পাকিস্তানে যুদ্ধাবস্থা, বিসিবির পর্যবেক্ষণে নাহিদ-রিশাদের নিরাপত্তা
Published: 7th, May 2025 GMT
ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে চলমান উত্তেজনা অবশেষে রূপ নিয়েছে খোলাখুলি সংঘাতে। গতকাল রাতে পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে আচমকা বিমান হামলা চালায় ভারত, যার জবাবে পাল্টা আক্রমণ চালায় পাকিস্তানও। এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) খেলতে যাওয়া বাংলাদেশের দুই ক্রিকেটার নাহিদ রানা ও রিশাদ হোসেনকে ঘিরে তৈরি হয়েছে উদ্বেগ।
এবারের পিএসএলে বাংলাদেশ থেকে তিন ক্রিকেটার অংশ নেন। তবে করাচি কিংসের হয়ে নাম লেখালেও ইনজুরির কারণে দেশে ফিরে গেছেন লিটন দাস। আর লাহোর কালান্দার্সের হয়ে ইতোমধ্যে পাঁচ ম্যাচে অংশ নিয়ে ৯ উইকেট নেওয়া রিশাদ ও পেশোয়ার জালমির হয়ে এখনো অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা পেসার নাহিদ রানা রয়েছেন পাকিস্তানে।
ভারতের হামলায় পাকিস্তানের নয়টি স্থানে বিস্ফোরণ হয়েছে বলে জানায় আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো। পাল্টা আক্রমণে পাকিস্তান দাবি করেছে, তারা ধ্বংস করেছে ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান। এমন পরিস্থিতিতে পাকিস্তানে অবস্থানরত দুই বাংলাদেশি ক্রিকেটারের নিরাপত্তা নিয়ে সরব হয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
বিসিবির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। রিশাদ ও নাহিদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে, তাদের নিরাপত্তা ও মানসিক স্বস্তিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে বোর্ড। বিসিবি সভাপতি ফরুক আহমেদও বিষয়টি ব্যক্তিগতভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। তিনি পিএসএল সিইও সালমান নাসের ও রিশাদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেছেন। পাশাপাশি পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) এবং ইসলামাবাদে বাংলাদেশের হাইকমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে বিসিবি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘পিসিবি ও হাইকমিশনের সহযোগিতায় আমরা কৃতজ্ঞ। পরিস্থিতি বিবেচনায় আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত আছি এবং বিষয়টি ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।’
রিশাদের দল লাহোর কালান্দার্সের হাতে রয়েছে আর মাত্র একটি ম্যাচ, আর নাহিদের পেশোয়ার জালমির রয়েছে দুটি ম্যাচ। দল প্লে-অফে উঠলে বা ফাইনালে গেলে এই দুই ক্রিকেটারের পাকিস্তানে থাকতে হতে পারে মে মাসের ১৮ তারিখ পর্যন্ত। তবে চলমান সংঘাতময় পরিস্থিতির অবনতি হলে হয়তো আগেই ফিরতে হতে পারে তাদের।
এদিকে চলতি মাসের শেষদিকে পাকিস্তানে পাঁচটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলতে যাওয়ার কথা রয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় দলের। মিরপুরে সেই সিরিজকে সামনে রেখে চলছে প্রস্তুতিও। তবে যুদ্ধাবস্থায় পড়ায় সেই সফর নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। যদিও বিসিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সিরিজ নিয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: পর স থ ত
এছাড়াও পড়ুন:
সুইডেনে উচ্চশিক্ষা: স্কলারশিপ, আছে আইইএলটিএসের বিকল্প
ইউরোপের অন্যতম দেশ সুইডেন বছরের পর বছর ধরে নাগরিকদের কাঙ্ক্ষিত আর্থসামাজিক অবস্থা নিশ্চিত করে আসছে। বিশ্বখ্যাত সব ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের এ আশ্রয়স্থলে ক্যারিয়ার গঠন হাজারো বিদেশি শিক্ষার্থীদের কাছে স্বপ্নতুল্য। চলুন, শেনজেনভুক্ত দেশ সুইডেনে উচ্চশিক্ষার জন্য আবেদন পদ্ধতি, স্টুডেন্ট ভিসা, অধ্যয়ন খরচ এবং স্কলারশিপ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক-
সুইডিশ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পাঠ্যক্রম শেনজেন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ (ইইউ) বিশ্বে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। প্রধান ভাষা সুইডিশ হলেও স্ক্যান্ডিনেভিয়ানদের প্রতি ১০ জনের ৯ জনই সাবলীলভাবে ইংরেজিতে কথা বলেন। পড়াশোনাসহ নিত্য জীবনযাত্রা এবং চাকরি ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক ছাত্রছাত্রীদের পছন্দের অন্যতম গন্তব্য সুইডেন।
আরও পড়ুনচীনে উচ্চশিক্ষা: স্কলারশিপের সঙ্গে আছে পড়ার শেষে চাকরি ও স্থায়ী হওয়ার সুযোগ২৬ আগস্ট ২০২৪সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট রিপোর্ট অনুযায়ী পরিবেশগত দিক থেকে বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নিরাপদ দেশ সুইডেন। পৃথিবীর শীর্ষস্থানীয় দূষণমুক্ত দেশগুলোর তালিকায় চতুর্থ স্থানে থাকা এই দেশটির দূষণ সূচক মাত্র ১৭ দশমিক ৭। এ ছাড়া বিশ্বের সর্বাপেক্ষা ভ্রমণবান্ধব দেশগুলোর তালিকায় শীর্ষ ১০-এর মধ্যে রয়েছে এই নর্ডিক দেশটি।
পড়াশোনার জন্য সুইডেন যাত্রার আরও একটি প্রধান কারণ হচ্ছে স্টুডেন্ট নোবেল নাইটক্যাপ। এ অনুষ্ঠানে বিশ্বের একাডেমিক সুপারস্টারদের সন্নিবেশ ঘটে। এই ভূখণ্ডে নোবেল পুরস্কারকে কেন্দ্র করে চলে নানা আয়োজন। বিশেষ করে স্টকহোমে পুরো একটি সপ্তাহ উদ্যাপন করা হয় নোবেলকে ঘিরে।
শত শত স্টার্টআপ কোম্পানির স্বর্গরাজ্য সুইডেনকে বলা হয় ইউরোপের সিলিকন ভ্যালি। ক্যালিফোর্নিয়ার পর স্টকহোমই হচ্ছে দ্বিতীয় শহর, যেখানে সর্বাধিক সফল কোম্পানিগুলোর গোড়াপত্তন হয়েছে।
ইউরোপীয় দেশটির আরও যে বিষয়টি বিদেশি শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করে, তা হলো, কর্ম ও জীবনের মধ্যে এক আশ্চর্য ভারসাম্য। এখানে প্রতিটি চাকরিতেই রয়েছে যথেষ্ট শিথিলতা। প্রয়োজন অনুযায়ী শিফটিং এবং প্যাটার্নিটি বা ম্যাটার্নিটি লিভসহ বিভিন্ন উপলক্ষে সাময়িক ছুটির নীতি। এখানে মূলত কর্মীদের সর্বোচ্চ উৎপাদনশীলতা পাওয়ার জন্য তাদের চাপমুক্তিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। পুরো দেশের মোট জনসংখ্যার মাত্র ১ শতাংশ কর্মচারী খুব দীর্ঘ সময় ধরে বা ওভারটাইম কাজ করে।
সেরা বিশ্ববিদ্যালয় কোনগুলো: কেটিএইচ রয়্যাল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি, লুন্ড ইউনিভার্সিটি, উপসালা ইউনিভার্সিটি, স্টকহোম ইউনিভার্সিটি, চালমার্স ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি, ইউনিভার্সিটি অব গোথেনবার্গ, ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউট, লিনকোপিং ইউনিভার্সিটি, উমিয়া ইউনিভার্সিটি ও হাল্মস্ট্যাড ইউনিভার্সিটি।
সর্বাধিক চাহিদাসম্পন্ন বিষয়গুলো: প্রকৌশল ও প্রযুক্তি, ব্যবসা ও অর্থনীতি, সাংবাদিকতা, যোগাযোগ ও তথ্য, লাইফ সায়েন্সেস অ্যান্ড মেডিসিন, ডিজাইন অ্যান্ড আর্কিটেকচার।
আবেদনের উপায়-
সাধারণত ফল ও স্প্রিং সেমিস্টারে ভর্তির কার্যক্রম চালু করে সুইডিশ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। ফল সেমিস্টার আগস্টের শেষ থেকে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝিতে শুরু হয়। এই মৌসুমে আবেদনের জন্য সবচেয়ে বেশি সংখ্যক প্রোগ্রাম চালু থাকে। আবেদন গ্রহণ অব্যাহত থাকে জানুয়ারির মাঝামাঝি থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত। ফলে যে প্রোগ্রামগুলো বাদ পড়ে যায়, সেগুলোয় ভর্তির আবেদন নেওয়া হয় স্প্রিং সেমিস্টারে। এ মৌসুমে ডিসেম্বর থেকে আবেদন গ্রহণ শুরু হয়ে চলে পরের বছরের আগস্ট পর্যন্ত।
কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সামার সেমিস্টারেও ভর্তি নেওয়া হয়। তাই উত্তম হচ্ছে প্রথমে বিষয় পছন্দ করে তার জন্য উপযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় বাছাই করে তার অফিশিয়াল ওয়েবসাইট চেক করা। তবে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের আবেদনের ব্যাপারে ফল সেমিস্টারকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। কেননা আবেদনের জন্য যথেষ্ট বিকল্প কোর্স পাওয়ার সুযোগ তো আছেই! তা ছাড়া এ সময়ে আবেদন করা হলে অধ্যয়ন ফি প্রদান, প্রয়োজনীয় নথিপত্র প্রেরণ, রেসিডেন্স পার্মিটের আবেদন এবং আবাসন খোঁজার ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত সময় পাওয়া যায়।
স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে যেকোনো প্রোগ্রামে ভর্তির জন্য একটি সাধারণ অনলাইন প্ল্যাটফর্মের (universityadmissions.se) মাধ্যমে আবেদন নেওয়া হয়। এখানে অ্যাকাউন্ট তৈরি করে কাঙ্ক্ষিত প্রোগ্রামগুলোকে নির্বাচন করে সেগুলোকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তালিকাভুক্ত করে রাখতে হয়। এ ক্ষেত্রে চূড়ান্ত আবেদনপ্রক্রিয়া শুরুর পূর্বে প্রতিটি প্রোগ্রামের জন্য প্রয়োজনীয় শর্তগুলো জেনে নেওয়া উচিত।
আরও পড়ুনউচ্চশিক্ষার জন্য চীনে যেতে চান, জেনে রাখুন কিছু বিষয়২৪ অক্টোবর ২০২৩আবেদনে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র-
স্নাতক প্রোগ্রামে আবেদন করলে উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট পরীক্ষার সনদ
স্নাতকোত্তর ডিগ্রির জন্য ৪ বা অনার্সসহ ৩ বছরের স্নাতক ডিগ্রির সনদ
ইংরেজি ভাষা দক্ষতার স্কোর: আইইএলটিএস (একাডেমিক) মোট স্কোর ৬ দশমিক ৫ (কোনো বিভাগে ৫ দশমিক ৫-এর কম পাওয়া যাবে না) টোয়েফল ইন্টারনেটভিত্তিক স্কোর ২০ (০ থেকে ৩০ স্কেলে) এবং মোট স্কোর ৯০। শিক্ষার্থীর স্নাতকের ৪ বছর ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা করলে অথবা উচ্চমাধ্যমিকে ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা করে থাকলে আলাদা করে আইইএলটিএস বা টোয়েফলের দরকার হবে না। এ ক্ষেত্রে মিডিয়াম অব ইনস্ট্রাকশন বা এমওআই প্রদর্শন করতে হবে।
একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট
সিভি বা পোর্টফোলিও
স্টেটমেন্ট অব পার্পাস
লেটার অব মোটিভেশন
লেটার অব রিকমেন্ডেশন
আবেদন ফি পরিশোধের রশিদ: ৯০০ ক্রোনা বা ১০ হাজার ৫৫৭ টাকা (১ সুইডিশ ক্রোনা = ১১ দশমিক ৭৩ বাংলাদেশি টাকা)
প্রথম আলো ফাইল ছবি