পটুয়াখালীতে জুলাই অভ্যুত্থানে এক শহীদের কলেজপড়ুয়া মেয়েকে দলবদ্ধ ধর্ষণের মামলায় তিন কিশোরের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ। গতকাল বুধবার দুমকি থানার পরিদর্শক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম পটুয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।

দুমকি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

মিজানুর রহমান বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।

জুলাই আন্দোলনে শহীদ বাবার কবর জিয়ারত করে নানাবাড়িতে ফেরার পথে গত ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় দুমকির একটি গ্রামে ওই কলেজছাত্রী (১৭) দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয় বলে অভিযোগ। এ ঘটনায় সে বাদী হয়ে দুমকি থানায় একটি মামলা করে। পরে এজাহারভুক্ত দুই কিশোরকে আইনের আওতায় এনে যশোর শিশু সংশোধনাগারে পাঠায় পুলিশ। মামলার তদন্ত চলাকালে গত ২৬ এপ্রিল রাজধানীর শেখেরটেক এলাকার ভাড়া বাসা থেকে ওই ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

আরও পড়ুনপটুয়াখালীতে কলেজছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে আটক ১১৯ মার্চ ২০২৫

অভিযোগপত্র প্রসঙ্গে পটুয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) সাজেদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, দুই কিশোরের নাম উল্লেখ করে বাদী থানায় মামলা করে। কিন্তু মামলার তদন্তকালে এ ঘটনায় আরেক কিশোরের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়। তিনি জানান, ২২ মার্চ এজাহারভুক্ত আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে রিমান্ডের আবেদন করা হয়। ২৭ মার্চ আদালত এক আসামিকে যশোর শিশু সংশোধনাগারে তিন দিন জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন। জিজ্ঞাসাবাদে আসামি আরেক কিশোরের জড়িত থাকার কথা জানায়।

আরও পড়ুনপটুয়াখালীতে কলেজছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে আরও একজন গ্রেপ্তার২১ মার্চ ২০২৫

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, অভিযুক্ত ওই কিশোরকে আইনের আওতায় আনতে একাধিকবার অভিযান চালানো হয়েছে। কিন্তু আত্মগোপনে থাকায় সম্ভব হয়নি। দ্রুত সময়ের মধ্যে তাকে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

সাজেদুল ইসলাম বলেন, মামলার তদন্ত চলাকালে ২৬ এপ্রিল রাতে ঢাকার আদাবর থানা এলাকায় বাদীর (কলেজছাত্রী) আত্মহত্যার খবর পাওয়া যায়। এটা অত্যন্ত বেদনাদায়ক ঘটনা। এসব কারণে পুলিশ মামলাটির তদন্ত দ্রুত শেষ করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে।

আরও পড়ুনপটুয়াখালীতে শহীদ বাবার কবরের পাশে শা‌য়িত কলেজছাত্রী, কান্না থামছে না মায়ের২৭ এপ্রিল ২০২৫আরও পড়ুনজুলাই আন্দোলনে শহীদের মেয়ের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার২৬ এপ্রিল ২০২৫

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

এমসি কলেজে ধর্ষণ ও চাঁদাবাজি মামলার বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে শুরু

সিলেটের এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে তরুণীকে তুলে নিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় করা ধর্ষণ ও চাঁদাবাজি মামলার বিচারকাজ নতুন করে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে শুরু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে আসামিদের উপস্থিতিতে এসব মামলার প্রথম দিনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

এর আগে মামলা দুটি সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারাধীন ছিল। আজ দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক স্বপন কুমার সরকার এসব মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ১৩ মে দিন ধার্য করেন।

সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আবুল হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, বাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালতের নির্দেশে মামলা দুটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়। প্রথম দিনের শুনানিতে অভিযুক্ত আট আসামি উপস্থিত ছিলেন। ১৩ মে মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হবে।

মামলার বাদীপক্ষের প্যানেল আইনজীবীর প্রধান শহীদুজ্জামান চৌধুরী বলেন, মামলার ন্যায়বিচার বাধাগ্রস্ত করতে পদে পদে নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়েছিল। এমনকি উচ্চ আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় থেকে আপিল দায়ের করা হয়েছিল, যা ছিল নজিরবিহীন ঘটনা।

২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে সিলেটের এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে রেখে এক তরুণীকে (২০) দলবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়। এ ঘটনায় তাঁর স্বামী বাদী হয়ে মহানগর পুলিশের শাহপরান থানায় ছয়জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতপরিচয় দুজনকে আসামি করে মামলা করেন। ঘটনার পর আসামিরা পালিয়ে গেলেও তিন দিনের মধ্যে ছয় আসামি ও সন্দেহভাজন দুজনকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ ও র‍্যাব। পরবর্তী সময়ে আদালতে তাঁরা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

গ্রেপ্তারের পর আসামিদের ডিএনএ নমুনা পরীক্ষায় আট আসামির মধ্যে ছয়জনের ডিএনএর মিল পাওয়া যায়। ২০২১ সালের ৩ ডিসেম্বর আটজনের বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা ও মহানগর পুলিশের শাহপরান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিবাহ বিচ্ছেদের ৮ দিন পর নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ২
  • পটুয়াখালীতে রাতে তরুণীকে তুলে নিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ
  • এমসি কলেজে ধর্ষণ ও চাঁদাবাজি মামলার বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে শুরু