আগামী জাতীয় নির্বাচনে ভোটার হওয়ার বয়স ১৬ বছর এবং নূন্যতম ২৩ বছর বয়সে প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এক্ষেত্রে তাদের বক্তব্য হলো, এবারের গণঅভ্যুত্থানকে সারাবিশ্বে জেন-জির অভ্যুত্থান বলা হচ্ছে। ফলে এত বড় স্টেক থাকার পরেও শুধুমাত্র বয়সের কারণে তাদের মতামত দিতে না পারা যৌক্তিক নয়।

রোববার দুপুর দুইটার দিকে জাতীয় সংসদ ভবনে অন্তর্বর্তী সরকারের জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে প্রাথমিক সংস্কার প্রস্তাব জমা দেবে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। সেখানে তারা জোর গলায় এ প্রস্তাব করবেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন এনসিপির সংস্কার সমন্বয় কমিটির সমন্বয়ক এবং যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার।

শনিবার রাজধানীর বাংলামোটরে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ সব তথ্য তুলে ধরেন। পাশাপাশি স্থানীয় সরকার এবং পুলিশ সংস্কার বিষয়ে স্পেডশিটে কেন রাজনৈতিক দলের কাছে মতামত চাওয়া হয়নি সে বিষয়েও তারা জানতে চাইবেন বলে জানান।

গত ৬ মার্চ সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, দুর্নীতি দমন ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ ১৬৬টি সুপারিশের বিষয়ে মতামত চেয়ে ৩৭টি রাজনৈতিক দলকে চিঠি ও ‘স্প্রেডশিট’ পাঠিয়েছিল ঐকমত্য কমিশন।

সংবাদ সম্মেলনে সারোয়ার তুষার বলেন, সংবিধান সংস্কার কমিশন চায় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ন্যূনতম বয়স ২১ বছর। এনসিপি মনে করে, এটা খুবই কম বয়স। এটা ২৩ বছর হতে পারে। সেক্ষেত্রে ভোট দেওয়ার বয়স ১৬ বছর হতে পারে।

তিনি বলেন, আমরা এটি জোর গলায় বলব। কারণ, এবারের গণঅভ্যুত্থানে মূলত সারাবিশ্ব এটাকে জেন-জির অভ্যুত্থান হিসেবে বলা হচ্ছে। এই যে তাদের এত বড় স্টেক গণঅভ্যুত্থানে তৈরি হয়েছে। এর পরবর্তী বাংলাদেশ বা আসন্ন নির্বাচনে তারা মতামত দিতে পারবে না শুধুমাত্র ১৮ বছর নিচে বয়সের কারণে। এটা আমরা যৌক্তিক মনে করছি না। লাতিন আমেরিকা, অস্ট্রিয়াসহ বিভিন্ন দেশে এটির নজির আছে।

বর্তমানে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ন্যূনতম বয়স ২৫ বছর। সেখান থেকে কমিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বয়স ২১ বছর করার প্রস্তাব করেছে সংবিধান সংস্কার কমিশন।

সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে নির্বাচনের আগে অধ্যাদেশ এবং গণপরিষদ অথবা কিংবা গণপরিষদ হিসেবে নির্বাচিত আইনসভা সংসদ—দুটো পদ্ধতিতে এনসিপি থাকছে জানিয়ে তুষার বলেন, যে সক সংশোধনীর ক্ষেত্রে সংবিধানের কোনো সম্পর্ক নেই, সেগুলো নির্বাচনের আগে অধ্যাদেশ কিংবা প্রশাসনিক ব্যবস্থার মাধ্যমে করা যেতে পারে। তিনি আরও বলেন, আমরা শুরুর থেকে বলেছি, গণতান্ত্রিক সংবিধান অথবা সংবিধান পুনর্লেখন চাই। যার জন্য চাই গণপরিষদ নির্বাচন।

সংস্কার প্রস্তাবের ক্ষেত্রে শহীদ পরিবার এবং আহতদের আকাঙ্ক্ষা জানতে চেয়েছেন বলে জানান সারোয়াত তুষার। তিনি বলেন, একজন শহীদের মা বলেছেন- পুলিশ যেন কোনো আন্দোলনে গুলি চালাতে না পারে। সেটি তারা কীভাবে প্রতিফলন ঘটানো যায় সেই চেষ্টা করবেন।

তিনি আরও বলেন, কোনো কোনো ক্ষেত্রে আমরা পুরোপুরি একমত হয়েছি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে আমরা আংশিক একমত হয়েছি এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে আমরা একমত হতে পারিনি। আবার কিছু ক্ষেত্রে বাড়তি মন্তব্য প্রয়োজন মনে হয়েছে সেটি আমরা মন্তব্যে ফর্মে করেছি। এর বাইরে আরও বিস্তারিত লিখিতভাবে তাদের কাছে দেওয়া হবে।

সারোয়ার তুষার বলেন, একটি বক্তব্য দেখেছি- কমিশনের কাছে ১৬৬টি সুপারিশের মধ্যে ১১১টি সুপারিশ কোনোরকম সংলাপ ছাড়াই বাস্তবায়ন করা যাবে বলে মনে করছে। আমরা জানতে চাইবো, কীসের ভিত্তিতে আলোচনা ছাড়া ১১১টি বাছাই করলেন। কারণ সেখানে অনেক বিষয়ে গ্রেটার আলোচনার সুযোগ আছে। এ ছাড়া স্থানীয় সরকার এবং পুলিশ সংস্কার প্রস্তাব কেন স্পেডশিটে নেই, এটা আমরা জানতে চাইব।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এনস প স স ক র প রস ত ব হওয় র এনস প র বয়স সরক র মত মত

এছাড়াও পড়ুন:

লন্ডনে ড. ইউনূস-তারেক রহমানের বৈঠককে স্বাগত জানাল জেএসডি

লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকের আলোচনা ও ঐকমত্যের সূচনাকে স্বাগত জানিয়েছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি)। দলটি বলেছে, আমরা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, জনগণ শুধু কথায় নয়, বাস্তবে সংস্কার ও বিচারের দৃশ্যমান অগ্রগতির পদক্ষেপ দেখতে চায়।

শুক্রবার জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব ও সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন।

তারা বলেন, এই উচ্চপর্যায়ের সংলাপ দেশে রাজনৈতিক সমঝোতা ও জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থানের কাঙ্ক্ষিত অভিপ্রায় অনুযায়ী রাষ্ট্র সংস্কার, শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর এবং গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠার পথে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।

বিবৃতিতে নেতারা বলেন, অধ্যাপক ইউনূস এবং তারেক রহমানের বৈঠক ও বিবৃতিতে আগামী বছরের পবিত্র রমজানের আগেই একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভাবনার ওপর গুরুত্বারোপ এবং তার পূর্বশর্ত হিসেবে কাঙ্ক্ষিত সংস্কার ও ফ্যাসিস্ট সরকারের বিচারের প্রক্রিয়ায় দৃশ্যমান অগ্রগতি অর্জনের ঘোষিত প্রত্যয়ে রাজনীতিতে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করবে।

বিবৃতিতে বলা হয়, গণমানুষের রক্তস্নাত গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম দাবি- গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য কাঠামোগত মৌলিক সংস্কার এবং গণহত্যাকারী ফ্যাসিবাদী শক্তির বিচারের ব্যবস্থা। এই বিষয় দুটির দৃশ্যমান অগ্রগতিই কেবল একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ভিত্তি রচনা করতে পারে।

রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি সমাজের শ্রমজীবী, কর্মজীবী ও পেশাজীবীদের মতামত, আকাঙ্ক্ষা ও অংশগ্রহণে রাষ্ট্রীয় রাজনীতির মৌলিক সংস্কারের লক্ষ্যে দ্রুত ‘জাতীয় সনদ’ প্রণয়নের আহ্বান জানায় জেএসডি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আবু সাঈদ হত্যা: এক মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ ট্রাইব্যুনালের
  • রংপুরে আবু সাঈদ হত্যা: এক মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ ট্রাইব্যুনালের
  • ‘শত শত বাস আসছে, পা ফেলানোর জায়গা নাই’
  • গণঅভ্যুত্থানে আহত সামিউলের দিন কাটছে অনিশ্চয়তায়
  • ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ভোট, একমত ইউনূস ও তারেক
  • লন্ডনে ড. ইউনূস-তারেক রহমানের বৈঠককে স্বাগত জানাল জেএসডি