তিন ভাইয়ের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মামলা, এলাকায় চাঞ্চল্য
Published: 10th, November 2025 GMT
বরগুনায় এক নারীকে (৩৮) দুই দফায় সংঘবদ্ধ ধর্ষণ এবং এর ভিডিও ধারণের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে দুই সহোদরসহ তিন ভাইয়ের বিরুদ্ধে। প্রধান আসামি পলাতক। দুই সহোদরকে গ্রেপ্তারের পর এক ভাইয়ের জামিন দিয়েছে আদালত।
তিন ভাইয়ের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা হওয়ায় হতবাক হয়েছেন তাদের স্বজন ও এলাকাবাসী। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, বরগুনার আমতলীতে নিজ বাড়িতে গত ২৩ অক্টোবর প্রতিবেশী দুই চাচাত ভাই সাইফুল ও ইমরান এক নারীকে ধর্ষণ করেন। এর ৬ দিন পর ২৯ অক্টোবর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে প্রথমবার ধর্ষণ করা সাইফুল এবং তার চাচাত ভাই ইমরান ও ইমরানের আপন ছোটভাই ওই নারীর বাড়িতে যান। তখন ওই নারী রান্নায় ব্যস্ত ছিলেন। তার কাছে খাবার পানি চাইলে তিনি পানি আনতে ঘরের ভিতরে যান। এ সময় অভিযুক্তরা ঘরের ভিতরে ঢোকেন। প্রথমে ইমরান ওই নারীকে ধর্ষণ করেন। এরপর পালাক্রমে সাইফুল তাকে ধর্ষণ করে। এর ভিডিও মুঠোফোনে ধারণ করেন ইমরানের ছোট ভাই।
৩১ অক্টোবর আমতলী থানায় ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি আইনে তিন ভাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন ওই নারী।
তার বড় ভাই রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেছেন, আমরা লোকলজ্জায় এ ঘটনা প্রথমে কাউকে জানাতে চাইনি। কিন্তু, দ্বিতীয় বার ধর্ষণের পর থানায় মামলা দায়ের করেছি। আমরা অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।
ওই নারীর মা বলেন, আমরা আতঙ্কে আছি। আমার মেয়ের সাথে খুব খারাপ হয়েছে। এখন কাউকে মুখ দেখাতে পারছি না।
এদিকে, মামলার পর ৩১ অক্টোবর রাতে মামলার ২ নম্বর আসামি ইমরান নিজেই ঘটনা মিথ্যা দাবি করে তিনবার আমতলী থানায় যান এবং ওসির সঙ্গে কথা বলেন। ওই রাতেই থানায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় তাকে। পরে ৫ নভেম্বর আদালতে থেকে জামিনে বের হন তিনি।
তার আগের দিন মঙ্গলবার ৪ নভেম্বর রাতে চট্টগ্রাম থেকে ইমরানের ছোট ভাই ও মামলার ৩ নম্বর আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
আসামিদের স্বজনরা বলছেন, পূর্বশত্রুতার জের ধরে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে তিন ভাইকে।
সাইফুলের বড় ভাই শামীম বলেছেন, জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে আমাদের মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। আদালত থেকে আমরা ন্যায়বিচার পাব।
অভিযুক্ত ইমরানের মা বলেন, যে সময় ঘটনা উল্লেখ করে মামলা দায়ের করা হয়েছে, সে সময় আমার বড় ছেলে ইমরান কলাপাড়া বাজারে একটি সেলুনে চুল কাটছিল। সেসব প্রমাণ আমাদের কাছে আছে। প্রমাণ আদালতে দাখিল করার সাথে সাথে ইমরানের জামিন দিয়েছেন আদালত।
দুই সহোদরসহ তিন ভাই একত্রে ধর্ষণ করেছেন, এমন অভিযোগে মামলা হওয়ায় হতবাক এলাকাবাসী।
মজিবুর রহমান, জালাল খান, বাবুল হাওলাদারসহ স্থানীয়রা বলেছেন, তিন ভাই মিলে কীভাবে ধর্ষণ করে, আমরা এটা বিশ্বাস করি না। বড় ভাই খারাপ কাজ করলে ১৭ বছরের ছোট ভাইকে সাথে নিয়ে যায় না। আমরা এই ঘটনায় সঠিক তদন্ত চাই।
নির্যাতনের শিকার নারীর প্রতিবেশী হরিপদ গাইন বলেছেন, এমন ঘটনা আগে কখনো শুনিনি। তিন ভাই মিলে এমন ঘটনা ঘটাবে, এটা বিশ্বাসযোগ্য না। তিনি একদিন ধর্ষণের শিকার হবার পর তার কাছে ৬ দিন পর আবার যখন গেল আর পানি খেতে চাইল, তখন সে ধর্ষকদের জন্য পানি আনতে ঘরের ভিতর কেন যাবে? সে তো ধর্ষকদের দেখার সাথে সাথে প্রতিবেশীদের ঘরে যাবে অথবা চিৎকার দিবে।
এ ঘটনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেওয়ান জগলুল হাসান।
তিনি বলেছেন, মামলা দায়ের করার সাথে সাথে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একজন পলাতক আছে, তাকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
বাদীর পরিবারের নিরাপত্তার বিষয়টি নজরে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.
ঢাকা/ইমরান/রফিক
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইমর ন র বল ছ ন ওই ন র
এছাড়াও পড়ুন:
তিন ভাইয়ের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মামলা, এলাকায় চাঞ্চল্য
বরগুনায় এক নারীকে (৩৮) দুই দফায় সংঘবদ্ধ ধর্ষণ এবং এর ভিডিও ধারণের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে দুই সহোদরসহ তিন ভাইয়ের বিরুদ্ধে। প্রধান আসামি পলাতক। দুই সহোদরকে গ্রেপ্তারের পর এক ভাইয়ের জামিন দিয়েছে আদালত।
তিন ভাইয়ের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা হওয়ায় হতবাক হয়েছেন তাদের স্বজন ও এলাকাবাসী। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, বরগুনার আমতলীতে নিজ বাড়িতে গত ২৩ অক্টোবর প্রতিবেশী দুই চাচাত ভাই সাইফুল ও ইমরান এক নারীকে ধর্ষণ করেন। এর ৬ দিন পর ২৯ অক্টোবর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে প্রথমবার ধর্ষণ করা সাইফুল এবং তার চাচাত ভাই ইমরান ও ইমরানের আপন ছোটভাই ওই নারীর বাড়িতে যান। তখন ওই নারী রান্নায় ব্যস্ত ছিলেন। তার কাছে খাবার পানি চাইলে তিনি পানি আনতে ঘরের ভিতরে যান। এ সময় অভিযুক্তরা ঘরের ভিতরে ঢোকেন। প্রথমে ইমরান ওই নারীকে ধর্ষণ করেন। এরপর পালাক্রমে সাইফুল তাকে ধর্ষণ করে। এর ভিডিও মুঠোফোনে ধারণ করেন ইমরানের ছোট ভাই।
৩১ অক্টোবর আমতলী থানায় ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি আইনে তিন ভাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন ওই নারী।
তার বড় ভাই রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেছেন, আমরা লোকলজ্জায় এ ঘটনা প্রথমে কাউকে জানাতে চাইনি। কিন্তু, দ্বিতীয় বার ধর্ষণের পর থানায় মামলা দায়ের করেছি। আমরা অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।
ওই নারীর মা বলেন, আমরা আতঙ্কে আছি। আমার মেয়ের সাথে খুব খারাপ হয়েছে। এখন কাউকে মুখ দেখাতে পারছি না।
এদিকে, মামলার পর ৩১ অক্টোবর রাতে মামলার ২ নম্বর আসামি ইমরান নিজেই ঘটনা মিথ্যা দাবি করে তিনবার আমতলী থানায় যান এবং ওসির সঙ্গে কথা বলেন। ওই রাতেই থানায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় তাকে। পরে ৫ নভেম্বর আদালতে থেকে জামিনে বের হন তিনি।
তার আগের দিন মঙ্গলবার ৪ নভেম্বর রাতে চট্টগ্রাম থেকে ইমরানের ছোট ভাই ও মামলার ৩ নম্বর আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
আসামিদের স্বজনরা বলছেন, পূর্বশত্রুতার জের ধরে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে তিন ভাইকে।
সাইফুলের বড় ভাই শামীম বলেছেন, জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে আমাদের মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। আদালত থেকে আমরা ন্যায়বিচার পাব।
অভিযুক্ত ইমরানের মা বলেন, যে সময় ঘটনা উল্লেখ করে মামলা দায়ের করা হয়েছে, সে সময় আমার বড় ছেলে ইমরান কলাপাড়া বাজারে একটি সেলুনে চুল কাটছিল। সেসব প্রমাণ আমাদের কাছে আছে। প্রমাণ আদালতে দাখিল করার সাথে সাথে ইমরানের জামিন দিয়েছেন আদালত।
দুই সহোদরসহ তিন ভাই একত্রে ধর্ষণ করেছেন, এমন অভিযোগে মামলা হওয়ায় হতবাক এলাকাবাসী।
মজিবুর রহমান, জালাল খান, বাবুল হাওলাদারসহ স্থানীয়রা বলেছেন, তিন ভাই মিলে কীভাবে ধর্ষণ করে, আমরা এটা বিশ্বাস করি না। বড় ভাই খারাপ কাজ করলে ১৭ বছরের ছোট ভাইকে সাথে নিয়ে যায় না। আমরা এই ঘটনায় সঠিক তদন্ত চাই।
নির্যাতনের শিকার নারীর প্রতিবেশী হরিপদ গাইন বলেছেন, এমন ঘটনা আগে কখনো শুনিনি। তিন ভাই মিলে এমন ঘটনা ঘটাবে, এটা বিশ্বাসযোগ্য না। তিনি একদিন ধর্ষণের শিকার হবার পর তার কাছে ৬ দিন পর আবার যখন গেল আর পানি খেতে চাইল, তখন সে ধর্ষকদের জন্য পানি আনতে ঘরের ভিতর কেন যাবে? সে তো ধর্ষকদের দেখার সাথে সাথে প্রতিবেশীদের ঘরে যাবে অথবা চিৎকার দিবে।
এ ঘটনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেওয়ান জগলুল হাসান।
তিনি বলেছেন, মামলা দায়ের করার সাথে সাথে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একজন পলাতক আছে, তাকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
বাদীর পরিবারের নিরাপত্তার বিষয়টি নজরে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রোকনুজ্জামান খান।
ঢাকা/ইমরান/রফিক