গত সপ্তাহে নির্বাচন কমিশন ‘সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা ২০২৫’–এর খসড়া প্রকাশ করে ১০ জুলাইয়ের মধ্যে এ বিষয়ে নাগরিকদের মতামত আহ্বান করেছে। নির্বাচনের প্রস্তুতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এই আচরণবিধি, যা প্রতিযোগিতার মাঠকে সবার জন্য সমান করতে প্রয়োজন।

আচরণবিধিতে খুব বেশি নতুনত্ব নেই, যদিও কিছু পরিবেশবান্ধব পদক্ষেপের ওপর বাড়তি গুরুত্ব নজরে পড়ে। নির্বাচনী প্রচারে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারের প্রসঙ্গ শেষ মুহূর্তের সংযোজন না হলেও খুব সুচিন্তিত নয়।

সবচেয়ে বিস্ময়ের কথা, এই আচরণবিধিতে এআই প্রযুক্তি ব্যবহারের বিষয়ে স্পষ্ট করে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। কিংবা কমিশনের তরফ থেকে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, তার কোনো ধারণা মেলে না।

অথচ বিশ্বের সাম্প্রতিক নির্বাচনগুলোয় এআইয়ের অপব্যবহার বিপজ্জনক রূপ নিয়েছে। আচরণবিধির অন্যান্য বিষয়ে কিছু বলার আগে তাই এআইয়ের সম্ভাব্য অপব্যবহারের ঝুঁকির কথাই বলা দরকার।

২.

গত ২ জুন নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকার আন্তর্জাতিক সংস্করণে ইতিমধ্যেই ৫০টি দেশের নির্বাচনে এআই কী ধরনের হুমকি তৈরি করেছিল, তা উল্লেখ করে একটি বিশদ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।

‘এআই গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতে শুরু করেছে’ (এআই কনটেন্ট ইজ স্টার্টিং টু ওয়ার ডাউন ডেমোক্র্যাসি) শিরোনামের এ প্রতিবেদনে সর্বসাম্প্রতিক দৃষ্টান্ত হিসেবে কানাডার নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নিকে শিশু যৌননিপীড়ক জেফরি এপস্টেইনের সঙ্গে সুইমিংপুলে একসঙ্গে সাঁতার কাটার বানোয়াট ছবি এক্স (সাবেক টুইটার) প্ল্যাটফর্মে ছড়িয়ে পড়ার কথা তুলে ধরা হয়েছে।

মার্ক কার্নির বিরুদ্ধে এ অপপ্রচার কাজে আসেনি। কিন্তু রোমানিয়ায় গত বছর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এআইয়ের অপব্যবহার ঘটেছিল দেশটির বাইরে রাশিয়ার একটি নেটওয়ার্ক থেকে এবং শেষ পর্যন্ত আদালত সেই নির্বাচন বাতিল করে দেন।

এরপর দেশটিকে গত মার্চে নতুন করে নির্বাচন আয়োজন করতে হয় এবং আগের নির্বাচনের বিজয়ী আর প্রার্থী হতে পারেননি। এআইয়ের অপব্যবহারের কারণে নির্বাচন বাতিল হওয়ার ঘটনা বিশ্বে এটিই প্রথম হলেও শেষ যে নয়, সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে কোনো দ্বিমত নেই।

৩.

২০২৪ সাল ছিল বিশ্বজুড়ে নির্বাচনের বছর। প্রায় ২০০ কোটি মানুষ গত বছর তাঁদের ভোটাধিকারচর্চার সুযোগ পেয়েছিলেন। সুইজারল্যান্ডের একটি স্বাধীন গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ‘ইন্টারন্যাশনাল প্যানেল অন দ্য ইনফরমেশন এনভায়রনমেন্ট’ তাদের গবেষণার ভিত্তিতে বলেছে, এসব নির্বাচনের ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে এআই ব্যবহৃত হয়েছে। তবে তার সবটাই যে নেতিবাচক বা ক্ষতিকর, তা নয়।

জরিপে তারা দেখেছে, ২৫ শতাংশ এআইয়ের ব্যবহার প্রার্থীরা স্বচ্ছতার সঙ্গে করেছেন মূলত বিশেষ বিশেষ জনগোষ্ঠীর কাছে তাঁদের বক্তৃতা-বিবৃতি স্থানীয় ভাষা ও উচ্চারণরীতি অনুযায়ী ভাষান্তরের জন্য। কিন্তু প্রতিদ্বন্দ্বীর অনিষ্ট করে সুবিধা নেওয়ার চেষ্টাই হচ্ছে প্রধান প্রবণতা।

এআইকে হাতিয়ার হিসেবে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবহারে আমরাও যে পিছিয়ে নেই, তা স্থানীয় বিশেষজ্ঞ ও গবেষকেরা ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করে তুলে ধরেছেন।

গত ৩০ জুন ডিসমিসল্যাব তাদের যে গবেষণার ফল প্রকাশ করেছে, তা খুবই সংক্ষিপ্ত সময়ের। ১৮ থেকে ২৮ জুন, মাত্র ১০ দিনে ফেসবুকের বিভিন্ন পেজ ও গ্রুপ থেকে ৭০টি ভিডিও সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে তারা নিশ্চিত হয়েছে, এগুলো এআই দিয়ে তৈরি।

এসব রাজনৈতিক প্রচারমূলক ভিডিও বিশ্লেষণে তারা দেখেছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই উল্লেখ করা হয়নি যে এগুলো এআই দিয়ে তৈরি। ভিডিওগুলো অনেকটা নিখুঁত। ডিজিটাল সাক্ষরতার অভাবের কারণে এসব ভিডিওতে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের বিভ্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা তাই প্রবল।

ডিসমিসল্যাবের বিশ্লেষণ করা ভিডিওগুলো ২ কোটি ৩০ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে (ভিউ)। ভিডিওগুলোয় ব্যবহারকারীরা রিঅ্যাকশন (প্রতিক্রিয়া) দিয়েছেন ১০ লাখের বেশি।

ডিসমিসল্যাব তাদের গবেষণায় বলছে, প্রতিটি ভিডিও গড়ে প্রায় ৩ লাখ ২৮ হাজারবার দেখা হয়েছে এবং গড়ে ১৭ হাজার রিঅ্যাকশন পেয়েছে, যা এসব আধেয়র (কনটেন্ট) বিস্তার ও প্রভাব সম্পর্কে ইঙ্গিত দেয়।

ডিসমিসল্যাবের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি, ইসলামী আন্দোলন—কেউই এ থেকে পিছিয়ে নেই। এআই ব্যবহারের সবচেয়ে বড় সুবিধা, এর জন্য বেশি জনশক্তির প্রয়োজন নেই, দরকার প্রযুক্তিজ্ঞানের অধিকারী কিছু সৃজনশীল কর্মী ও বিনিয়োগ।

গোপনে বা প্রবাস থেকে কার্যক্রম পরিচালনাকারী আওয়ামী লীগও এ কাজে পিছিয়ে নেই। ভবিষ্যতে যে তা আরও বাড়বে, সে কথা নিশ্চিত করে বলা যায়। কেননা ফ্যাসিবাদী শাসনের পতনের পরপর তাদের নেতা–কর্মী ও সমর্থকদের একটি বড় অংশ পালিয়ে প্রতিবেশী ভারত ও ইউরোপ-আমেরিকায় আশ্রয় নিয়েছে। রাজনৈতিক প্রচারণায় প্রযুক্তির ব্যবহারে ভারত, বিশেষ করে শাসক দল বিজেপি অনেক দিন ধরেই এগিয়ে এবং তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় আওয়ামী লীগের তৎপরতা যে বহুগুণে বাড়বে, তা সহজেই অনুমেয়।

৪.

গণতন্ত্রে ‘নির্বাচন’ হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপলক্ষ, যখন ভোটার সজ্ঞানে তাঁর পছন্দ বেছে নিতে পারেন। কিন্তু তাঁকে যদি বিভ্রান্ত করা যায়, তাহলে তা আর জেনেশুনে বাছাই হবে না, হবে গুরুতর ভুল।

মনে হতে পারে, পাশ্চাত্যের দেশগুলো যেখানে এআইয়ের বিপদ থেকে তাদের নির্বাচনব্যবস্থা ও গণতন্ত্রকে রক্ষায় হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে আমাদের আর কী করার আছে? উত্তর: আছে। আমাদেরও অনেক কিছু করার আছে। ঝুঁকি পুরোপুরি দূর করা না গেলেও অনেকটাই কমিয়ে আনা যাবে। নির্বাচন কমিশনকে তাই এখনই এ বিষয়ে বিশেষভাবে নজর দিতে হবে।

পোস্টার নিষিদ্ধ করা, ব্যানারের মাপ ঠিক করে দেওয়া কিংবা একরঙা প্রচারপত্রের বাধ্যবাধকতা নির্বাচনী প্রতিযোগিতায় সমতা ও ন্যায্যতার জন্য জরুরি ঠিকই, কিন্তু তার চেয়ে বেশি জরুরি এআইয়ের অপব্যবহারের মাধ্যমে বিভ্রান্তি সৃষ্টি ও প্রতিপক্ষকে যেনতেনভাবে ঘায়েল করার অপচর্চা ঠেকানো।

আমরা আগের অন্তত দুটি নির্বাচনে দেখেছি, অন্তর্দলীয় কোন্দলেও প্রতিদ্বন্দ্বীর বিরুদ্ধে ভুয়া আধেয় ছড়ানো হয়েছে। ভোটের আগের রাতে কণ্ঠ নকল করা অডিও ছড়িয়ে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ভুয়া ঘোষণা প্রচার করা হয়েছে। এখন সেই বিপদ বহুগুণে বেড়েছে।

মেটা, গুগল, মাইক্রোসফট, এক্সসহ প্রায় সব বড় প্রযুক্তি কোম্পানি ও প্ল্যাটফর্ম নিত্যনতুন সুবিধাসহ গ্রাহকবান্ধব এআই টুলস সহজলভ্য করে চলেছে। ডিপফেক ভিডিও তৈরি এখন এতটাই সহজ হয়েছে যে প্রার্থী ও দলগুলোকে এখন সারাক্ষণ আতঙ্কে কাটাতে হবে।

৫.

এআই ব্যবহার বন্ধ করা যাবে না, এটা মোটামুটি নিশ্চিত। কিন্তু অপব্যবহার রুখতেই হবে, অন্তত সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। প্রার্থী বা দলের পক্ষে ইতিবাচক বা প্রতিপক্ষের জন্য নেতিবাচক প্রচারের লক্ষ্যে দেশের ভেতরে ও বাইরে যে কেউ এআই ব্যবহার করলে, তার স্পষ্ট ঘোষণা সেই কনটেন্টে থাকতে হবে, না হলে প্রার্থী ও দলকে এর জন্য দায় নেওয়ার বাধ্যবাধকতা আরোপ করা দরকার।

প্রতিদ্বন্দ্বীর বিরুদ্ধে মিথ্যাচার, অপপ্রচার, কুৎসা কিংবা মানহানিকর কিছু করা হলে তা নির্বাচনী অপরাধ হিসেবে গণ্য করে তার তাৎক্ষণিক সাজার বিধান রাখা প্রয়োজন।

এসব অপরাধ চিহ্নিত করায় কমিশনের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা অর্জন এত অল্প সময়ে সম্ভব নাও হতে পারে, এ বাস্তবতা মেনে নিয়ে কমিশনের উচিত হবে প্রযুক্তি খাতের বিশেষজ্ঞদের সহায়তা নেওয়া।

দেশে যাঁরা প্রযুক্তি খাতের ভালো–মন্দ নিয়ে কাজ করছেন, তাঁদের একত্র করে একটি সমন্বিত কৌশল নির্ধারণ করা প্রয়োজন। সে জন্য প্রবাসী প্রযুক্তিবিদদের সাময়িক সময়ের জন্য দেশে এনে অথবা দূরযোগাযোগের মাধ্যমে কাজে লাগানোর উদ্যোগ এখনই নেওয়া উচিত।

বড় প্রযুক্তি প্ল্যাটফর্মগুলোর সহযোগিতাও এ ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। সে জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে যেমন বিশেষ উদ্যোগ নিতে বলা যায়, তেমনি কমিশন নিজেও উদ্যোগী হয়ে এসব কোম্পানির প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানিয়ে তাঁদের দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দিতে পারে।

ফেসবুকের মূল কোম্পানি মেটা, এক্স, মাইক্রোসফট, গুগল, ইউটিউব—এদের সবারই অপতথ্য, ভুয়া তথ্য বা কুতথ্য প্রচার ঠেকানো বা অপসারণের অঙ্গীকার রয়েছে। কিন্তু তারা যে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোয় তা প্রতিপালনে অনেকাংশেই ব্যর্থ হচ্ছে, সেটা আমরা প্রতিনিয়তই প্রত্যক্ষ করছি।

কিন্তু উন্নত ও ধনী দেশগুলোর মতো তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত কিংবা জরিমানার মতো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি প্রধানত আমাদের দুর্বলতার কারণে। এখন তা কাটিয়ে উঠতে হবে।

৬.

গত বছর ওপেনএআইয়ের বার্ষিক প্রতিবেদনে তারা রুয়ান্ডা, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় পার্লামেন্ট, জার্মানি, ফ্রান্স ও ইতালির নির্বাচনে হস্তক্ষেপের চেষ্টা কীভাবে ব্যর্থ করে দিয়েছে, তার ওপর আলোকপাত করেছে।

গত বছরের মে মাসে ইসরায়েলি একটি বাণিজ্যিক কোম্পানি ভারতের নির্বাচন নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়া মন্তব্য উৎপাদনের চেষ্টা করলে ওপেনএআই কীভাবে তা নস্যাৎ করে দিয়েছিল, সে কথাও তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে। জিরো-জিনো নামে ওপেনএআই ওই অপারেশন চালিয়েছিল।

বহুজাতিক প্রযুক্তি প্ল্যাটফর্মগুলোর কাছ থেকে নির্বাচন ও গণতন্ত্রের জন্য সহযোগিতা আদায় করা তাই একেবারে দুঃসাধ্য কিছু নয়।

এআইয়ের অপব্যবহার যদি আমাদের গণতন্ত্রে প্রত্যাবর্তনের ধারাকে বিভ্রান্তির গহ্বরে ঠেলে দিয়ে ভবিষ্যৎকে আরও অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তার মুখে ঠেলে দেয়, তাহলে তার দায় কিন্তু নির্বাচন কমিশনকেও বহন করতে হবে।

৭.

সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারের বিষয়েও নীতিমালাটি অসম্পূর্ণ। মনে রাখা দরকার, সোশ্যাল মিডিয়ার বিজ্ঞাপনের একটা বড় অংশ প্রবাসীদের পক্ষ থেকে হতে পারে, আবার বিদেশি রাষ্ট্র বা কোনো প্রতিষ্ঠানও করতে পারে।

সুতরাং সেগুলো নিয়ন্ত্রণের উপায়ও উদ্ভাবনের কথা ভাবা দরকার। আর নির্বাচনী ব্যয়ের সবটাই ব্যাংকিং মাধ্যমে করা বাধ্যতামূলক করা উচিত, যাতে তা খুঁজে বের করা ও তার নিরীক্ষা সম্ভব হয়, না হলে কালোটাকার ব্যবহার বন্ধ করা যাবে না।

কামাল আহমেদ সাংবাদিক

মতামত লেখকের নিজস্ব

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অপব যবহ র র প ল য টফর ম এআই ব যবহ ব যবহ র র গণতন ত র আচরণব ধ গত বছর র জন য আম দ র র একট দরক র

এছাড়াও পড়ুন:

রাজনীতির নীতিহীনতা

আমাদের দেশে পার্টির শেষ নেই। নানান পার্টি। একেকটির একেক চরিত্র—চান্দা পার্টি, মলম পার্টি, অজ্ঞান পার্টি, গ্যাঞ্জাম পার্টি, ফার্স্ট পার্টি, থার্ড পার্টি, ব্যান্ড পার্টি। আছে নানান নামের পলিটিক্যাল পার্টি। এদের মধ্যে আবার ওয়ানম্যান পার্টিও আছে। তবে যে হারে পার্টির সংখ্যা বাড়ছে, তাতে ভবিষ্যতে নতুন পার্টির নাম খুঁজে পাওয়া কঠিন হবে।

এমনই এক পার্টির নেতার কল্পিত সাক্ষাৎকার, যেখানে সাংবাদিকের প্রথম প্রশ্ন ছিল, ‘এই যে আপনি পার্টি করেছেন, সারা দেশের মানুষ তো আপনাকে চিনবে না।’ নেতা সগর্বে উল্টো প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন—

: আপনি কোন যুগে বাস করেন, ভাই? আপনি খালি বলেন, আপনিও একটা পার্টির জন্ম দেবেন, দেখবেন কয়েক মিনিটের মধ্যে কয়েক শ ক্যামেরা হাজির হয়ে গেছে। ব্রেকিং নিউজ হবে, বিভিন্ন চ্যানেলের স্ক্রলে আপনার নাম যাবে, টক শোতে ঘন ঘন ডাক পড়বে। প্রচারের জন্য আপনাকে কিছুই করতে হবে না, তারাই নানা রং লাগিয়ে সুন্দর সুন্দর শিরোনামে নিউজের সঙ্গে সঙ্গে কনটেন্টও ছাড়বে। সারা দেশে পয়সা ছাড়া খবর পৌঁছে যাবে।

: কিন্তু রাজনীতিতে তো খরচাপাতি আছে?

: এইটাও কোনো সমস্যা নয়, মতলববাজ ব্যবসায়ীরা বসে আছে ইনভেস্ট করার জন্য। সুতরাং টাকার অভাব হবে না।

: তারা টাকা দেবে কেন, তাদের লাভ?

: তারা দান করবে, আপনি তাদের কুকীর্তির লাইসেন্স প্রদান করবেন।

: কিন্তু দল করে আপনার লাভ?

: আমি নেতা হলাম। কথা বললেই নানান রঙের কয়েক ডজন মাইক্রোফোন আমার সামনে সাজানো থাকবে। ম্যালা চ্যানেল তো, ওদেরও খবর দরকার। ভোট পাই না পাই, আজকাল কিন্তু ‘ওয়ানম্যান পার্টি’রও কদর আছে। একসময় এদের অনেকে মন্ত্রীও ছিলেন। ওনারা জোটে যান, তবে ভোটে হারেন।

গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনের বিকল্প নেই। তাই ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে নীতিমান রাজনীতিবিদদের এগিয়ে আসতে হবে কথা নয়, কাজ দিয়ে। যাতে সুসময়েই একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে

: কিন্তু রাজনীতি করতে গিয়ে যদি সমস্যায় পড়েন?

: সুর চেঞ্জ করে ফেলব। স্ট্রেট পল্টি।

: নির্বাচন এলে কী করবেন?

: এই চামড়ার মুখে যত প্রতিশ্রুতি দেওয়া সম্ভব সব দেব।

: কিন্তু প্রতিশ্রুতি যদি রক্ষা না করেন?

: জনগণ জানে, নির্বাচনের আগে অনেকেই অনেক কথা বলে। ওই সব মনের কথা নয়, মুখের কথা। জনগণ এসব বিশ্বাস করে না।

: জনগণ কি আপনার সঙ্গে আছে?

: আছে কি না জানি না, তবে সবাই সবকিছুই জনগণের ওপর দিয়া চালিয়ে দেয়, আমিও দিলাম। রাজনীতির নীতি কজন মেনে চলে?

আসলেই রাজনীতি করলে একটি নীতির প্রশ্ন আসে। সেই নীতির প্রতি কতজনের প্রীতি আছে, কতজনের ভীতি আছে, আর কজন সেই নীতিকে ইতি করে দিয়েছেন, সেই ইতিহাস অনেকেরই জানা।

যাঁরা এই রাজনীতিতে নেতৃত্ব দেন, তাঁরা নেতা। তবে এই নেতা ও নীতিকে অনেকে সমার্থক করে ফেলেন। মনে রাখতে হবে, নেতার কথাই নীতি নয়, নীতির ধারক হচ্ছেন নেতা। তবে আমাদের এখানে অনেক নেতার প্রিয় নীতির নাম দুর্নীতি, যা মহামারির রূপ ধারণ করেছে।

নীতি শব্দের আগে ‘দু’ উপসর্গ যুক্ত হয়ে শব্দটি তৈরি হয়েছে। যা অন্যায়, অনিয়ম, নীতিবিরুদ্ধ, সেটাই দুর্নীতি। দুর্নীতির প্রধান কারণ হচ্ছে লোভ।

অক্সফোর্ড গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ফ্রাঙ্ক বুকম্যান এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘পৃথিবীতে প্রয়োজন মেটানোর জন্য যথেষ্ট সম্পদ রয়েছে বটে; কিন্তু সবার লোভ মেটানোর জন্য তা যথেষ্ট নয়।’ এই লোভের কারণে অনেকেই দুর্নীতিতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েন। দেখা দেয় আর্থিক বিশৃঙ্খলা। ফলে দুর্নীতির গতি আর নীতির দুর্গতি অতিশয় ক্ষতির প্রভাব ফেলে সর্বত্র। কারণ, মানুষ তাকেই ভালোবাসে, যার নীতি ও আদর্শ আছে। সে জন্য রাজনীতিতেও দেখা যায় কেউ গালি খায়, কেউ তালি পায়।

কানাডার সাবেক প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর কথা চিন্তা করুন। ভদ্রলোক প্রায় ১০ বছর শাসনক্ষমতায় ছিলেন। তারপর পদত্যাগ করলেন, কিন্তু দেশত্যাগ নয়। বরং পদত্যাগের পর তিনি নির্ভয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন সাধারণ মানুষের মতো। বিভিন্ন শপে গিয়ে কেনাকাটা করছেন। সেই ছবিও ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে। ট্রুডোর এই জীবনযাত্রা থেকে অনেক রাজনীতিবিদেরই অনেক কিছু শেখার আছে।

আমাদের দেশের রাজনৈতিক ময়দানে খুব গুরুত্বপূর্ণ নেতা কিংবা ব্যক্তির ভাষণ দেওয়ার আগে নানান বিশেষণ দেওয়া হয়, যেমন এবারে ‘ঐতিহাসিক ভাষণ’ দেবেন ‘সংগ্রামী জননেতা’, ‘বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর’, ‘জ্বালাময়ী বক্তা’...ইত্যাদি। সব বিশেষণ লিখতে গেলে লেখা বড় হয়ে যাবে। এসব শব্দ এখন আর তেমন গুরুত্ব বহন করে না।

এখন যে কারও ভাষণকে ঐতিহাসিক ভাষণ, যত ফ্যাসফেসে কণ্ঠই হোক না কেন, বলা হয় বলিষ্ঠ কণ্ঠ। তবে জ্বালাময়ী শব্দটির সঙ্গে আমি একমত। কারণ, বেশির ভাগ রাজনৈতিক ভাষণই এখন জ্বালাময়ী, যা শুনলে আমাদের শরীরে জ্বালা ধরে যায়। যদিও রাজনৈতিক এসব জ্বালাযন্ত্রণার মধ্যেই আমাদের বসবাস।

রাজনীতিতে মনোনয়ন-বাণিজ্য ও ভোট বিক্রি অত্যন্ত গর্হিত একটি দুর্নীতি। নির্বাচনী প্রচারণা যেমন ব্যয়বহুল, নির্বাচনে মনোনয়নও একটি লেনদেনভিত্তিক প্রক্রিয়া, যা একধরনের রাজনীতির নীতিহীনতা। আসছে নির্বাচন—ভয়, না জানি কোন মাত্রায় এই লেনদেন হয়!

দুর্নীতিপ্রেমিক রাজনীতিবিদেরা তাদের নানান কর্মকাণ্ডে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে এমন এক পর্যায়ে নিয়ে যায়, যা নিয়মনীতির চূড়ান্ত লঙ্ঘন। ফলে প্রতিবাদে জেগে ওঠে জনতা। আর জনতা জাগলে এই ধরাকে সরা জ্ঞান করা অরাজকদের পরাজিত হতে হয়। আর এই পরাজিত শক্তির কী পরিণতি হয়, তা তো আমরা স্বচক্ষে দেখেছিই। এসব কারণেই হলো অভ্যুত্থান, গঠিত হলো নতুন সরকার। একের পর এক চ্যালেঞ্জ এসে হাজির হয় সরকারের সামনে। দিন যতই যায়, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ছোট ছোট গোষ্ঠী নতুন নতুন দাবি নিয়ে হাজির হয়। এসব আন্দোলনকারীর কাছে যেন জিম্মি হয়ে পড়ে সরকার। জিম্মি হয় সাধারণ মানুষ।

ক্ষোভ, বিক্ষোভ, অনশন, অবস্থান, মানববন্ধন, কর্মবিরতিসহ নানান কর্মসূচিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে দেশ, দেশের অর্থনীতি, শিক্ষাব্যবস্থা, ব্যবসা-বাণিজ্য, সবকিছুই। রাজনৈতিক অচলা অবস্থা বাংলাদেশে নতুন কিছু নয়। পরিস্থিতি ঠেকাতে সিরিজ বৈঠক করেও সময়মতো সুরাহা হয় না। সাধারণ মানুষের ভোগান্তির দিকে যেন কারোরই নজর নেই। শাহবাগ থেকে যমুনা আন্দোলনের নতুন ঠিকানা।

একসময় পুলিশের গাড়ি দেখলেই আন্দোলন-মিছিল ছত্রভঙ্গ হয়ে যেত। আর এখন পুলিশ যেন দর্শক। হাতে লাঠি থাকলেও অন্যায়ের পিঠে ওঠে না। দেখে মনে হয়, বর্তমান পরিস্থিতিতে তাদের কোনো কাজ নেই। চারদিকে মবের ভয়, না জানি কখন কী হয়। এই মব কারও কাছে ভায়োলেন্স, কারও কাছে জাস্টিস। সুযোগসন্ধানীরা তৎপর। চান্দাই যেন এখন বড় ধান্দা। যে যেভাবে পারছে এই সুযোগে কার্য উদ্ধার করছে।

বৈশাখ গেল, দুটি ঈদ গেল। নানা রকম কর্মসূচি হলো। কেউ আনন্দ পেল, কেউ কষ্ট পেল, কেউ কেউ সুযোগের সদ্ব্যবহার করল। চরিত্র পাল্টানোর প্রতিযোগিতায় অনেকেই এগিয়ে গেল। দিন যতই যাচ্ছে, ‘দালাল’-জাতীয় ব্যক্তিদের জায়গা শক্ত হচ্ছে। মিশে যাচ্ছে পরিবর্তনের স্রোতে। মুখোশ পাল্টে সাজছে ভালো মানুষ। এই কাতারে শিল্পী, সাংবাদিক, আমলা, ব্যবসায়ীসহ অনেকেই আছেন। সাধারণ মানুষ তাকিয়ে তাকিয়ে এসব সার্কাস দেখছে।

এই করতে করতে শুরু হলো নির্বাচন-যুদ্ধ। ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে সরকারি অবস্থানের পক্ষ নিল কেউ কেউ। কেউ আবার চরম বিপক্ষে। গণতন্ত্রের জন্য সোচ্চার আওয়াজ। কিসের গণতন্ত্র? কেমন গণতন্ত্র? যারা গণতন্ত্রের জন্য মাঠ গরম করছে, তারা কি আচার-আচরণ কিংবা দলীয় নেতৃত্ব নির্বাচনে গণতান্ত্রিক?

কর্মীরা রাজপথে থাকে, নীতিনির্ধারণে তাদের ভূমিকা নেই। ফলে সংসদেও দেখা যায় তথাকথিত গণতন্ত্রের প্রতিফলন। রাজনৈতিক দলের কাজ কী? শাসন? দখল? দুর্নীতি? নাকি জনগণের সেবা? তারা কার কাছে জবাবদিহি করবে? জবাবদিহি শব্দটাই যেন উধাও। তাই সংসদে স্পিকারের কণ্ঠে ধ্বনিত হয় ‘হ্যাঁ’ জয়যুক্ত হয়েছে, ‘হ্যাঁ’ জয়যুক্ত হয়েছে কিংবা ‘না’ জয়যুক্ত হয়েছে, ‘না’ জয়যুক্ত হয়েছে। ‘হ্যাঁ’-কে ‘না’ বলার কিংবা ‘না’-কে ‘হ্যাঁ’ বলার সাহস কারও নেই। ফলে হাতের তালুতে আঘাত পেলেও সব শক্তি ঢেলে টেবিল চাপড়ে সম্মতি বা অসম্মতি জানায়।

ডিসেম্বরে, নাকি ডিসেম্বরের পরে নির্বাচন, এ নিয়ে তর্কবিতর্ক, শোডাউন আর টক শোর দাপটে বাজার গরম হয়ে ওঠে। কেউ বলেন বিচার সময়সাপেক্ষ আর সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। সুতরাং এর ওপর নির্ভর করে নির্বাচনের তারিখ ঠিক করা যাবে না।

ঈদের সময় ঘোষিত হলো, এপ্রিলের শুরুতে হবে নির্বাচন। ব্যস, শুরু হয়ে গেল মিটিং-মিছিল, ‘মানি না মানি না’ স্লোগান। আর কেউবা ঘোষিত সময়ের প্রতি সমর্থন প্রকাশ করলেন। কিন্তু ‘মানি না’ দলের শোডাউন বেশ জুতসই হওয়ায় জাতি চিন্তিত হয়ে পড়ল—আমাদের ভাগ্যে কি আদৌ নির্বাচন আছে? আবারও খই ফোটা শুরু হলো টক শোতে। শুধু টিভি চ্যানেলেই নয়, ব্যক্তিগত ইউটিউব চ্যানেলেও টক শো, দর্শক শো, নেতা শো, সাংবাদিক শো—শোয়ের শেষ নেই। একই ব্যক্তির নানান নামে নানান শো চলতে থাকে। মাঝেমধ্যে চিন্তা হয়, মানুষ এত কথা বলে কী করে? কারণ ব্যবসা। যত কথা তত ভিউ, যত ভিউ তত ব্যবসা। অর্থাৎ দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা যত বাড়ে, অশান্তি যত বাড়ে, টক শোর টক এবং টকারও তত বাড়ে।

একই ব্যক্তি কত ধরনের সিদ্ধান্ত দিয়ে দিচ্ছেন, কী হলে কী হবে, কী না হলে কী ঘটবে। কী উচিত, কী অনুচিত। একজন অভিনয়শিল্পীর চেয়ে ‘টক’-শিল্পীদের পর্দায় উপস্থিতি বেশি, ফলে তারাও অভিনয় তারকার মতো ‘টক’ তারকা। সময়ের পরিবর্তনে টকারও বদলেছে। কিছু পুরোনো মুখের প্রস্থান, নতুন মুখের আগমন ঘটেছে। কিন্তু হঠাৎ করেই যেন চলন্ত গাড়িতে ব্রেকের মতো সবকিছুই থেমে গেল। কারণ লন্ডনের একটি বৈঠক, যেখানে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া গেল। এই ইঙ্গিতে রাজনৈতিক রণসংগীতের সমাপ্তি ঘটল।

রাজনৈতিক তর্জনগর্জনে কিছুটা বিরতি দেখা দিলে টকাররাও চিন্তিত হয়ে পড়লেন টক শো চলবে কী করে? সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে গেলে কী নিয়ে কথা বলবেন? ইস্যু কী? অনুসন্ধানে বেরিয়ে এল এক নতুন ইস্যু। নির্বাচনের তারিখের মধ্যে খোঁজ পাওয়া গেছে দুটি শব্দ ‘যদি’ এবং ‘কিন্তু’। ব্যস, আবার গরম হয়ে উঠল টক শোর আসর। এটা যদি সেটা হয়, সেটা কিন্তু ঠিক নয়। ‘যদি’, ‘কিন্তু’ থেকে এখন আবার তারিখ নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়। শুরু হয়েছে কূটনৈতিক তৎপরতা। টক শোতে নতুন সুর।

কথায় আছে, ‘কথায় কথা বাড়ে’, কেউ আবার এই কথা ধরে ভিন্ন অর্থ করে। ‘যত মত তত পথ’—এটি একসময় ছিল সুবচন। সেই বচনে পচন ধরলে মূল অর্থের চেয়ে ভুল অর্থের আশঙ্কাই বেশি।

‘কথা কম কাজ বেশি’—বাক্যটি অনেকেই মনে রাখতে পারেন না। তাই তর্কে কেউ কারও কাছে হারেন না। অনেকে এটাও ভুলে যান যে শ্রোতাদের মধ্যেও তাঁদের চেয়ে জ্ঞানী বা গুণী মানুষ থাকতে পারে। এমন মানুষও থাকতে পারে, যাদের কাছে এসব কথার কোনো মূল্য নেই, প্রয়োজনও নেই। কারণ, তারা উদয়াস্ত জীবনসংগ্রামে ব্যস্ত।

তবে ভবিষ্যতে একটি ভেজালবিহীন নির্বাচনের সুযোগ তৈরি হয়েছে। গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনের বিকল্প নেই। তাই ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে নীতিমান রাজনীতিবিদদের এগিয়ে আসতে হবে কথা নয়, কাজ দিয়ে, যাতে সুসময়েই একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।

হানিফ সংকেত গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অবাধ ও সুন্দর নির্বাচন আয়োজনে ব্যর্থ হলে শহীদদের আত্মা কষ্ট পাবে: গয়েশ্বর
  • ‘জুলাই ঘোষণাপত্রকে’ সংবিধানের মূল নীতিতে স্বীকৃতি দেওয়ার পদক্ষেপের নিন্দা রিজভীর
  • গণতন্ত্র ব্যর্থ, আধুনিক সভ্যতা ভেঙে পড়েছে
  • ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায়ে গণতন্ত্র ধ্বংস করা হয়েছে: অ্যাটর্নি জেনারেল
  • ইন্দিরার ‘জরুরি অবস্থা’: ৫০ বছরে ভারত কী শিক্ষা পেল
  • শুল্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বিশেষজ্ঞ নিয়োগ দেওয়ার আহ্বান ফখরুলের
  • অন্তর্ভুক্তির আগে বিচার: ঐকমত্যের নামে দায়মুক্তি নয়
  • রাজনীতির নীতিহীনতা
  • এআইয়ের নকশা করা ক্যানসারের ওষুধ পরীক্ষা করা হবে মানবদেহে
  • যত দ্রুত দেশকে নির্বাচনের ট্র্যাকে ওঠানো যাবে ততই মঙ্গল: মির্জা ফখরুল