পাকিস্তান ও পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের কয়েকটি স্থানে রাতের আঁধারে হামলা চালিয়েছে ভারতীয় সামরিক বাহিনী। মঙ্গলবার মধ্যরাতের এই হামলায় ভারতীয় সামরিক বাহিনী মাত্র ২৫ মিনিটে অন্তত ২৪ ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে পাকিস্তানে। এই হামলায় পাকিস্তানে কমপক্ষে ৭০ জন নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে ভারত। যদিও পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী বলেছে, ভারতের হামলায় ২৬ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।

বুধবার দিল্লিতে এক সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানে হামলার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি।

তিনি বলেন, পেহেলগামের হত্যাকাণ্ডের পর সীমান্তপার থেকে আরও সম্ভাব্য হামলা ঠেকানোর পাশাপাশি সন্ত্রাসবাদী কাঠামো ধ্বংস করাই ছিল ‘অপারেশন সিঁদুর’ এর উদ্দেশ্য।

পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ভারত যে প্রত্যাঘাত করেছে, তা পরিমিত, সমানুপাতিক, দায়িত্বশীল ও যা ছড়িয়ে পড়বে না, এমন। পেহেলগামে হামলায় জড়িতদের শাস্তি ও বিচারের জন্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ গত ২৫ এপ্রিল যে বিবৃতি জারি করেছিল, ভারতের এই প্রত্যাঘাতকে সেই আলোতেই দেখতে হবে।

আজ বুধবার ভারতীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টায় অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে এই ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় সেনা ও বিমানবাহিনীর দুই নারী কর্মকর্তা কর্নেল সোফিয়া কুরেশি ও উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিং।

ওই দুই কর্মকর্তা দাবি করেন, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টা ৫ মিনিট থেকে শুরু করে রাত দেড়টা পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণরেখা ও আন্তর্জাতিক সীমান্তের ওপাশে মোট ৯টি সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে ভারতীয় বাহিনী হামলা চালিয়ে ধ্বংস করেছে।

ব্রিফিংয়ে পাকিস্তান অংশে ধ্বংস করা ঘাঁটির ছবিও দেখান কর্মকর্তারা। ওই দুই কর্মকর্তা বলেন, অপারেশন সিঁদুর কোনো পাকিস্তানি সেনা ঘাঁটির ওপর আক্রমণ করেনি। সাধারণ মানুষকেও নিশানা করা হয়নি। বেছে বেছে নির্দিষ্ট কিছু লক্ষ্যবস্তুর ওপর আক্রমণ করা হয়েছে। প্রযুক্তি ব্যবহারের মধ্য দিয়ে সেগুলো ধ্বংস করা হয়েছে।

সোফিয়া ও ব্যোমিকা দাবি করেন, প্রথম লক্ষ্য ছিল ভাওয়ালপুরের মারকাজ শুবহান আল্লাহ্। সেখানে জইশ–এ–মহম্মদের জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ শিবির ছিল। বিলাল মসজিদে ছিল লস্কর–ই–তাইয়েবার প্রশিক্ষণকেন্দ্র। কোটলিতে যেখানে হামলা হয়েছে, তা লস্করের ঘাঁটি। এরা পুঞ্চে খুবই সক্রিয়। এসব ঘাঁটি পাকিস্তান–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে।

ভারতীয় বাহিনী পাকিস্তানের অভ্যন্তরেও হামলা চালিয়েছে জানিয়ে সোফিয়া ও ব্যোমিকা আরও দাবি করেন, শিয়ালকোটের যে সার্জাল ক্যাম্পে হামলা হয়েছে, তা আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে ৬ কিলোমিটার ভেতরে। এ ছাড়া আক্রমণ চালানো হয় মেহমুনা জোয়া ক্যাম্পে। সেটা হিজবুলের শিবির ছিল। এই শিবিরে প্রশিক্ষিত সন্ত্রাসীরাই পেহেলগামে হামলা চালিয়েছিল।

এই দুই কর্মকর্তা আরও দাবি করেন, লাহোরের কাছে মুরিদকের মারকাজ তৈয়্যেবায় আক্রমণ চালিয়েছে ভারতীয় বাহিনী। সেখানেই ২৬/১১ মুম্বাই হামলার সন্ত্রাসীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। আজমল কাসভ ওখানেই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ছিলেন।  

কাশ্মীরে হামলার পর কিছুদিন ধরেই পারমাণবিক ক্ষমতাধর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চরম উত্তেজনা চলছিল, এখন তা ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মতো অবস্থায় গড়িয়েছে। ভারত সরকারের এক বিবৃতির বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ভারতের সশস্ত্র বাহিনী ‘অপারেশন সিঁদুর’ শুরু করেছে। এ হামলার পর পাকিস্তান দাবি করে ভারত বেসামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে এ হামলা চালিয়েছে। তবে ভারত সরকারের দাবি, পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর কোনো স্থাপনাকে এ অভিযানে নিশানা করা হয়নি। গত ২২ এপ্রিল ভারত–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জনের প্রাণহানির পর থেকে ভারত–পাকিস্তানের চলমান উত্তেজনার মধ্যে এবার সংঘর্ষে জড়াল দেশ দুটি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পরর ষ ট র কর মকর ত ধ ব স কর

এছাড়াও পড়ুন:

চীনা রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে ডাকসু নেতৃবৃন্দের সাক্ষাৎ 

বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন এর সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের নেতৃবৃন্দের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়ছে।

সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) চীনের রাষ্ট্রদূতে আমন্ত্রণে বাংলাদেশ অবস্থিত চীনা দূতাবাসে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে ডাকসু নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।

আরো পড়ুন:

রাবিতে কমপ্লিট শাটডাউনে ইবির জিয়া পরিষদের সংহতি

বিশ্বসেরা গবেষকদের তালিকায় রাবির ১৮ গবেষক

এতে ডাকসু সভাপতি অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খানের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন ডাকসুর কোষাধ্যক্ষ এবং ফিন্যান্স বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এইচএম মোশারফ হোসেনসহ সহ-সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সহ-সাধারণ সম্পাদক ও সম্পাদকবৃন্দ।

সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, আবাসন সুবিধা বৃদ্ধিসহ অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে যৌথভাবে কাজ করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে নিজেদের মতামত প্রদান করেন সম্পাদকবৃন্দ। 

প্রস্তাবিত ৫০০০ ছাত্রীদের আবাসন সুবিধা সম্বলিত চায়না-বাংলাদেশ মৈত্রী হলের নির্মাণ কাজ এ বছরের মধ্যেই শুরু হবে বলে আলোচনা হয়। ডাকসুর নেতৃবৃন্দ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য আরো দুটো হল নির্মাণের প্রস্তাব দেন এবং রাষ্ট্রদূত তা বাস্তবায়নে দ্বিতীয় ধাপে যৌথভাবে কাজ করার আশ্বাস দেন। এছাড়াও তারা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, ক্রীড়া, স্বাস্থ্য, স্কলারশিপ, গবেষণা ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে নানা উদ্যোগের মাধ্যমে পারস্পরিক সহযোগিতার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।

ডাকসুর নব নির্বাচিত প্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রদূতকে স্মারক প্রদান করা হয় এবং ডাকসুর নির্বাচিত প্রতিনিধিদেরও শুভেচ্ছা স্মারক উপহার প্রদান করেন চীনের রাষ্ট্রদূত।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ