রাবি রেজিস্ট্রারের বাসায় ককটেল হামলার প্রতিবাদে সমাবেশ
Published: 8th, May 2025 GMT
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের (ভারপ্রাপ্ত) বাসায় ককটেল বিস্ফোরণ ও হামলার প্রতিবাদে ছাত্র-শিক্ষক-নাগরিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঘটনার এক সপ্তাহ পার হলেও জড়িতদের এখনো গ্রেপ্তার না করায় তার এ কর্মসূচি পালন করেন।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) দুপুর ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে ‘নিপীড়ন বিরোধী ছাত্র-শিক্ষক ঐক্য’ এর ব্যানারে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।
সমাবেশে ফোকলোর বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা আমিরুল ইসলাম কনক বলেন, “আমরা যে ভয় পেয়ে এখানে দাঁড়িয়েছি, ব্যাপারটা মোটেও এমন নয়। আমাদের অবস্থান জানান দিতে দাঁড়িয়েছি। ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে বিপ্লবের পর এখনো মুখোশধারী কিছু ফ্যাসিস্ট আমাদের চারপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমরা যারা দায়িত্ব পেয়েছি, তারা নিশ্চিন্তে দায়িত্ব পালন করতে চাই।”
আরো পড়ুন:
রাবিতে আন্তঃবিভাগ খেলার পুরস্কার বিতরণী
রাবিতে নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ ৫ দাবিতে স্মারকলিপি
তিনি বলেন, “আজ আমাদের নানা বাধার সম্মুখীন করা হচ্ছে। আমরা মনে করি, নৈতিক শক্তিতে যারা পরাজিত, তারাই এই ঘৃণ্য কাজ করছে। তারা কাপুরুষ ছাড়া আর কিছুই না। কারণ তাদের নৈতিক সাহস নেই। আমরা এসব কাপুরুষকে শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সমন্বয়ক মাহায়ের ইসলাম বলেন, “রাবি রেজিস্ট্রার ইফতিখারুল আলম মাসউদের ওপর হামলা মানে শিক্ষার ওপর হামলা, ছাত্র জনতার ওপর হামলা, বুদ্ধিজীবীদের ওপর হামলা। এক সপ্তাহ পার হওয়ার পরেও এই হামলার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে না পারা আমাদের জন্য অনেক বেশি লজ্জার ও বেদনার।”
তিনি বলেন, “অনতিবিলম্বে এই হামলার সঙ্গে জড়িতদের উদঘাটন করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। যদি তা না করা হয় তাহলে আমাদের আন্দোলন আরো তীব্রতর রূপ ধারণ করবে।”
সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
গত ৩০ এপ্রিল গভীর রাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) ও আরবি বিভাগের অধ্যাপক ইফতিখারুল আমল মাসঊদের বাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ করে দুর্বৃত্তরা। বিনোদপুরের মন্ডলের মোড়ে তার নিজ বাসার দরজার সামনে এ হামলার ঘটনা ঘটে। তবে এ ঘটনায় কেউ আহত হননি।
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ইউএসএআইডির তহবিল হ্রাসে বাংলাদেশে চাকরি হারিয়েছেন ‘২০ হাজার মানুষ’
যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য সংস্থা ইউএসএআইডির তহবিল কমার কারণে এ সংস্থার অর্থায়নে বিভিন্ন প্রকল্পে কর্মরত বাংলাদেশের ২০ হাজার মানুষ চাকরি হারিয়েছেন। কমে যাওয়া তহবিলের পরিমাণ ২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশের প্রতিবছর পাওয়া বৈদেশিক সহায়তার ১৮ শতাংশ।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে একশনএইড বাংলাদেশ আয়োজিত ‘স্ট্রেনদেনিং কমিউনিটি সাপোর্ট এমিড চেঞ্জিং ফান্ডিং ল্যান্ডস্কেপ’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে এ তথ্য জানানো হয়। বৈদেশিক সহায়তা কমার প্রেক্ষাপটে দেশের উন্নয়ন কার্যক্রমে বিকল্প পথ খোঁজার উপায় নিয়ে এ গোলটেবিলের আয়োজন করা হয়।
সেখানে একটি উপস্থাপনায় বলা হয়, বাংলাদেশ প্রতিবছর নানা উৎস থেকে ১ দশমিক ১ বিলিয়ন (১১০ কোটি) মার্কিন ডলার তহবিল পায়। ইউএসএআইডির তহবিল কমার কারণে বাংলাদেশে প্রত্যক্ষভাবে ৮ হাজার আর পরোক্ষভাবে আরও ১২ হাজার মানুষ চাকরি হারিয়েছেন।
সেখানে সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, সামনে আরও তহবিল কমবে। আন্তর্জাতিক কর্মসূচিগুলোতে সহায়তা কমে আসবে। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে আগে যে ফাউন্ডেশনগুলো সহায়তা দিত, সেগুলোকে কর অব্যাহতি দেয়া হতো। এখন সে কর অব্যাহতি প্রত্যাহার করে নেওয়ার আলোচনা হচ্ছে।
অন্যদিকে এলডিসি থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ হলে সিভিল সোসাইটি সংগঠনগুলোর সহায়তা কমতে থাকবে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভের নির্বাহী পরিচালক এম জাকির হোসাইন খান বলেন, ‘আমাদের এ বাস্তবতা মেনে নিতে হবে যে হানিমুন পিরিয়ড ইজ ওভার। বিশ্বব্যাপী নানা বাস্তবতায় বৈদেশিক সহায়তা কমে আসছে। আমাদের টিকে থাকতে হলে নতুন মডেল, নতুন কাঠামোতে সবকিছু পুনর্বিন্যাস করতে হবে।’
আগামী দিনে ‘প্রকৃতিনির্ভর সমাধান’, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও ইনস্যুরেন্স খাতে সম্ভাবনা রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। স্থানীয় সরকারের সঙ্গে স্থানীয় পর্যায়ে নদীনালা, খালবিল, বন সংরক্ষণ ব্যবস্থাপনায়ও কাজ করা যায় বলে উল্লেখ করেন জাকির হোসাইন খান।
বক্তারা পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে টিকে থাকতে নতুন নেতৃত্ব, নতুন ভবিষ্যৎ ও সহায়তার নতুন নতুন উৎস খুঁজে বের করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
একশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবিরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত গোলটেবিল বৈঠকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক শারমিন নিলোর্মী বক্তব্য দেন। এ ছাড়া বিভিন্ন নাগরিক সংগঠন ও উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিরা এতে অংশ নেন।