পাকিস্তানের পক্ষ থেকে ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি রাফায়েল, একটি সুখোই সু-৩০ ও একটি মিগ-২৯। এ ছাড়া একটি ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে। এ বিষয়ে ভারতের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। তবে ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরে বুধবার তিনটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়েছে বলে স্থানীয় সরকারের চারটি সূত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছে।

পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী জানায়, দেশটির মাটিতে আক্রমণে অংশ নেওয়ার পরই পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমানকে লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়। পাকিস্তানের সামরিক মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী রয়টার্সকে বলেছেন, ‘এখন পর্যন্ত ভারতের পাঁচটি আকাশযান, যার মধ্যে রয়েছে– তিনটি রাফায়েল, একটি সু-৩০, একটি মিগ-২৯ এবং একটি হেরন ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে।’

পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার ভোর পৌনে ৩টার দিকে দুটি ভারতীয় বিমান ভূপাতিত করার দাবি করেন। তৃতীয় ভারতীয় বিমান ভূপাতিত করার খবর রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম পিটিভির মাধ্যমে ভোর ৩টা ৪২ মিনিটের দিকে আসে। পিটিভি জানায়, পাকিস্তান বিমানবাহিনী অবন্তিপুরা থেকে ১৭ নটিক্যাল মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে আরেকটি ভারতীয় রাফায়েল বিমান ভূপাতিত করেছে। চতুর্থ ও পঞ্চম ভারতীয় বিমান ভূপাতিত করার বিষয়টি ভোর ৫টার পর জানান প্রতিরক্ষা ও তথ্যমন্ত্রী।

স্থানীয় গণমাধ্যমে আসা ছবিতে দেখা গেছে, রুপালি রঙের ক্ষতিগ্রস্ত একটি বড় নলাকার ধাতব খণ্ড এক মাঠের মধ্যে পড়ে আছে। এদিকে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পুলওয়ামায় একটি বিমান অথবা বড় ড্রোন ভেঙে পড়েছে বলে বিবিসি জানতে পেরেছে। পাম্পোর শহরের কাছে বুধবার ভোররাতে সেটি ভেঙে পড়ে। বিবিসির সংবাদদাতা স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানান, জেট বিমানের বিকট শব্দের মধ্যেই একটা বিস্ফোরণ শুনতে পান এখানকার বাসিন্দারা। তারা বাড়ির বাইরে বেরিয়ে এসে দেখেন, কিছু একটা জ্বলছে। যেটি ভেঙে পড়েছে তা বিমান না কোনো ড্রোন, এখনও স্পষ্ট নয়। সরকারিভাবে এখনও কিছুই জানানো হয়নি।

ভারতের হাতে ফ্রান্সের তৈরি অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান রাফায়েল রয়েছে ৩৬টি। এ ছাড়া গত মাসে দেশটি নৌবাহিনীর জন্য ফ্রান্সের কাছ থেকে আরও ২৬টি রাফায়েল যুদ্ধবিমান কেনার চুক্তি করেছে। রাফায়েল প্রচুর পরিমাণ অস্ত্র বহন করতে পারে। এটি একটি বহুমুখী বিমান, যা বিমান প্রতিরক্ষা, সামুদ্রিক আক্রমণ, তীরবর্তী লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত, নজরদারি এবং জ্বালানি ভরার মিশন পরিচালনায় সক্ষম।

সুখোই সু-৩০ একটি দুই ইঞ্জিন ও দুই আসনবিশিষ্ট বহুমুখী ফাইটার বিমান। এটি রাশিয়ার সুখোই ডিজাইন ব্যুরো দ্বারা নকশা করা হয়েছে। সু-৩০ যে কোনো আবহাওয়ায় দূরবর্তী লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে। মিগ-২৯ একটি চতুর্থ প্রজন্মের যুদ্ধবিমান। এটি ১৯৭০-এর দশকের শেষ দিকে সোভিয়েত ইউনিয়নের মিকোয়ান নকশা তৈরি করা হয়।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব ম ন ভ প ত ত কর র

এছাড়াও পড়ুন:

সন্তানকে গলা কেটে হত্যার পর অন্তঃসত্ত্বা মায়ের আত্মহত্যার অভিযোগ

ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলায় একটি ঘর থেকে পাঁচ বছর বয়সী এক শিশুর গলাকাটা মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। একই বাড়ির অন্য একটি কক্ষ থেকে পাওয়া গেছে শিশুটির অন্তঃসত্ত্বা মায়ের ঝুলন্ত মরদেহ। মর্মান্তিক এই ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। 

প্রাথমিকভাবে পুলিশ এটিকে হত্যাকাণ্ড ও আত্মহত্যা বলে ধারণা করলেও, ঘটনার পেছনের প্রকৃত কারণ এখনও নিশ্চিত হয়নি।

গত শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের পূর্বকান্দি গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন হুজাইফা (৫) এবং তার মা সুমাইয়া আক্তার (২২)। সুমাইয়া অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন এবং আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর তার সিজারিয়ান ডেলিভারির তারিখ নির্ধারিত ছিল।

নিহত সুমাইয়ার শ্বশুর মোতালেব মুন্সি গণমাধ্যমকে জানান, ঘটনার সময় তিনি বাড়ির কাছেই ঘাস কাটতে ব্যস্ত ছিলেন। হঠাৎ বাড়িতে চিৎকার শুনে ছুটে এসে তিনি এই ভয়াবহ দৃশ্য দেখেন। পরে পুলিশকে জানানো হয়। 

তিনি দাবি করেন, তার ছেলে রমজান মুন্সি এবং পুত্রবধূ সুমাইয়ার মধ্যে সম্পর্ক ভালোই ছিল এবং তাদের মধ্যে কোনো পারিবারিক কলহ ছিল বলে তার জানা নেই।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রতিবেশী ভিন্ন তথ্য দিয়েছেন। তারা জানান, দাম্পত্য জীবনে রমজান ও সুমাইয়ার মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। রমজান মুন্সি কয়েক বছর সিঙ্গাপুরে প্রবাসে থাকার পর দুই বছর আগে দেশে ফিরে আসেন এবং বর্তমানে আবার বিদেশে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।

ঘটনার খবর পেয়ে ভাঙ্গা সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আসিফ ইকবাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। 

তিনি বলেন, “প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে যে কোনো পারিবারিক কলহের জেরে সুমাইয়া তার পাঁচ বছর বয়সী ছেলেকে গলা কেটে হত্যা করে এবং এরপর নিজে আত্মহত্যা করেন।” 

তিনি জানান, শিশুটিকে গলাকাটা অবস্থায় একটি কম্বলে মোড়ানো রাখা হয়েছিল। তার মাকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।

সদরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুদীপ রায় জানান, মরদেহগুলো ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে এবং আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। স্বামী রমজান বর্তমানে ফরিদপুরে রয়েছেন, তবে তার সঙ্গে এখনও কথা বলা সম্ভব হয়নি। 

ওসি বলেন, “তদন্ত শেষ হলে এই ঘটনার পেছনের আসল কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে।”

ঢাকা/তামিম/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সন্তানকে গলা কেটে হত্যার পর অন্তঃসত্ত্বা মায়ের আত্মহত্যার অভিযোগ