আইপিএলে জমে উঠেছে প্লে-অফের লড়াই। গ্রুপ পর্বের শেষ দিকে এসে নাটকীয় মোড় নিয়েছে পয়েন্ট টেবিলের লড়াই। ১০ দলের টুর্নামেন্ট থেকে সবার আগে বিদায় নিশ্চিত হয়েছে একসময়ের দাপুটে দল চেন্নাই সুপার কিংসের। পরে বিদায় নিয়েছে রাজস্থান রয়্যালস এবং সানরাইজার্স হায়দরাবাদও। প্লে-অফে ৪টি জায়গার লড়াইয়ে বর্তমানে টিকে আছে ৭টি দল। এর মধ্যে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু ও মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স অনেকটাই নিরাপদ জায়গায়।
পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে থাকা রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু প্লে-অফ প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেছে। বাকি ম্যাচগুলো থেকে মাত্র একটি জয় পেলেই তাদের সেরা চারে থাকা নিশ্চিত হবে। আর দুটি জয় নিশ্চিত করলে তারা শেষ চারে নয়, থাকবে সেরা দুইয়ে
শুরুর ধাক্কা সামলে টানা ছয় জয় তুলে নিয়ে দুর্দান্ত অবস্থানে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। এখনও বাকি রয়েছে তাদের তিনটি ম্যাচ। সবগুলোতে জয় পেলে তারা পৌঁছাতে পারে শীর্ষ দুইয়ে। প্লে-অফ নিশ্চিত করতে হলে অন্তত দুটি ম্যাচ জিততেই হবে। তবে তাদের প্রতিপক্ষ তিনটি দলই শক্তিশালী—গুজরাট টাইটান্স, পাঞ্জাব কিংস ও দিল্লি ক্যাপিটালস।
প্রথম থেকেই ধারাবাহিক পারফর্ম করা গুজরাট টাইটান্সের জন্য প্লে-অফে জায়গা করে নেওয়া খুব একটা কঠিন নয়। বাকি চার ম্যাচের মধ্যে দুটি জিতলেই তাদের সেরা চারে থাকা নিশ্চিত হবে। আর তিন ম্যাচ জিতলে জায়গা মিলতে পারে সেরা দুইয়েও।
পাঞ্জাব কিংসের প্লে-অফে ওঠার সুযোগ এখনও টিকে আছে। তবে মুম্বাইয়ের বিপক্ষে জয় ও ভালো নেট রানরেট ধরে রাখাই তাদের মূল চ্যালেঞ্জ। এমনটা করতে পারলে তারাও সেরা দুইয়ে ঢোকার আশা করতে পারে। এদিকে বৃষ্টিতে ম্যাচ ভেসে যাওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েছে দিল্লি ক্যাপিটালস। বাকি তিন ম্যাচের সবগুলো জিতলেও নিশ্চিত হতে পারবে না তারা। তবে এমন পরিস্থিতিতে অন্তত শীর্ষ চারে জায়গা করে নেওয়ার সুযোগ থাকবে।
লখনৌ সুপার জায়ান্টস ও কলকাতা নাইট রাইডার্সের জন্য সমীকরণ সবচেয়ে জটিল। তাদের সবগুলো ম্যাচে জয় পেতেই হবে। পাশাপাশি চাই বড় ব্যবধানে জয়, যেন নেট রানরেট উন্নত করা যায়।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
করপোরেট করে শর্ত শিথিল হচ্ছে বাড়ছে করমুক্ত আয়ের সীমা
আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে করপোরেট করের শর্ত শিথিল করা হচ্ছে। শর্ত শিথিল হলেও করপোরেট করের হার কমানো হচ্ছে না। অন্যদিকে, উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে ব্যক্তির করমুক্ত আয়ের সীমা কিছুটা বাড়ানো হচ্ছে। এনবিআর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বর্তমানে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি যাদের ১০ শতাংশের বেশি শেয়ার আইপিওতে হস্তান্তর করা হয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ হারে করপোরেট কর রয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে শর্ত হচ্ছে, সব ধরনের আয় ও প্রাপ্তি, প্রতি একক লেনদেনে ৫ লাখ টাকার বেশি এবং বার্ষিক মোট ৩৬ লাখ টাকার বেশি সব ধরনের ব্যয় ও বিনিয়োগ ব্যাংকের ট্রান্সফারের মাধ্যমে হতে হবে। এ শর্ত পূরণ না হলে ওই কোম্পানির করপোরেট কর হবে সাড়ে ২২ শতাংশ। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত যেসব কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের ১০ শতাংশের কম শেয়ার প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিওর মাধ্যমে হস্তান্তর করা হয়েছে, সেসব ক্ষেত্রে কর হার সাড়ে ২২ শতাংশ হবে। শর্ত পূরণ না করতে পারলে ২৫ শতাংশ পরিশোধ করতে হবে। এনবিআরের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে সমকালকে বলেন, এ বিষয়ে সরকার ইতিবাচক। বাজেটে শর্ত শিথিল হবে, অর্থাৎ করদাতাবান্ধব করা হবে।
সর্বশেষ গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ব্যক্তির করমুক্ত আয়ের সীমা সাড়ে ৩ লাখ টাকা করা হয়। গত অর্থবছরে করমুক্ত আয়ের সীমা আর বাড়েনি। সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের পরামর্শক কমিটির সভায় ব্যক্তিশ্রেণির করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়িয়ে সাড়ে ৪ লাখ টাকা করার জোর দাবি জানায় ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। এ ছাড়া গত দুই বছরে মূল্যস্ফীতিও বেড়েছে। ফলে বর্ধিত মূল্যস্ফীতির হার বিবেচনায় আগামী অর্থবছরে করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানোর উদ্যোগ নিচ্ছে এনবিআর। বিদ্যমান বার্ষিক করমুক্ত আয়ের সীমা ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪ লাখ টাকা করা হতে পারে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশের বেশির ভাগ অর্থনীতি এখনও ব্যাংকের লেনদেনের বাইরে। সামগ্রিক অর্থনৈতিক ও ব্যবসায়িক পরিকাঠামো সম্পূর্ণভাবে ব্যাংকনির্ভর নয়। বড় এবং মাঝারি কোম্পানির ক্ষেত্রে লেনদেনের শর্ত পূরণ করা সম্ভব হয় না। সেজন্য তারা কর কমানোর সুবিধা নিতে পারছেন না। তাদের ভাষ্য, কোম্পানি বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সব ধরনের আয় বা প্রাপ্তি এবং ব্যয় ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ব্যাংক লেনদেনের সীমারেখা নির্ধারণ করে দেওয়া বাস্তবসম্মত নয়। তাছাড়া প্রতিষ্ঠানের অনেক ব্যয়কে করের আওতায় ধরা হয়। বর্তমানে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির ক্ষেত্রে কর ২০ শতাংশ হলেও ক্ষেত্র বিশেষে বেড়ে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ হয়।
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকীন আহমেদ সমকালকে বলেন, ব্যবসায়ীদের জন্য করপোরেট কর কমানো হলেও কঠিন শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। তাতে ব্যবসায়ীদের কোনো লাভ হয়নি। এর কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ লেনদেন এখনও ব্যাংকের বাইরে। যেমন একটি কারখানায় ১ হাজার শ্রমিক-কর্মচারী আছে। তাদের বেতন ব্যাংকের মাধ্যমে দেওয়া হয়। কিন্তু তাদের টিএ, ডিএ বা তাদের পেছনে অন্য যেসব খরচ হয়, সেগুলো নগদে সম্পন্ন হয়। ফলে বড় আকারের এসব লেনদেন ব্যাংকের আওতার বাইরে থেকে যায়।