যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার পাকিস্তানি দাবি নিয়ে প্রশ্নের কোনো জবাব দিলেন না বিক্রম মিশ্রি
Published: 8th, May 2025 GMT
ভারত–পাকিস্তান সংঘাতের আবহে রাফালসহ পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার যে দাবি পাকিস্তান করেছে, সে বিষয়টি নিয়ে ধোঁয়াশা কাটল না। এ বিষয়ে পাকিস্তানের দাবি ও প্রচার সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি আজ বৃহস্পতিবার ব্রিফিংয়ে সরাসরি কোনো উত্তর দিলেন না। তিনি কেবল বললেন, ঠিক সময়ে সরকারিভাবে এর উত্তর নিশ্চয় দেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভারতের চালানো ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে দ্বিতীয়বার গণমাধ্যমের সামনে হাজির হন পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন কর্নেল সোফিয়া কুরেশি ও উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিং।
গতকাল বুধবার দিবাগত রাতে উত্তর ও পশ্চিম ভারতের বিভিন্ন এলাকায় সামরিক ঘাঁটিতে পাকিস্তানের হামলা ভারত কীভাবে প্রতিহত করেছে তা তুলে ধরে তাঁরা বলেন, বৃহস্পতিবার ভারতীয় বিমানবাহিনী লাহোরের এয়ার ডিফেন্স ব্যবস্থা নষ্ট করে দিয়েছে।
ব্রিফিংয়ে কর্নেল সোফিয়া কুরেশি ও উইং কমান্ডার ব্যোমিকা দাবি করেন, পাকিস্তান আক্রমণ করেছিল অবন্তীপুরা, শ্রীনগর, জম্মু, পাঠানকোট, অমৃতসর, কাপুরথালা, জলন্ধর, লুধিয়ানা, আদমপুর, বাটিন্ডা, চণ্ডীগড়, নাল, ফালোদি, উত্তরলাই ও ভুজের সামরিক ঘাঁটি। এই কাজে তারা ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছিল। কিন্তু ভারত তা সাফল্যের সঙ্গে প্রতিহত করেছে। পাকিস্তানের আক্রমণের এসব চিহ্ন জড়ো করা হচ্ছে।
এই ঘোষণার পর বিক্রম মিশ্রি সংঘাত পরিস্থিতি, নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুর ওপর ভারতের আক্রমণ এবং সেই আক্রমণের লক্ষ্য পুরোপুরি সন্ত্রাসবাদীদের ডেরা ছিল দাবি করে বলেন, প্রথম উত্তেজনা পাকিস্তানই ছড়িয়েছে ২২ এপ্রিল পেহেলগামে। দুই সপ্তাহ পর ভারত যা করেছে তা প্রত্যাঘাত। সেই অধিকার ভারতের আছে এবং তা প্রয়োগ করা হয়েছে।
বুধবারের ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রসচিব কাউকে কোনো প্রশ্ন করার অনুমতি দেননি; তবে বৃহস্পতিবার কিছু প্রশ্ন করার অনুমতি দেওয়া হয়। তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, এই সংঘাত পরিস্থিতিতে ভারত ও পাকিস্তানের দুই জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেছেন বলে খবর রটেছে, এর সত্যতা কতখানি। জবাবে বিক্রম বলেন, এ বিষয়ে তাঁর কাছে কোনো খবর নেই।
মঙ্গলবার রাতে ভারতীয় বাহিনীর আক্রমণের খবরের পাশাপাশি পাকিস্তানের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, তারা রাফালসহ পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ফেলে দিয়েছে। তাদের সেই দাবি বা প্রচার আদৌ সত্য কি না, জানতে চাওয়া হলে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, যখন সময় হবে তখন এই সব বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চয় তথ্য জানানো হবে।
পাশাপাশি মিশ্রি বলেন, পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্মের সময় থেকেই তারা মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে আসছে। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তানি বাহিনী জম্মু–কাশ্মীর আক্রমণ করেছিল। কিন্তু তা তারা অস্বীকার করে চলেছিল। তখন থেকেই তারা মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে আসছে। জাতিসংঘকেও তারা ওই আক্রমণ নিয়ে মিথ্যা বলেছিল এবং সেই মিথ্যা ধরাও পড়েছিল।
বৃহস্পতিবার সকালে সর্বদলীয় বৈঠকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ভারতীয় বাহিনীর প্রত্যাঘাতে শতাধিক সন্ত্রাসবাদীর মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি জানিয়েছিলেন। হতাহতের এই সংখ্যা এবং নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে কুখ্যাত সন্ত্রাসীরা আছে কি না, জানতে চাওয়া হলেও পররাষ্ট্রসচিব নির্দিষ্টভাবে কিছু বলেননি। তিনি বলেন, এই মুহূর্তে তাঁর কাছে নির্দিষ্ট তথ্য নেই। তবে গণমাধ্যমে বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এত তথ্য ছড়াচ্ছে, যাতে মনে হয় এই সংঘাত যেন অনেক দিনের পুরোনো। তিনি বলেন, মনে রাখতে হবে, মাত্র ৩৬ ঘণ্টা অতিবাহিত হয়েছে। পুরো তথ্য জানার জন্য একটু ধৈর্য ধরতে হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পরর ষ ট রসচ ব
এছাড়াও পড়ুন:
টেকনাফে ইউপি সদস্য হত্যার ঘটনায় মামলা
কক্সবাজারের টেকনাফর উপজেলার সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য মো. ইউনুস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) রাতে নিহতের স্ত্রী কোহিনুর আক্তার বাদী হয়ে ১৬ জনকে আসামি করে মামলাটি করেন।
টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জায়েদ নূর মামলাটি নথিভুক্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মামলায় আট জনের নাম উল্লেখ এবং ৭-৮জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
গলা কেটে বিড়াল হত্যা, থানায় জিডি
স্ত্রী ও প্রেমিক মিলে হত্যা করে জহুরুলকে: পুলিশ
কোহিনুর আক্তারের অভিযোগ, তার স্বামী স্বামী ইউনুস সাবেক ইউপি সদস্য এবং টেকনাফ উপজেলা আরাফাত রহমান কোকো ক্রীড়া সংসদের সভাপতি। গত মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) রাতে মো. আলম নামে এক ব্যক্তির ফোন পেয়ে বাড়ি থেকে বের হন তিনি। বাড়িতে আমন্ত্রণ জানিয়ে আটকে রাখা হয় ইউনুসকে। এরপর ৭০ লাখ টাকা দাবি করা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে ফেরত দেওয়ার কথা বললেও, ইউনুসের মরদেহ ব্রিজের নিচ থেকে উদ্ধার হয়।
কোহিনুর আক্তার বলেন, “আমার স্বামীকে দাওয়াতের কথা বলে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে আলম শফুর গ্রুপ। তাদের সঙ্গে তার কোনো টাকার লেনদেন ছিল না। তারা সকালে আমার স্বামীকে জীবিত ফেরত দেবে বলেছিল, কিন্তু পেলাম শুধু লাশ। রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী মহলের সহযোগিতায় তাকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এই হত্যার বিচার চাই।”
গত বুধবার (৫ নভেম্বর) সকালে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের রঙ্গিখালী এলাকার একটি ব্রিজের নিচ থেকে ভাসমান অবস্থায় সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য ইউনুসের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
ঢাকা/তারেকুর/মাসুদ