ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে সরকারি দপ্তরে পূর্ব অনুমতি ছাড়া জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অনুষ্ঠান নিয়ে এসিল্যান্ডের সঙ্গে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাদের কথা কাটাকাটি হয়েছে। নেতারা এসিল্যান্ডকে হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আশুগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন এসিল্যান্ড কাজী তাহমিনা সারমিন। 

মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঘটনাটি ঘটে। পরে বিকেল ৫টায় অনুমতি ছাড়াই ভূমি কার্যালয়ের চত্বরে অনুষ্ঠান করেন এনিসিপির নেতারা।

আশুগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আশুগঞ্জ বাজারে উপজেলা ভূমি কার্যালয় অবস্থিত। এই কার্যালয়ের পেছনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি ম্যুরাল ছিল। সেটি জুলাই আন্দোলনের সময় ভাঙচুর করে ছাত্র-জনতা। ওই স্থানটি টিনের বেড়া দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছিল। সেখানে ‘জুলাই স্মৃতিচারণ এবং শহীদদের স্মরণে মিলাদ মাহফিল ও দোয়া’ অনুষ্ঠান করতে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে এনিসিপির নেতাকর্মীরা যান। 

আরো পড়ুন:

কক্সবাজারে পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠকের গুঞ্জন, এনসিপির নেতারা বললেন ‘গুজব’

এনসিপির ২৪ দফা ইশতেহারে যা আছে

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও এসিল্যান্ডের অনুমতি না নিয়ে ভূমি কার্যালয় চত্বরে প্রবেশ করেন এনসিপির নেতারা। তারা এক পর্যায়ে ঢেকে রাখা ম্যুরালের চারপাশ থেকে টিনের বেড়া সরিয়ে ফেলেন। এসিল্যান্ড কাজী তাহমিনা সারমিন ঘটনাস্থলে পৌঁছে বাধা দেন। এনিয়ে এসিল্যান্ডের সঙ্গে এনসিপির নেতাদের কথা কাটাকাটি হয়। 

আশুগঞ্জ উপজেলার এনসিপির প্রধান সমন্বয়কারী আমিনুল ইসলাম এক পর্যায়ে এসিল্যান্ডের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন এবং হুমকি দেন। এ ঘটনায় আশুগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন এসিল্যান্ড।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাজী তাহমিনা সারমিন বলেন, “অনুষ্ঠান করতে সকালে ভূমি অফিসের সীমানা দেওয়া জায়গা ভেঙে দিয়েছে এনিসিপির নেতারা। সরকারি জায়গায় অনুমতি ছাড়া অনুষ্ঠানে বাধা দিলে এনসিপির নেতা আমিনুল ইসলাম ডালিম উল্টো আমাকে হুমকি দিয়েছেন। আমার সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছেন।” 

তিনি আরো বলেন, “অনুষ্ঠানের বিষয়ে তারা কাউকে অবগত করেনি। ইউএনও স্যারও তাদের অনুষ্ঠানের বিষয়ে অবগত নয়। তারা অনুষ্ঠান করবেই বলে জানিয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসেছিল। হুমকি দেওয়ায় এবং বাধা না মানায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আশুগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছি।”

এনসিপির আশুগঞ্জ উপজেলার প্রধান সমন্বয়কারী আমিনুল ইসলাম বলেন, “বিকেল পাঁচটায় আশুগঞ্জের কাচারি পুকুর পাড়ে জুলাই আগস্টের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে মিলাদ মাহফিল করেছি। উপজেলা ভূমি কার্যালয়ের পেছেন শেখ মুজিবুর রহমানের একটি ম্যুরাল ছিল। ম্যুরালটি টিনের বেড়া দিয়ে তারা ঢেকে রেখেছিল। মিলাদ মাহফিলের জন্য মঙ্গলবার সকালে এনসিপির সদস্যরা সেখানে পরিষ্কার করতে যান। পরিষ্কার করার সময় তারা টিনের একটি বেড়া খুলে ফেলেন। এজন্য উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফোন করে আমাদের পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তারের হুমকি দেন।” 

তিনি আরো বলেন, “আমি বলেছিলাম, আমাদের বাধা দিয়েন না। আমরা অনুষ্ঠানটি করে ফেলি। তবে সেখানে অনুষ্ঠান করা যাবে না বলে জানান তিনি (এসিল্যান্ড)।” হুমকির বিষয়টি বানোয়াট বলেও জানান তিনি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাফে মোহাম্মদ ছড়া বলেন, “সরকারি অফিসের টিনের বেড়া সরিয়ে এনসিপির ব্যানারে জুলাই মঞ্চের নামে সমাবেশ করেছে। সরকারি অফিস, অফিসের নিরাপত্তার কারণে এখানে অনুষ্ঠান করতে দিতে পারি না। তারা কােনো অনুমতিও নেয়নি। বাধা দেওয়ায় এসিল্যান্ডের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন নেতারা। এনসিপির জেলার যুগ্ম সমন্বয়ক আকিব জাবেদ উল্টো অনুষ্ঠানের অনুমতি দিতে বলেছেন। অনুমতি না দিলে আমরা নিজেরাই করে ফেলবে বলে জানিয়েছেন। থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছি।”

আশুগঞ্জ থানার ওসি খায়রুল আলম বলেন, “থানায় জিডি হয়েছে। তদন্ত চলছে। এ বিষয়ে তদন্তে শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/পলাশ/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ ত য় ন গর ক প র ট অভ য গ এনস প র ন ত উপজ ল সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

নান্দাইলের ইউএনও’র দুর্নীতি তদন্তের দাবিতে মানববন্ধন

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার সদ্য সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সারমিনা সাত্তারের বিরুদ্ধে ওঠা ৩ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত ও বিচার দাবিতে মানববন্ধন করেছে বিভিন্ন ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও স্থানীয়রা।

মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) দুপুর ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের নান্দাইল নতুন বাজার এলাকায় ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন করেন তারা। 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে ৫ কোল পরিবারকে উচ্ছেদের প্রতিবাদে মানববন্ধন

বিএলআরআই নিয়োগবিধিতে বৈষম্যের অভিযোগে গবিতে মানববন্ধন

উপজেলার শেরপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মাসহুদ পারভেজসহ অন্যান্য ইউপি সদস্যরা গত ২৮ মার্চ ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনারের কাছে সারমিনা সাত্তারের বিরুদ্ধে ৩ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ করেন। 

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা থাকাকালীনও সারমিনা সাত্তারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠে। যা নিয়ে তখন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হিসেবে সারমিনা সাত্তার যোগ দেন। এরপর থেকে সীমাহীন দুর্নীতি করেছেন। উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার ইজারা, পাথর কেলেঙ্কারি, খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ডিলার নিয়োগ, নামজারিতে অতিরিক্ত টাকা আদায়, ভুয়া প্রকল্প থেকে টাকা উত্তোলনসহ নানা দুর্নীতি করেছেন।

বক্তব্যে ইউপি সদস্য মাসহুদ পারভেজ বলেন, ‘‘সারমিনা সাত্তার শুধু অনিয়ম-দুর্নীতিতে সীমাবদ্ধ ছিলেন না, ইউপি সদস্যদের সঙ্গে অসদাচরণসহ মিথ্যা মামলার হুমকিও দিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ দিয়েছি।’’  

মানববন্ধনে আরো উপস্থিত ছিলেন খারুয়া ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আব্দুস কদ্দুস মুন্সি, বাচ্চু মিয়া, শেরপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য শাহজাহান প্রমুখ। 

এ বিষয়ে জানতে সারমিনা সাত্তারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

ঢাকা/মিলন/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ডিএনএ পরীক্ষা করানোর ঘোষণার পরদিন সেই ইউএনওকে ওএসডি
  • জালিয়াতি করে ‘মুক্তিযোদ্ধা কোটায়’ চাকরি: ইউএনও কামালের ডিএনএ পরীক্ষা হবে
  • নান্দাইলের ইউএনও’র দুর্নীতি তদন্তের দাবিতে মানববন্ধন
  • আসুন, কোলদের প্রতি মানবিক হই
  • শিক্ষকেরা বাড়তি যত্ন নেন, উপস্থিতি বেড়েছে শিক্ষার্থীদের