চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করায় জামালপুরে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পথসভা শেষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক নেতাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে এনসিপির জামালপুর জেলা শাখার সদস্য আবিদ সৌরভের সমর্থকদের বিরুদ্ধে। আজ সোমবার দুপুরের পর শহরের ফৌজদারি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আহত ওই নেতার নাম সাফায়াত বিন আবেদিন (তুর্য)। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জামালপুর জেলা শাখার সাবেক যুগ্ম সদস্যসচিব। তিনি শহরের বেসরকারি একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ দুপুরে এনসিপির পদযাত্রায় অংশ নেন সাফায়াতসহ তাঁর লোকজন। পদযাত্রা শেষ হওয়ার পর কেন্দ্রীয় নেতারা ময়মনসিংহের উদ্দেশে রওনা হওয়ার পর সভাস্থলের পাশে কয়েকজনের সঙ্গে দাঁড়িয়ে ছিলেন সাফায়াত। এ সময় কয়েকজন যুবক তাঁকে মারধর করেন। পরে অন্যরা তাঁকে উদ্ধার করে শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন।

অভিযোগের বিষয়ে আবিদ সৌরভ প্রথম আলোকে বলেন, ‘পদযাত্রা শেষ হওয়ার ১৫–২০ মিনিট পর শুনতে পাই, সভাস্থলের পাশে মারামারি হয়েছে। সেখানে আমাদের এক ছোট ভাই আহত হয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গে এনসিপির অন্য নেতাদের সঙ্গে আমিও হাসপাতালে তাঁকে দেখতে যাই। তাঁর ধারণা, আমার লোকজন তাঁকে মারধর করেছেন। আমি কেন তাঁকে মারাব?’ ভেরিফিকেশনের দায়িত্ব দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ভিডিওটি যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, বিষয়টি সেই রকম নয়। ওই ভিডিও পোস্টের পর তাঁরাই আবার সংশোধন করে পোস্ট করেছেন।’

সাফায়াত প্রথম আলোকে বলেন, ‘এনসিপির পদযাত্রার সভা শেষ হওয়ার পর আমার ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়। আবিদ সৌরভের পোলাপান এই হামলা করেছে। কয়েক দিন আগে তাঁর (আবিদ) চাঁদাবাজির একটি ভিডিও আমি প্রকাশ করেছিলাম। ওই পোস্টে আমি আরও একটি কথা উঠিয়েছিলাম—ওই ভিডিওতে আবিদের স্পষ্ট কথা আছে, এসপি নিজে তাঁকে ভেরিফিকেশনের দায়িত্ব দিয়েছেন। এসপি স্যারকে নিয়ে যে এত বড় একটা কথা বলছেন—এসপি স্যার নাকি ওনাকে (আবিদ) চাঁদাবাজি ও ভেরিফিকেশনের দায়িত্ব দিয়েছেন। এটা কতটুকু যুক্তিসংগত, আমি জানতে চাই। তাঁকে কীভাবে ভেরিফিকেশনের দায়িত্ব দেওয়া হয়? আর এই পোস্ট দেওয়ার পরও বিষয়টির কোনো সমাধান হয়নি। এই বিষয়ে এসপি স্যারের সঙ্গে কথা হয়নি। তবে এই বিষয়ে পুলিশের অনেকের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তাঁরা বলছিলেন, বিষয়টি দেখবেন। এসপি স্যার এখনো এর কোনো সমাধানে আসেননি।’

মারধর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পদযাত্রা শেষে আমাকে ২০-২৫ জন হামলা চালিয়ে মারধর করেছে। চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করায় এবং ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার কারণেই আমাকে নির্মমভাবে মরধর করা হয়েছে। এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চাই। যেখানে মারধর করা হয়েছে। সেখানে সিসিটিভির ফুটেজ রয়েছে। ফুটেজ দেখে তাঁদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আইনের আওতায় আনতে হবে। এই বিষয়ে আমি থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। তবে পুলিশের কথাবার্তায় মনে হয়নি তাঁরা মামলাটি নিবেন।’

জামালপুরের পুলিশ সুপার সৈয়দ রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আইন সম্পর্কে যাদের জ্ঞান নাই, এই ধরনের মানুষের মাধ্যমে এসপিকে তথ্য নিতে হবে? পুলিশের যথেষ্ট পরিমাণ লোক আছে। তাদের কাছ থেকে তথ্য নিতে হবে কেন? সে (সাফায়াত) যা বলেছে, মিথ্যা বলেছে। তারা নিজেরা যে হাতাহাতি করেছে, সেটা তাদের বিষয়। তারা যদি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে চায়, আমরা ব্যবস্থা নেব।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এনস প র পদয ত র হওয় র

এছাড়াও পড়ুন:

প্রতিষ্ঠার দেড় যুগ পর ইতিহাসের সাক্ষী হতে যাচ্ছে বেরোবি

‎বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ব্রাকসু) নিয়ে অপেক্ষার প্রহর শেষ হতে চলেছে শিক্ষার্থীদের। গত ২৮ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের মাধ্যমে ‎বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের গেজেট প্রকাশ হয়ছে গঠনতন্ত্র।

এরই মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১৭ বছর পর হতে যাচ্ছে কাঙিক্ষত কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ তথা ব্যাকসু নির্বাচন। তবে এর জন্য আমরণ অনশন থেকে শুরু করে সব ধরনের কর্মসুচিই পালন করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

আরো পড়ুন:

‘আমরা একটা অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন করতে চাই’

‎বেরোবিতে শহীদ আবু সাঈদ স্মৃতিস্তম্ভের মডেল প্রদর্শন

‎জুলাই অভ্যুত্থান পর গণরুম ও গেস্ট রুমের যে সাংস্কৃতি ছিল, তা এখন বন্ধ হয়েছে। কোনো রাজনৈতিক দলের কমকাণ্ডে সামিল হওয়াও বাধ্যতামুলক নয়।

‎তাই শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ ছাত্র সংসদ। যাতে শিক্ষার্থীদের অধিকার ও স্বার্থ সুরক্ষিত হবে।

‎কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ বেরোবির বিধিমালা অনুযায়ী, ১৩টি পদে সরাসরি নির্বাচন ও হল সংসদে নয়টি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যাতে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিনিধির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে সব ধরনের কথা তুলে ধরতে পারবেন।

‎পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী শেখর রায় বলেন, “সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও লেজুরবিত্তিক রাজনীতি ব্যতীত একটি নির্বাচন হোক। যোগ্য, আদর্শ, উত্তম চরিত্র ও মনের প্রার্থী বিজয়ী হোক। নির্বাচিত হয়ে তারা হয়ে উঠুক বেরোবির একেকজন যোগ্য প্রতিনিধি। তারা ন্যায়ের পক্ষে থাকুক । তাদের হাত ধরেই এগিয়ে যাক বেরোবি।”

‎গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী জাওয়াদ সাজিদ বলেন, “ছাত্র সংসদ শিক্ষার্থীদের দাবি, অধিকার ও স্বার্থ রক্ষার প্রধান মঞ্চ। এটি প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে, যাতে প্রতিটি শিক্ষার্থীর কণ্ঠ পৌঁছে যায় সিদ্ধান্ত গ্রহণের টেবিলে। কিন্তু এজন্য সংসদকে দলীয় প্রভাবমুক্ত, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক হতে হবে। প্রকৃত অর্থে ছাত্র সংসদ তখনই সফল, যখন তা শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হয়ে তাদের সমস্যার সমাধান ও কল্যাণে কাজ করে।”

‎অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান বলেন, “আমরা এমন ছাত্র সংসদ চাই, ‎যেখানে যোগ্য নেতৃত্ব আসবে এবং সব শিক্ষার্থীর সমস্যা সমাধানের হাতিয়ার হয়ে কাজ করবে। সবমিলিয়ে সবার বিশ্বস্ত জায়গা হবে এই ছাত্র সংসদ।”

ঢাকা/সাজ্জাদ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ