দেশের অবস্থা দেখে হৃদয় ভেঙেছে বাঁধনের
Published: 12th, July 2025 GMT
‘‘আমার বাবা-মা আমার নিরাপত্তা নিয়ে গভীরভাবে চিন্তিত। আর আমার মেয়ে—শুধু আমিই তার। আমিই আমার মেয়ের পুরো পৃথিবী। কিন্তু এই রকম একটা দেশে আমি তাকে কীভাবে রক্ষা করব?’’ কথাগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন চিত্রনায়িকা আজমেরী হক বাঁধন।
তিনি আরও লিখেছেন, ‘‘আমরা কেমন জায়গায় বাস করছি? যেখানে কোন নিরাপত্তা নেই। মনে শান্তি নেই। আমরা আশা করেছিলাম পরিস্থিতি বদলে যাবে। আমরা আরও ভালো, নিরাপদ জীবনের স্বপ্ন দেখেছিলাম।একটি নতুন সরকার এসেছিল। আমরা বিশ্বাস করেছিলাম। আমরা অপেক্ষা করেছিলাম।কিন্তু এখন আমরা যা দেখছি তা ভয়াবহ।’’
বাঁধন তার পোস্টে উল্লেখ করেছেন দেশের বর্তমান পরিস্থিতি দেখে তার হৃদয় ভেঙে গেছে।
আরো পড়ুন:
মৃত্যু নিয়ে মশকরা করে রোষানলে পায়েল
এপ্রিলে বিয়ে, জুলাইয়ে বিচ্ছেদ?
বাঁধনের ভাষায় ‘‘ যদি নির্বাচিত সরকারের কোন বাস্তব দৃষ্টিভঙ্গি না থাকে, পরিবর্তন আনার সাহস না থাকে—তাহলে লাভ কী? আমি ভীত। আমি রেগে আছি।আর সবকিছুর চেয়েও বেশি, আমার হৃদয় ভেঙে গেছে।’’
বুধবার (৯ জুলাই) রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালের তিন নম্বর গেটের সামনে সোহাগ নামে এক ভাঙারি ব্যবসায়ীকে পাথর দিয়ে মাথায় আঘাত করে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। ওই হত্যাকাণ্ডের একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে নড়ে ওঠে দেশবাসী। যে যার জায়গা থেকে প্রতিবাদ করেছে। মর্মান্তিক এ ঘটনা বাঁধনকে শুধু শোকাহত করেনি, তার নিজের নিরাপত্তা নিয়েও ভাবাচ্ছে। এই হত্যাকাণ্ডের একাধিক ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেছেন বাঁধন।
১১ জুলাই নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে এই অভিনেত্রী লেখেন, ‘‘এটা এক ধরনের মর্মান্তিক ছবি। কারো হত্যা হতে দেখা, যেখানে বাকি সবাই দাঁড়িয়ে দেখছে। কিছুই করছে না। এটা কীভাবে সম্ভব? কী ধরনের দেশে আমরা বেঁচে আছি? মানুষ দাঁড়িয়ে দেখল।কিন্তু কেউ এগিয়ে গেল না। কতটা ভয়াবহ?’’
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে
বাংলাদেশে বৈদেশিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (এফডিআই) গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী এক বছরে ১৯ দশমিক ১৩ শতাংশ বেড়েছে। এর মধ্যে দিয়ে দেশে বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশের প্রতি আন্তর্জাতিক আস্থার প্রতিফলন দেখা গেছে।
বিশ্বব্যাংকের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, সম্প্রতি যেসব দেশে গণঅভ্যুত্থান ঘটেছে, সেসব দেশে পরবর্তী এক বছরে এফডিআই উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কায় ২০২২ সালের পর এফডিআই কমেছে ১৯.৪৯ শতাংশ, চিলিতে ২০১৯ সালের পর কমেছে ১৫.৬৮ শতাংশ, সুদানে ২০২১ সালের পর ২৭.৬০ শতাংশ, ইউক্রেনে ২০১৪ সালের পর ৮১.২১ শতাংশ, মিশরে ২০১১ সালের পর ১০৭.৫৫ শতাংশ এবং ইন্দোনেশিয়ায় ১৯৯৮ সালের পর ১৫১.৪৯ শতাংশ কমেছে। এই ধারাবাহিক হ্রাসের মধ্যে বাংলাদেশে এফডিআইর ১৯.১৩ শতাংশ বৃদ্ধির চিত্র বিশেষভাবে নজরকাড়া।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেছেন, “বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় গুণ হলো—শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও অর্থনীতিকে পুনরায় চালু করার অদ্ভুত ক্ষমতা। এই পরিসংখ্যান তার দারুন একটা প্রতিফলন। সাধারণত, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বিদেশি বিনিয়োগ কমে যায়, কিন্তু আমরা উল্টা দেখছি। সঠিক নীতি নির্ধারণ, বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআরসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার আন্তরিকতা এবং প্রাইভেট সেক্টরের অদম্য স্পৃহা কারণে এটি সম্ভব হয়েছে। আমরা সব সময় বিনিয়োগকারীদের সাহায্য করার চেষ্টা করেছি। সব সমস্যার সমাধান হয়নি, তবে সদিচ্ছার কোনো ত্রুটি ছিল না। শিগগিই সারা বছরের একটি আমলনামা (রিপোর্ট কার্ড) প্রকাশ করা হবে।”
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ৪৮৮ দশমিক ৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, ২০২২ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৬৭০ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলারে। ২০২৩ সালে বিনিয়োগের পরিমাণ হয় ৯২৪ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার, তবে ২০২৪ সালে কিছুটা কমে দাঁড়ায় ৬৭৬ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলারে। ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে বিদেশি বিনিয়োগ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯২ দশমিক ৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে।
অর্থনীতিবিদদের মতে, বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এই ধারা বজায় থাকা অত্যন্ত ইতিবাচক। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, দীর্ঘমেয়াদি নীতি সহায়তা ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে আরো বড় পরিসরে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে পারবে বলে মনে করছেন তারা।
ঢাকা/নাজমুল/রফিক