অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে গতকাল অনুষ্ঠিত এক কনসার্টে গাইতে গাইতে হঠাৎ মাইক্রোফোনে তাহসান ঘোষণা করলেন, ‘অনেক জায়গায় লেখা হচ্ছে, এটা আমার শেষ কনসার্ট। শেষ কনসার্ট না, শেষ ট্যুর। আস্তে আস্তে সংগীতজীবনের হয়তো ইতি টানব।’ এই ঘোষণায় হলজুড়ে শোনা যায় একসঙ্গে না–না ধ্বনি। কিন্তু তাহসান নিজের সিদ্ধান্তে অটল থেকে গান চালিয়ে যান। সোমবার দুপুরে তাহসানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি সংক্ষেপে বলেন, ‘একটা সাধারণ জীবনের আশায় এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

পরিবেশ রক্ষায় জাতি হিসেবে আমরা ব্যর্থ হয়েছি: রিজওয়ানা হাসান

পরিবেশ রক্ষায় জাতি হিসেবে আমরা ব্যর্থ হয়েছি বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, পরিবেশ রক্ষায় আমাদের অগ্রাধিকার প্রকৃতিকেন্দ্রিক বা প্রকৃতিবান্ধব হয়নি।

বাংলাদেশের নদীগুলো ঘিরে সংকট রয়েছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেছেন, ‘নদীগুলো মূলত জৈবিকভাবে মৃত। যখন ১৮০টি দেশের মধ্যে আপনার পরিবেশগত কার্যক্ষমতার র‌্যাংক ১৭৯; তখন সেটাকে ৫০ পর্যন্ত এগিয়ে নেওয়া অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। ১৭৯ থেকে ৫০, ৬০ বা ৭০-এ যাওয়া আসলেই খুব কঠিন। কিন্তু একবার আপনি এটিকে ৭০ পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারলে, সেখান থেকে দ্রুত অগ্রসর হওয়া সম্ভব। আমরা এখন ১৭৯-এ আছি, এটা দেখায়, আমরা ব্যর্থ হয়েছি, একটি জাতি হিসেবে সমষ্টিগতভাবে।’

‘রিভাইভিং ঢাকা’স রিভার্স: পলিসি অপশনস ফর সাসটেইনেবল ম্যানেজমেন্ট’ শীর্ষক নীতি সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। আজ সোমবার বেলা ১১টায় নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির (এনএসইউ) সিন্ডিকেট হলে এ সংলাপের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব পলিসি অ্যান্ড গভর্ন্যান্স (এসআইপিজি)। সংলাপে নদীদূষণ নিয়ে একটি নিবন্ধ তুলে ধরা হয়। তাতে রাজধানীর নদীদূষণের কারণ, প্রতিকারসহ নানা বিষয় তুলে ধরা হয়।

উন্নয়ন চিন্তায় মৌলিক পরিবর্তন আনার ওপর জোর দেন পরিবেশ উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘আমরা ইকোসিস্টেম হত্যা করছি। আপনি যা হত্যা করছেন, সেটিকে আপনি জন্ম দিতে পারবেন না। আপনি সেটিকে পুনঃসৃষ্টি করতে পারবেন না। আপনি শত শত ট্যানারি কারখানা বানাতে পারবেন। আপনি আরেকটি বুড়িগঙ্গা তৈরি করতে পারবেন না।’

নদীব্যবস্থা পুনরুদ্ধার দ্রুত সময়ের মধ্যে সম্ভব নয় উল্লেখ করে রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘এক-দেড় বছরের মধ্যে সমাধান খুঁজে পাওয়া আমাদের পক্ষে অসম্ভব।’ এ বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে সরকারের আলোচনা চলছে বলেও জানান তিনি।

আজকের সংলাপে পরিবেশ উপদেষ্টা নদী রক্ষায় সরকারের কিছু কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরেন। এর মধ্যে রয়েছে নদী পুনরুদ্ধার কাঠামো প্রণয়ন; নদীর তলদেশ পরিষ্কার করা, দূষক অপসারণ ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা; নদীর পানি ও পরিবেশের গুণমান নিয়মিত নজরদারি এবং মানোন্নয়ন এবং পরিবেশগত সুরক্ষা নিশ্চিতে কাজ করা। পাশাপাশি ভারত এবং নেপালের নদী পুনরুদ্ধারে উদাহরণ দিয়ে নদী এবং পরিবেশ রক্ষায় রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি নিশ্চিতের আহ্বান জানান তিনি।

চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন একেবারেই জরুরি কি না, এমন প্রশ্ন তুলে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘এগুলো রাজনৈতিক নেতাদের তৈরি করা হাইপ এবং আমরা শুধু শিখেছি সেই হাইপের বিপরীতে ডেলিভার করতে, যা তারা তাদের নিজস্ব অর্থনৈতিক স্বার্থে তৈরি করেছে।’ এর ফলে প্রাকৃতিক বন এবং হাতির করিডর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও জানান তিনি।

আজকের সংলাপে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল হান্নান চৌধুরী সভাপতিত্ব করেন। এসআইপিজির পরিচালক অধ্যাপক শেখ তৌফিক এম হকের সঞ্চালনায় সংলাপে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ, বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমোডর আরিফ আহমেদ মোস্তফা প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ