আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) জানিয়েছে,  ইসরায়েল ইরানে চালানো হামলার সময় দেশটির অন্তত ১৪ জন বিজ্ঞানীকে লক্ষ্য করে হত্যা করেছে। নিহতদের মধ্যে রসায়নবিদ, পদার্থবিদ এবং প্রকৌশলীরাও ছিলেন।

বার্তা সংস্থাটি ফ্রান্সে নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত জোশুয়া জারকার বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে। বুধবার (২৫ জুন) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।

ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত দাবি করেছেন, এই হত্যাকাণ্ডগুলোর ফলে ইসরায়েলি ও মার্কিন বোমা হামলায় অবশিষ্ট থাকা পারমাণবিক অবকাঠামো এবং উপকরণ থেকে ইরানের অস্ত্র তৈরি করা ‘প্রায়’ অসম্ভব হয়ে পড়বে।

আরো পড়ুন:

ইরানের হামলার আগে কাতারের ঘাঁটি থেকে সৌদিতে যুদ্ধবিমান ও রসদ সরিয়ে নেয় যুক্তরাষ্ট্র

ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধবিরতিতে কাতারের ‘কূটনৈতিক বিজয়’

তিনি বলেন, “পুরো দলটি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ায় ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি বেশ কয়েক বছর পিছিয়ে যাবে।”

এপি জানিয়েছে, সোমবার জারকা এই মন্তব্য করেছেন। আর পরদিন মঙ্গলবার ইরানি টেলিভিশন জানিয়েছে, আরেকজন পারমাণবিক বিজ্ঞানী মোহাম্মদ রেজা সেদিঘি সাবের ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন। ১৩ জুনের এক হামলায় তার ১৭ বছর বয়সী ছেলে নিহত হলেও তখন তিনি বেঁচে গিয়েছিলেন।

তবে জারকার এই দাবির পরও বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরানের আরো বিজ্ঞানী আছেন যারা নিহতদের শূন্যতা পূর্ণ করতে পারেন এবং এই হত্যাকাণ্ড দেশটির পারমাণবিক কর্মসূচিকে সাময়িকভাবে পিছিয়ে দিতে পারলেও তা পুরোপুরি থামাতে পারবে না।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র ইসর য় ল ইসর য় ল

এছাড়াও পড়ুন:

এআই দাবা প্রতিযোগিতায় মাস্কের গ্রোককে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন ওপেনএআই

বিশ্বের সেরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দাবাড়ু নির্ধারণে আয়োজিত আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে শিরোপা জিতেছে চ্যাটজিপিটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওপেনএআই। ফাইনালে তারা হারিয়েছে ইলন মাস্কের এআই মডেল গ্রোক ৪–কে।

দাবা দীর্ঘদিন ধরে কম্পিউটারের সক্ষমতা যাচাইয়ের অন্যতম মানদণ্ড হিসেবে বিবেচিত। আধুনিক দাবা সফটওয়্যার এখন বিশ্বের সেরা মানব-দাবাড়ুকেও অনায়াসে হারাতে পারে। তবে এবারের প্রতিযোগিতা ছিল ভিন্নধর্মী। এখানে অংশ নেওয়া এআই মডেল বিশেষভাবে দাবার জন্য তৈরি নয়। সাধারণত এগুলো নিত্যদিনের নানা কাজে ব্যবহারের জন্য তৈরি করা হয়েছে। পুরো টুর্নামেন্টে অপরাজিত থাকা ওপেনএআইয়ের ওথ্রি মডেল ফাইনালে মাস্কের প্রতিষ্ঠান এক্সএআইয়ের গ্রোক ৪–কে হারিয়ে শিরোপা নিশ্চিত করে। এই জয় দুই প্রতিষ্ঠানের চলমান প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে আরও উসকে দিয়েছে।

ওপেনএআইয়ের প্রধান নির্বাহী স্যাম অল্টম্যান ও ইলন মাস্ক দুজনই দাবি করে আসছেন, তাঁদের সর্বশেষ এআই মডেলই বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত। তৃতীয় স্থানে রয়েছে গুগলের মডেল জেমিনি। ওপেনএআইয়ের আরেকটি মডেলকে হারিয়ে এই অবস্থান অর্জন করেছে জেমিনি। চেজ ডটকমের প্রতিবেদক পেদ্রো পিনহাতা বলেন, ‘সেমিফাইনাল পর্যন্ত মনে হয়েছিল, গ্রোক ৪–কে থামানোর মতো কেউ নেই। কিছু দুর্বল মুহূর্ত থাকলেও এক্সএআইয়ের এআই ছিল সবচেয়ে শক্তিশালী দাবাড়ু। কিন্তু শেষ দিনের খেলায় সেই ধারণা ভেঙে যায়। ফাইনালে গ্রোকের ‘ভুলভরা’ খেলার সুযোগ নিয়ে ওথ্রি টানা কয়েকটি নিশ্চিত জয় তুলে নেয়।

দাবা গ্র্যান্ডমাস্টার হিকারু নাকামুরা তাঁর সরাসরি সম্প্রচারে মন্তব্য করেন, গ্রোক অনেক ভুল করেছে, কিন্তু ওপেনএআই একটিও করেনি।

এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে গুগলের মালিকানাধীন প্ল্যাটফর্ম ক্যাগলে। এ প্ল্যাটফর্মে ডেটা বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন প্রতিযোগিতার মাধ্যমে তাঁদের সিস্টেম পরীক্ষা ও মূল্যায়ন করেন। তিন দিনব্যাপী এই টুর্নামেন্টে অংশ নেয় আটটি বড় ভাষা মডেল, অ্যানথ্রপিক, গুগল, ওপেনএআই, এক্সএআই ছাড়াও চীনের ডিপসিক ও মুনশট এআই। এআই ডেভেলপাররা সাধারণত ‘বেঞ্চমার্ক’ পরীক্ষা ব্যবহার করে মডেলের যুক্তি প্রয়োগ, কৌশল নির্ধারণ বা প্রোগ্রামিং দক্ষতা যাচাই করেন। দাবার মতো জটিল, নিয়মনির্ভর কৌশলভিত্তিক খেলা এ ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয় মডেলের লক্ষ্য অর্জনের সক্ষমতা পরিমাপের জন্য। অর্থাৎ প্রতিপক্ষকে হারিয়ে জয়লাভ।

গুগলের এআই ল্যাব ডিপমাইন্ডের তৈরি ‘আলফাগো’ ২০১০–এর দশকের শেষ দিকে মানব গো চ্যাম্পিয়নদের একের পর এক হারিয়ে আলোচনায় আসে।  ডিপমাইন্ডের সহপ্রতিষ্ঠাতা স্যার ডেমিস হাসাবিস নিজেও একসময় ছিলেন দাবার বিস্ময় প্রতিভা। অন্যদিকে ১৯৯৭ সালে আইবিএমের সুপারকম্পিউটার ‘ডিপ ব্লু’ তৎকালীন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন গ্যারি কাসপারভকে হারিয়ে প্রযুক্তি–দুনিয়ায় সাড়া ফেলে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ