ইসরায়েলের সঙ্গে ইরানের সাম্প্রতিক সংঘাত শুরুর পর এই প্রথমবারের মতো জনসমক্ষে এসেছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। গতকাল শনিবার তেহরানে ইমাম খোমেইনি মসজিদে পবিত্র আশুরা উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তাঁকে দেখা গেছে।

ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত ভিডিওতে দেখা যায়, খামেনি মসজিদে আসা ব্যক্তিদের অভ্যর্থনা জানাচ্ছেন। তিনি শীর্ষ ধর্মীয় নেতা মাহমুদ কারিমিকে ইরানি দেশাত্মবোধক গান ‘ও ইরান’ গাইতে উদ্বুদ্ধ করছিলেন।

সম্প্রতি ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সংঘাত চলাকালে তাঁকে একটি রেকর্ড করা ভিডিও বার্তায় সর্বশেষ দেখা গিয়েছিল। তখন গুঞ্জন উঠেছিল, তিনি বাংকারে আত্মগোপনে আছেন। ওই সংঘাতে ইরানের শীর্ষ পর্যায়ের কয়েকজন সেনা কর্মকর্তা ও পরমাণুবিজ্ঞানী নিহত হন।

গত ১৩ জুন ইসরায়েল হঠাৎ করে ইরানের পরমাণু ও সেনাঘাঁটিতে হামলা করে। এরপর ইরানও পাল্টাহামলা চালায় ইসরায়েলের দিকে। ২২ জুন ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালানোর মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রও সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে। ১২৫টি সামরিক বিমান ব্যবহার করে তারা ফোর্দো, নাতাঞ্জ ও ইসফাহান পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়। এ সংঘাত ১২ দিন ধরে চলেছে। ইরানের বিচার বিভাগ জানিয়েছে, ১২ দিনের এই সংঘাতে ৯ শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন।

আরও পড়ুনখামেনিকে একহাত নিলেন ট্রাম্প, ইরানে আবারও হামলার হুমকি২৮ জুন ২০২৫

গতকাল খামেনির প্রকাশ্যে আসার বিষয়টি ছিল ইরানি সংবাদমাধ্যমের প্রধান খবর। তাঁর অনুসারীরা টেলিভিশনে তাঁকে দেখে আনন্দ প্রকাশ করছেন—এমন দৃশ্যও দেখা গেছে।

এর আগে ২৬ জুন প্রচারিত এক রেকর্ড করা ভাষণে খামেনি বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আহ্বান সত্ত্বেও ইরান ইসরায়েলের কাছে আত্মসমর্পণ করবে না।

আরও পড়ুন সহযোগিতা স্থগিত করার পর ইরান ছাড়লেন আইএইএর পরিদর্শকেরা১৮ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল র

এছাড়াও পড়ুন:

শূন্য সুখের শহর

আকাশের ঠিকানায় চিঠি লেখার মন্ত্রটা যখন পেয়েছি, তত দিনে রুদ্র ঘর বেঁধে ফেলেছে আকাশেরই ঠিকানায়। আর আমি মাত্র রাঙা কৈশোরের দিকে হাঁটছি, পথ পুরোটা ফুরোয়নি। কেবল ‘খোলসের আবরণে মুক্তোর সুখ’ লুকানো শিখে ফেলার চেষ্টা করে যাচ্ছি। সেই তখন থেকেই ‘ভালো আছি বা ভালো থেকো’ বলার জন্য আকাশকেই বেছে নিয়েছিলাম একমাত্র ঠিকানা হিসেবে। আর এখন এই চটজলদি বার্তার যুগে তো সবার সঙ্গে সম্পর্কগুলোই হয় খুব পানসে; নয় অকারণে জটিল। সম্পর্কগুলোই যেখানে অস্থির, চিঠি লেখা সেখানে পুরোটাই এক বাহুল্য অথবা সংকোচ। ঠিকানাই–বা জানি কজনের? আর ডাকপিয়নই–বা কই যে পরম মমতায় এই চিঠি পৌঁছে দেবে কারও গন্তব্যে? তারপরেও একটা চিঠি লিখতে মন চাইল। কী আশ্চর্য চিঠি লেখার মতো কেউ কোথাও নেই। কারও আর সময় নেই, একটা চিঠির অপেক্ষায় থাকবে। যত্ন করে হলুদ খামটা ছিঁড়ে আস্তে আস্তে ভাঁজ খুলে মেলে ধরবে কারও কথার মালায় সাজানো এক টুকরো কাগুজে বায়োস্কোপ।

যে একটি নগরে দুজন থাকাটাই ছিল একটিমাত্র সুখ। সেই সুখের খঞ্জনা ছেড়ে এত দূরে এসে দেখি, বহু কিছুর ভিড়ে সুখ এখানে কেবলই শূন্য। এ এক শূন্য সুখের শহর।

সে বাস্তবে কেউ থাকুক বা না থাকুক, আমার কল্পনার রুদ্রকে লিখতে বাধা কই? সে পড়ুক বা না পড়ুক, এই উদয়পদ্মের শহর থেকে না হয় একদিন এই চিঠি পৌঁছে যাবে তার আকাশের ঠিকানায়। যে শহরে এত দিন কাছাকাছি থেকেও ‘কত দিন দেখা হয়নি’ আমাদের প্রধানতম আক্ষেপ। সে শহর ছেড়ে হাজার মাইল দূরে আসার পর মনে হলো, চাক্ষুস না হোক, কাগজে–কলমে অন্তত দেখাটা হোক। ফুল, পাখি আর মিষ্টি বকুলের জন্য ‘ভিতরে বাহিরে অন্তরে অন্তরে’ রাখা শুভকামনা পৌঁছে যাক আমাদের অঞ্জনা নদীতীরের খঞ্জনা গ্রামের মতো নগরে। যে একটি নগরে দুজন থাকাটাই ছিল একটিমাত্র সুখ। সেই সুখের খঞ্জনা ছেড়ে এত দূরে এসে দেখি, বহু কিছুর ভিড়ে সুখ এখানে কেবলই শূন্য। এ এক শূন্য সুখের শহর।

নিউইয়র্ক শহরে প্রথমবার এসেছিলাম ঠিক বছর দশেক আগে। সারা দিনের জন্য। সেদিন একঝলক দেখে মনে হয়েছিল একে উদয়পদ্মের শহর। সেদিন যে এসেছিলাম, আসার কথা ছিল তারও বছর দুয়েক আগে একটু লম্বা সময়ের জন্য, একটা ফেলোশিপ নিয়ে। কিন্তু ওই যে, মায়া, খঞ্জনার সুখ। শেষ মুহূর্তে মায়ায় পড়ে আর আগানো হলো না। তবে মনে রয়ে গিয়েছিল। সে সময় এলে কোথায় আবাস হতো, কোথায় অফিস হতো, সে ছবিগুলো মনের ভেতর রয়ে গিয়েছিল বলেই সেবার দিন ভ্রমণে আসা।

নিউইয়র্ক শহরে প্রথমবার এসেছিলাম ঠিক বছর দশেক আগে। সারা দিনের জন্য। সেদিন একঝলক দেখে মনে হয়েছিল একে উদয়পদ্মের শহর। সে সময় এলে কোথায় আবাস হতো, কোথায় অফিস হতো, ভেবে দিন ভ্রমণে আসা।

এবার যখন এলাম, শরীরটা এল বটে, মনটা রয়ে গেল আমার সেই মায়া জড়ানো, স্মৃতি মাখানো ছোট্ট বসতঘরেই। যে ঘরের পরতে পরতে জমা ধূলিও আমার চেনা, আপন। যে ঘরের জানালার পর্দাটা, দরজার চৌকাঠটা, বেসিনের আয়নাটাতেও গল্প লেগে আছে। আমাদের নিজস্ব গল্প। সেই সব অজস্র গল্পকে তালাবন্ধ করে যখন এ শহরে পৌঁছালাম, তখন শহরজুড়ে ফুটে আছে রংবেরঙের টিউলিপ। আর টিউলিপ থেকে চোখ তুলে তাকালেই সাদা গোলাপি চেরিতে তখন মোহনীয় বসন্ত। যেন ফুলের শহর। চেরি ঝরার সময় দ্রুতই চলে এল, চেরি যখন যাই যাই করছে, তখন দেখি লাল ইটের বাড়িগুলোর ফ্রন্ট ইয়ার্ডে মানুষসমান উঁচু ঝোপে ঢেলে ফুটে আছে বাগানবিলাসের মতো একটা লাল গোলাপি ফুল। কোথাও–বা লম্বা গাছে ফুটেছে সাদা ঝিরঝিরে ফুল, যার গন্ধে মনে পড়ে হাস্নাহেনার কথা। অথচ এদের কারও নাম জানি না। এদের সঙ্গে দেখাই যে হলো প্রথমবার। ঘরের কাছে পার্কে হাঁটতে গেলে দেখি বকুল ফুলের মতো ফুল ফুটেছে। সে-ও আমার অচেনা। তবে চেনা ফুলও পেয়েছি, যার নাম গোলাপ। চেরি আর টিউলিপ যেই না উধাও হলো, সেই একেবারে উজাড় করে ফুটে উঠল গোলাপ। এখানে, সেখানে, যেখানে যেভাবে পারল। এখন গোলাপও বলছে যাই। আর সপ্তাহখানেক ধরে মাথা উঁচু করে জাগছে উদয়পদ্মরা।

প্রথম অস্থায়ী ঠিকানা এ দেশের যিনি প্রধান ব্যক্তি, তাঁর বিশাল সাদা বাড়ির কাছাকাছি এলাকায়

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রথমবারের মতো রাষ্ট্রীয়ভাবে লালন স্মরণোৎসব, মেলা শুরু শুক্রবার
  • জবিতে প্রথমবার স্নাতকোত্তর থিসিসে ৫০ লাখ টাকা সহায়তা
  • ৩৬ বছরে প্রথমবার ব্রাজিলকে হারাল জাপান
  • বিশ্বকাপের টিকিট কেটে ইতিহাস গড়ল মাত্র ৫ লাখ জনসংখ্যার দেশ কেপ ভার্দে
  • ব্রাজিলকে বিশ্বকাপ জিতিয়ে ‘ফার্স্ট বয়’ হতে চান আনচেলত্তি
  • এমএলএস যেন মেসির রাজত্ব
  • শূন্য সুখের শহর
  • কাঁদতে কাঁদতে রেললাইনে বসেন তরুণ, ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু