বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ফুলব্রাইট ফরেন স্টুডেন্ট প্রোগ্রাম ২০২৬-২৭ সেশনের আবেদন আহ্বান করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এ শিক্ষা কার্যক্রমে স্নাতক ডিগ্রিধারী শিক্ষার্থী ও তরুণ পেশাজীবীরা বিনা খরচে দেশটির স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের সুযোগ পেয়ে থাকেন। এ শিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার জন্য অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন—বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে কর্মরত কনিষ্ঠ অনুষদ সদস্য; সরকারি ও বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান; বুদ্ধিবৃত্তিক সংগঠন ও এনজিওতে কর্মরত কনিষ্ঠ থেকে মধ্যপর্যায়ের কর্মকর্তারা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্বের অন্যান্য দেশের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়ার লক্ষ্যে দেশটির সরকারের আন্তর্জাতিক শিক্ষা বিনিময় কর্মসূচি ফুলব্রাইট প্রোগ্রাম।

ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পাঠ্যক্রম প্রণয়ন, হেলথ অ্যান্ড মেডিকেল সায়েন্স, বায়োলজিক্যাল অ্যান্ড ফিজিক্যাল সায়েন্সেস, সোশ্যাল সায়েন্সেস, হিউম্যানিটিস, বিজনেস, ইকোনমিকস, পাবলিক পলিসি, এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস, আরবান প্ল্যানিং দ্য আর্টস, সাইকোলজি ও সিকিউরিটি স্টাডিজ বিষয়ে ডিগ্রি অর্জনে ফুলব্রাইট বৃত্তি দেওয়া হবে।

আরও পড়ুনলিথুয়ানিয়ায় উচ্চশিক্ষা: ৩৫০টির বেশি প্রোগ্রামে পড়াশোনা, স্কলারশিপের সুবিধা, সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা কাজ১৪ নভেম্বর ২০২৪

কারা আবেদন করতে পারবেন—

বাংলাদেশের স্বীকৃত সরকারি বা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ন্যূনতম চার বছর মেয়াদি স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন, তাঁরা আবেদন করতে পারবেন;

আগে কোনো আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি নেননি কিংবা বর্তমানে আমেরিকায় কোনো শিক্ষা কার্যক্রমে ভর্তি নন;

বাংলাদেশ ব্যতীত অন্য কোনো দেশ থেকে আগে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেননি (তবে যাঁরা বাংলাদেশ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়েছেন, তাঁরা যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন);

যে বিষয়ে পড়তে যেতে ইচ্ছুক, সেই বিষয়ের সঙ্গে প্রাসঙ্গিক/সংশ্লিষ্ট কর্মক্ষেত্রে ন্যূনতম দুই বছরের পূর্ণকালীন কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে;

ইংরেজিতে সাবলীল ও পারদর্শী হতে হবে। ইন্টারনেটভিত্তিক (আইবিটি) টোয়েফলে ন্যূনতম ৯০ কিংবা আইইএলটিএস-এ ন্যূনতম ৭ (সাত) স্কোর থাকতে হবে

আবেদনের সময় বাংলাদেশে বসবাসকারী বাংলাদেশি নাগরিক হতে হবে।

আরও পড়ুনইউনিভার্সিটি অব আলবার্টায় সম্পূর্ণ অর্থায়নের বৃত্তি, স্নাতক–স্নাতকোত্তর–পিএইচডিতে সুযোগ০৫ এপ্রিল ২০২৫

আবেদনপদ্ধতি—

১.

অনলাইনে আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে।

২.

উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা–পরবর্তী সময়ে যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেছেন, প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে নেওয়া (স্নাতক ও স্নাতকোত্তর) একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট (শিক্ষা প্রতিলিপি) ও সনদপত্র।

৩.

তিনজন সুপারিশকারী পৃথকভাবে অনলাইন আবেদন পোর্টালে সরাসরি তিনটি সুপারিশপত্র আপলোড/ উপস্থাপন করবেন।

ফুলব্রাইট নিয়ে আমেরিকায় পড়ার সুযোগ, টোয়েফলে ৯০ বা আইইএলটিএসে ৭ স্কোর থাকতে হবে

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন য নতম সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

এইচএসসির পর বিদেশে পড়াশোনা, এসওপি-বৃত্তি পেতে কীভাবে নেবেন প্রস্তুতি

উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে পড়তে যেতে চাইলে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা-পরবর্তী সময় উত্তম সময়। দেশে স্নাতক করে বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সময় কোর্স আউটলাইনসহ অনেক সময় নানা জটিলতার সৃষ্টি হয়। কিন্তু স্নাতক স্তর থেকে বিদেশে পড়াশোনা শুরু করা গেলে পরবর্তী পর্যায়গুলোতে আর এ অসামঞ্জস্যতার আশঙ্কা থাকে না। তাই এইচএসসির পরপরই বিদেশে পড়তে যাওয়া সম্ভব হলে দূর ভবিষ্যতে স্নাতকোত্তর প্রোগ্রামগুলোতে প্রবেশ প্রক্রিয়া সহজ হয়ে ওঠে। দীর্ঘ মেয়াদে এই সুফলের জন্য দেশে থাকা অবস্থাতেই কিছু প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন। এইচএসসির পরপরই বিদেশে উচ্চশিক্ষার প্রস্তুতি নিতে করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাক—

প্রবেশিকা পরীক্ষা

বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশেই উচ্চশিক্ষার জন্য বিভিন্ন একাডেমিক পর্যায়ের প্রোগ্রামগুলোতে ভর্তির জন্য অতিরিক্ত প্রবেশিকা পরীক্ষা দিতে হয়। এগুলোর ফলাফলের ভিত্তিতে ভর্তির চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য শিক্ষার্থীকে মূল্যায়ন করা হয়। এর মধ্য বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত এবং সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য পরীক্ষাগুলো হলো এসএটি (স্কলাস্টিক অ্যাসেসমেন্ট টেস্ট) এবং এসিটি (আমেরিকান কলেজ টেস্টিং)। এ পরীক্ষাগুলোর মাধ্যমে শিক্ষার্থীর রিডিং, রাইটিং ও গাণিতিক বিশ্লেষণের মতো প্রাথমিক দক্ষতাগুলো যাচাই করা হয়। স্যাটে ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ স্কোর তুলতে হয়, সেখানে শীর্ষস্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ভর্তির জন্য এসিটিতে ২৫ থেকে ৩০ স্কোর প্রয়োজন হয়। যুক্তরাজ্যের জন্য ইসিএএস (ইউনিভার্সিটি অ্যান্ড কলেজেস অ্যাডমিশন সার্ভিস) ট্যারিফ বা এ লেভেল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়।

এ ছাড়া বিষয়ভিত্তিক মূল্যায়নের জন্য অনেক বিশ্ববিদ্যালয় পৃথক কিছু পরীক্ষার ফলাফলকেও গুরুত্ব দেয়। যেমন যুক্তরাজ্যে মেডিকেল সায়েন্সের জন্য বিএমএটি (বায়োমেডিকেল অ্যাডমিশন টেস্ট) অথবা ইউসিএটি (ইউনিভার্সিটি ক্লিনিক্যাল অ্যাপটিটিউড টেস্ট) পরীক্ষা দিতে হয়।

ভাষা দক্ষতার পরীক্ষা—

আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা অর্জনের কোনো বিকল্প নেই। এই আবশ্যকীয় যোগ্যতাটি যাচাইয়ের জন্য বিশ্বজুড়ে স্বীকৃত বেশ কিছু পরীক্ষা ব্যবস্থা চালু আছে। যেমন—

আইইএলটিএস (ইন্টারন্যাশনাল ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ টেস্টিং সিস্টেম)

টোয়েফেল (টেস্ট অব ইংলিশ অ্যাস ফরেন ল্যাঙ্গুয়েজ)

পিটিই (পিয়ার্সন টেস্ট অব ইংলিশ)

ডুওলিঙ্গো

এগুলোর মধ্যে আইইএলটিএস ও টোয়েফেল বহু বছর ধরে ইংরেজি ভাষাভাষীসহ অন্য ভাষার দেশগুলোতেও অগ্রাধিকার পেয়ে আসছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আইইএলটিএস স্কোর সাধারণত ৬ থেকে ৭ দশমিক ৫-এর মধ্যে থাকলে যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিতে আবেদন করা যায়।

অপর দিকে টোয়েফেলের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৮০ থেকে ১০০-এর মধ্যে স্কোর দেখাতে হয়। কিছু ইউরোপীয় দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এইচএসসির মিডিয়াম অব ইনস্ট্রাকশন (এমওআই) বা পাঠদানের মাধ্যম ইংরেজি ভাষায় হলেই ভর্তি নিয়ে নেয়। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এটি মূলত শুধু ইংলিশ মিডিয়াম ও ইংরেজি ভার্সন কলেজগুলোর জন্য প্রযোজ্য।

ইংরেজি ছাড়া অন্য ভাষার দেশগুলোতে অধ্যয়নের জন্য সেখানকার স্থানীয় ভাষায় দক্ষতা অর্জনের জন্য আলাদা পরীক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে। যেমন জার্মানির ক্ষেত্রে টেস্টডিএএফ (টেস্ট অব জার্মান অ্যাস আ ফরেন ল্যাঙ্গুয়েজ) বা ডিএসএইচ (জার্মান ল্যাঙ্গুয়েজ এক্সামিনেশন ফর ইউনিভার্সিটি এনট্রান্স) পাস করতে হয়। একইভাবে ফ্রান্সে গুরুত্ব দেওয়া হয় ডিএএলএফ (ডিপ্লোমা ইন অ্যাডভান্সড ফ্রেঞ্চ ল্যাঙ্গুয়েজ) পরীক্ষার ফলাফলকে।

আরও পড়ুনতুরস্কে বিলকেন্ট ইউনিভার্সিটির বৃত্তি, আইইএলটিএসে ৬.৫ হলে আবেদন ০৮ মার্চ ২০২৫উচ্চশিক্ষা ও অভিবাসনের প্রয়োজনীয় নথি তৈরি—

শিক্ষার জন্য বিদেশ যেতে কিছু দরকারি নথি প্রয়োজন হয়। প্রথমটি হচ্ছে স্টেটমেন্ট অব পার্পাস (এসওপি)। এখানে আবেদনকারীর একাডেমিক লক্ষ্য, দীর্ঘমেয়াদি ক্যারিয়ার পরিকল্পনা এবং নির্দিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় বা তার প্রোগ্রাম নির্বাচনের কারণগুলো উল্লেখ করতে হয়।

এরপরেই আসে লেটার অব রিকমেন্ডেশন (এলওআর)। এটি হচ্ছে নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তির পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীর যোগ্যতার ব্যাপারে সুপারিশনামা। সাধারণত মাধ্যমিক ও উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকেরা এই সুপারিশ করে থাকেন। সংগত কারণেই এই লেটারের কয়েকটি কপি তৈরি করে রাখতে হয়। অধিকাংশ আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ২ থেকে ৩টি এলওআর সরবরাহের প্রয়োজন হয়।

এসওপি ও এলওআরের সঙ্গে একটি সিভি বা রেজুমি ও কাভার লেটার বা পারসোনাল স্টেটমেন্ট যুক্ত করা হলে আবেদনটি আরও শক্তিশালী হয়। সিভি বা রেজুমিতে শিক্ষার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা থেকে শুরু করে একাডেমিক ও একাডেমির বাইরের যাবতীয় অর্জনগুলো লিপিবদ্ধ থাকে। পারসোনাল স্টেটমেন্টের আরও একটি নাম মোটিভেশনাল লেটার। এখানে অধ্যয়নের জন্য নির্বাচিত কোর্সটিকে ঘিরে শিক্ষার্থীর আবেগের বিষয়টি পেশাগত কায়দায় ফুটিয়ে তুলতে হয়।

সর্বোপরি, এসব নথি তৈরির ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীকে যথেষ্ট দক্ষতার পরিচয় দিতে হয়, যা ইতিবাচক প্রভাব ফেলে বিদেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে।

ফাইল ছবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এইচএসসির পর বিদেশে পড়াশোনা, এসওপি-বৃত্তি পেতে কীভাবে নেবেন প্রস্তুতি
  • রোমানিয়ায় উচ্চশিক্ষা: আইইএলটিএস স্কোর ৬, খরচ–বৃত্তিসহ জেনে নিন সব তথ্য
  • চীনের সিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বিনা মূল্যে পড়াশোনা, আইইএলটিএসে ৭ হলেই আবেদন