কর্তারা ব্যস্ত আখের গোছাতে গবেষণা কার্যক্রম অচল
Published: 26th, February 2025 GMT
তখন ছিল করোনাকাল। সেই সময় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ছিলেন রওনক মাহমুদ। তাঁর করোনা আক্রান্ত মায়ের সেবা-শুশ্রূষায় মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের ২৪ কর্মকর্তাকে নিয়োজিত করে সচিব বেশ শোরগোল ফেলেছিলেন। সচিবের মায়ের সেবা দিয়ে বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএলআরআই) তখনকার বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড.
শুধু আশাদুল নন, শেখ হাসিনার শাসনামলে দলীয় ক্ষমতা ব্যবহার করে বিএলআরআইর কর্তৃত্ব দখল করলেও এখন খোলস পাল্টে অনেক কর্মকর্তাই সাচ্চা বিএনপিপন্থি হয়েছেন। বিএলআরআইর একসময়ের সুবিধাভোগী কর্মকর্তা বর্তমান মহাপরিচালক ড. শাকিলা ফারুক আওয়ামী লীগপন্থি পাঁচ কর্মকর্তার মাধ্যমে নিয়োগ বাণিজ্য, পদোন্নতি, টেন্ডারবাজিসহ সব বিষয় নিয়ন্ত্রণ করছেন। নিজেদের আখের গোছানো সচল থাকলেও এক রকম অচল হয়ে পড়েছে গবেষণা প্রতিষ্ঠানটির গবেষণা। এতে লেজেগোবরে পরিস্থিতি মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রমে।
ভাগ্যবান মহাপরিচালক
সাভারের বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটে মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসেবে তৃতীয় গ্রেডের কর্মকর্তা আছেন মাত্র দু’জন। তারা হলেন– সদ্য বিদায়ী মহাপরিচালক ড. এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন ও তাঁর স্ত্রী ড. নাসরিন সুলতানা। এর পর চতুর্থ গ্রেডের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আছেন ১৮ জন। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করা জাহাঙ্গীর হোসেনকে সরিয়ে ওই পদে বসানো হয় পোলট্রি উৎপাদন গবেষণা বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও বিভাগীয় প্রধান ড. শাকিলা ফারুককে। অথচ নাসরিন সুলতানা জ্যেষ্ঠ হয়েও ‘স্বামীর কারণে দোষী’ হয়ে বঞ্চিত হন। আগে তিনি পরিচালক (গবেষণা) থাকলেও গত ১০ নভেম্বর তাঁকে পাঠানো হয় সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ীতে। এতে প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তার মধ্যে তালিকায় শীর্ষে থাকা শাকিলা ফারুকের ভাগ্য ফেরে। অথচ আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেও তিনি প্রকল্প পরিচালক থেকে শুরু করে গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন। কিশোরগঞ্জে বাড়ি হওয়ার সুবাদে সাবেক রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদের ছেলের স্ত্রী জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শামছুন নাহার নেলীর মাধ্যমে অতীতে বিএলআরআইয়ে প্রভাব তৈরি করেন শাকিলা। শাকিলার ভাই ও ভাবি সরাসরি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকায় নিয়েছেন বাড়তি সুবিধা। পেয়েছেন সরকারের শুদ্ধাচার পুরস্কারও। জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের ডিঙিয়ে ‘দেশী মুরগি সংরক্ষণ ও উন্নয়ন প্রকল্পে’র পরিচালক পদ বাগিয়ে নেন। প্রকল্পটি শেষ হয় ২০১৮ সালের জুনে। চাকরি জীবনের পুরো সময় দেশি মুরগি নিয়ে গবেষণা করেছেন। কোটি কোটি টাকা খরচ হয়েছে এ খাতে। তবে দেশি মুরগি এখনও গবেষণাগারেই বন্দি। খামারির কাছে দেশি মুরগি পাওয়া না গেলেও সফলতা দেখিয়ে ২০১৮ সালে তখনকার কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরীর কাছ থেকে নেন স্বর্ণপদক!
বিএলআরআইয়ের প্রবিধানমালা অনুযায়ী, পরিচালনা ও প্রশাসন একটি বোর্ডের অধীন ন্যস্ত। এই একটি বোর্ডের সদস্য হিসেবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে ২০২২ সালে ১০ জানুয়ারি এক আদেশে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাকে (গ্রেড-৩) বাদ দিয়ে অজানা কারণে ড. শাকিলাকে (গ্রেড-৪) পরিচালনা বোর্ডের সদস্য মনোনয়ন দেওয়া হয়। ২০২১ সালে প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হওয়ার পরই তাঁকে এক আদেশে দপ্তরপ্রধান, পোলট্রি রিসার্চ সেন্টারের বিভাগীয় প্রধান, পোলট্রি উৎপাদন গবেষণা বিভাগ ও মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তার দায়িত্ব দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের বঞ্চিত করা হয়েছে।
মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালনকালে গত চার মাসে বিএলআরআইয়ে অজনা রোগে বহু প্রাণী মারা গেলেও কার্যকর ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো তা ধামাচাপা দেন। দু’জন কর্মকর্তা এ নিয়ে গণমাধ্যমে কথা বলায় তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন শাকিলা।
পঞ্চপাণ্ডব
বিএলআরআইয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা বলেন, প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. সাদেক আহমেদ ও ড. মুহাম্মদ আব্দুস সামাদ এবং ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. আশাদুল আলম, মো. ইউসুফ আলী ও ড. মো. খায়রুল বাশার মহাপরিচালককে ঘিরে রেখেছেন। বিএলআরআইয়ে তারা ‘পঞ্চপাণ্ডব’ হিসেবে পরিচিত। গত সরকারের পুরো সময়ে ড. সাদেক অনেক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাকে ডিঙিয়ে ‘ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের জাত সংরক্ষণ ও উন্নয়ন গবেষণা’ শীর্ষক প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) হন। একই সঙ্গে তিনি ছাগল উৎপাদন গবেষণা বিভগের বিভাগীয় প্রধান পদেও দায়িত্ব পালন করেন। ২০২৩ সালের জুনে শেষ হওয়া ওই প্রকল্পের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উল্টো ৫ আগস্টের পর আগের পদের পাশাপাশি প্রশিক্ষণ পরিকল্পনা ও প্রযুক্তি পরীক্ষণ বিভাগেরও প্রধান হন তিনি। এখন তিনি ‘বিএনপির বঞ্চিত’ খাতায় নাম লিখিয়েছেন।
ড. মুহাম্মদ আব্দুস সামাদের রয়েছে একসঙ্গে দুটি প্রকল্পের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালনের ‘বিরল অভিজ্ঞতা’! ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ জিএইচএসএর লক্ষ্য অর্জনে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স এবং জুনোসিস প্রতিরোধ শীর্ষক প্রকল্পের পরিচালক ছিলেন। এই প্রকল্প বাস্তবায়নকালেই ২০১৯ সালের জুলাই থেকে বিএলআরআইয়ের আরেক গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প ‘জুনোসি ও আন্তঃসীমান্তীয় প্রাণী রোগ গবেষণা’ প্রকল্পেরও পরিচালক হন। অথচ আওয়ামী লীগপন্থি এই কর্মকর্তা এখন নিজেকে বিএনপিপন্থি পরিচয় দেন। গত জুনে জুনোসি ও আন্তঃসীমান্তীয় প্রাণী রোগ গবেষণা প্রকল্পটি শেষ হয়। তবে গত সপ্তাহে রাজধানীর একটি পাঁচতারকা হোটেলে এই প্রকল্পের আওতায় উদ্ভাবিত এলএসডি (লাম্পি স্কিন ডিজিজ) টিকাবীজ হস্তান্তর করা হয়। প্রকল্প শেষ হলেও তারকা হোটেলে ব্যয়বহুল এই খরচের জোগান কীভাবে এলো, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যদিও গত বছরই এই টিকাবীজের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলে তা গ্রহণ করেননি তখনকার প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. রেয়াজুল হক। টিকাবীজ উদ্ভাবনের জন্য বাছুর কেনা নিয়েও ওঠে অনিয়মের অভিযোগ। বিএলআরআইয়ে তদন্ত কমিটি অভিযোগের প্রমাণ পেলেও নেওয়া হয়নি ব্যবস্থা। ড. আব্দুস সামাদ এখন ট্রান্সভাউন্ডারি অ্যানিম্যাল ডিজিজ রিসার্স সেন্টারের প্রধানের পাশাপাশি একাধিক দায়িত্বে আছেন।
মহিষ কিনতে ভারত সফরে
মহিষ গবেষণা ও উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য ৯৫টি মুরাহ জাতের মহিষ কিনতে গত শনিবার ভারতে গেছেন মহাপরিচালক শাকিলা ফারুকসহ পাঁচ কর্মকর্তা। মহিষের দরপত্রের স্পেসিফিকেশন করে দিয়েছিলেন প্রাণী প্রজনন বিশেষজ্ঞ প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. পারভীন মোস্তারি। নিয়ম অনুযায়ী, এই সফরে বিশেষজ্ঞ হিসেবে ড. পারভীন মোস্তারির যাওয়ার কথা থাকলেও পোলট্রি বিশেষজ্ঞ হয়ে মহাপরিচালক শাকিলাই গেছেন ভারতে। তিনি ছাড়াও এই সফরে আছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. হেমায়েত হোসেন, প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মুহাম্মদ আব্দুস সামাদ, প্রকল্প পরিচালক ড. গৌতম কুমার দেব ও উপপ্রকল্প পরিচালক ড. মো. আশাদুল আলম। তাদের আজ বৃহস্পতিবার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
উপপ্রকল্প পরিচালক ড. মো. আশাদুল আলমের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করে সমকাল। তবে তিনি ভারতে অবস্থান করায় কথা বলা যায়নি।
অভিযোগের ব্যাপারে মহাপরিচালক ড. শাকিলা ফারুক ফোনে সমকালকে বলেন, সরকার যখন যে দায়িত্ব দিয়েছে, তা পালন করেছি। কখনও কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলাম না। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা দূর করার চেষ্টা করছি। এখানে কাউকে বাড়তি কোনো সুবিধা দেওয়া হচ্ছে না।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ য ষ ঠ কর মকর ত ল গ সরক র র কর মকর ত র প রকল প র ব যবস থ মন ত র কর ত র আওয় ম ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
দহন থেকে জংলি
‘আমি নিয়মিত অনেক চিত্রনাট্য পাচ্ছি। নিয়মিত সেসব সিনেমা করলে প্রচুর টাকা কামাতে পারব। ফিন্যান্সিয়ালি জায়গাটা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু দর্শক আমাকে যেভাবে দেখতে চাচ্ছেন, তেমন গল্প পাচ্ছি না। দর্শক-প্রত্যাশার চেয়ে ভালো কিছু দিতে চাই। যখন সামগ্রিক চিন্তা করি, তখন ভাবতে হয় আমি কতটা আয় করলাম তার চেয়েও দর্শকের সামনে কীভাবে আসছি, সেটি মুখ্য। এটি একটি প্যাকেজ। মাঝে একটি-দুটি গল্প পছন্দ হয়। সেসব টিমের যে অবস্থা, বাজেট সামগ্রিকভাবে দেখতে গেলে ভালো গল্প তুলে আনা কঠিন হবে। তখন আমি না করে দিই। আমি চাইছি নিজের মতো করে কাজ করতে। জীবনে অনেক সিনেমা করতে হবে, এমন চিন্তা নেই। আমার মতো করে অল্প কিছু কাজ করে যেতে চাই।’ বলছিলেন সিয়াম আহমেদ।
গেল ঈদে মুক্তি পেয়েছে সিয়াম আহমেদ অভিনীত সিনেমা ‘জংলি’। যে সিনেমার সঙ্গে জড়িয়ে আছে নায়কের আবেগ ও পরিশ্রমের দীর্ঘ গল্প। সিনেমাটি করতে একচুলও ছাড় দেননি সিয়াম। ফলাফল হিসেবে পেয়েছেন দর্শকের অবারিত ভালোবাসা। জংলি মুক্তির পর তাই গল্পটি হয়ে উঠেছে সবার। দর্শকরা হলে গিয়ে কেঁদেছেন, গল্পে বুঁদ হয়ে থেকেছেন। করেছেন সিয়াম ও তাঁর টিমের প্রশংসা।
সিয়াম বললেন, ‘এ সিনেমায় আমি দীর্ঘ সময় দিয়েছি। সিনেমার জন্য চুলদাড়ি বড় করেছি। একটি সিনেমার জন্য আমার পাগলামি নিয়ে মা-বাবার মনে হয়তো প্রশ্ন ছিল, ছেলেটি চুল-দাড়ি বড় করে কী করছে? কী করেছি, এটি তো তাদের বোঝানো যায় না। তবে আমার আত্মবিশ্বাস ছিল, সিনেমাটি মুক্তির পরে গল্পটি তাদের টাচ করবে। কারণ, গল্পটিই এমন, এটি প্রথম যদি কাউকে টাচ করে, সেটি সন্তানের মা-বাবাদের। যে কারণে তাদের একসঙ্গে হলে নিয়ে কাছ থেকে অনুভূতি জানার চেষ্টা করেছি। এখন পর্যন্ত মা-বাবার কাছ থেকে সেরা ফিডব্যাক পেয়েছি। বাবা-মেয়ের গল্পটি দেখে তারা ইমোশনাল হয়ে গিয়েছিলেন। শুধু আমার বাবা-মা নন, অন্য মা-বাবাদের কাছেও গল্পটি নিজেদের হয়ে উঠেছে। তারা সিনেমাটি দেখে কেঁদেছেন। হল রিঅ্যাকশনের সেসব ভিডিও সবাই দেখেছেন। সব মিলিয়ে আমরা সফল। আমাদের জংলি সফল।’
মুক্তির পর থেকে ‘জংলি’ সিনেমার এগিয়ে যাওয়ার গ্রাফ দেখলে শুধু দর্শকের ভালোবাসায় সফল নয়, ব্যবসায়িকভাবেও সিনেমাটি যে সফল তার চিত্র বিদ্যমান। মাত্র ৮টি শো দিয়ে শুরু হওয়া সিনেমাটি ঈদের এতদিন পরও মাল্টিপ্লেক্সে ত্রিশটির মতো শো নিয়ে দাপিয়ে চলছে। দেশ ছাড়িয়ে বিদেশের মাটিতেও জংলি হয়ে উঠেছে দর্শকদের সিনেমা।
প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান টাইগার মিডিয়ার কর্ণধার জানিয়েছেন, জংলি প্রায় ছয় কোটির (গ্রস) ক্লাবে প্রবেশ করেছে।
ঈদে মুক্তির পর থেকে ক্রমশ দর্শকপ্রিয় হয়ে ওঠে ‘জংলি’। এমনকি, দেশের সিনেমাপ্রেমীদের মন জয় করে কানাডা, আমেরিকা ও ইউকে’র ৪০টি থিয়েটারে মুক্তি পেয়েছে ‘জংলি’। গত ২৫ এপ্রিল থেকে স্বপ্ন স্কেয়ারক্রো-এর পরিবেশনায়, ঈদের সিনেমাগুলোর মধ্যে দেশের বাইরে সবচেয়ে বেশি থিয়েটারে একযোগে মুক্তি পেয়েছে এ সিনেমাটি। কানাডা ও আমেরিকার বক্স অফিসে প্রথম ৩ দিনের গ্রস ৩৫,০০০ ডলার আয় করে শুভসূচনা করেছে ‘জংলি’।
ঈদে আরও অনেক ছবি মুক্তি পেয়েছে। সেগুলোর মধ্যে জংলি বিশেষ হয়ে উঠেছে কেবল বাবা-মেয়ের গল্পের কারণে। সঙ্গে সিয়ামের নজরকাড়া অভিনয়। নৈঋতার পাখি হয়ে ওঠার দারুণ চেষ্টা। দিমিত্রি থে স্টোনহার্ট নামে এক মনীষী বলেছেন, ‘একজন বাবা বলেন না যে তিনি তোমাকে ভালোবাসেন; বরং তিনি দেখিয়ে দেন যে, তিনি তোমাকে ভালোবাসেন’ জংলি সিনেমায় সিয়াম সেটি বোঝাতে পেরেছেন। ফলে সিনেমাটি হয়ে উঠেছে সবার।
প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ বলেছেন– ‘পৃথিবীতে আসার সময় প্রতিটি মানুষই একটি করে আলাদিনের প্রদীপ নিয়ে আসে, কিন্তু খুব কম মানুষই সেই প্রদীপ থেকে ঘুমন্ত দৈত্যকে জাগাতে পারে।’
সিয়াম তাঁর জীবনের সেই দৈত্যকে জাগাতে পেরেছেন। পেরেছেন বলেই হয়তো আজ তিনি সাধারণ সিয়াম থেকে নায়ক সিয়াম হয়ে উঠেছেন। সিয়ামের যাত্রাটা শুরু বেশ আগে হলেও পুরোপুরি শুরু হয় ‘দহন’ সিনেমার মাধ্যমে। রায়হান রাফী পরিচালিত এ সিনেমাটির মাধ্যমে সিয়াম নাটক থেকে পুরোপুরি চলচ্চিত্রের মানুষ হয়ে ওঠেন। সে যাত্রা এখনও চলছে। প্রথম সিনেমায় যে সিয়ামকে সবাই দেখেছেন, জংলির সেই সিয়াম যেন আকাশ-পাতাল। তখন সিয়াম ছিলেন তরুণ, এই সিয়াম এখন বাবা। পর্দায় ও বাস্তবে দুই জায়গাতে দারুণ এক বাবা হয়ে উঠেছেন তিনি। নিজের অভিনয় ক্যারিয়ার নিয়ে আগামী পরিকল্পনা কী? প্রশ্ন রাখলে নায়ক বলেন, ‘আমি নিজের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে চাই। যারা আমার আগের কাজ দেখেছেন, তারা যেন বলেন, আগের কাজকে ছাড়িয়ে যেতে পেরেছি। আরেকজনকে ছাড়িয়ে যাওয়ার চেয়ে নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়া কঠিন।’