা নদীর চরকিশোরগঞ্জ প্রান্তের খেয়াঘাট ইজারাদার। তার সঙ্গে পূর্ব প্রান্তের গজারিয়া খেয়াঘাটের ইজারাদার সিন্ডিকেটের সঙ্গে ঘাট ইজারা নিয়ে বিরোধ দেখা দেয়। এর জের ধরে মঙ্গলবার দুপুর থেকে খেয়া পারাপারে ট্রলার চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ায় দুই পাড়ের যাত্রীরা পড়েছেন বেকায়দায়।

জানা গেছে, এ নৌরুটে দীর্ঘদিন ধরে মেঘনা নদীর গজারিয়া অংশের ট্রলার ঘাটের ইজারা দিয়ে আসছে গজারিয়া উপজেলা প্রশাসন এবং চর-কিশোরগঞ্জ অংশে ট্রলার ঘাটের ইজারা দেয় নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলা প্রশাসন।

অন্যদিকে, নদীর গজারিয়া অংশে থাকা লঞ্চঘাটের ইজারা দেয় বিআইডব্লিউটিএ। তবে চলতি পহেলা জুলাই থেকে চরকিশোরগঞ্জ ট্রলার ঘাটটি ইজারা দেয় বিআইডব্লিউটিএ। এ নিয়ে চরকিশোরগঞ্জ ঘাটের ইজারাদার নদীর দুই পাশের ট্রলার ঘাট থেকে ইজারা তোলার ঘোষণা দিলে বিরোধ সৃষ্টি হয়। গজারিয়া ট্রলার ঘাটের ইজারাদার রিপন মুন্সীর দাবি, তাকে ঘাট থেকে চলে যাওয়ার জন্য কয়েক দফা হুমকি দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে গজারিয়া অংশের ট্রলার ঘাটের ইজারাদার রিপন মুন্সী বলেন, আমি গজারিয়া ট্রলার ঘাটের ইজারাদার। উপজেলা প্রশাসনকে ইজারা মূল্য পরিশোধ করে আমি পহেলা বৈশাখ থেকে চৈত্র মাসের ৩০ তারিখ পর্যন্ত ইজারা পেয়েছি। কিন্তু সম্প্রতি বিআইডব্লিউটিএ থেকে নদীর চরকিশোরগঞ্জ ঘাট ইজারা পেয়ে মোতালেব মিয়া নদীর দুই পাড় থেকে টাকা তোলার কথা বলছে। ইতোমধ্যে তার কয়েকজন লোক আমাদেরকে হুমকি দিয়ে গেছে।

তবে চরকিশোরগঞ্জ খেয়াঘাটের ইজারাদার শম্ভুপুড়া ইউনিয়নের ইউপি সদস্য ও চরকিশোরগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা মোতালেব মিয়া বলেন, রিপন মুন্সী মিথ্যা অভিযোগ তুলে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চাইছে। রিপন মুন্সী ও তার সিন্ডিকেট সদস্যরা গজারিয়া খেয়া ঘাট এলাকায় বহিরাগত সন্ত্রাসী জড়ো করে উল্টো তার বিরুদ্ধে মিথ্যা কথা বলে বেড়াচ্ছে। 

এ বিষয়ে গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশরাফুল আলম জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয়পক্ষের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে ট্রলার চালু করার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। পাশাপাশি বিষয়টি স্থানীয় সমাধানের জন্য আজ দুপুরে উভয়পক্ষকে গজারিয়া উপজেলা পরিষদে বসার ডাকা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইজারাদারদের দ্বন্দ্বে মেঘনায় ট্রলার চলাচল বন্ধ, দুর্ভোগে যাত্রীরা