নামের কারণে ১৮ বছর এক টাকাও বরাদ্দ জোটেনি রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার শহীদ জিয়াউর রহমান কলেজের। উল্টো মামলা-হামলার ভয় দেখিয়ে কলেজের নাম পরিবর্তনের চেষ্টা হয়েছে। শত বঞ্চনার মধ্যে কলেজটি টিকিয়ে রাখা গেলেও বরাদ্দের অভাবে সংস্কার করা হয়নি ভবন। জরাজীর্ণ ভবনে ঝুঁকি নিয়েই চলে পাঠদান।
১৯৯৪ সালে বিএনপি সরকারের আমলে কলেজটি স্থাপন করা হয়। পাঠদান শুরু হয় টিনশেড ভবনে। ২০০২ সালে কলেজ হিসেবে এমপিওভুক্ত হয়। ২০০৪ সালে তারেক রহমান কলেজটি পরিদর্শনের পর চার কক্ষের দোতলা প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ হয়। কলেজটিতে ২০ জন শিক্ষক ও ১১ জন কর্মচারী রয়েছেন। এর পর থেকে ওই কলেজে আর কোনো ভবন সংস্কার হয়নি। ভবন সংস্কারে বরাদ্দ চেয়ে সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরগুলোতে চিঠির পর চিঠি দিয়েও সাড়া মেলেনি। দিন দিন কমেছে শিক্ষার্থীর সংখ্যা। এক সময় একাদশ শ্রেণিতে চার শতাধিক শিক্ষার্থী থাকলেও বর্তমানে এ সংখ্যা নেমে দাঁড়িয়েছে ১৮২ জনে।
সরেজমিন দেখা গেছে, শ্রেণিকক্ষগুলোর দেয়ালের ইট খসে পড়ছে। মেঝেতে বড় বড় গর্ত। বেশির ভাগ কক্ষের জানালার গ্রিল ও কপাট ভাঙা। টিনের চালা ফুটো হয়ে গেছে। শ্রেণিকক্ষে নেই পর্যাপ্ত বেঞ্চ, বৈদ্যুতিক বাতি ও পাখা। ছোট ছোট ক্লাসরুমে গাদাগাদি করে বসে শিক্ষার্থীরা ক্লাস করে।
বিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তাসনিম তয়া জানায়, অন্য কলেজের শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞান মেলাসহ যাবতীয় প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। তারা কখনও আমন্ত্রণ পায় না। তাদের কলেজের জন্য বরাদ্দ খেলার সামগ্রীও অন্য কলেজে দেওয়া হয়। মেট্রোপলিটন এলাকায় এ ধরনের অবহেলিত প্রতিষ্ঠান হয়তো আর কোথাও নেই।
একাদশ শ্রেণির মানবিক বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রুবিনা খাতুন জানায়, জানালার কপাট নেই। ফুটো টিনের চালা দিয়ে বৃষ্টির পানি ঢোকে। শীতে হিমেল হাওয়ায় কাঁপতে হয়। প্রাচীর না থাকায় বহিরাগতদের আনাগোনা হরহামেশা।
প্রভাষক আব্দুল আলীম বলেন, শিক্ষার্থীদের এ কলেজে ভর্তি হতে নিরুৎসাহিত করতেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। বলা হতো, এ কলেজের নাম সার্টিফিকেটে থাকলে কোথাও চাকরি হবে না। প্রতিটি কলেজে নতুন ভবন, ডিজিটাল ল্যাব, ডিজিটাল ক্লাসরুম থাকলেও এ প্রতিষ্ঠানে কোনো বরাদ্দ দেওয়া হয় না। শিক্ষকদের মাসের বেতন থেকে এক হাজার টাকা করে তুলে কলেজ উন্নয়নের কাজে ব্যয় করা হয়।
অধ্যক্ষ মো.                
      
				
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সোহেল হোসেন বলেন, ১৮ বছরে কলেজটিকে কোনো ধরনের বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। এজন্য আধুনিক ভবন ও ডিজিটাল ল্যাবসহ যাবতীয় বরাদ্দের তালিকায় চাহিদার পাঠানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে। বরাদ্দ এলেই কাজ শুরু করা হবে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
রংপুর-৩: জাতীয় পার্টির আসন দখলে নিতে প্রচারণা শুরু বিএনপির
কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন রংপুর-৩ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ও মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামু। দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় পার্টির কব্জায় থাকা এ আসনটি দখলে নিতে অঙ্গীকার করেছেন তিনি।
রংপুর-৩ আসনটি মূলত নগরীর কোতোয়ালি, সদর ও সিটি করপোরেশনের কিছু অংশ নিয়ে গঠিত। প্রায় চার লাখের বেশি ভোটারের এ আসনে দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় পার্টি শক্ত অবস্থান ধরে রেখেছে। এই আসনে সর্বশেষ নির্বাচনে জয় পেয়েছিলেন জি এম কাদের।
আরো পড়ুন:
এটাই হয়তো আমার শেষ নির্বাচন: মির্জা ফখরুল
কিশোরগঞ্জ-৪, নতুন করে আলোচনায় ফজলুর রহমান
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) দুপুরে রংপুর নগরীর ঐতিহ্যবাহী কেরামতিয়া মসজিদে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে নামাজ পড়েন সামু। এরপর কেরাম মতিয়া এলাকা, কোর্ট চত্বর ও নগরীর সিটি বাজার এলাকায় গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন। এলাকাবাসীর সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন তিনি।
সামু বলেন, “জনগণ এবার পরিবর্তন চায়। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে ভোটের মাঠে নামছি। বিএনপির নিরঙ্কুশ বিজয় নিশ্চিত হবে।”
সোমবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় দলীয় মনোনীত প্রার্থী হিসেবে সামসুজ্জামান সামুর নাম ঘোষণার পর থেকেই বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা গেছে। তারা জানান, স্থানীয় নেতৃত্ব ঐক্যবদ্ধ থাকলে জাতীয় পার্টির এই ঘাঁটিতে বিএনপি প্রার্থী বিপুল ভোটের ব্যাবধানে জয়ী হতে পারবে।
রংপুর-৩ আসনটিতে সামসুজ্জামান সামুর প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে রয়েছেন- বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামের প্রার্থী ও দলটির কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল, বাংলাদেশ ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন (চরমোনাই) প্রার্থী ও দলটির রংপুর মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক আমিরুজ্জামান পিয়াল। আলোচনায় রয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির রংপুর মহানগর কমিটির যুগ্ম সমন্বয়ক আলমগীর হোসেন নয়ন।
নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ পেলে এই আসনে প্রার্থী হতে পারেন জাতীয় পার্টির জি এম কাদের।
ঢাকা/আমিরুল/মাসুদ