গৃহকর্মীদের জন্য পৃথক বেতনকাঠামো দাবি
Published: 28th, July 2025 GMT
গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে গৃহকর্মীদের শ্রম আইনে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন গৃহকর্মীরা। পাশাপাশি গৃহশ্রমিকদের জন্য পৃথক বেতনকাঠামো, পুনর্বাসন, চিকিৎসা ও সন্তানদের অবৈতনিক শিক্ষাসহ বিভিন্ন দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের সম্মেলনকক্ষে ‘গৃহকর্মী সম্মেলন ২০২৫: গৃহকর্মীদের সুরক্ষা ও জীবনমান উন্নয়ন’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এসব দাবি তুলে ধরেন রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার গৃহকর্মীরা।
বেলা সাড়ে তিনটায় জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে সভা শুরু হয়। সভায় শ্রম আইন সংশোধন করে গৃহশ্রমিকদের নিয়োগপত্র, কর্মঘণ্টা, ছুটি ও চাকরি শেষ করা সম্পর্কিত শর্তাবলি ও সুবিধা নিশ্চিত করাসহ আনুষ্ঠানিকভাবে ১৪টি দাবি জানান গৃহকর্মী ফিরোজা বেগম ও রুমা আক্তার। এরপর মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে সম্মেলনে অংশগ্রহণ করা নারী গৃহকর্মীরা। এ সময় তাঁরা তাঁদের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন।
যৌক্তিক দাবিমতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। গৃহকর্মীদের ১৪টি দাবির প্রতিটিই যৌক্তিক বলে মন্তব্য করেন তিনি।
শ্রমিকদের কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা বিধান ও নির্যাতন প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) সঙ্গে তিনটি চুক্তি সই হচ্ছে জানিয়ে সফিকুজ্জামান বলেন, সরকার বিশ্বকে বার্তা দিচ্ছে দেশের শ্রমিকদের স্বাস্থ্যগত ও নিরাপত্তা ঝুঁকি প্রশমিত করতে তারা আন্তরিক। একই সঙ্গে শ্রমিকদের কর্মক্ষেত্রে নির্যাতন প্রতিরোধের বিষয়ে চুক্তি সই করার বিষয়টি উপদেষ্টা পরিষদে সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়েছে বলে জানান তিনি।
সভায় নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান শিরীন পারভীন হক বলেন, গৃহকর্মী ও যৌনকর্মী এই দুটি খাতে নারীরা শ্রম দিলেও শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি পাচ্ছেন না। নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে নারী শ্রমিকদের অধিকারের বিষয়ে প্রস্তাব দিয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, এগুলোর মধ্যে নারী শ্রমিকদের সন্তানদের জন্য শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র, পরিবহন সুবিধা ও বয়স্ক ভাতার কথা রয়েছে।
সভায় শ্রম আইন সংশোধন বিষয়ে আলোচনা করেন শ্রম অধিকার সংস্কার কমিশনের প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, গৃহকর্মীরা যেন অঞ্চল ও জাতীয় ভিত্তিতে সংগঠন করতে পারে, তাঁদের সে অধিকার দিতে হবে। গৃহকর্মী নির্যাতন প্রতিরোধ করতে মাঠপর্যায়ের উদ্যোগের ওপর জোর দেন তিনি।
মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধূরী। তিনি বলেন, গৃহশ্রমিকদের অধিকারের বিষয়ে শুধু শ্রম মন্ত্রণালয় নয়, আন্তমন্ত্রণালয় সমন্বয়ের প্রয়োজন। তিনি এ কাজে নারী ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে যুক্ত করার দাবি জানান।
সভায় আরও বক্তব্য দেন বিভিন্ন বেসরকারি সংগঠন ও শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা। অক্সফাম বাংলাদেশের সহযোগিতায় যৌথভাবে মতবিনিময় সভার আয়োজন করে গণসাক্ষরতা অভিযান, বাংলাদেশ নারী শ্রমিক কেন্দ্র, সবুজের অভিযান ফাউন্ডেশন, সহায়, আশার আলো সোসাইটি ও আভাস।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ হকর ম দ র গ হকর ম র
এছাড়াও পড়ুন:
‘ফিরিয়ে দাও’ থেকে ‘ধূসর সময়’: সিডনিতে একই মঞ্চে মাইলস ও আর্টসেল
সিডনির বসন্তের সন্ধ্যা। লিভারপুলের হুইটল্যাম লেজার সেন্টারের বাইরে তখন লম্বা লাইন—হাতে পতাকা, কাঁধে ব্যাগ, চোখে প্রত্যাশা। সাউন্ডচেকের শব্দ ভেসে আসছে বাইরে। ভেতরে যেন উন্মুখ এক ‘সাগর’, যেখানে মিশে আছে দুই প্রজন্মের মুখ, কণ্ঠ আর স্মৃতি। শনিবার রাতটি হয়ে উঠেছিল প্রবাসী বাঙালিদের জন্য এক ব্যতিক্রমী উৎসব—বাংলাদেশের ব্যান্ড সংগীতের দুই যুগের দুই প্রতীক, মাইলস ও আর্টসেল; প্রথমবারের মতো একই মঞ্চে গান করল সিডনিতে।
‘গ্রিনফিল্ড এন্টারটেইনমেন্ট’ আয়োজিত এই ‘মিউজিক ফেস্ট’ ঘিরে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে যে উচ্ছ্বাস তৈরি হয়েছিল, তা যেন উপচে পড়ল সেই রাতে। টিকিট বিক্রি শুরু হওয়ার পরপরই সব শেষ। অনুষ্ঠান শুরুর ঘণ্টাখানেক আগে থেকেই সিডনির দক্ষিণ-পশ্চিম উপশহর লিভারপুলের রাস্তাগুলো ভরে গেল গানের ভক্তে।
আয়োজনের আগে ভিডিও বার্তায় মাইলস জানায় তাদের উচ্ছ্বাস। ব্যান্ডের অন্যতম সদস্য হামিন আহমেদ বলেন, ‘সিডনি বরাবরই আমাদের কাছে বিশেষ কিছু। সম্ভবত ১৯৯৬ সালে আমরাই প্রথম বাংলাদেশি ব্যান্ড হিসেবে অস্ট্রেলিয়ায় পারফর্ম করি। এরপর এ নিয়ে অন্তত পঞ্চমবারের মতো সিডনিতে এলাম। এখানকার দর্শকদের ভালোবাসা সব সময়ই অবিশ্বাস্য।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জানতাম এটি স্মরণীয় একটি আয়োজন হতে যাচ্ছে। আমরা চেয়েছি সবাই একসঙ্গে গাইবে, চিৎকার করবে—ভক্তরা সেটাই করেছেন।’ গিটারিস্ট তুজো যোগ করেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার পাঁচটি শহরে ট্যুর করছি, কিন্তু সিডনির আবহ একেবারেই আলাদা। দর্শকেরা আমাদের রাতটিকে স্মরণীয় করে দিয়েছেন।’
মঞ্চে আর্টসেল