পাকিস্তান যেভাবে ভূপাতিত করল ভারতের ৫ যুদ্ধবিমান
Published: 7th, May 2025 GMT
পাকিস্তানের পক্ষ থেকে ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি রাফায়েল, একটি সুখোই সু-৩০ ও একটি মিগ-২৯। এ ছাড়া একটি ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে। এ বিষয়ে ভারতের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। তবে ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরে বুধবার তিনটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়েছে বলে স্থানীয় সরকারের চারটি সূত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছে।
পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী জানায়, দেশটির মাটিতে আক্রমণে অংশ নেওয়ার পরই পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমানকে লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়। পাকিস্তানের সামরিক মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী রয়টার্সকে বলেছেন, ‘এখন পর্যন্ত ভারতের পাঁচটি আকাশযান, যার মধ্যে রয়েছে– তিনটি রাফায়েল, একটি সু-৩০, একটি মিগ-২৯ এবং একটি হেরন ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে।’
পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার ভোর পৌনে ৩টার দিকে দুটি ভারতীয় বিমান ভূপাতিত করার দাবি করেন। তৃতীয় ভারতীয় বিমান ভূপাতিত করার খবর রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম পিটিভির মাধ্যমে ভোর ৩টা ৪২ মিনিটের দিকে আসে। পিটিভি জানায়, পাকিস্তান বিমানবাহিনী অবন্তিপুরা থেকে ১৭ নটিক্যাল মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে আরেকটি ভারতীয় রাফায়েল বিমান ভূপাতিত করেছে। চতুর্থ ও পঞ্চম ভারতীয় বিমান ভূপাতিত করার বিষয়টি ভোর ৫টার পর জানান প্রতিরক্ষা ও তথ্যমন্ত্রী।
স্থানীয় গণমাধ্যমে আসা ছবিতে দেখা গেছে, রুপালি রঙের ক্ষতিগ্রস্ত একটি বড় নলাকার ধাতব খণ্ড এক মাঠের মধ্যে পড়ে আছে। এদিকে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পুলওয়ামায় একটি বিমান অথবা বড় ড্রোন ভেঙে পড়েছে বলে বিবিসি জানতে পেরেছে। পাম্পোর শহরের কাছে বুধবার ভোররাতে সেটি ভেঙে পড়ে। বিবিসির সংবাদদাতা স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানান, জেট বিমানের বিকট শব্দের মধ্যেই একটা বিস্ফোরণ শুনতে পান এখানকার বাসিন্দারা। তারা বাড়ির বাইরে বেরিয়ে এসে দেখেন, কিছু একটা জ্বলছে। যেটি ভেঙে পড়েছে তা বিমান না কোনো ড্রোন, এখনও স্পষ্ট নয়। সরকারিভাবে এখনও কিছুই জানানো হয়নি।
ভারতের হাতে ফ্রান্সের তৈরি অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান রাফায়েল রয়েছে ৩৬টি। এ ছাড়া গত মাসে দেশটি নৌবাহিনীর জন্য ফ্রান্সের কাছ থেকে আরও ২৬টি রাফায়েল যুদ্ধবিমান কেনার চুক্তি করেছে। রাফায়েল প্রচুর পরিমাণ অস্ত্র বহন করতে পারে। এটি একটি বহুমুখী বিমান, যা বিমান প্রতিরক্ষা, সামুদ্রিক আক্রমণ, তীরবর্তী লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত, নজরদারি এবং জ্বালানি ভরার মিশন পরিচালনায় সক্ষম।
সুখোই সু-৩০ একটি দুই ইঞ্জিন ও দুই আসনবিশিষ্ট বহুমুখী ফাইটার বিমান। এটি রাশিয়ার সুখোই ডিজাইন ব্যুরো দ্বারা নকশা করা হয়েছে। সু-৩০ যে কোনো আবহাওয়ায় দূরবর্তী লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে। মিগ-২৯ একটি চতুর্থ প্রজন্মের যুদ্ধবিমান। এটি ১৯৭০-এর দশকের শেষ দিকে সোভিয়েত ইউনিয়নের মিকোয়ান নকশা তৈরি করা হয়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব ম ন ভ প ত ত কর র
এছাড়াও পড়ুন:
ফিলিপাইনে ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে নিহত বেড়ে ১১৪, জাতীয় দুর্যোগ ঘোষণা
চলতি বছরের অন্যতম শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় কালমেগির তাণ্ডবে বিধ্বস্ত ফিলিপাইন। দেশটির মধ্যাঞ্চলে কালমেগির আঘাতে ভয়াবহ বন্য দেখা দিয়েছে, যার ফলে কমপক্ষে ১১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস ‘জাতীয় দুর্যোগ’ ঘোষণা করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
আরো পড়ুন:
ঘূর্ণিঝড় মন্থা, বন্দরে ২ নম্বর সতর্কতা
‘সঠিক স্থান নির্ধারণ না হওয়া আশ্রয়কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া হবে’
প্রতিবেদনে বলা হয়, কালমেগির প্রভাবে ফিলিপাইনের মধ্যাঞ্চলীয় সেবু দ্বীপের সব শহর প্লাবিত হয়েছে। কর্দমাক্ত বন্যার পানির তোড়ে ভেসে গেছে গাড়ি, ট্রাক এমনকি বিশাল আকারের কনটেইনারও।
সেবুর প্রতিরক্ষা অফিসের ডেপুটি অ্যাডমিনিস্ট্রেটর রাফায়েলিটো আলেজান্দ্রো জানান, কেবল সেবুতেই এখন পর্যন্ত ৯৯ জনের প্রাণহানির তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, কালমেগির প্রভাবে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১৪ জনে। আহত হয়েছে ৮২ জন। এছাড়া ১২৭ জন এখনও নিখোঁজ রয়েছে।
প্রেসিডেন্ট মার্কোস বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের জানান, তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কারণ ঘূর্ণিঝড় কালমেগির আঘাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং সপ্তাহান্তে দেশটিতে আরেকটি ঝড় ‘উওয়ান’ আঘাত হানতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তিনি স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেন, “প্রায় ১০ থেকে ১২টি অঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই যদি এতগুলো অঞ্চল এই ধরনের প্রভাবের সাথে জড়িত থাকে, তাহলে এটি একটি জাতীয় দুর্যোগ।”
জাতীয় দুর্যোগের মানে হলো, এমন এক পরিস্থিতি যেখানে ব্যাপক হতাহত, সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষতি এবং ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষের জীবিকা নির্বাহ ও স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে।
এটি সরকারি সংস্থাগুলোকে জরুরি তহবিল সংগ্রহ এবং ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রয়োজনীয় পণ্য ও পরিষেবা ক্রয় এবং সরবরাহ দ্রুত করার জন্য আরও ক্ষমতা দেয়।
স্থানীয়ভাবে ‘টিনো’ নামে পরিচিত ঘূর্ণিঝড় কালমেগি মঙ্গলবার (৪ সেপ্টেম্বর) ভোরে ফিলিপাইনের স্থলভাগে আঘাত হানে। এতে সেবুর আবাসিক এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, ছোট অনেক বাড়িঘর বন্যার পানিতে ভেসে গেছে, শহরজুড়ে কাদার ঘন স্তুর পড়েছে। উদ্ধারকারী দল ঘরের ভেতরে আটকা পড়া মানুষদের উদ্ধার করতে নৌকা ব্যবহার করছে।
ফিলিপাইনে প্রতিবছর গড়ে অন্তত ২০টি ঝড় ও টাইফুন আঘাত হানে। পরপর দুটি টাইফুনে এক ডজনেরও বেশি মানুষ নিহত এবং অবকাঠামো ও ফসলের ক্ষতি হওয়ার মাত্র এক মাস পরই সর্বশেষ এই ঘটনাটি ঘটল।
সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে ফিলিপাইনে সুপার টাইফুন রাগাসা আঘাত হেনেছিল এবং তার পরেই আসে টাইফুন বুয়ালোই।
আগের মাসগুলোতে, বর্ষা মৌসুমে দেশটি ব্যাপকভাবে বন্যা কবলিত হয়ে পড়ে। ওই ঘটনায় নিম্নমানের বন্যা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ক্ষোভ ও বিক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর, মধ্য ফিলিপাইনে ৬ দশমিক ৯ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানার পর কয়েক ডজন মানুষ নিহত ও আহত হয়েছিল, যার ক্ষতির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি ছিল সেবুতে।
ঘূর্ণিঝড় কালমেগি আজ বৃহস্পতিবার ফিলিপাইন ছেড়ে মধ্য ভিয়েতনামের দিকে অগ্রসর হচ্ছে, যেখানে ইতিমধ্যেই রেকর্ড বৃষ্টিপাত হচ্ছে। সেপ্টেম্বরে দুটি ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে ভিয়েতনামে প্রায় ২৫০ জন নিহত হয়েছিলেন।
পূর্বাভাস অনুসারে, ঘূর্ণিঝড় কালমেগি শুক্রবার সকালে মধ্য ভিয়েতনামে আঘাত হানবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে সেখানকার ৫০টিরও বেশি ফ্লাইট বাতিল অথবা পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে।
ভিয়েতনাম ইতিমধ্যেই এক সপ্তাহ ধরে বন্যা ও রেকর্ড বৃষ্টিপাতের সাথে লড়াই করছে। দেশটির বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র এখনও বন্যার কবলে রয়েছে।
থাইল্যান্ডও ঝড়ের প্রভাবের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। স্থানীয় কর্মকর্তারা কালমেগির প্রভাবে সম্ভাব্য আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসের সতর্কতা জারি করেছেন।
ঢাকা/ফিরোজ