জামালপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক নেতাকে মারধরের অভিযোগ এনসিপি নেতার সমর্থকদের বিরুদ্ধে
Published: 28th, July 2025 GMT
চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করায় জামালপুরে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পথসভা শেষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক নেতাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে এনসিপির জামালপুর জেলা শাখার সদস্য আবিদ সৌরভের সমর্থকদের বিরুদ্ধে। আজ সোমবার দুপুরের পর শহরের ফৌজদারি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত ওই নেতার নাম সাফায়াত বিন আবেদিন (তুর্য)। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জামালপুর জেলা শাখার সাবেক যুগ্ম সদস্যসচিব। তিনি শহরের বেসরকারি একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ দুপুরে এনসিপির পদযাত্রায় অংশ নেন সাফায়াতসহ তাঁর লোকজন। পদযাত্রা শেষ হওয়ার পর কেন্দ্রীয় নেতারা ময়মনসিংহের উদ্দেশে রওনা হওয়ার পর সভাস্থলের পাশে কয়েকজনের সঙ্গে দাঁড়িয়ে ছিলেন সাফায়াত। এ সময় কয়েকজন যুবক তাঁকে মারধর করেন। পরে অন্যরা তাঁকে উদ্ধার করে শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন।
অভিযোগের বিষয়ে আবিদ সৌরভ প্রথম আলোকে বলেন, ‘পদযাত্রা শেষ হওয়ার ১৫–২০ মিনিট পর শুনতে পাই, সভাস্থলের পাশে মারামারি হয়েছে। সেখানে আমাদের এক ছোট ভাই আহত হয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গে এনসিপির অন্য নেতাদের সঙ্গে আমিও হাসপাতালে তাঁকে দেখতে যাই। তাঁর ধারণা, আমার লোকজন তাঁকে মারধর করেছেন। আমি কেন তাঁকে মারাব?’ ভেরিফিকেশনের দায়িত্ব দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ভিডিওটি যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, বিষয়টি সেই রকম নয়। ওই ভিডিও পোস্টের পর তাঁরাই আবার সংশোধন করে পোস্ট করেছেন।’
সাফায়াত প্রথম আলোকে বলেন, ‘এনসিপির পদযাত্রার সভা শেষ হওয়ার পর আমার ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়। আবিদ সৌরভের পোলাপান এই হামলা করেছে। কয়েক দিন আগে তাঁর (আবিদ) চাঁদাবাজির একটি ভিডিও আমি প্রকাশ করেছিলাম। ওই পোস্টে আমি আরও একটি কথা উঠিয়েছিলাম—ওই ভিডিওতে আবিদের স্পষ্ট কথা আছে, এসপি নিজে তাঁকে ভেরিফিকেশনের দায়িত্ব দিয়েছেন। এসপি স্যারকে নিয়ে যে এত বড় একটা কথা বলছেন—এসপি স্যার নাকি ওনাকে (আবিদ) চাঁদাবাজি ও ভেরিফিকেশনের দায়িত্ব দিয়েছেন। এটা কতটুকু যুক্তিসংগত, আমি জানতে চাই। তাঁকে কীভাবে ভেরিফিকেশনের দায়িত্ব দেওয়া হয়? আর এই পোস্ট দেওয়ার পরও বিষয়টির কোনো সমাধান হয়নি। এই বিষয়ে এসপি স্যারের সঙ্গে কথা হয়নি। তবে এই বিষয়ে পুলিশের অনেকের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তাঁরা বলছিলেন, বিষয়টি দেখবেন। এসপি স্যার এখনো এর কোনো সমাধানে আসেননি।’
মারধর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পদযাত্রা শেষে আমাকে ২০-২৫ জন হামলা চালিয়ে মারধর করেছে। চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করায় এবং ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার কারণেই আমাকে নির্মমভাবে মরধর করা হয়েছে। এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চাই। যেখানে মারধর করা হয়েছে। সেখানে সিসিটিভির ফুটেজ রয়েছে। ফুটেজ দেখে তাঁদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আইনের আওতায় আনতে হবে। এই বিষয়ে আমি থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। তবে পুলিশের কথাবার্তায় মনে হয়নি তাঁরা মামলাটি নিবেন।’
জামালপুরের পুলিশ সুপার সৈয়দ রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আইন সম্পর্কে যাদের জ্ঞান নাই, এই ধরনের মানুষের মাধ্যমে এসপিকে তথ্য নিতে হবে? পুলিশের যথেষ্ট পরিমাণ লোক আছে। তাদের কাছ থেকে তথ্য নিতে হবে কেন? সে (সাফায়াত) যা বলেছে, মিথ্যা বলেছে। তারা নিজেরা যে হাতাহাতি করেছে, সেটা তাদের বিষয়। তারা যদি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে চায়, আমরা ব্যবস্থা নেব।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এনস প র পদয ত র হওয় র
এছাড়াও পড়ুন:
বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে যোগাযোগে গত ১০ বছর বাধা দেওয়া হয়েছিল: চীনের রাষ্ট্রদূত
বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, বিগত সরকারের শেষ ১০ বছরে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি চীন। এই দুই দলের সঙ্গে যোগাযোগের ক্ষেত্রে সে সময়ে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করা হয়েছিল।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘ডিকাব টক’ অনুষ্ঠানে এই মন্তব্য করেন চীনের রাষ্ট্রদূত। ডিপ্লোমেটিক করেসপনডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ডিকাব) এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
সম্প্রতি বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধিদল চীন সফর করেছে। এ বিষয়ে অনুষ্ঠানে চীনের রাষ্ট্রদূতের কাছে জানতে চাওয়া হয়। জবাবে তিনি বলেন, খোলাখুলিভাবে বললে, গত ১০ বছরে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে যোগাযোগে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়েছিল। কিন্তু এখন সময় এসেছে, তাই তাঁরা পুনঃযোগাযোগ চালুর উদ্যোগ নিয়েছেন। তাঁরা এ ধরনের সফর বিনিময় ও যোগাযোগ পুনঃস্থাপন করতে চান।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত হতে কীভাবে বাধা দেওয়া হতো, জানতে চাইলে ইয়াও ওয়েন বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন, গত কয়েক বছরের পরিস্থিতি কেমন ছিল, সেটি এখানে উপস্থিত সাংবাদিকেরা অনুধাবন করতে পারেন। তিনি সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলতে চান না। তিনি কী পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিলেন, সেটা উপস্থিত সাংবাদিকেরা বোঝেন।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে দলটির একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল গত মাসে চীন সফর করে। চীনের কমিউনিস্ট পার্টির আমন্ত্রণে এই সফর হয়। অন্যদিকে চলতি মাসে জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমানের নেতৃত্বে দলটির একটি প্রতিনিধিদল চীন সফর করে।
ডিকাব সভাপতি এ কে এম মঈনউদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আরিফুজ্জামান মামুন।