১৯৮৮ সালে মিয়ানমারে সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছিল লাখো মানুষ। ছাত্রদের হাত ধরে শুরু হওয়া সেই গণআন্দোলন দেশটির সামরিক একনায়ক নিও উইনের পদত্যাগ নিশ্চিত করলেও প্রকৃত অর্থে দেশটি কখনোই গণতন্ত্রে পৌঁছতে পারেনি। ৩৭ বছর পরও মিয়ানমারে গণতন্ত্রের জন্য লড়াই চলছে। প্রশ্ন উঠছে, এত সময়েও কেন গণতন্ত্র অধরাই রয়ে গেছে মিয়ানমারে।

মিয়ানমারের জনগণ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য বহু পথ বেছে নিয়েছে। অহিংস আন্দোলন, নির্বাচন, আন্তর্জাতিক কূটনীতি, ধর্মীয় প্রতিবাদ– এমনকি সশস্ত্র প্রতিরোধও। কিন্তু প্রতিবারই সেনাবাহিনী শক্তি প্রয়োগ করে সব উদ্যোগ দমন করেছে। ১৯৯০ সালের নির্বাচনে গণতন্ত্রপন্থি দল ঐতিহাসিক জয় পেলেও সেনাবাহিনী সেই ফলাফল মানেনি। তিন দশক পর ২০২০ সালের নির্বাচনেও একই ঘটনা ঘটেছে। বিশ্বের অনেক দেশেই এমন অহিংস বিপ্লব সফল হলেও মিয়ানমারের বেলায় দেখা গেছে সম্পূর্ণ উল্টো চিত্র। দেশটির সেনাবাহিনী কখনোই জনগণের ইচ্ছাকে মর্যাদা দেয়নি।
মিয়ানমারের রাজনৈতিক সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন বৌদ্ধ সন্ন্যাসীরাও। ২০০৭ সালের ‘স্যাফরন বিপ্লব’ যার বড় প্রমাণ। তাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনেও বর্বর হামলা চালায় সেনারা।

মিয়ানমারকে গণতন্ত্রে ফেরাতে আন্তর্জাতিক মহল থেকেও নানা চেষ্টা করা হয়েছে। পশ্চিমা দেশগুলো নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, সহযোগিতা স্থগিত করেছে। আবার কিছু সময় ‘গঠনমূলক সংলাপ’ বা ‘পরোক্ষ সহযোগিতা’র পথ বেছে নিয়েছে। কিন্তু দেখা গেছে, যেভাবেই হোক, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ক্ষমতা ছাড়ার চেয়ে দমননীতিকেই বেছে নিয়েছে। আসিয়ানের মতো জোট এই প্রশ্নে বরাবরই নীরব থেকেছে। আবার বেশির ভাগ সময়ই সেনাশাসকদের পক্ষ নিয়েছে চীন।

অবশেষে ২০২১ সালের অভ্যুত্থানের পর সাধারণ তরুণদের পাশাপাশি বিভিন্ন জাতিগত গোষ্ঠীর যুবকরা সহিংস বিদ্রোহের চেষ্টায় অস্ত্র হাতে তুলে নেয়। এই সশস্ত্র প্রতিরোধ প্রথমে বড় সাফল্য আনে। তবে চীনের হস্তক্ষেপ ও রাজনৈতিক চাপের কারণে এখন কিছুটা স্তিমিত তারা।

এত চেষ্টার পরও যখন গণতন্ত্র আসেনি, তখন স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগে, মিয়ানমারে গণতন্ত্র কি শুধুই এক স্বপ্ন? তবে মিয়ানমারের বহু নাগরিক মনে করেন, ‘যতদিন সংগ্রাম থাকবে, ততদিনই আশা থাকবে।’ কারণ এই সংগ্রাম মিয়ানমারের অস্তিত্ব, সংস্কৃতি ও ভবিষ্যতের লড়াই।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গণতন ত র

এছাড়াও পড়ুন:

সরকার নিরপেক্ষতা হারালে জনগণ মাঠে নামবে: তাহের

সংস্কার ইস্যুতে সব দল ঐক্যবদ্ধ থাকলেও বিএনপি হঠাৎ অবস্থান পরিবর্তন করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর ও সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।

শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) সকালে কুমিল্লার সেন্ট্রাল মেডিকেল কলেজ অডিটোরিয়ামে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা ভোটকেন্দ্র পরিচালক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ডা. তাহের বলেন, “আরপিও, সংস্কার কিংবা হ্যাঁ/না গণভোট—কোনো কিছুই এখন বিএনপি মানছে না। সরকার যদি তার নিরপেক্ষতা হারায়, তাহলে দেশের জনগণ তার প্রতি আস্থা হারাবে। তখন জনগণ আন্দোলনে নামবে।”

তিনি আরো বলেন, “জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট নিয়ে সরকার যদি অপকৌশল করে, তাহলে জনগণ আন্দোলনের প্রস্তুতি নেবে।”

চৌদ্দগ্রাম উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা মাহফুজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, কুমিল্লা অঞ্চল টিম সদস্য ও সাবেক জেলা আমীর আব্দুস সাত্তার, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা জামায়াতের আমীর অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শাহজাহান, কুমিল্লা মহানগরী জামায়াতের সেক্রেটারি মুফতি মাহবুবুর রহমান এবং শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি মজিবুর রহমান ভূঁইয়া।

উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি বেলাল হোসাইনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন চৌদ্দগ্রাম পৌর আমীর মাওলানা ইব্রাহীম, জামায়াত নেতা আয়ুব আলী ফরায়েজী, সাবেক উপজেলা দক্ষিণ আমীর শাহ মিজানুর রহমান, উপজেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি আব্দুর রহিম এবং পৌর সেক্রেটারি মোশাররফ হোসেন ওপেল প্রমুখ।

ঢাকা/রুবেল/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জ্বালানি সুবিচার নিশ্চিতে সংগ্রাম, শপথ যুব সংসদের সদস্যদের
  • বন্দরে বিএনপি নেতা তাওলাদের উপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে আল্টিমেটাম
  • সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠাই এখন জাতির দাবি
  • জনগণের বৃহত্তর ঐক্য ছাড়া এই ফ্যাসিস্ট ব্যবস্থার পতন হবে না: সাকি
  • বিএনপি ও জামায়াত কে কোন ফ্যাক্টরে এগিয়ে
  • অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে: ফখরুল
  • সরকার নিরপেক্ষতা হারালে জনগণ মাঠে নামবে: তাহের
  • দ্রুত নির্বাচনের গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করুন: আকবর খান
  • আন্তর্জাতিক সংকট যেভাবে স্বৈরশাসকদের শক্তিশালী করে
  • সরকার এখন প্রতারকের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছে: মান্না