কনসার্টে আসা মানুষের সঙ্গে ‘যোগ’ দিল ভালুক
Published: 13th, July 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো অঙ্গরাজ্যে সম্প্রতি বন্য প্রাণীর সঙ্গে মানুষের মিলেমিশে থাকার অদ্ভুত এক নজির স্থাপিত হয়েছে। গত সপ্তাহে অঙ্গরাজ্যের মরিসনে এ ঘটনা ঘটেছে। রাজ্যের রেড রকস অ্যামফিথিয়েটারের সামনে কনসার্টে ঢোকার জন্য দর্শকেরা অপেক্ষা করছিলেন। এমন সময় সেখানে আকস্মিকভাবে দুটি ভালুক উপস্থিত হয়। দর্শকেরা মজা করে বলছেন, তারা কি সংগীতপ্রিয় মানুষের মতো ‘সংগীতের প্রতি আকৃষ্ট’ হয়ে সেখানে গেছে।
কলোরাডোর মরিসনে অবস্থিত ওই ঐতিহাসিক রেড রকস ভেন্যুর সামনে ‘ইনটু দ্য ওয়াইল্ড ট্যুর ২০২৫’-এর অংশ হিসেবে চলছিল যুক্তরাষ্ট্রের গায়ক রসেল জেমস ভিটালের একক কনসার্ট, যা সংক্ষেপে রাস শো হিসেবে পরিচিত। এতে অতিথি শিল্পী ছিলেন বিগ সিয়ান ও সাবরিনা ক্লাউডিও।
কনসার্টে ঢোকার জন্য দর্শকেরা ভেন্যুর সামনে অপেক্ষা করছিলেন। ঠিক সেই সময় দুটি ভালুক অনেকটা নির্ভয়ে মানুষের কাছাকাছি চলে আসে।
ভেন্যুর কর্মী জন অ্যামান্ডসনের তোলা একটি ছবিতে দেখা যায়, একটি ভালুক একটি মোড় ঘুরে মানুষের সারির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ভালুক দুটি মোটেও আগ্রাসী ছিল না; বরং শান্ত ছিল এবং পরস্পরের সঙ্গে খেলাধুলা করছিল। জন বলেন, ‘তারা পালিয়ে না গিয়ে রাস্তা পার হয়েছিল। এ সময় তাদের দেখে (দর্শকদের) সবাই শান্ত ছিল। ভালুকদের দেখে খুব একটা বিরক্তও হয়নি।’
এক দর্শক কাছাকাছি অবস্থান থেকে ভালুকদের ভিডিও ধারণ করেছেন, যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এই জায়গায় ভেন্যুর বাইরে ভালুক দেখার এটাই প্রথম ঘটনা বলে জানান জন।
রেড রকসের কর্মকর্তা এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমাদের ভেন্যু পার্কল্যান্ড (সবুজ স্থান বা পার্ক এলাকা) এবং ট্রেইল (হাঁটার বা সাইকেল চালানোর রাস্তা) দিয়ে ঘেরা। তাই বছরের যেকোনো সময় এখানে নানা প্রাণী দেখতে পাওয়া যায়। আমরা সবাইকে বন্য প্রাণীদের কাছাকাছি যাওয়া থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করি। প্রয়োজনে সাহায্যের জন্য পার্ক রেঞ্জারদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলি।’
রেড রকসের বিশেষ পরিবেশ এবং প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের সম্পর্কের এই ঘটনা বিস্ময়কর। পাশাপাশি এটা স্মরণ করিয়ে দেয়, আমাদের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের প্রতি যত্নবান হওয়া গুরুত্বপূর্ণ। ভালোবাসা, গান আর প্রকৃতির মেলবন্ধনই যেন এই ভেন্যুর আসল রূপ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কনস র ট
এছাড়াও পড়ুন:
মহাসড়কে জব্দের পর ১৪ হাজার লিটার তেল আত্মসাতের অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে
চাঁপাইনবাবগঞ্জের খাদ্যপণ্য প্রস্তুত ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান আদর্শ গ্রুপের ১৩ হাজার ৯৫০ লিটার পাম তেল জব্দের পর তা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও এক উপপরিদর্শকের (এসআই) বিরুদ্ধে। জব্দ করা তেলের দাম ২৩ লাখ ২১ হাজার ২৫০ টাকা।
গতকাল শনিবার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান আদর্শ গ্রুপ অব কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. সাদিকুল ইসলাম।
অন্যদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই তেল অন্য একটি মামলার চোরাই পণ্য হিসেবে জব্দ করে আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে। বিষয়টির সত্যতা আদালতই যাচাই করবে।
সাদিকুল ইসলামের অভিযোগ, গত ২১ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থেকে তাঁদের নিজস্ব ট্রাকে ১৩ হাজার ৯৫০ লিটার (৭৫ ড্রাম) পাম তেল চাঁপাইনবাবগঞ্জে আনা হচ্ছিল। পথে সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল এলাকায় রায়গঞ্জ থানা-পুলিশ ট্রাকসহ তেল জব্দ করে থানায় নিয়ে যায়। এ সময় ওসি মাসুদ রানার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি মালামালের প্রমাণপত্র দিতে বলেন। পরে ক্রয়কৃত মালামালের মেমোর ফটোকপি থানায় জমা দেওয়া হয়, তবে ওসি তা বিবেচনায় নেননি। পরে তিনি জানান, আদালতের মাধ্যমে ট্রাক ও তেল ফেরত নিতে হবে।
সাদিকুল ইসলাম আরও বলেন, ‘২৫ নভেম্বর সিরাজগঞ্জের আদালতে গিয়ে জানতে পারি ট্রাকটি অন্য একটি মামলায় জব্দ করা হয়েছে। তবে ট্রাকে থাকা পাম তেল কোথাও জব্দ তালিকায় নেই।’ তিনি বলেন, ২৬ নভেম্বর রায়গঞ্জ থানার ওসি মাসুদ রানা ও এসআই ফিরোজসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তেল ও ট্রাক আত্মসাতের অভিযোগে সিরাজগঞ্জের আমলি আদালতে মামলা করা হয়েছে। ট্রাকটি যমুনা সেতুর টোল প্লাজা পার হওয়ার সিসিটিভি ফুটেজ তাঁর কাছে আছে।
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে রায়গঞ্জ থানার ওসি (সদ্য বদলি) কে এম মাসুদ রানা প্রথম আলোকে বলেন, ওই ট্রাকে যে তেল পাওয়া গেছে, তা একটি চোরাই গোডাউন থেকে লোড করা হয়েছে। পুলিশ তেলসহ ট্রাকটি জব্দ করে আদালতে জমা দিয়েছে। এখন আদালতই সত্য-মিথ্যা যাচাই করবে।
একই দাবি করেছেন রায়গঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম খান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, পাম তেল আত্মসাতের অভিযোগ অবান্তর। তেল আত্মসাতের কোনো সুযোগ নেই। অন্য একটি ডাকাতি মামলার তেল একটি চোরাই গুদাম থেকে লোড করা হয়েছিল। তা জব্দ দেখিয়ে আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ। তিনি বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজির কাছে অভিযোগ করা হয়েছে। এভাবে রাস্তায় মালামাল জব্দ করে আত্মসাতের ঘটনায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে ভয়ভীতি তৈরি হয়েছে। অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে বৃহত্তর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবেন তাঁরা।