মেঘনায় ঝাঁকে ঝাঁকে ভেসে উঠছে মরা মাছ ও জলজ প্রাণী
Published: 18th, May 2025 GMT
চাঁদপুরের মতলব উত্তরে মেঘনা নদীতে তিন দিন ধরে ঝাঁকে ঝাঁকে মরা মাছ ও জলজ প্রাণী ভেসে উঠছে। গত শুক্রবার সকাল থেকে আজ রোববার সকাল পর্যন্ত উপজেলায় এখলাশপুর থেকে ষাটনল পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে নদীর তীরে বিপুল পরিমাণ মাছ ও জলজ প্রাণী মরে ভেসে উঠেছে। মরা মাছ তীরে স্তূপ হয়ে পচে-গলে চারপাশে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।
ঢাকা, মুন্সিগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জের কলকারখানার বর্জ্য শীতলক্ষ্যা-বুড়িগঙ্গা নদী হয়ে মেঘনার পানিতে মিশে যাওয়ায় পানির অক্সিজেন ও পিএইচের পরিমাণ কমে যাওয়ায় মাছ মরছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় মৎস্য কর্মকর্তা।
গত বছরের আগস্ট মাসেও ব্যাপকভাবে মেঘনায় মাছ ও জলজ প্রাণী মরে ভেসে উঠেছিল। নতুন করে মাছ মরে তীরে দুর্গন্ধ ছড়ানোয় স্বাস্থ্যঝুঁকিতে আছেন নদীর তীরবর্তী পাঁচ ইউনিয়নের প্রায় ১৫ হাজার বাসিন্দা।
গতকাল শনিবার ও আজ রোববার সকালে উপজেলার দশানী, কলাকান্দা, মোহনপুর, এখলাশপুর, ষাটনল ও বাবুরবাজার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মেঘনা নদীর সবুজ পানি কালচে ও ঘোলাটে রং ধারণ করেছে। বিপুল পরিমাণ লাল চেউয়া, সাদা চেউয়া, বেলে (বাইলা), সেলেং, চাপিলা, চিংড়ি, কাঁচকি ও জাটকা মরে পানিতে ভেসে উঠেছে। ব্যাঙ, কুচি ও জলসাপও মরে ভেসে উঠছে। এসব মাছ ও জলজ প্রাণী তীরে স্তূপ হয়ে আছে। এতে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে আশপাশে।
দূষিত পানি ও পচা মাছের দুর্গন্ধে নাকাল স্থানীয় বাসিন্দারা। মেঘনার তীরবর্তী বাবুরবাজার এলাকার বাসিন্দা ফুলচাঁন বর্মণ বলেন, কয়েক দিন আগে মেঘনার সবুজ পানির রং ঘোলাটে ও দুর্গন্ধময় হয়ে গেছে। শুক্রবার ভোর থেকে এলাকায় মেঘনায় প্রচুর মরা মাছ ও জলজ প্রাণী ভেসে উঠছে। মরা মাছ ও প্রাণী নদীর তীরে স্তূপ হয়ে পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। দুর্গন্ধে ঘরে টেকা দায় হয়ে পড়েছে।
কলাকান্দা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো.
খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করার কথা জানিয়েছেন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাস। তিনি বলেন, ঢাকা, মুন্সিগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জের কলকারখানার বিষাক্ত বর্জ্য বুড়িগঙ্গা ও শীতলক্ষ্যা হয়ে জোয়ারের স্রোতে মেঘনার সবুজ মিঠাপানিতে মিশে যাচ্ছে। এ কারণে মেঘনার পানি দূষিত হচ্ছে। পরীক্ষা করে দেখা গেছে, দূষণ বেড়ে যাওয়ায় পানিতে অ্যামোনিয়ার পরিমাণ বেড়ে গেছে এবং অক্সিজেন ও পিএইচের পরিমাণ কমেছে। এ জন্য এত হারে মাছ মরছে বলে মনে হচ্ছে। এ বিষয়ে গত আগস্টে পরিবেশ ও মৎস্য অধিদপ্তরের উদ্যোগে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়।
মতলব সরকারি কলেজের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অশোক কুমার রায় বলেন, দূষণজনিত কারণে মেঘনায় যে হারে মাছ ও জলজ প্রাণী মারা যাচ্ছে, তা উদ্বেগের বিষয়। নদীর পানি ও পরিবেশদূষণ বন্ধ করতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম ছ ও জলজ প র ণ পর ব শ পর ম ণ ম ঘন য় ম ঘন র মৎস য
এছাড়াও পড়ুন:
ম্যাচ রেফারি পাইক্রফ্ট ক্ষমা চাওয়ার পরই খেলতে রাজি হয়েছিল পাকিস্তান
সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে বাঁচা-মরার ম্যাচে টসের আগ পর্যন্ত দারুণ নাটকীয়তায় ঘেরা ছিল পাকিস্তানের ড্রেসিং রুম। ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফ্টকে দায়িত্ব থেকে সরানোর দাবি তোলে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। তবে আইসিসি সে দাবি আমলে নেয়নি। শেষ পর্যন্ত নিজের ভুল স্বীকার করে পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আলী আগা ও দলের ম্যানেজারের কাছে ক্ষমা চান পাইক্রফ্ট। এরপরই মাঠে নামতে রাজি হয় পাকিস্তান দল।
ঘটনার সূত্রপাত ১৪ সেপ্টেম্বরের ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ থেকে। টসের সময় দুই অধিনায়কের করমর্দন হয়নি। আরও বড় বিতর্ক তৈরি হয় ম্যাচ শেষে। জয়ী ভারতের ক্রিকেটাররা করমর্দন এড়িয়ে দ্রুত ড্রেসিং রুমে ফিরে যান। সালমান আলী আগার নেতৃত্বে পাকিস্তানের খেলোয়াড়রা দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করলেও সূর্যকুমার যাদব, শিভাম দুবেসহ পুরো ভারতীয় দল সেই শিষ্টাচার মানেনি।
আরো পড়ুন:
আজ মুখোমুখি শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান, যে ম্যাচে ঝুলছে বাংলাদেশের ভাগ্য
আমিরাতকে হারিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান
এমন ঘটনার প্রতিবাদে পাকিস্তান অধিনায়ক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান বর্জন করেন। পরে আইসিসির কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জানায় পিসিবি। তাদের দাবি ছিল, ম্যাচ রেফারি পাইক্রফ্ট ইচ্ছাকৃতভাবেই দুই অধিনায়কের হাত মেলানো আটকান, যা আইসিসির আচরণবিধি ও ক্রিকেটের স্পিরিটের পরিপন্থী।
যদিও আইসিসির ব্যাখ্যা ছিল ভিন্ন। তারা জানায়, এসিসির কর্মকর্তাদের নির্দেশেই কাজ করেছেন পাইক্রফ্ট। কিন্তু পাকিস্তান নড়েচড়ে বসে। এমনকি জানিয়ে দেয়, পাইক্রফ্ট দায়িত্বে থাকলে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে মাঠে নামবে না তারা। এই হুমকির কারণে ম্যাচের শুরুর সময় এক ঘণ্টা পিছিয়ে দিতে বাধ্য হয় আয়োজকরা।
লাহোরে রমিজ রাজা, নাজাম শেঠিসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করেন পিসিবি চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি। পরে সমঝোতার পথ খোঁজা হয়। অবশেষে পাইক্রফ্ট স্বীকার করেন, ভুল বোঝাবুঝির কারণেই পরিস্থিতি এতদূর গড়ায়, এবং তিনি পাকিস্তান অধিনায়ক ও ম্যানেজারের কাছে ক্ষমা চান। তাতেই সন্তুষ্ট হয়ে মাঠে নামার সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তান দল।
বুধবার রাতে ‘এ’ গ্রুপে নিজেদের সেই শেষ ম্যাচে আরব আমিরাতকে ৪১ রানের ব্যবধানে হারিয়ে সুপার ফোরে ভারতের সঙ্গী হয় সালমান-শাহীনরা। দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান সংগ্রহ করে ৯ উইকেটে ১৪৯ রান। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৭.৪ ওভারে ১০৫ রানেই গুটিয়ে যায় আরব আমিরাত।
ঢাকা/আমিনুল