Prothomalo:
2025-08-17@15:33:31 GMT

অপরাধীদের কোনোভাবেই ছাড় নয়

Published: 16th, May 2025 GMT

কক্সবাজারের সোনাদিয়া দ্বীপ একসময় ছিল লাল কাঁকড়া, সামুদ্রিক কাছিম ও বিরল পাখির অভয়ারণ্য। ২০০৬ সালে পরিবেশ অধিদপ্তর একে ‘প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা’ ঘোষণা করে। অথচ সেখানকার প্যারাবনগুলো উজাড় করে ফেলছেন রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালীরা। সোনাদিয়ার প্যারাবন ধ্বংসের ঘটনা নিয়ে প্রথম আলো নানা সময়ে প্রতিবেদন ও সম্পাদকীয় প্রকাশ করেছে। এরপরও সেখানকার পরিবেশের ওপর এই আঘাত থামানো যাচ্ছে না। বিষয়টি খুবই উদ্বেগজনক।

বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে প্রথম আলো জানাচ্ছে, দ্বীপের উত্তরাংশে গত বছর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা প্যারাবন ধ্বংস করে যেসব চিংড়িঘের নির্মাণ করেছিলেন, সম্প্রতি তার আশপাশের প্যারাবন আগুনে পুড়িয়ে অন্তত সাতটি চিংড়িঘের নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে প্রায় এক কিলোমিটারজুড়ে তিনটি স্থানে আগুন দেওয়া হয়েছে। নতুন করে বিশাল এলাকা বিরান পোড়া জমিতে পরিণত হয়েছে। পুড়ে গেছে জমির ঘাস ও লতাপাতা। এই তিন এলাকার প্রায় এক হাজার একর প্যারাবনে এক লাখ গাছ ছিল বলে জানিয়েছে বন বিভাগ। এখন আর সেসব গাছের কোনো চিহ্ন নেই।

গত সরকারের আমলে ৩৭টি চিংড়িঘেরের জন্য ধ্বংস হয় তিন হাজার একরের বন। তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মীদের একচ্ছত্র আধিপত্য ও ক্ষমতাচর্চার কারণে সোনাদিয়া বড় ধরনের হুমকির মুখে পড়ে। গত বছরের আগস্টে সরকার পতনের পর আশা করা গিয়েছিল যে এবার হয়তো রক্ষা পাবে প্রাকৃতিক ও জীববৈচিত্র্যে ভরপুর এলাকাটি। কিন্তু আমাদের চরমভাবে আশাহত হতে হলো। সেখানে এখন নতুন রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন আধিপত্য বিস্তার করছে। বিএনপি-সমর্থিত স্থানীয় শক্তিগুলোর নজরে পড়েছে দ্বীপটি। তারা সেখানে তৈরি করেছে আরও সাতটি ঘের, দখলে চলে গেছে এক হাজার একরের বেশি বনভূমি।

দুঃখজনক হচ্ছে, উচ্চ আদালতের নির্দেশ থাকলেও এসব অবৈধ ঘের উচ্ছেদে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই। ক্ষমতাচর্চা ও অস্ত্রবাজির কারণে প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জন্য দ্বীপটি রক্ষা করা এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অবৈধ চিংড়িঘের উচ্ছেদে অভিযান চালালেও কোনো ফল মিলছে না।

বছরে প্রায় ২০০ কোটি টাকার চিংড়ি উৎপাদনের লোভে ধ্বংস হচ্ছে সোনাদিয়া দ্বীপ। ইতিমধ্যে দ্বীপটির জীববৈচিত্র্যের অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেছে। এক দশক আগেও দ্বীপটিতে যে সমৃদ্ধ জীববৈচিত্র্য ছিল, তা এখন আর দেখা যায় না। আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে যেভাবে দ্বীপের জীববৈচিত্র্য নিশ্চিহ্ন করা হচ্ছে, তা কোনোভাবেই মানা যায় না।

আমরা চাই অবিলম্বে আদালতের নির্দেশ বাস্তবায়ন হোক। অবৈধ চিংড়িঘের উচ্ছেদে যৌথ অভিযানের দাবিও উঠেছে স্থানীয় নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে। যাহোক সরকারকে এ ব্যাপারে কঠোর হতে হবে। অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনতেই হবে এবং সোনাদিয়ায় সব অবৈধ উচ্ছেদ করে নতুন করে প্যারাবন বনায়ন শুরু করা হোক।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র প য র বন

এছাড়াও পড়ুন:

‘এখন ২০০ কোটি থেকে অন্যরা ২০ হাজারে নামছে’

অভিনেত্রীর ফেসবুক থেকে

সম্পর্কিত নিবন্ধ