এনসিপির প্রোগ্রামে বাধা দেওয়ায় কথা কাটাকাটি, জিডি করলেন এসিল্যান্ড
Published: 5th, August 2025 GMT
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে সরকারি দপ্তরে পূর্ব অনুমতি ছাড়া জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অনুষ্ঠান নিয়ে এসিল্যান্ডের সঙ্গে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাদের কথা কাটাকাটি হয়েছে। নেতারা এসিল্যান্ডকে হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আশুগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন এসিল্যান্ড কাজী তাহমিনা সারমিন।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঘটনাটি ঘটে। পরে বিকেল ৫টায় অনুমতি ছাড়াই ভূমি কার্যালয়ের চত্বরে অনুষ্ঠান করেন এনিসিপির নেতারা।
আশুগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আশুগঞ্জ বাজারে উপজেলা ভূমি কার্যালয় অবস্থিত। এই কার্যালয়ের পেছনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি ম্যুরাল ছিল। সেটি জুলাই আন্দোলনের সময় ভাঙচুর করে ছাত্র-জনতা। ওই স্থানটি টিনের বেড়া দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছিল। সেখানে ‘জুলাই স্মৃতিচারণ এবং শহীদদের স্মরণে মিলাদ মাহফিল ও দোয়া’ অনুষ্ঠান করতে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে এনিসিপির নেতাকর্মীরা যান।
আরো পড়ুন:
কক্সবাজারে পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠকের গুঞ্জন, এনসিপির নেতারা বললেন ‘গুজব’
এনসিপির ২৪ দফা ইশতেহারে যা আছে
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও এসিল্যান্ডের অনুমতি না নিয়ে ভূমি কার্যালয় চত্বরে প্রবেশ করেন এনসিপির নেতারা। তারা এক পর্যায়ে ঢেকে রাখা ম্যুরালের চারপাশ থেকে টিনের বেড়া সরিয়ে ফেলেন। এসিল্যান্ড কাজী তাহমিনা সারমিন ঘটনাস্থলে পৌঁছে বাধা দেন। এনিয়ে এসিল্যান্ডের সঙ্গে এনসিপির নেতাদের কথা কাটাকাটি হয়।
আশুগঞ্জ উপজেলার এনসিপির প্রধান সমন্বয়কারী আমিনুল ইসলাম এক পর্যায়ে এসিল্যান্ডের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন এবং হুমকি দেন। এ ঘটনায় আশুগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন এসিল্যান্ড।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাজী তাহমিনা সারমিন বলেন, “অনুষ্ঠান করতে সকালে ভূমি অফিসের সীমানা দেওয়া জায়গা ভেঙে দিয়েছে এনিসিপির নেতারা। সরকারি জায়গায় অনুমতি ছাড়া অনুষ্ঠানে বাধা দিলে এনসিপির নেতা আমিনুল ইসলাম ডালিম উল্টো আমাকে হুমকি দিয়েছেন। আমার সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছেন।”
তিনি আরো বলেন, “অনুষ্ঠানের বিষয়ে তারা কাউকে অবগত করেনি। ইউএনও স্যারও তাদের অনুষ্ঠানের বিষয়ে অবগত নয়। তারা অনুষ্ঠান করবেই বলে জানিয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসেছিল। হুমকি দেওয়ায় এবং বাধা না মানায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আশুগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছি।”
এনসিপির আশুগঞ্জ উপজেলার প্রধান সমন্বয়কারী আমিনুল ইসলাম বলেন, “বিকেল পাঁচটায় আশুগঞ্জের কাচারি পুকুর পাড়ে জুলাই আগস্টের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে মিলাদ মাহফিল করেছি। উপজেলা ভূমি কার্যালয়ের পেছেন শেখ মুজিবুর রহমানের একটি ম্যুরাল ছিল। ম্যুরালটি টিনের বেড়া দিয়ে তারা ঢেকে রেখেছিল। মিলাদ মাহফিলের জন্য মঙ্গলবার সকালে এনসিপির সদস্যরা সেখানে পরিষ্কার করতে যান। পরিষ্কার করার সময় তারা টিনের একটি বেড়া খুলে ফেলেন। এজন্য উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফোন করে আমাদের পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তারের হুমকি দেন।”
তিনি আরো বলেন, “আমি বলেছিলাম, আমাদের বাধা দিয়েন না। আমরা অনুষ্ঠানটি করে ফেলি। তবে সেখানে অনুষ্ঠান করা যাবে না বলে জানান তিনি (এসিল্যান্ড)।” হুমকির বিষয়টি বানোয়াট বলেও জানান তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাফে মোহাম্মদ ছড়া বলেন, “সরকারি অফিসের টিনের বেড়া সরিয়ে এনসিপির ব্যানারে জুলাই মঞ্চের নামে সমাবেশ করেছে। সরকারি অফিস, অফিসের নিরাপত্তার কারণে এখানে অনুষ্ঠান করতে দিতে পারি না। তারা কােনো অনুমতিও নেয়নি। বাধা দেওয়ায় এসিল্যান্ডের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন নেতারা। এনসিপির জেলার যুগ্ম সমন্বয়ক আকিব জাবেদ উল্টো অনুষ্ঠানের অনুমতি দিতে বলেছেন। অনুমতি না দিলে আমরা নিজেরাই করে ফেলবে বলে জানিয়েছেন। থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছি।”
আশুগঞ্জ থানার ওসি খায়রুল আলম বলেন, “থানায় জিডি হয়েছে। তদন্ত চলছে। এ বিষয়ে তদন্তে শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/পলাশ/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ ত য় ন গর ক প র ট অভ য গ এনস প র ন ত উপজ ল সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
সদর উপজেলার নতুন ইউএনও তাছলিমা শিরিন, পদোন্নতি পেলেন সাদিক
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলায় নতুন উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে তাছলিমা শিরিনকে। তিনি বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের ৩৫তম ব্যাচের একজন কর্মকর্তা।
গত ৩০ জুলাই বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়, ঢাকার এক আদেশে এ তাছলিমা শিরিন কে সদর উপজেলায় নতুন উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে পদায়ন করা হয়।
অন্যদিকে দায়িত্বরত নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ জাফর সাদিক চৌধুরীকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে পদোন্নতি দিয়ে কুমিল্লা জেলায় পদায়ন করেছে সরকার।
তিনি বিসিএস ৩৪তম ব্যাচের একজন কর্মকর্তা। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ২৮ জুলাইয়ের ২৭১ নং আদেশে বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের ৭ জন কর্মকর্তাকে বিভিন্ন জেলায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বিগত ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতন ঘটলে সারা দেশব্যাপী প্রশাসনের সকল পদে পরিবর্তন আনার জন্য উদ্যোগ নেয় অন্তবর্তীকালীন সরকার।
তারই ধারাবাহিকতায় ১১ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে যোগদান করেন জাফর সাদিক। পরিবর্তি প্রেক্ষাপটে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলায় আইন-শৃঙ্খলার অবনতি, শ্রমিক অসন্তোষ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতি অপসারণ, উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস-চেয়ারম্যান অপসারন, ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক নিয়োগসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ও সকল সরকারি কাজে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন জাফর সাদিক চৌধুরী।
বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের স্বেচ্ছাচারীতার কারণে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোতে স্বচ্ছতা আনয়ন ও মানোন্নয়নে তিনি নিয়েছেন নানা ভূমিকা। সকল শ্রেণী পেশার মানুষকে জনবান্ধব সেবা প্রদানে তিনি ছিলেন সচেষ্ট।
নতুন উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাছলিমা শিরিন সে ধারা অব্যাহত রাখবেন এটাই নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সাধারণ জনগণের প্রত্যাশা।