এক বছর আগে সর্বস্তরের ছাত্র-জনতার অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে এক নতুন যুগের সূচনা হয়। সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন শুরু হলেও গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দীর্ঘ কর্তৃত্ববাদী শাসনের পতন ঘটে। এখন প্রশ্ন হলো, এই অভ্যুত্থান আমাদের কী বার্তা দিয়ে গেল?

এই অভ্যুত্থানের প্রধান বার্তা হলো, জুলুম, নির্যাতন ও বৈষম্যমুক্ত সমাজ নির্মাণের জন্য গণতন্ত্রে উত্তরণের পথ তৈরি করা। কিন্তু গণতন্ত্রে উত্তরণ কীভাবে নিশ্চিত করা যাবে? এখানেই টেকসই রাজনৈতিক ব্যবস্থা নিয়ে আলাপ-আলোচনা প্রয়োজন।

২.

বাংলাদেশের রাষ্ট্রকাঠামোয় স্বৈরাচার বা কর্তৃত্ববাদের যে চরিত্র ছিল, সেখানে পরিবর্তন নিয়ে আসতে হবে। এখানে নির্বাচন বিশ্বাসযোগ্য ও গ্রহণযোগ্য ছিল না। নির্বাহী বিভাগ একচ্ছত্রভাবে বিচার বিভাগ ও আইন বিভাগের নিয়ন্ত্রক ছিল।

স্বৈরাচারী শাসনামলে আমিত্ব বা একক ব্যক্তির প্রাধান্য সার্বিক রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক জীবনকে নির্ধারণ করত। সংস্কৃতি কখনো কখনো রাজনৈতিক সুবিধার জন্য আরোপিত হতো। সিন্ডিকেটের হাতে ছিল সব ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা। সমাজের বেশির ভাগ লোকের নির্লিপ্ততা এই রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে টিকিয়ে রেখেছিল।

বৈষম্য একটি কাঠামোগত শব্দ এবং এটি বন্ধনীর মধ্যে আবদ্ধ। হাজার হাজার বছরের ইতিহাসে দেখা যায় যে মানুষ সব সময় এই কাঠামোগত বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। কিন্তু এই বৈষম্যবিরোধী লড়াই খুব কম সমাজেই পরিবর্তন এনেছে। আরও ট্র্যাজেডি হলো, পৃথিবীর ইতিহাসে এই ন্যায়প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াইকারীদের কেউ কেউ পরবর্তী সময়ে জুলুমবাজ হয়ে উঠেছে। এর ফলে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই বারবার ফিরে এসেছে; এই জনপদে ‘অন্যায়’ ও ‘জুলুম’ শব্দকে ব্যবহার করে লড়াই হয়েছে অনেক আগে থেকেই।

গণতন্ত্র এখন একটি জটিল ও সংশয়পূর্ণ প্রপঞ্চে রূপ লাভ করেছে। এর প্রধান কারণ হলো, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্তৃত্ববাদী শক্তির সিন্ডিকেট।

এই জনপদে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আগ্রহ ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ শাসকদের অত্যাচার ও নিপীড়ন থেকে মুক্তি লাভের আকাঙ্ক্ষা থেকে।

বাংলাদেশে এখনো শক্তিশালী স্বার্থান্বেষী রাজনৈতিক চক্র, রাজনৈতিক মেরুকরণ ও জনসচেতনতার অভাবের মতো চ্যালেঞ্জগুলো রয়ে গেছে।

৩.

ইউরোপীয় রেনেসাঁ ও রিফরমেশন–পরবর্তী আধুনিক রাজনৈতিক ব্যবস্থায় অন্যায় থেকে মুক্তিলাভের সঙ্গে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার বিষয়টিকে একাকার করে দেখা হয়েছে। এ কারণে বর্তমান লড়াইয়ের উত্তরাধিকার হিসেবে ঔপনিবেশিক শাসনামল থেকে পাঠ নেওয়া জরুরি। তবে আমরা ইতিহাসের আরেকটু পেছনে ফিরে দেখতে পারি।

মার্টিন লুথার, লেওনার্দো দা ভিঞ্চি ও ম্যাকিয়াভেলি ইউরোপীয় ধর্ম, নৈতিকতা, শিল্প ও রাজনৈতিক ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যে নতুন সভ্যতা (যাকে আমরা আধুনিক বলি) নির্মাণের যাত্রা শুরু করেছিলেন, সেটা পর্যায়ক্রমে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় রূপ লাভ করে। এই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ইউরোপীয়।

ঔপনিবেশিক শাসন প্রতিষ্ঠাকারী দেশগুলোর অভ্যন্তরে বিশৃঙ্খলা রোধ করার জন্য ক্ষমতাকাঠামোর ধারাবাহিক পরিবর্তন একটি রাজনৈতিক বন্দোবস্ত হিসেবেই বিকশিত হয়েছিল। এটা পরবর্তী সময়ে ইংরেজ, ফরাসি, রুশ ও মার্কিন বিপ্লবের মধ্য দিয়ে মানবিকতা, সর্বজনীনতা এবং প্রান্তিক মানুষের অধিকার অন্তর্ভুক্ত করার অভিপ্রায় প্রকাশ করে এবং একটি বৈশ্বিক বন্দোবস্তে রূপ লাভ করে। এই ব্যবস্থার আবেদন বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত হতে থাকে।

এখানে বলে রাখা ভালো যে বৈশ্বিকভাবে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার বিকাশ ঔপনিবেশিক দেশগুলোর নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগির ‘স্ট্যাটাস ক্যু’ (স্থিতাবস্থা) বজায় রাখার জন্যই। তবে শিল্পবিপ্লব, কাঁচা টাকার বিকাশ, শিল্পমুনাফায় উদ্বৃত্ত ও ব্যক্তিমালিকানার নিরাপত্তা প্রয়োজনীয়তাও এই ব্যবস্থার বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাতিসংঘের সর্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণায় মানবতা, মানুষের অধিকার ও প্রান্তিক মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করার বৈশ্বিক বন্দোবস্তের ফলে অনেক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা শুধু ইউরোপ ও আমেরিকায় নয়, সদ্য স্বাধীন ঔপনিবেশিক দেশগুলোয় বিস্তৃত হতে থাকে।

৪.

বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময় থেকে বৈষম্য থেকে মুক্তিলাভের জন্য রাজনৈতিক ব্যবস্থা হিসেবে সমাজতন্ত্রের প্রতি মানুষের আগ্রহ তৈরি হয়েছিল। কিন্তু পুঁজিবাদে ব্যক্তিগত আয়েশ প্রাধান্য পায়, তাই সমাজতন্ত্রের তুলনায় পুঁজিবাদের প্রতি মানুষের আবেদন বেড়ে যায়।

গত শতাব্দীর ৯০-এর দশক থেকে সমাজতন্ত্র অনেকটা কোণঠাসা হয়ে পড়ে। ফলে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা হিসেবে, পুঁজিবাদ ও রাজনৈতিক ব্যবস্থা হিসেবে গণতন্ত্র হাত–ধরাধরি করে পৃথিবীব্যাপী বিস্তৃত হতে থাকে এবং এটাই মানুষের মুক্তিলাভের উপায় হিসেবে গণ্য হয়ে ওঠে।

১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের মধ্য দিয়ে এই গণতন্ত্র বিশ্বব্যাপী একমাত্র রাজনৈতিক ব্যবস্থা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। এ রকম প্রেক্ষাপটেই দ্য এন্ড অব হিস্টরি অ্যান্ড দ্য লাস্ট ম্যান বইয়ে ফ্রান্সিস ফুকোয়ামা বলেছিলেন, গণতন্ত্রই যে শেষ কথা। যদিও চীনসহ বেশ কিছু কর্তৃত্ববাদী দেশের অর্থনীতি ও রাজনীতির অভূতপূর্ব বিকাশের কারণে কর্তৃত্ববাদ নাকি গণতন্ত্রের প্রতি মানুষের ঝোঁক বেশি, সে বিষয়ে বারবার তাঁর মতামত পরিবর্তন করেছেন। এই প্রসঙ্গেই ফরিদ জাকারিয়া ‘ইলিবারেল ডেমোক্রেসি’র ধারণাও তুলে ধরেছেন। 

গণতন্ত্র এখন একটি জটিল ও কনফিউজড (সংশয়পূর্ণ) প্রপঞ্চে রূপ লাভ করেছে। এর প্রধান কারণ হলো, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্তৃত্ববাদী শক্তির সিন্ডিকেট, পপুলিজমের (জনতুষ্টিবাদ) বিকাশ এবং জনতুষ্টিবাদী সরকারের সঙ্গে সামরিক বাহিনীর নেক্সাস। এ ছাড়া দুর্বল ও ছোট দেশগুলোর রাজনৈতিক ব্যবস্থার ওপর বৈশ্বিক শক্তিগুলোর পাশাপাশি আঞ্চলিক শক্তিগুলোর প্রভাব এখনো অব্যাহত রয়েছে। বর্তমান ডিজিটাল যুগে ‘ডিজিটাল ডিক্টেটরশিপ’-এর অনুশীলনও প্রধান কারণ।

এসব সত্ত্বেও কিছু দেশে টেকসই রাজনৈতিক ব্যবস্থা রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশগুলোর কথা বলা যায়। তা ছাড়া ভঙ্গুর অবস্থা থেকে পূর্ণ গণতন্ত্রে প্রবেশের সাম্প্রতিক উদাহরণও আছে। এ ক্ষেত্রে চিলির কথা বলা যায়।

৫.

সার্বিকভাবে ভারতীয় ভূখণ্ডে, এমনকি বাংলাদেশ নামক এই জনপদে এই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আগ্রহ ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ শাসকদের অত্যাচার ও নিপীড়ন থেকে মুক্তিলাভের আকাঙ্ক্ষা থেকেই। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান কায়েমের মধ্যে দিয়ে এই আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়নি, বরং কাঠামোগত বৈষম্য নতুন রূপ লাভ করে।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন রাষ্ট্র অর্জন করলেও শাসকের চরিত্রের সামান্যই বদল হয়েছিল। এর ফলে গণতান্ত্রিক শাসনের মধ্য দিয়ে জুলুম থেকে মুক্তি পাওয়ার যে আকাঙ্ক্ষা, তা অধরাই রয়ে যায়।

দীর্ঘ সামরিক শাসনের অবসানের পর ১৯৯১ সালে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে এ অবস্থার পরিবর্তন প্রত্যশা করা হয়েছিল। কিন্তু সেবারও জনপ্রতিনিধিরা মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারেননি, অধিকাংশ মানুষের মুক্তি নিশ্চিত করতে পারেননি। তবে এটুকু হয়েছিল যে অপেক্ষাকৃত গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ধারাবাহিকভাবে ক্ষমতাকাঠামো পরিবর্তনের একটা বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

কিন্তু সে ব্যবস্থাও বেশি দিন টেকসই হলো না। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ২০১১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের মধ্য দিয়ে প্রথমে একটি কর্তৃত্ববাদী এবং পরবর্তী সময়ে একটি ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রকাঠামো প্রতিষ্ঠিত হলো। এর ফলে রক্তাক্ত গণ-অভ্যুত্থান অনিবার্য হয়ে ওঠে; চব্বিশের জুলাই-আগস্টে আমরা সেটাই প্রত্যক্ষ করি।

এক বছর আগে সর্বস্তরের ছাত্র-জনতার অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে এক নতুন যুগের সূচনা হয়।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গণত ন ত র ক ব যবস থ র জন ত ক ব যবস থ ক ব যবস থ র র প ল ভ কর ঔপন ব শ ক গণতন ত র পরবর ত হয় ছ ল র জন য ইউর প ক ষমত

এছাড়াও পড়ুন:

শামীম ওসমান দিনের পর দিন না’গঞ্জবাসীর সাথে  প্রতারণা করেছে : কম. সাঈদ

নারায়ণগঞ্জ- ৫ আসনে শক্তির জানান দিলেন সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী কমরেড সাঈদ আহমেদ। সদর-বন্দরবাসী কাছে ধানের শীষে ভোট প্রার্থনা করে নগরীতে শোডাউনের মাধ্যমে ধানের শীষের প্রচারণা করলেন ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ এই নেতা।

শুক্রবার (১৪ নভেম্বর)  বিকেলে শহরের আমলাপাড়াস্থ নিজ কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু করে বঙ্গবন্ধু সড়কজুড়ে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী নিয়ে ধানের শীষে ভোট প্রার্থনা করেন বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের প্রধান এই নেতা।

মিছিল ও ধানের শীষের প্রচারণা শেষে কমরেড সাঈদ আহমেদ বলেন, আমাদের রাজনৈতিক ইতিহাসে বহু দুঃখজনক ও বিতর্কিত ঘটনা রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে রাষ্ট্রশক্তির অপব্যবহার ও দমন পীড়নের অভিযোগ যেভাবে উত্থাপিত হয়েছে, সেগুলোর স্মৃতি আজও জাতির মনে গভীর ক্ষত হিসেবে রয়ে গেছে।

১৯৭৩ সালের ১১ ডিসেম্বর রাজশাহীতে আমাদের দলের ৪৪ জন নেতাকে হত্যার অভিযোগ, কিংবা ১৯৭৫ সালের ২ জানুয়ারি চট্টগ্রাম পাহাড়তলী থেকে সিরাজ শিকদারকে আটক করে পরে হত্যার ঘটনাকে ঘিরে উত্থাপিত বিভিন্ন দাবি এসবই ইতিহাসে গভীর বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। একইভাবে, তৎকালীন সংসদ সদস্য শাহিন আলীর মৃত্যুকেও অনেকেই রাজনৈতিক নিপীড়নের উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করে থাকেন।

তিনি আরও বলেন, এই ঘটনাগুলো আমরা ইতিহাসের দাবি হিসেবে তুলে ধরি জবাবদিহির প্রয়োজন থেকে, সত্য উন্মোচনের প্রয়োজন থেকে। কারণ যদি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক অতীত ও কর্মকাণ্ড নিয়ে কথা বলতে শুরু করি, তবে তা একদিনে শেষ করা যাবে না।

দেশের গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যেভাবে দমন-পীড়ন হয়েছে অনেকে মনে করেন, তার নজির পৃথিবীর ইতিহাসেই খুব কম রয়েছে। আর ঠিক সেই কারণেই আমরা, দেশ ও জনগণের স্বার্থে, আপসহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের নির্দেশনায় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি।

কমরেড সাঈদ আহমেদ বলেন, নারায়ণগঞ্জের মানুষের সাথে শামীম ওসমান প্রতারণা করেছেন এ অভিযোগ জনগণের মুখেই শোনা যায়। প্রেসিডেন্টের গাড়ি থামিয়ে স্মারকলিপি দেয়ার ঘটনায় তিনি নিজেকে যুক্ত করার চেষ্টা করলেও, সেদিন ওই ঘটনার সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না।

তিন জানান, নারায়ণগঞ্জকে জেলা করা এবং তুলারাম কলেজকে সরকারি করার দাবিতে সেই স্মারকলিপি তিনি নিজেই প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে প্রদান করেছিলেন সেই সময় শামীম ওসমানের রাজনৈতিক অস্তিত্বই ছিল না।

তিনি আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জের জনগণ যেভাবে প্রতারণার জবাব দিয়েছে, ভবিষ্যতেও ঠিক সে ভাবেই দেবে। নারায়ণগঞ্জের মানুষের সঙ্গে প্রতারণা, তালবাহানা, কিংবা অগ্নিসংযোগ বা কোনো ধরনের অরাজকতা সৃষ্টি করার চেষ্টা কোনোটাই বরদাস্ত করা হবে না। আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি, এবং জনগণের নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।

শেখ হাসিনার পিতা শেখ মুজিব ১৯৭৩ সালে যেভাবে অরজগতা সৃষ্টি করেছিল (১১ ডিসেম্বরে) আমাদের পার্টির ৪৪ জন নেতাকে রাজশাহীতে হত্যা করেছিল রক্ষী বাহিনীর মঞ্জুরের নেতৃত্বে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল, ১৯৭৫ সালের (২ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম পাহাড়তলী থেকে সিরাজ শিকদারকে ধরে এনে ঢাকা সাভারে নিয়ে শেখ মুজিবের রকিবাহিনী হত্যা করেছিল, আরো হত্যা করেছিল পার্লামেন্টে শাহিন আলিকে শেখ মুজিব নিজ হাতে, 

তিনি আরও বলেন, যদি আমরা শেখ হাসিনার ইতিহাস বলতে চাই, বলে শেষ করা যাবে না বাংলাদেশের ইতিহাসে এরকম নৃশংস গণহত্যা পৃথিবীর বুকে আর কোন স্বৈরাচার করে নাই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যেভাবে মানুষকে হত্যা করেছে সারা পৃথিবীর বুকে নজির হয়ে থাকবে, আমরা চাই দেশ এবং জনগণের স্বার্থে বাংলাদেশের আপোসিন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নির্দেশনায় আমরা বাংলাদেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে কাজ করছি 

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের সাথে শামীম ওসমান প্রতারণা করেছে, প্রেসিডেন্টের গাড়ি সে থামিয়ে স্মারকলিপি জমা দিয়েছিল, শামীম ওসমান মিথ্যা কথা বলেছে, সেই দিন শামীম ওসমান কোনভাবেই এর সাথে জড়িত ছিল নাভ

ঐদিন আমি নিজে জিয়াউর রহমান কে স্মারকলিপি প্রদান করেছিলাম নারায়ণগঞ্জ কে জেলা করার জন্য, তোলারাম কলেজকে সরকারি করার জন্য, সেই সময় শামীম ওসমানের অস্তিত্ব ছিল না, নারায়ণগঞ্জের মানুষের সাথে যেভাবে প্রতারণা করেছে নারায়ণগঞ্জের জনগণ ঠিক ওইভাবেই তাকে এর জবাব দিয়ে দিয়েছি, আমরা নারায়ণগঞ্জের জনগণকে নিয়ে কোন তালবাহানা কোন অগ্নিসংযোগ যদি কোন দুর্ঘটনা ঘটাতে চায় তাহলে আমরা কোন ছাড় দিব না।

এসময় উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এম-এল এর) পলিটব্যুরো সদস্য কমরেড মেহেবুব, কেন্দ্রীয় সদস্য কমরেড নওশাদ, কেন্দ্রীয় সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি কমরেড নুরুলদীন ঢালী, কেন্দ্রীয় সদস্য ও সম্পাদক নারায়ণগঞ্জ জেলা কমরেড সুমন হাওলাদার, নারায়ণগঞ্জ জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক কমরেড জাকির শিকদার, আহবায়ক নারায়ণগঞ্জ মহানগর কমরেড গোলজার প্রধান, সদস্য সচিব নারায়ণগঞ্জ জেলা কমরেড শাকিল ও সভাপতি বন্দর থানা ইরফান খন্দকার ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জাবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে পরীক্ষার খাতা অবমূল্যায়ন ও ট্যাগিংয়ের অভিযোগ
  • সিদ্ধিরগঞ্জে দুই গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মামলা
  • একীভূত হতে যাওয়া পাঁচ ব্যাংকের দুরবস্থার সময় দায়িত্বে ছিলেন যারা
  • বিভ্রান্তি-হতাশা-অনিশ্চয়তার মধ্যেও নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে: ফখরুল
  • নানা দাবির নামে নির্বাচন ব্যাহত করার চেষ্টা চলছে: মির্জা ফখরুল
  • রোনালদো কি সত্যিই বিশ্বকাপে ১-২ ম্যাচ মিস করবেন
  • বিএনপির নতুন স্লোগান ‘অর্থনৈতিক গণতন্ত্রায়ণ’: আমীর খসরু
  • সেই গণতন্ত্র যেন আর কোন ফ্যাসিবাদের জন্ম না দেয় : মামুন মাহমুদ
  • পারভেজের কথায় ‘বিজয় নেবে ধানের শীষ’
  • শামীম ওসমান দিনের পর দিন না’গঞ্জবাসীর সাথে  প্রতারণা করেছে : কম. সাঈদ