যুদ্ধের প্রথম শহীদ নাকি সত্য। গত বছর জুলাই–আগস্ট মাসে দেশে যুদ্ধ হয়নি বটে, কিন্তু এক যুদ্ধাবস্থার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। তার দুটি পক্ষ ছিল বাংলাদেশেরই সরকার আর নাগরিক। তীব্র উৎকণ্ঠিত সেই সময়ে সঠিক তথ্য আর বস্তুনিষ্ঠ খবরই হয়ে উঠেছিল সবচেয়ে মহার্ঘ। রাজপথে আর অলিগলিতে প্রতিবাদী লড়াইয়ে লিপ্ত ছাত্র–জনতাকে শেখ হাসিনার সরকার তখন নানাভাবে প্রতিহত করার চেষ্টা করেছে। তারা একদিকে চালিয়েছে নির্মম হত্যাযজ্ঞ, অন্যদিকে করেছে তথ্য চাপা দেওয়ার চেষ্টা। সেই চরম নিষ্পেষণের দিনে, তথ্যের নিষ্প্রদীপ গোধূলিতে প্রথম আলো হয়ে উঠেছিল বহু মানুষের জন্য আলোকরেখার মতো।
রক্ত আর মৃত্যুতে খচিত সেসব দিনে যাঁরা জীবন বাজি রেখে আন্দোলন করেছেন, তাঁদের অনেকে এক গোপন আস্তানা থেকে আরেক গোপন কুঠুরিতে যাওয়ার পথে কিংবা গোয়েন্দা হেফাজতে অবরুদ্ধ থাকার পর মুক্তি পেয়ে রাস্তায় নেমেই হাতে তুলে নিয়েছেন প্রথম আলো, যথাযথ খবরটির খোঁজে। আন্দোলনকারীদের নানা লেখা বা বক্তব্যে এসব গল্প আমরা শুনেছি। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় নির্ভরযোগ্য খবরের জন্য প্রথম আলো হয়ে উঠেছিল বহু মানুষেরই ভরসা।
এই পটভূমিতে যথাযথ খুঁটিনাটি তথ্যের জন্য প্রথম আলো ব্যাপক সংখ্যায় প্রতিবেদককে যুক্ত করে। সারা দেশের কোনো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য যেন বাদ না পড়ে, তার জন্য আঞ্চলিক প্রতিনিধিদের নির্দেশনা দেওয়া হয়।দেড় দশক ধরে স্বৈরাচারী শাসন কায়েম করে রাখার জন্য শেখ হাসিনার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ। আর এর সবচেয়ে বড় শিকার হয়েছিল প্রথম আলো। ছাত্র–জনতার তুমুল আন্দোলন প্রথম আলোর সামনে সম্পাদকীয় স্বাধীনতা ও নৈতিকতা রক্ষার বিপুল চ্যালেঞ্জটি সাহস ও পেশাদারত্বের সঙ্গে মোকাবিলা করার সুযোগ এনে দেয়।
আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে সরকারের তৎপরতাও বাড়তে থাকে। গোয়েন্দা সংস্থার লোকেরা গণমাধ্যমগুলোকে নিবিড় নজরদারির মধ্যে রেখেছিল। ফলে বেশির ভাগ পত্রিকাই নিয়মিত সব খবর দিতে পারত না। সম্প্রচারমাধ্যমগুলো হয়ে উঠেছিল কার্যত সরকারের মুখপত্র; সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো এ আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ যেমন হয়ে উঠেছিল, তেমনই ছিল অপতথ্যেরও বড় উৎস। সরকারের নিবিড় গোয়েন্দা তৎপরতার কারণে আন্দোলনের সমন্বয়কারীরা অনেক সময়ই থাকতেন গোপন আশ্রয়ে এবং পরস্পরের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন। সে কারণে আন্দোলনের কোন কর্মসূচি যে কোত্থেকে আসবে, তা–ও ছিল অনিশ্চিত।
এই পটভূমিতে যথাযথ খুঁটিনাটি তথ্যের জন্য প্রথম আলো ব্যাপক সংখ্যায় প্রতিবেদককে যুক্ত করে। সারা দেশের কোনো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য যেন বাদ না পড়ে, তার জন্য আঞ্চলিক প্রতিনিধিদের নির্দেশনা দেওয়া হয়।
একাধিক সূত্র থেকে তথ্য নিশ্চিত করার বাধ্যবাধকতা প্রথম আলোর ছিল। প্রথম আলোর ওপরে বিশেষ করেই চাপ ছিল। কিন্তু ইতিহাসের সেই কঠিন সময়ে প্রথম আলো সাহস ও যত্নের সঙ্গে তার দায়িত্ব পালন করে গেছে।১৬ জুলাই থেকে সরকারের বাহিনী ও সন্ত্রাসীদের গুলিতে আন্দোলনরত সাধারণ মানুষের প্রাণহানির ঘটনা শুরু হয়। অগণিত ছাত্র–জনতা আহত হন। এদিন রংপুরে আবু সাঈদ শহীদ হলে মানুষ দলে দলে রাস্তায় নেমে আসে। আন্দোলন নতুন দিকে মোড় নেয়।
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ গত ১৬ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে তিনি নিহত হন.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রথম আল সরক র র ত র জন র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
আবার ‘লাস্ট মিনিট শো’, জন্মদিনের রাতে স্লটকে জয় উপহার ফন ডাইকের
লিভারপুল ৩–২ আতলেতিকো মাদ্রিদ
জন্মদিনের রাতে এর চেয়ে ভালো উপহার আর কী হতে পারে!
রেফারি শেষ বাঁশি বাজাতেই মাঠে ঢুকে পড়লেন আর্নে স্লট। লিভারপুলের সমর্থকেরা তাঁকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে থাকলেন, দল জেতায় অভিনন্দনও জানালেন। মুখে চওড়া হাসি নিয়ে হাত নেড়ে স্লট সেই অভিবাদনের জবাব দিলেন।
ভার্জিল ফন ডাইকের সঙ্গে আলিঙ্গনের সময় স্লটকে একটু বেশিই খুশি মনে হলো। কারণ, লিভারপুল অধিনায়ক ফন ডাইক ত্রাতার ভূমিকায় আবির্ভূত না হলে তাঁর বিশেষ রাতটা যে অনেকটাই পানসে হয়ে যেত!
২০২৫–২৬ মৌসুমে শেষ মুহূর্তে জয়সূচক গোল করাকে অভ্যাস বানিয়ে ফেলেছে লিভারপুল। যেটিকে বলা হচ্ছে লাস্ট মিনিট শো, কয়েকটি সংবাদমাধ্যম নাম দিয়েছে স্লট টাইম।
এবার সেই শো–এর নায়ক ফন ডাইক। যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে তাঁর হেডারেই আতলেতিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে ড্রয়ের পথে থাকা ম্যাচটা ৩–২ গোলে জিতে চ্যাম্পিয়নস লিগে শুভসূচনা করল লিভারপুল।
এ নিয়ে এই মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা পাঁচ ম্যাচ জিতল লিভারপুল। সবকটি ম্যাচে অলরেডরা জয়সূচক গোল করল ৮০ মিনিটের পর; এর তিনটিই যোগ করা সময়ে।