Samakal:
2025-11-17@11:03:13 GMT

অ্যান্ড্রয়েডে কেন গতির ঝড়!

Published: 11th, May 2025 GMT

অ্যান্ড্রয়েডে কেন গতির ঝড়!

স্মার্টফোনে বর্তমানে অ্যাপ যে রাজত্ব আর সুবিধা যুক্ত করেছে তার কৃতিত্বের দাবিদার অ্যান্ড্রয়েড। নিয়মিত বিরতিতে আপডেট আর নতুন সংস্করণ যেন অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসকে দিয়েছে আকাশচুম্বী সাফল্য আর জনপ্রিয়তা। বিশ্বের ১৯০টি দেশের ৪০০ কোটি গ্রাহক এখন অ্যান্ড্রয়েড সিস্টেমের ওপর নির্ভরশীল। নতুন সংস্করণে তাই চমকের অপেক্ষা। লিখেছেন সাব্বিন হাসান

স্মার্টফোনে অ্যাপকে সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী করতে অ্যান্ড্রয়েড সিস্টেমের আত্মপ্রকাশ ২০১১ সালে। সিস্টেমের উদ্ভাবক জিমেইল নির্মাতা গুগল। অ্যাপল উদ্ভাবিত আইফোনকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে সব ধরনের ফোনের জন্য অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে দৃশ্যমান হয় অ্যান্ড্রয়েড।

নতুন অ্যান্ড্রয়েড সংস্করণে স্মার্টফোন হবে গতিশীল, এআই প্রযুক্তিবান্ধব, অ্যাপ সজ্জিত আর বাহুল্য স্টোরেজ। বহুল প্রতীক্ষিত নতুন আপডেটের ঘোষণা দিয়েছে অ্যান্ড্রয়েড কর্তৃপক্ষ।
নতুন সংস্করণ ১৬। বহু চেনা ফিচার হবে রূপান্তর। নতুন গতি পাবে স্যাটেলাইট কানেকটিভিটি আর হাই-কোয়ালিটি ওয়েব ক্যামেরা। সময়ের ফোল্ডেবল সব মডেলের স্মার্টফোনে বাড়তি সুযোগ-সুবিধা যুক্ত হবে। চলতি সব স্মার্টফোনে অ্যান্ড্রয়েড ১৫ সংস্করণ এখন সচল। দ্রুতই সেসব ফোনে অ্যান্ড্রয়েড ১৬ বেটা সংস্করণ প্রকাশ করবে গুগল। গুগল পিক্সেল স্মার্টফোন এখন ১৫ সংস্করণে চলছে। পুরো বিশ্বের তারুণ্যের জনপ্রিয় অপারেটিং সিস্টেম এখনও অ্যান্ড্রয়েড। নতুন করে সেই সিস্টেমে জুড়ে যাচ্ছে আপডেট, যা বদলে দেবে আগের স্মার্টফোনের অভিজ্ঞতা। দারুণ সব ফিচারস দৃশ্যমান হবে নব্য সংস্করণে। পরীক্ষামূলক বেটা সংস্করণের ধাপ পেরোলেই ধীরে ধীরে তা রোল আউট হতে শুরু করবে। তবে পুরোনোর চেয়ে নতুন ফোনেই বেশি সহজলভ্য হবে অ্যান্ড্রয়েড ১৬। নতুন সংস্করণ আসছে অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম। নতুন সংস্করণে বহুমাত্রিক প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের আভাস দিয়েছে নির্মাতা গুগল। অন্যদিকে, নিত্যনতুন স্মার্টফোন উদ্ভাবকরা র‌্যাম ও স্টোরেজ সক্ষমতা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রযুক্তি গবেষক গুগল দপ্তরকে। জানা গেছে, নতুন সংস্করণের জন্য অপেক্ষা দীর্ঘ হবে না। পরীক্ষামূলক সর্বশেষ ধাপ অতিক্রম করে আত্মপ্রকাশ করবে অ্যান্ড্রয়েড সিস্টেমের ১৬তম সংস্করণ।

বলতে গেলে, বড় ধরনের প্রযুক্তিগত পরিবর্তন করেছে গুগল। অ্যান্ড্রয়েড ঘরানার স্মার্ট ডিভাইস নির্মাতার অনুরোধে হার্ডওয়্যার উন্নয়নে বিশেষ পরিকল্পনা করেছে উদ্ভাবক গুগল। নতুন সংস্করণে গ্রাহকের সামনে বিশেষভাবে উপস্থিত হবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স বা এআই) অপ্রতিরোধ্য কর্মযজ্ঞ।

নির্মাতারা বলছে, অ্যান্ড্রয়েডনির্ভর ফোনের নতুন সংস্করণের প্রযুক্তির কৌশলগত বদল সংস্থার মোবাইল সার্ভিসেস নীতির অংশ। ফলে র‌্যাম আর স্টোরেজ বাড়ানো প্রতিশ্রুতি সত্যিই দারুণ পরিবর্তনের ইঙ্গিত বহন করছে। ভবিষ্যতে এআই প্রযুক্তির নতুন বৈশিষ্ট্য বাজারে নতুন উন্মাদনা সৃষ্টি করবে। প্রথম ধাপে বাজেট মডেলের জন্য ডিভাইসের অপারেটিং সিস্টেমে আপডেট পাঠানোর আভাস পাওয়া গেছে।
বর্তমানে বাজারে চলমান অ্যান্ড্রয়েড ঘরানার ডিভাইসে সাধারণত দুই থেকে তিন গিগাবাইট (জিবি) র‌্যাম পাওয়া যায়। প্রকাশিতব্য ১৬তম সংস্করণে যেসব ডিভাইস প্রথম আত্মপ্রকাশ করবে, তার সুবিধা পেতে প্রয়োজন হবে অন্তত চার থেকে ছয় জিবি র‌্যাম। ফলে ফোনে বিল্টইন থাকা সব ধরনের সফ‌টওয়্যারের গতি অনেকাংশে বাড়বে, তা নিশ্চিত করেই বলা যায়।
উন্নয়নের বেশির ভাগ পরিবর্তনের সুবিধা অ্যান্ড্রয়েডের নতুন সংস্করণে ব্যবহারযোগ্য হবে। শাওমি বা স্যামসাং ব্র্যান্ডের মতো জনপ্রিয় ব্র্যান্ড নিজেরাই উল্লেখ্যযোগ্য পরিবর্তন তাদের নতুন সংস্করণের অ্যান্ড্রয়েড ফোনে আনতে পারবে। ফলে ডিভাইস নির্মাতাদের জন্য তেমন কোনো বাধ্যবাধকতা দেবে না অ্যান্ড্রয়েড নির্মাতা গুগল।

নতুন সংস্করণের মানোন্নয়নে শুধু র‌্যাম নয়, স্টোরেজ সুবিধা বাড়াতে কাজ করেছে গুগল। অ্যান্ড্রয়েড ঘরানার স্মার্ট ডিভাইসে ন্যূনতম স্টোরেজ থাকবে ৩২ জিবি– এমনটাই প্রত্যাশা গুগল কর্তৃপক্ষের। সংশ্লিষ্ট স্টোরেজের ৭৫ শতাংশজুড়ে থাকবে সিস্টেম অ্যাপ, সিস্টেম ফাইল আর অন্যসব ফাইল।

অপারেটিং ডিভাইসে এখন ১৬ জিবি স্টোরেজের আধিক্য। গুগল অনেকটা প্রত্যাশা থেকে আগের মানোন্নয়ন করেছে। দ্রুত চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় স্টোরেজ আর র‌্যাম সুবিধা বাড়ানোর চিন্তা ভাবিয়েছে অ্যান্ড্রয়েড ডেভেলপমেন্ট বিভাগকে। সব মিলিয়ে স্টোরেজ আর র‌্যাম যে আরও দাপুটে হয়ে উঠবে চলতি বছরেই, তা সহজেই অনুমেয়। স্মার্ট ডিভাইসে গতি, সিস্টেম ও র‌্যামের দুর্দান্ত ভারসাম্য নিয়ে আত্মপ্রকাশের অপেক্ষায় এখন অ্যান্ড্রয়েড ১৬ সংস্করণ।

সময়ের ফোল্ডেবল স্মার্টফোনে স্যামসাং, টেকনো ও মটোরোলা ছাড়াও বেশ কিছু সংস্থা ফোল্ডেবল স্মার্টফোন উন্মোচন করেছে। ওই সব ফোনে আরও দ্রুতগতি ও দক্ষতা (পারফরম্যান্স) জুড়ে দেবে নতুন অ্যান্ড্রয়েড। যার ফলে ডিসপ্লে কোয়ালিটির মান বাড়বে। নতুন সংস্করণ রোল আউট হলে ফোল্ডেবল স্মার্টফোনে দৃশ্যমান হবে নতুন টাস্কবার।
স্মার্ট ডিভাইসে একাধিক ব্লুটুথ সংযোগ যারা ব্যবহার করেন, তাদের বাড়তি সুবিধা দিতে ব্লুটুথ ডায়ালগ বক্সের মান আরও ডেভেলপ করা হয়েছে। ব্লুটুথ অপশনে ট্যাপ করার পরই টগেল খুলে যাবে। তাতে সাম্প্রতিক পেয়ারড বা সংযুক্ত (কানেক্টেড) ডিভাইস দৃশ্যমান হবে। ওই অংশ থেকে গ্রাহকরা ইচ্ছামতো ডিভাইসে সহজেই সুইচ করার সুবিধা নিতে পারবেন।
সুনির্দিষ্ট অ্যাপ থেকে থেমে থেমেই নোটিফিকেশন আসতে থাকলে তা বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অ্যান্ড্রয়েডের নব্য সংস্করণে সেই অপ্রয়োজনীয় নোটিফিকেশনের সংখ্যা তুলনামূলক অনেকাংশে কমে আসবে। বিশ্বের ১৯০টি দেশের ৪০০ কোটি গ্রাহক এখন অ্যান্ড্রয়েড সিস্টেমের ওপর নির্ভরশীল। নতুন সংস্করণে তাই চমকের অপেক্ষায় রয়েছেন স্মার্ট ডিভাইস নির্মাতা আর ভক্তরা।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ফ ল ড বল স র জন য আপড ট ন নয়ন

এছাড়াও পড়ুন:

এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর

বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!

কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।

এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)

সম্পর্কিত নিবন্ধ