কারগিল যুদ্ধে কীভাবে অংশ নিয়েছিলেন অভিনেতা নানা পাটেকর?
Published: 9th, May 2025 GMT
আসল নাম বিশ্বনাথ পাটেকর। তবে নানা পাটেকর নামেই পরিচিত। ১৯৭৮ সালে ‘গমন’ সিনেমায় পার্শ্বচরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে ক্যারিয়ার শুরু করেন নানা। ‘সালাম বম্বে’, ‘অঙ্গার’, ‘পারিন্দা’, ‘প্রহার’-এর মতো সিনেমা উপহার দিয়েছেন। রুপালি পর্দার দাপুটে এই অভিনেতা বাস্তব জীবনেও কারগিল যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন।
খুব কম মানুষই জানেন ১৯৯০-২০১৩ সাল পর্যন্ত ভারতীয় সেনাবাহিনীতে কাজ করেছেন অভিনেতা নানা পাটেকর। ১৯৯৯ সালে যখন কারগিল যুদ্ধ শুরু হয়, তখন ভারতীয় সৈন্যরা সম্মুখ সারিতে তাদের জীবন উৎসর্গ করেছিল। সেই সময় সমগ্র ভারতীয়রা আর্থিকভাবে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে এসেছিলেন। আবার কেউ কেউ তাদের মনোবল বাড়ানোর জন্য উল্লাস করেছিলেন। ঠিক তখন তিনবারের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেতা নানা পাটেকর অভিনয় ছেড়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। কেবল তাই নয়, দেশের সেবা করার জন্য সম্মুখ যোদ্ধা হিসেবে কাজ করেন।
জনপ্রিয় অভিনেতা হলেও নানা পাটেকর সামরিক বাহিনীর কেউ ছিলেন না। তাহলে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে কীভাবে যোগ দিলেন? এই প্রশ্ন সামনে আসাটা স্বাভাবিক। তার আগে বলে রাখা ভালো, নানা পাটেকর পরিচালিত ‘প্রহার: দ্য ফাইনাল অ্যাটাক’ সিনেমা ১৯৯১ সালে মুক্তি পায়। সিনেমাটিতে মেজর প্রতাপ চরিত্রে অভিনয় করেন নানা পাটেকর। সিনেমাটির কাজ শুরুর আগে সেনাবাহিনীর মারাঠা লাইট ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্টে ৩ বছর কঠোর প্রশিক্ষণ নেন তিনি। এরপরও অনেকটা কাঠখড় পোহাতে হয়েছিল এই অভিনেতাকে। অমিতাভ বচ্চন সঞ্চালিত ‘কৌন বনেগা ক্রোড়পতি’ অনুষ্ঠানের ১৬ তম সিজনে সেই গল্প শুনিয়েছিলেন নানা পাটেকর।
আরো পড়ুন:
পাকিস্তানে ভারতের হামলা: তারকারা কী বলছেন?
বেবি বাম্প নিয়ে মেট গালায় দ্যুতি ছড়ালেন কিয়ারা
কারগিল যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর সেনাবাহিনীর রিজনাল অফিসারদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন নানা পাটেকর। যুদ্ধে অংশ নেওয়ার আগ্রহের কথাও তাদের জানান। কিন্তু তারা অপারগতা প্রকাশ করেন। পাশাপাশি পরামর্শ দেন, এ বিষয়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী জর্জ ফার্নান্দেজের সঙ্গে কথা বলতে পারেন। উনার অনুমতি মিললেই এটা সম্ভব। তারপর প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন নানা পাটেকর।
সেই অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে নানা পাটেকর বলেন, “আমি আমাদের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জর্জ ফার্নান্দেজকে চিনতাম। তাই আমি তাকে ফোন করি। আমার ইচ্ছার কথা শুনে তিনি বলেন, ‘এটা অসম্ভব।’ আমি তাকে বলেছিলাম, কমিশনের প্রশিক্ষণ ৬ মাস হলেও ৩ বছর প্রশিক্ষণ নিয়েছি। আমার কথা শুনে তিনি অবাক হয়ে যান। তারপর আমার প্রশিক্ষণ নেওয়ার বিষয়ে জানতে চান। মারাঠা লাইট ইনফ্যান্ট্রির সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানার পর জিজ্ঞাসা করেছিলেন— ‘তুমি কখন যেতে চাও?”
১৯৯৯ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে ক্যাপ্টেন হিসেবে যোগদান করেন নানা পাটেকর। দ্রাস, কুপওয়ারা, বারামুল্লা, সোপোর, মুঘলপুরার মতো সংঘাতপ্রবণ এলাকায় দায়িত্ব পালন করেন নানা পাটেকর। রুপালি পর্দার প্রতীকী ভূমিকা থেকে সরে সক্রিয়ভাবে যুদ্ধে অংশ নেন। নিয়ন্ত্রণ রেখায় টহল থেকে শুরু করে সামরিক হাসপাতালে সহায়তা করা পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন এই অভিনেতা।
যুদ্ধে অংশ নিয়ে শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল নানা পাটেকরের। এ বিষয়ে তিনি বলেন, “আমি যখন শ্রীনগরে পৌঁছাই, তখন আমার ওজন ছিল ৭৬ কেজি। যখন আমি বাড়ি ফিরে আসি, তখন আমার ওজন ছিল ৫৬ কেজি।” ৬২ বছর বয়সে ভারতীয় সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণ করেন নানা পাটেকর।
১৯৯৯ সালে অনুষ্ঠিত হয় কারগিল যুদ্ধ। পাকিস্তান–সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী কারগিল পর্বতের বরফাচ্ছাদিত উঁচু ভূমিতে ভারতীয় সামরিক পোস্ট দখল করে নেয়। ইসলামাবাদ সংঘাতের সময় তাদের পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডারের কিছু অংশ মোতায়েন করেছিল— গোয়েন্দাদের এমন তথ্য জানার পর ওয়াশিংটনের প্রবল চাপে পাকিস্তান সেখান থেকে পিছু হটে। ১০ সপ্তাহের ওই সংঘাতে অন্তত ১ হাজার মানুষ নিহত হন।
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়া টিভি
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক রগ ল য দ ধ কর ন ন ন কর ছ ল প ট কর
এছাড়াও পড়ুন:
জন্মদিনে কাজলকে কী বার্তা দিলেন অজয়?
বলিউড অভিনেত্রী কাজল। মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) জনপ্রিয় এই অভিনেত্রীর জন্মদিন। ৫১ বছর পূর্ণ করে বায়ান্নে পা দিতে যাচ্ছেন। বিশেষ দিনে ভক্ত-অনুরাগীদের শুভেচ্ছা বার্তায় ভাসছেন কাজল। তার স্বামী অভিনেতা অজয় দেবগনও জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
ইনস্টাগ্রামে কাজলের সাদা-কালো দুটো ছবি পোস্ট করে মজার ছলে ভালোবাসার অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছেন অজয়। তাতে তিনি লেখেন, “তোমাকে অনেক কিছু বলার ছিল। কিন্তু তুমি চোখ ঘুরিয়ে নেবে।” এরপর হাসির ইমোজি দিয়ে লেখেন, “সুতরাং…শুভ জন্মদিন প্রিয় কাজল।”
তবে শুধু অজয় নয়, কন্যা নিসাও সমাজিকমাধ্যমে মাকে শুভেচ্ছাবার্তা জানিয়েছেন। কাজলের সঙ্গে তোলা একটি ছবি পোস্ট করে নিসা লেখেন, “আমার মা, শুভ জন্মদিন।” উত্তরে কাজল লেখেন, “ভালোবাসি সোনা।”
আরো পড়ুন:
শাহরুখ খানকে যে বার্তা দিলেন ফিফা সভাপতি
অনবদ্য গানে অমর কিশোর কুমার
ভারতের মহারাষ্ট্র প্রদেশের মুম্বাইয়ে জন্মগ্রহণ করেন কাজল। তার পরিবার সিনেমার সঙ্গে যুক্ত থাকায় খুব ছোটবেলায় রুপালি জগতের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যান তিনি। তার মা অভিনেত্রী তনুজা মুখার্জি ও বাবা পরিচালক সোমু মুখার্জি।
তার অভিনয় ক্যারিয়ার শুরু হয় ১৯৯২ সালে, ‘বেখুদি’ সিনেমা দিয়ে। মুক্তির পর খুব একটা চলেনি। তারপরই শুরু হয় কাজলের বিজয়রথ। ১৯৯৩ সালে কাজ করেন শাহরুখ খানের সঙ্গে ‘বাজিগর’ সিনেমায়। প্রথম সিনেমায় নিজেকে মেলে ধরতে না পারলেও ‘বাজিগর’ দিয়ে নিজের জাত চেনান। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি কাজলকে।
‘হালচাল’ সিনেমার সেটে অজয় ও কাজলের ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়। এরপর ১৯৯৯ সালে বিয়ে করেন তারা। ‘গুন্ডারাজ’ (১৯৯৫), ‘ইশক’ (১৯৯৫), ‘পেয়ার তো হোনা হি থা’ (১৯৯৮), ‘দিল কিয়া কারে’ (১৯৯৯), ‘রাজু চাচা’ (২০০০), ‘ইউ মি অউর হাম’ (২০০৮), ‘তুনপুর কা সুপারহিরো’ (২০১০) ইত্যাদি সিনেমায় একসঙ্গে অভিনয় করেছেন এই জুটি। অজয়-কাজলের দুই সন্তান— মেয়ে নিসা ও ছেলে যুগ।
ঢাকা/শান্ত