গাজীপুরের শ্রীপুরে যাত্রীবাহী গাড়ি থামিয়ে ডাকাতির সময় চলন্ত গাড়ির চাপায় ডাকাত দলের এক সদস্য নিহত হয়েছেন। এ সময় ডাকতদের হামলায় সিএনজিচালিত এক অটোরিকশাচালক মারা যান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ডাকাত দলের চার সদস্যকে আটক করেছে। বৃহস্পতিবার দেড়টার দিকে শ্রীপুর উপজেলার মাওনা-বরমী আঞ্চলিক সড়কের সাতখামাইর গজারি বনের ভেতরে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত অটোরিকশাচালকের নাম আবুল কালাম (৪০)। তিনি শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের টেংরা গ্রামের মো.

গিয়াস উদ্দিনের ছেলে।

আর নিহত ‘ডাকাত সদস্য’ মো. আরিফুল ইসলাম (২০)। তিনি কুমিল্লা জেলার হাবিবুর রহমানের ছেলে বলে জানা যায়।

শ্রীপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহম্মদননআব্দুল বারিক সমকালকে জানান, খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ডাকাত দলের চার সদস্যকে আটক করেছে। গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করা সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক ও ১ ডাকাত সদস্য মারা গেছে।

তিনি বলেন, এ ঘটনায় চার ডাকাতকে আটক করা হয়েছে। নিহতদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন হত সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

২৬ বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়া রাফিয়ার ক্লাস করা হলো না

এই তো সেদিন, বিভাগের ব্যাচের মেসেঞ্জার গ্রুপে সবার সামনে সগৌরবে নিজের পরিচয় দিলেন। সবাই মিলে ১৭ আগস্ট ক্লাস করবেন ভেবে কত আনন্দ ছিল তার মনে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ক্লাস, নতুন বন্ধু, নতুন পরিবেশ সবকিছুর জন্যই মুখিয়ে ছিল মেয়েটি। কিন্তু সব প্রস্তুতি, অপেক্ষা আর স্বপ্ন থমকে দাঁড়াল একটি দুঃসংবাদের ভারে।

তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া মেধাবী শিক্ষার্থী রাফিয়া সুলতানা কুইন। বুধবার (৬ আগস্ট) রাতের অ্যাজমা রোগে আক্রান্ত হয়ে চিরতরে তার পথচলা থেমে যায়।

রাফিয়া সুলতানা কুইন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (আইবিএ) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের নবীন শিক্ষার্থী ছিলেন। তার বাবা আব্দুল খালেক আহমেদ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ভোলাহাট উপজেলার ফতেপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত।

জানা গেছে, কয়েকদিন আগে শ্বাসকষ্ট ও জ্বর নিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন কুইন। অবস্থার অবনতি হলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। কিছু সময়ের জন্য অজ্ঞান হয়ে পড়লে চিকিৎসকরা তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করেন। পরে বুধবার রাত ৯টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

রাফিয়া কুইন ভোলাহাট সরকারি মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। অসাধারণ ফলাফল এবং মেধার ভিত্তিতে তিনি দেশের ২৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৯টি ইউনিটে ভর্তির সুযোগ পান।

রাফিয়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘এ’ ইউনিটে ৪৫২তম, ‘বি’ ইউনিটে ৪৭তম এবং ‘সি’ ইউনিটে ৪৩তম হয়ে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন। এছাড়া জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬৬তম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৮৩৯তম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বি’ ইউনিটে ২২০তম এবং ‘ডি’ ইউনিটে ২৫৬তম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬২৯তম, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪০তম, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬৮তম হয়ে উত্তীর্ণ হন।

এছাড়া গুচ্ছভুক্ত ১৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৫৮তম স্থান অধিকার করে এই মেধাবী শিক্ষার্থী। সবশেষে নিজের পছন্দের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন রাফিয়া। তবে ক্লাস শুরুর আগেই চিরবিদায় নিতে হলো তাকে।

ভোলাহাটে বাসা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. রেজাউল করিম ফেসবুকে লিখেছেন, “একটা মৃত্যুর সংবাদ শুনে আমি ট্রমার মধ্যে চলে গেছি। এটা থেকে কিছুতেই বের হতে পারছি না। আহ্ জীবনের পথ কত ছোট, মৃত্যু কত নিকটে! রাফিয়া সুলতানা কুইন এ বছর ২০২৪-২৫ সেশনে রাবির আইবিএ’তে ভর্তি হয়েছিল। অ্যাজমায় আক্রান্ত হয়ে গতকাল (৫ আগস্ট) থেকে আইসিইউতে ভর্তি ছিল। আর আজ (৬ আগস্ট) আনুমানিক ৯টার সময় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়েছে।”

তিনি আরো লিখেছেন, “জীবন কত নিষ্ঠুর, ফুল ফোটার আগেই ঝড়িয়ে দেয়। কত স্বপ্ন, কত উদ্দীপনা নিয়ে ক্যাম্পাস আসার কথা ছিল তার। অথচ আজ সে আর নেই। কোথাও নেই। তার স্বপ্নে নেই, বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণে নেই, বাস্তবেও আর নেই।”

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ