পাল্টা শুল্কের শঙ্কায় বাংলাদেশ থেকে পোশাকের ক্রয়াদেশ পিছিয়েছে ওয়ালমার্ট
Published: 12th, July 2025 GMT
বিশ্বখ্যাত ওয়ালমার্ট বাংলাদেশের পোশাকের কিছু ক্রয়াদেশ পিছিয়ে দিয়েছে, কিছু ক্রয়াদেশ স্থগিত করেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশের পণ্যে, বিশেষ করে তৈরি পোশাকে ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করার ঘোষণা দেওয়ায় এমন ঘটনা ঘটল। খবর রয়টার্সের
রয়টার্স আরও বলছে, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে তৃতীয় বৃহত্তম দেশ এবং দেশটির রপ্তানি আয়ের ৮০ শতাংশ এবং মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ১০ শতাংশ এই খাত থেকে আসে। কারখানামালিকেরা জানান, আগামী ১ আগস্ট থেকে ট্রাম্প প্রশাসনের প্রস্তাবিত শুল্ক কার্যকর হলে ক্রয়াদেশ কমে যাবে। কারণ, ৩৫ শতাংশ অতিরিক্ত খরচ তাঁরা বহন করতে পারবেন না।
প্যাট্রিয়ট ইকো অ্যাপারেল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইকবাল হোসেন রয়টার্সকে জানান, যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত শুল্কের কারণে ওয়ালমার্টের জন্য প্রায় ১০ লাখ সাঁতারের পোশাকের একটি ক্রয়াদেশ গত বৃহস্পতিবার স্থগিত করা হয়েছে।
ক্ল্যাসিক ফ্যাশনের সহকারী মার্চেন্ডাইজিং ম্যানেজার ফারুক সৈকত প্যাট্রিয়ট ইকো অ্যাপারেল লিমিটেডের ইকবাল হোসেনসহ অন্যদের কাছে ই–মেইল লিখে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের আমদানির ওপর উচ্চ হারে শুল্ক আরোপ করার প্রস্তাব করায় বসন্ত মৌসুমের সব ক্রয়াদেশ স্থগিত করছি।’ ফারুক সৈকত রয়টার্সকে বলেন, অর্ডার স্থগিতের সিদ্ধান্ত ওয়ালমার্ট নয়, বরং ক্ল্যাসিক ফ্যাশন নিজেই নিয়েছে।
রয়টার্সের পক্ষ থেকে ওয়ালমার্ট কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোনো উত্তর দেয়নি তারা।
বাংলাদেশ বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ওয়াশিংটনে শুল্ক কমানোর বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি ট্রাম্প আবার বিভিন্ন দেশের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের কথা জানিয়েছেন।
ডেনিম এক্সপার্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, যদি ৩৫ শতাংশ শুল্ক বহাল থাকে, তাহলে সত্যিই টিকে থাকা কঠিন হবে। বর্তমানে যে পরিমাণ ক্রয়াদেশ পাওয়া যাচ্ছে, তা আর থাকবে না। তিনি জানান, তাঁর গ্রাহককে কিছু শুল্ক বহনের অনুরোধ করা হবে, সে অবস্থাও নেই। কারণ, ইতিমধ্যে তাঁরা আগের শুল্ক ভারের কিছুটা বহন করছেন। তিনি বলেন, বড় বড় কোম্পানিই কিছুটা টিকে থাকতে পারবে, কিন্তু ছোট ও মাঝারি কোম্পানিগুলো পারবে না।
মহিউদ্দিন রুবেলের প্রতিষ্ঠান এইচঅ্যান্ডএম ও অন্য ব্র্যান্ডের জন্য জিনস উৎপাদন করে।
বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা ব্যান্ড লিভাইস বৃহস্পতিবার জানায়, ২০২৫ সালের বাকি সময়ের জন্য ৬০ শতাংশ প্রয়োজনীয় পণ্যের ৬০ শতাংশ মজুত আছে। বাকিটা দরকার।
ইউএস ইন্টারন্যাশনাল কমিশনের তথ্য–উপাত্ত অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রে ২০২৫ সালের প্রথম পাঁচ মাসে বাংলাদেশ থেকে ৩ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন ডলারের পোশাক আমদানি হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২১ শতাংশ বেশি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র রয়ট র স
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা শুরু ২৮ নভেম্বর, আবেদন ২৯ অক্টোবর থেকে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ২৮ নভেম্বর আইবিএ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার মধ্য দিয়ে এ কার্যক্রম শুরু হবে। শেষ হবে আগামী ২০ ডিসেম্বর ‘বিজ্ঞান ইউনিট’-এর ভর্তি পরীক্ষার মধ্য দিয়ে।
ভর্তি পরীক্ষার জন্য অনলাইনে আবেদন করা যাবে ২৯ অক্টোবর দুপুর ১২টা থেকে। আগামী ১৬ নভেম্বর রাত ১১টা ৫৯ মিনিটে অনলাইনে আবেদন কার্যক্রম শেষ হবে। ২৪ নভেম্বর থেকে ভর্তি পরীক্ষার প্রবেশপত্র ডাউনলোড করা যাবে।
আজ সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সাধারণ ভর্তি কমিটির সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়। উপাচার্য নিয়াজ আহমদ খান সভায় সভাপতিত্ব করেন।
সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্য (প্রশাসন) সায়মা হক বিদিশা, কোষাধ্যক্ষ এম জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, প্রক্টর, অনলাইন ভর্তি কমিটির আহ্বায়ক, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন হলের প্রাধ্যক্ষ, বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান, বিভিন্ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে পাঁচটি ইউনিটের মাধ্যমে ‘আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রাম’-এ ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ইউনিটগুলো হচ্ছে ‘কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিট’, ‘বিজ্ঞান ইউনিট’, ‘ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিট’ ‘চারুকলা ইউনিট’ এবং আইবিএ ইউনিট।
ভর্তি পরীক্ষার সময়সূচি অনুযায়ী কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা আগামী ১৩ ডিসেম্বর, বিজ্ঞান ইউনিটের পরীক্ষা আগামী ২০ ডিসেম্বর, ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ৬ ডিসেম্বর, চারুকলা ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা (সাধারণ জ্ঞান ও অঙ্কন) ২৯ নভেম্বর এবং আইবিএ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ২৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে।
আরও পড়ুনএইচএসসি-সমমানের পরীক্ষার ফলাফল ১৬ অক্টোবর৬ ঘণ্টা আগেআইবিএ ইউনিট ছাড়া সব ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা সকাল ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। আইবিএ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে।
চারুকলা ও আইবিএ ছাড়া বাকি তিনটির মধ্যে দুটি ইউনিটের (কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিট এবং বিজ্ঞান ইউনিট) ভর্তি পরীক্ষা ঢাকাসহ আটটি বিভাগীয় শহরে অনুষ্ঠিত হবে। বিভাগীয় কেন্দ্রসমূহ হচ্ছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ অথবা কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় ত্রিশাল এবং বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়। ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় চারুকলা ইউনিট ছাড়া অন্যান্য ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ৬০ নম্বরের বহুনির্বাচনী প্রশ্ন (এমসিকিউ) ও ৪০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা হবে। শুধু চারুকলা ইউনিটের পরীক্ষায় ৪০ নম্বরের বহুনির্বাচনী প্রশ্ন ও ৬০ নম্বরের অঙ্কন পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। চারুকলা ইউনিটের বহুনির্বাচনী প্রশ্নের পরীক্ষার জন্য ৩০ মিনিট এবং লিখিত পরীক্ষার জন্য ৬০ মিনিট সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। অন্যান্য ইউনিটের বহুনির্বাচনী প্রশ্ন পরীক্ষার জন্য ৪৫ মিনিট এবং লিখিত পরীক্ষার জন্য ৪৫ মিনিট সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।
ভর্তি পরীক্ষায় মোট ১২০ নম্বরের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে। এর মধ্যে ভর্তি পরীক্ষায় ১০০ এবং মাধ্যমিক/সমমান এবং উচ্চমাধ্যমিক/সমমান পরীক্ষার ফলাফলের ওপর থাকবে ২০ নম্বর।
ভর্তি–ইচ্ছুক আবেদনকারীদের ২০২০ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত মাধ্যমিক বা সমমান এবং ২০২৫ সালের উচ্চমাধ্যমিক বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। ন্যূনতম যোগ্যতা হিসেবে এসএসসি বা সমমান এবং এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষায় (চতুর্থ বিষয়সহ) বিজ্ঞান ইউনিটের জন্য জিপিএ–এর যোগফল ন্যূনতম ৮ এবং আলাদাভাবে জিপিএ ৩ দশমিক ৫, কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটের জন্য জিপিএ-দ্বয়ের যোগফল ন্যূনতম ৭ দশমিক ৫ এবং আলাদাভাবে জিপিএ ৩ করে, ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটের জন্য জিপিএ-দ্বয়ের যোগফল ন্যূনতম ৭ দশমিক ৫ এবং আলাদাভাবে জিপিএ ৩ করে এবং চারুকলা ইউনিটের জন্য জিপিএ-দ্বয়ের যোগফল ন্যূনতম ৬ দশমিক ৫ এবং আলাদাভাবে জিপিএ ৩ করে থাকতে হবে।