ডিপথেরিয়া কী

ডিপথেরিয়া মারাত্মক সংক্রামক রোগ, যা নাক, গলা ও শ্বাসনালিতে তীব্র প্রদাহ সৃষ্টি করে। এর জন্য দায়ী করনিব্যাকটেরিয়াম ডিপথেরি নামের এক ব্যাকটেরিয়া। এই ব্যাকটেরিয়া এমন কিছু বিষাক্ত রস বা টক্সিন তৈরি করে, যার ফলে গলায় অস্বাভাবিক আস্তরণ সৃষ্টি হয়। এই আস্তরণের কারণে শ্বাসরোধ পর্যন্ত হতে পারে। তা ছাড়া টক্সিন রক্তে মিশে গিয়ে হৃৎপিণ্ড ও স্নায়ুকেও আক্রান্ত করতে পারে। কখনো কখনো চোখ, ত্বক ও দেহের অন্য অংশও এই জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হয়। রোগীর দেহে প্রকাশ পায় নানা উপসর্গ।

কিছু উপসর্গ

ডিপথেরিয়া রোগের প্রাথমিক উপসর্গ খানিকটা ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো। সর্দি, জ্বর ও নাক দিয়ে পানি পড়া, চোখ ছলোছলো করা, গলার ব্যথা, কথা বলতে ও গিলতে কষ্ট, লিম্ফ নোড ফুলে যাওয়া ইত্যাদি। অনেক সময় শিশুদের মুখ দিয়ে লালা ঝরতে থাকে, শ্বাসকষ্ট হয়, গলায় ঘা দেখা দেয়। সবচেয়ে বেশি কষ্ট হয় গলার ব্যথায়। মুখের ও গলার ভেতরে ধূসর রঙের একধরনের আস্তরণ দেখা যায়, যা পরিষ্কার করতে গেলে রক্তপাত হতে পারে।

আরও পড়ুনকীভাবে বুঝবেন আপনার পোষা বিড়াল বা কুকুরটির ওজন বেশি?১৩ নভেম্বর ২০২৪ডিপথেরিয়া কীভাবে ছড়ায়

আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি–কাশি থেকে বাতাসের মাধ্যমে এই রোগের জীবাণু ছড়াতে পারে। এ ছাড়া রোগীর ব্যবহৃত বাসনকোসন, জামাকাপড়, এমনকি বিছানা থেকেও এই রোগ ছড়াতে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তিকে তাই অন্যদের থেকে দ্রুত আলাদা করতে হবে। এই রোগে শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। খুব অল্প কিছু ক্ষেত্রে ত্বকের কোনো ক্ষত দিয়েও এই জীবাণু প্রবেশ করতে পারে।

আরও পড়ুনআপনার পোষা বিড়ালকে কি শুকনা খাবার দিচ্ছেন?৩১ অক্টোবর ২০২৪প্রতিরোধের উপায়

ডিপথেরিয়া প্রতিরোধ করা খুবই সহজ। এর জন্য রয়েছে টিকা। বর্তমানে সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির আওতায় দেশের সব শিশুকে যে পেন্টাভ্যালেন্ট টিকা দেওয়া হয়, তার মধ্যে রয়েছে ডিপথেরিয়ার টিকা। জন্মের পর ষষ্ঠ, দশম ও চতুর্দশ সপ্তাহে এই টিকা দেওয়া হয়। এই টিকা দেওয়া হলে শিশু নিরাপদ থাকবে।

বিড়াল ও ডিপথেরিয়া

বিড়াল কিংবা বিড়ালের পশমের সঙ্গে ডিপথেরিয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। বিড়াল ডিপথেরিয়ার জীবাণু বহন করে না। বিড়ালের মাধ্যমে ডিপথেরিয়া ছড়ায় না। তাই অমূলক ভয়ে বিড়ালের মতো কোনো প্রাণীর সংস্পর্শ থেকে কোনো শিশুকে বঞ্চিত করা উচিত নয়। বাস্তবতা হলো, বর্তমান নগরকেন্দ্রিক জীবনে অণুপরিবারগুলো বিশাল অট্টালিকায় ঘরবন্দী থেকে বেড়ে ওঠে। অথচ তাদের মধ্যে সহনশীলতা ও ভালোবাসার অনুভূতিসহ মানবিক গুণাবলি গড়ে তুলতে পোষা প্রাণী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। প্রাণীর যত্ন–আত্তি করতে করতেই শিশুর মধ্যে গড়ে ওঠে মানুষের প্রতি সহমর্মিতা।

আরও পড়ুনপোষা প্রাণী রাখার ৫ সুবিধা২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ড পথ র য়

এছাড়াও পড়ুন:

জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল ছেড়ে দেওয়ার পর শরীরে কি কোনো পরিবর্তন আসতে পারে

সন্তান ধারণ ও নারীদেহের অন্যান্য বৈশিষ্ট্য সরাসরি হরমোনের সঙ্গে সম্পর্কিত।জন্মনিয়ন্ত্রণ পিলে থাকে ইস্ট্রোজেন ও প্রজেস্টেরন হরমোন। তাই বুঝতেই পারছেন, জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল সাদামাটা কোনো ওষুধ নয়। পিল গ্রহণের কারণে বেশ কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। আবার কিছু রোগের চিকিৎসায়ও পিল ব্যবহার করা হয়। কেবল জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য নয়, কিছু রোগের উপসর্গ প্রশমন করতেও কাজে আসে এসব পিল। কিন্তু অনেকেরই প্রশ্ন, হঠাৎ পিল খাওয়া ছেড়ে দিলে তখন দেহে কি কোনো ধরনের পরিবর্তন হতে পারে?

অনিয়মিত মাসিক
পিল ছেড়ে দিলে মাসিকের স্বাভাবিক চক্রে কিছুটা পরিবর্তন আসে। তাই মাসিক হতে পারে অনিয়মিত। হতে পারে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ কিংবা তলপেটে ব্যথা। কয়েক মাসের মধ্যে এসব সমস্যা সেরেও যায়। তবে রক্তক্ষরণ বেশি হলে কিংবা পেটব্যথা খুব তীব্র হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ভালো। এসব উপসর্গের পেছনে অন্য কোনো কারণ দায়ী হলে, তা নির্ণয় করতে পারবেন তিনি।

মনমেজাজে বদল
মনের ওপর হরমোনের বিস্তর প্রভাব। তাই পিল ছেড়ে দিলে হুট করে মেজাজের ধরন কিছুটা বদলাতে পারে। বিশেষ করে মাসিক শুরু হওয়ার আগের কয়েকটা দিন বাড়তি দুশ্চিন্তা, অবসন্নতা বা বিরক্তি অনুভূত হতে পারে।

ওজন কমে যাওয়া
জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যবহৃত কিছু পিল ওজন বাড়ার জন্য দায়ী। এসব পিল ছেড়ে দিলে তাই স্বাভাবিকভাবেই ওজন কিছুটা কমে। তবে না চাইতেই খুব বেশি ওজন কমলে বিষয়টিকে আবার স্বাভাবিক ধরে নেওয়া যাবে না। সে ক্ষেত্রেও চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।

মাথাব্যথা
হরমোনের আধিক্যে কারও কারও মাথাব্যথা করে। কেউ কেউ আবার হরমোনের ঘাটতি হলে মাথাব্যথায় ভোগেন। তাই পিল খাওয়া শুরু করার পর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে যাঁদের মাথাব্যথা হতো, পিল ছেড়ে দেওয়ার পর তাঁরা মাথাব্যথায় কম ভোগেন। আর পিল শুরু করার পর যাঁদের মাথাব্যথা কমেছিল, পিল ছেড়ে দিলে তাঁরা মাথাব্যথায় বেশি ভুগতে পারেন।

আরও পড়ুনজন্মনিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে যা জানা উচিত৩১ মে ২০২২

আরও যা হতে পারে

পিল ছেড়ে দেওয়ার পর অন্য কোনো জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ করা না হলে ৮৫ শতাংশ নারীর এক বছরের মধ্যে সন্তান ধারণের সম্ভাবনা থাকে।

পিল শুরুর পর অনেকের ব্রণের সমস্যা কমে যায়। পিল ছেড়ে দিলে ব্রণ ফিরে আসতে পারে।

পিল শুরুর পর কারও দেখা দেয় বমি বমি ভাব, কারও হয় স্তনে ব্যথা। পিল ছেড়ে দিলে এসব সমস্যা সেরে যায়।

পিল ছেড়ে দেওয়ার পর সবার দেহে যে একই ধরনের প্রভাব দেখা দেবে, তা নয়। কার দেহে ঠিক কী ধরনের প্রভাব পড়বে, তা নির্ভর করে তিনি কত দিন ধরে কোন মাত্রার পিল গ্রহণ করেছেন, তার ওপর।
সূত্র: ওয়েবএমডি

আরও পড়ুনযেভাবে ডিম খেলে মিলবে সবচেয়ে বেশি আমিষ১০ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল ছেড়ে দেওয়ার পর শরীরে কি কোনো পরিবর্তন আসতে পারে