ভোট চুরির অভিযোগে প্রশ্ন তোলা রাহুলের পাশে শশী থারুর
Published: 8th, August 2025 GMT
শাসক দল বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ভোট চুরি করে চলেছে বলে যে অভিযোগ এনেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী, তা গুরুতর বলে বর্ণনা করেছেন হাইকমান্ডের নেক নজরে না থাকা কংগ্রেস সংসদ সদস্য শশী থারুর। শুক্রবার এক্স হ্যান্ডলে তিনি বলেছেন, ইসির উচিত এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া এবং দেশের মানুষের কাছে এসব প্রশ্নের জবাব দেওয়া।
শশী কেরালার তিরুবনন্তপুরম থেকে নির্বাচিত লোকসভার সদস্য। কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে কিছুদিন ধরে তাঁর দূরত্ব বেড়েছে। কংগ্রেসকে না জানিয়েই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অপারেশন সিঁদুরের পর তাঁকে সর্বদলীয় একটি দলের নেতা করে বিদেশ সফরে পাঠিয়েছিলেন। শশীও কিছুদিন ধরে বিভিন্ন বিষয়ে মোদি সরকারকে সমর্থন করছেন। অপারেশন সিঁদুর প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য ছিল, দলের থেকে দেশ বড়। ভোট চুরির অভিযোগে রাহুলের পাশে দাঁড়িয়ে শশী দলকে কোনো রাজনৈতিক বার্তা দিলেন কি না, আপাতত সে বিষয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনকে রাহুল সম্প্রতি তীব্র আক্রমণ করেছেন। তাঁর অভিযোগ, ইসি বিজেপির হয়ে ভোট চুরির কাজ করছে। ভোটার তালিকায় কারচুপি করছে। অভিযোগের সমর্থনে গত বৃহস্পতিবার রাহুল ইসির ভোটার তালিকা নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। বেঙ্গালুরু সেন্ট্রাল লোকসভা কেন্দ্রের সাত বিধানসভা এলাকার একটি মহাদেবপুরায় ইসি কীভাবে ‘ভোট চুরি’ করেছে তার ‘প্রমাণ’ হাজির করেন। তিনি দেখান, ছয় বিধানসভা কেন্দ্রে কংগ্রেস জিতলেও ওই কেন্দ্রে বিজেপি এক লাখের বেশি ভোটে এগিয়ে যায়। তার ফলে বিজেপি বেঙ্গালুরু সেন্ট্রাল লোকসভা কেন্দ্রটি জেতে। সংবাদ সম্মেলনে ওই প্রমাণ দাখিলের পর বৃহস্পতিবার রাতে নৈশভোজের আসরেও রাহুল ইন্ডিয়া জোটের নেতাদের সামনে তা ব্যাখ্যা করেন। শুক্রবার শশী এক্স বার্তায় রাহুলকে সমর্থন জানিয়ে বলেন, যে প্রশ্নগুলো তোলা হয়েছে, তা খুবই গুরুতর।
শশী ওই বার্তার সঙ্গে রাহুলের সংবাদ সম্মেলনের ভিডিও–ও পোস্ট করেন। বার্তায় তিনি লিখেছেন, ‘প্রশ্নগুলো খুবই সিরিয়াস। গুরুত্বপূর্ণ। সব দল ও ভোটারদের স্বার্থে প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর দেওয়া দরকার। ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। আমাদের গণতন্ত্র অত্যন্ত মূল্যবান। অযোগ্যতা, অসতর্কতা ও ইচ্ছাকৃত কারচুপির মাধ্যমে এর বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্ট করতে দেওয়া যায় না। নির্বাচন কমিশনের উচিত এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া ও জনগণকে জানানো।’
শশীর সঙ্গে কংগ্রেসের দূরত্ব এতটাই বেড়ে গেছে যে অপারেশন সিঁদুর নিয়ে সংসদে আলোচনার সময় তাঁকে বক্তা হিসেবে রাখা হয়নি। সর্বদলীয় প্রতিনিধিদলের নেতা হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশ সফর করে ফিরে আসার পর কেরালার এক উপনির্বাচনে তাঁকে প্রচার করতেও ডাকা হয়নি। বিভিন্নভাবে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে, শশীকেই ঠিক করতে হবে তিনি কংগ্রেসে থাকতে আগ্রহী, নাকি বিজেপিতে যেতে চান। এমন প্রচার রয়েছে যে আগামী বছর কেরালা বিধানসভার নির্বাচনের আগে শশী বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন। এ পরিস্থিতিতে তাঁর রাহুল গান্ধীর সমর্থনে পাশে দাঁড়ানো ও নির্বাচন কমিশনকে জবাবদিহি করার দাবি জানানো তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্ক পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে যোগ দিতে আজ যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে পৌঁছেছেন।
প্রধান উপদেষ্টা ও তাঁর সফরসঙ্গীদের বহনকারী এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইট স্থানীয় সময় বিকেল ৩টায় জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
এ বছর প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গীদের মধ্যে ছয় রাজনৈতিক নেতা রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির, জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন ও যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. তাসনিম জারা ঢাকা থেকে প্রতিনিধি দলের সঙ্গে যোগ দেন।
এছাড়া জামায়াত নেতা নকিবুর রহমান তারেক যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রতিনিধি দলে যুক্ত হন।
এর আগে ২২ সেপ্টেম্বর রাত ১টা ৪০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময়) প্রধান উপদেষ্টা ও তাঁর সফরসঙ্গীদের বহনকারী এমিরেটস এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটটি হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে নিউইয়র্কের উদ্দেশে রওনা দেয়।
সূচি অনুযায়ী অধ্যাপক ইউনূস আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ভাষণ দেবেন।