আসর মানে কাল বা অপরাহ্ন কাল। পবিত্র কোরআনের ১০৩তম সুরা। কালের শপথ করে এই সুরা আরম্ভ করা হয়েছে বলে সুরার নামকরণ হয়েছে ‘আসর’। বলা হয়েছে, যারা অন্তরে বিশ্বাস রেখে সৎ কাজ করে এবং পরস্পরকে ন্যায়পরায়ণ ও সহিষ্ণু হতে উদ্বুদ্ধ করে, তাদের জীবন সার্থক।

সুরা আসরের অর্থ আবার দেখে নিই

১. মহাকালের শপথ! ২. মানুষ তো ক্ষতিগ্রস্ত ৩.

কিন্তু তারা নয়, যারা বিশ্বাস করে ও সৎকর্ম করে এবং পরস্পরকে সত্য ও ধৈর্যের উপদেশ দেয়।

সুরা আসরে মানুষের কল্যাণ, সাফল্য এবং ক্ষতির কথা বলা হয়েছে। ব্যক্তির ৪টি গুণাবলির কথা বলা হয়েছে। ইমাম শাফেয়ি বলেন, মানুষ যদি এই একটি সুরা নিয়ে চিন্তাভাবনা করে, তাহলে এটিই তাদের হেদায়েতের জন্য যথেষ্ট। ৪টি গুণাবলি ১. ইমান। ২. সৎ কাজ ৩. পরস্পরকে হকের উপদেশ দেওয়া। ৪. পরস্পরকে ধৈর্য ধরার উপদেশ দেওয়া।

আরও পড়ুনযে সুরায় আছে কোরআনের শ্রেষ্ঠ কাহিনি০৮ মার্চ ২০২৫

সুরা আসরের শিক্ষা হলো দুনিয়া ও আখিরাতের ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য প্রকৃত ইমানদার হতে হবে। প্রকৃত ইমানদারকে অবশ্যই সৎ কাজ করতে হবে এবং পরস্পরকে হক কথা বলতে হবে।

ইমানদারকে অবশ্যই অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে এবং অন্যায়কে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে দেবে না। সত্যের পথে চলার সময় বাধাবিপত্তি আসবে, তখন অবশ্যই ধৈর্য ধারণ করে সামনের দিকে এগোতে হবে।

প্রথম আয়াতে মহাকালের শপথ করা হয়েছে। আসর বলতে দিনের শেষ বেলা, আসরের নামাজ ও এর সময় এবং যুগ বা সময়ের সমষ্টিও বোঝায়। আবার আসর বলতে সময় যা তাড়াতাড়ি চলে বা শেষ হয়ে যাচ্ছে, তা-ও বোঝায়। তবে তৎকালীন আরবে আসর বলতে দিনের শেষ সময় বোঝানো হতো। যখন সবাই খুব ব্যস্ত হয়ে পড়ত। সময় নেই, তাড়াতাড়ি না করলে ক্ষতির মধ্যে পড়তে হবে, সে বিষয়টিও এখানে উঠে এসেছে।

দ্বিতীয় আয়াতে মানুষের স্বভাব ও কর্মকাণ্ড পর্যালোচনা করে আল্লাহ বলেছেন, মানুষ তো ক্ষতিগ্রস্ত।

তৃতীয় আয়াতে বলেছেন, কিন্তু তারা ক্ষতিগ্রস্ত নয় যারা বিশ্বাস করে, সৎকর্ম করে, পরস্পরকে সত্যের উপদেশ দিতে থাকে এবং পরস্পরকে ধৈর্যের উপদেশ দিতে থাকে।

পুরো সুরাটিকে একটি উদাহরণের মাধ্যমে তুলনা করে বোঝানো যেতে পারে। যেমন কোনো ব্যক্তি ঘুমন্ত অবস্থায় ডুবে মারা যাচ্ছে। সুতরাং প্রথম কাজ হলো জেগে উঠে বিশ্বাস করা যে সে কোনো রঙিন স্বপ্ন দেখছে না বরং ক্ষতির মধ্যে আছে। দ্বিতীয় কাজ হলো সাঁতার কেটে ওপরে উঠতে থাকা অর্থাৎ ভালো কাজ করা। কিন্তু এই কাজ করতে গিয়ে সে দেখল যে তার পা শিকল দিয়ে বাঁধা এবং অপর প্রান্তে তারই পরিচিত একজন বাঁধা, যে কিনা অচেতন অবস্থায় ডুবে যাচ্ছে। তৃতীয় কাজ হলো অবচেতন অবস্থায় রঙিন স্বপ্ন দেখতে থাকা পরিচিতকে জাগিয়ে তুলে সত্যের উপদেশ দিতে থাকা ও বোঝানো যে সেও ক্ষতির মধ্যে আছে। কেননা, সম্মিলিত প্রচেষ্টা ছাড়া বাঁচা সম্ভব না। চুতর্থ কাজ হলো অবচেতন অবস্থায় রঙিন স্বপ্ন দেখতে থাকা পরিচিতের অনীহা সত্ত্বেও ধৈর্যসহকারে তাকে জাগিয়ে একসঙ্গে সাঁতরানো এবং এরপর অন্য মানুষদের বেঁচে ওঠার ক্ষেত্রে ধৈর্যের উপদেশ দিতে থাকা।

আরও পড়ুনসত্যের পয়গাম১৫ এপ্রিল ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য র উপদ শ দ ত অবস থ য় ক জ কর ক জ হল আসর র

এছাড়াও পড়ুন:

গাজীপুরে হাসনাত আবদুল্লাহর গাড়িতে হামলার ঘটনায় হত্যাচেষ্টা মামলা

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহর গাড়িতে হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। হাসনাত আবদুল্লাহর পক্ষে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কর্মী আল আমিন খন্দকার বাদী হয়ে আজ সোমবার বিকেলে বাসন থানায় এই মামলা করেন। মামলায় হাসনাত আবদুল্লাহকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে।

গাজীপুর মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ জাহিদুল হাসান প্রথম আলোকে মামলা হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে আসামিদের বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো তথ্য জানা যায়নি।

এর আগে আজ সকালে গাজীপুর মহানগর পুলিশের কমিশনার নাজমুল করিম খান প্রথম আলোকে বলেন, যে সরকারকে তাঁরা বিদায় করেছেন, সেই সরকারের লোকজনই এই হামলার সঙ্গে জড়িত। তাঁরা নানা ইস্যু তৈরি করার জন্য এই হামলা করেছেন। তিনি বলেন, ওই ঘটনার পর থেকে পুলিশের একাধিক দল হামলাকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করতে অভিযান পরিচালনা করছে। এখন পর্যন্ত ৫৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আরও পড়ুনযানজটে আটকে থাকা অবস্থায় ৪-৫টি মোটরসাইকেলে এসে হাসনাতের গাড়িতে হামলা: পুলিশ২০ ঘণ্টা আগে

গতকাল রোববার সন্ধ্যায় গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তায় এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহর গাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ জাহিদুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, সালনার গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা থেকে ঢাকায় ফিরছিলেন হাসনাত আবদুল্লাহ। চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় যানজটে আটকে থাকা অবস্থায় চার থেকে পাঁচটি মোটরসাইকেলে এসে তাঁর গাড়িতে হামলা করে দুর্বৃত্তরা। হামলায় তিনি হাতে আঘাত পান এবং গাড়ির গ্লাস ও উইন্ডশিল্ড ভেঙে যায়। দুর্বৃত্তদের হামলায় হাসনাতের গাড়ির গ্লাস ভেঙে গেলে হাসনাত আবদুল্লাহর কনুইয়ের কয়েক জায়গায় কেটে যায়।

মহানগর পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হাসনাত আবদুল্লাহর গাড়িতে হামলার ঘটনার পরপরই জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে পুলিশ অভিযান শুরু করে। অভিযান চালিয়ে তাৎক্ষণিক মহানগরীর বাসন এলাকা থেকে গাজীপুর মহানগরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের যুবলীগ নেতা নিজাম উদ্দিন ও কাশিমপুর থানা শেখ রাসেল শিশু–কিশোর পরিষদের সভাপতি মাসুম আহমেদ ওরফে দিপুকে আটক করা হয়। পরে রাতভর পুলিশ গাজীপুর মহানগরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৫৪ জনকে আটক করে।

আরও পড়ুনগাজীপুরে গাড়িতে হামলা, আহত হাসনাত আবদুল্লাহ০৪ মে ২০২৫আরও পড়ুনহাসনাত আবদুল্লাহর গাড়িতে হামলার অভিযোগে আটক ৫৪৮ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ