দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিতের দাবি গণসংহতির
Published: 10th, May 2025 GMT
নির্বিচার হত্যার দায়ে এবং গত ১৫ বছরে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করার অপরাধে দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচারের দাবি জানিয়েছে গণসংহতি আন্দোলন। আওয়ামী লীগের বিচারের মধ্য দিয়েই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ ঠিক হবে বলে জানিয়েছে তারা।
আজ শনিবার গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি ও নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল এক যৌথ বিবৃতিতে এসব কথা বলেন।
যৌথ বিবৃতিতে তাঁরা বলেছেন, পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার গত ১৫ বছর ধরে গুম-খুন-হত্যা জনগণের কণ্ঠরোধ, ভোটাধিকার হরণ, দুর্নীতি, লুটপাট, অর্থ পাচারসহ ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে রেখেছিল। আওয়ামী লীগ গত জুলাই আগস্টে আন্দোলনরত ছাত্র-শ্রমিক-জনতার ওপর নির্বিচার হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে দেড় হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা করে এবং হাজার হাজার মানুষ আহত করে। এসব অপরাধের সঙ্গে দল হিসেবে যে আওয়ামী লীগ যুক্ত ছিল তা জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
এই ধরনের কর্মকাণ্ডে যুক্ত সব রাজনৈতিক ব্যক্তি এবং রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ব্যবহার করে যারা শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগকে এসব কর্মকাণ্ড পরিচালনায় সহায়তা করেছে, নেতৃত্ব দিয়েছে তাদেরও বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে গণসংহতি আন্দোলন। দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে দ্রুত বিচারের আওতায় আনার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে ভবিষ্যৎ ঠিক হবে বলেছে দলটি।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশ সীমান্তের ৩০ কিলোমিটারের মধ্যে ভারতের সেনাঘাঁটির ভিত্তি স্থাপন
বাংলাদেশের সীমান্তের ৩০ কিলোমিটারের মধ্যে আসাম রাজ্যের ধুবড়ি শহরে একটি সেনাঘাঁটি করছে ভারত সরকার।
ভারতের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সংযোগ স্থাপনকারী কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ ‘চিকেনস নেক’ করিডরের কাছেই এটি স্থাপিত হচ্ছে।
ভারতের সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আর সি তিওয়ারি গত বৃহস্পতিবার এই ঘাঁটির ভিত্তি স্থাপন করেন। এর নাম রাখা হয়েছে ‘লাচিত বোরফুকান মিলিটারি স্টেশন’। এটি এসেছে আসামের ১৭ শতকের কিংবদন্তি কমান্ডার লাচিত বোরফুকানের নাম থেকে। বলা হয়ে থাকে, তিনি মোগল বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন।
লেফটেন্যান্ট জেনারেল তিওয়ারি কাজের সর্বোত্তম মান বজায় রেখে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এ ঘাঁটিকে কার্যকর করে তোলার নির্দেশনা দেন বলে ভারতের সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের এক এক্স পোস্টে জানানো হয়। ওই পোস্টে বলা হয়, স্থানীয় বিধানসভা সদস্য হামিদুল রহমানও ভিত্তি স্থাপন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
লেফটেন্যান্ট জেনারেল তিওয়ারি সীমান্তবর্তী এলাকায় আভিযানিক প্রস্তুতি এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন। পাশাপাশি চলমান অবকাঠামো উন্নয়ন উদ্যোগগুলোর অগ্রগতি মূল্যায়ন করেন।
ভারতের সেনাবাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম রাওয়াত বলেছেন, স্টেশনটি স্থাপন ভারতীয় সেনাদের আঞ্চলিক অপারেশনাল সক্ষমতা এবং অবকাঠামো আরও শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
স্টেশনটি তেজপুরভিত্তিক চতুর্থ কোরের অধীন থাকবে। এটি বনুমনি পার্ট-১ এবং বনুমনি পার্ট-২ গ্রামের সরকারি জমিতে নির্মাণ করা হচ্ছে। দ্য আসাম ট্রিবিউনের তথ্যমতে, বিলাসীপাড়া রেভিনিউ সার্কেলের সপ্তগ্রামে নির্মিত স্টেশনটি হচ্ছে ১৯৬ বিঘা জমির ওপর।
এই স্টেশনে ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি বিশেষায়িত ইউনিট ‘প্যারা এসএফ ইউনিট’সহ প্রায় ১ হাজার ৫০০ সেনাসদস্য থাকবেন। সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, এই স্টেশন (কোনো ঘটনায়) দ্রুত প্রতিক্রিয়া, নজরদারি এবং উচ্চ প্রভাবযুক্ত ট্যাকটিক্যাল অভিযানের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
ইস্টার্ন কমান্ডের সাবেক সেনা কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) রানা প্রতাপ কালিতা টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেন, তামুলপুর, রাঙ্গিয়া ও গুয়াহাটি ছাড়িয়ে পশ্চিম আসামে ভারতীয় সেনাবাহিনীর কোনো ঘাঁটি বা স্টেশন নেই। তিনি বলেন, তাদের (সেনাবাহিনীর) এই স্থানটি অধিগ্রহণ করা দরকার ছিল। এটি আসামে বাংলাদেশ সীমান্তের সবচেয়ে কাছাকাছি স্থানে অবস্থিত। তিনি আরও বলেন, ‘এই সীমান্ত অঞ্চলে যদি স্থায়ী কোনো সেনাঘাঁটি থাকে, লজিস্টিক দিক থেকে প্রয়োজনের সময় তা আমাদের জন্য অনেক কিছু সহজ করে দেবে।’
আসামে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ সীমান্তের সবচেয়ে কাছে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সামরিক স্টেশনটি শিলচরের মাসিমপুরে অবস্থিত। যার অবস্থান বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দূরে। সেই তুলনায় নির্মিত লাচিত বোরফুকান মিলিটারি স্টেশন বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে বেশ কাছাকাছি।