স্বেচ্ছাচারিতা, প্ল্যান পাসে অনিয়ম ও বিতর্কিত ডিটেইলড এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) সংশোধনের দাবিতে ঢাকার মতিঝিলে রাজউকের প্রধান কার্যালয় ঘেরাও করছেন ভূমি মালিকরা।

মঙ্গলবার (২০ মে) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে ‘ঢাকা সিটি ল্যান্ড ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’এর ব্যানারে শুরু হওয়া এই কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন প্রকৌশলী, স্থপতি ও আবাসন খাতের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরাও।

কর্মসূচি থেকে অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক প্রফেসর দেওয়ান এম এ সাজ্জাদ বলেন, “নতুন ড্যাপ বাস্তবায়নের ফলে ঢাকার দুই লক্ষাধিক জমির মালিক সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আমরা শান্তিপূর্ণ উপায়ে দাবি জানিয়ে আসছিলাম, কিন্তু রাজউকের পক্ষ থেকে বারবার তা উপেক্ষা করা হয়েছে। তাই আজ আমরা বাধ্য হয়ে রাজউক ঘেরাও কর্মসূচিতে এসেছি।”

ভূমির একাধিক মালিক অভিযোগ করেন, রাজউকের স্বেচ্ছাচারী নীতির কারণে দীর্ঘদিন ধরে প্ল্যান পাসে জটিলতা তৈরি হয়েছে। অনিয়ম, ঘুষ ও দুর্নীতি ছাড়া সাধারণ মানুষ এখন ঘর বানাতে পারছে না। ড্যাপে বিভিন্ন এলাকার প্লটের ব্যবহারযোগ্যতা হঠাৎ করে কমিয়ে দেওয়া হয়েছে, যা ভূমি মালিকদের আর্থিকভাবে বিপর্যস্ত করে তুলেছে।

এক আন্দোলনকারী বলেন, “আমরা চাই যৌক্তিক ভিত্তিতে ড্যাপ সংশোধন হোক। আমাদের জমি যেভাবে রাস্তায় কিংবা খোলা স্থানে অন্তর্ভুক্ত করে ব্যবহারযোগ্যতা নষ্ট করা হয়েছে, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। শুধু প্ল্যান নয়, ইমারত নির্মাণ বিধিমালাও এমনভাবে করা হয়েছে যেন মধ্যবিত্ত বা নিম্নবিত্ত মানুষ ঢাকায় ঘর তুলতেই না পারে।”

অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা জানান, তারা ইতিপূর্বে সংবাদ সম্মেলন, মানববন্ধন, স্মারকলিপি প্রদানসহ নানা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করেছেন। কিন্তু রাজউক তাদের দাবিকে গুরুত্ব দেয়নি। বরং সময়ক্ষেপণ ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতার মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে হয়রানির শিকার করা হচ্ছে।

অবস্থান কর্মসূচির ফলে মতিঝিল এলাকায় সকাল থেকেই যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের অতিরিক্ত সদস্য  মোতায়েন করা হয়েছে। 

সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়, আজকের ঘেরাও কর্মসূচিতে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটলে, তার দায় সম্পূর্ণভাবে রাজউকের ওপর বর্তাবে।

ড্যাপ বাস্তবায়ন ঘিরে রাজধানীতে দীর্ঘদিন ধরেই অসন্তোষ বিরাজ করছে। বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, পরিবেশ সংরক্ষণ ও নগর ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা আনতে ড্যাপ গুরুত্বপূর্ণ হলেও এতে জনগণের অংশগ্রহণ ও বাস্তবতা অনুপস্থিত। ফলে তা নিয়ে বিরোধ বাড়ছে।

ঢাকা সিটি ল্যান্ড ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে, অবিলম্বে ড্যাপ ও ইমারত নির্মাণ বিধিমালার যৌক্তিক সংস্কার করতে হবে, ভূমি মালিকদের সঙ্গে পরামর্শ করে একটি গ্রহণযোগ্য নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।

ঢাকা/এএএম/ইভা 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জউক র

এছাড়াও পড়ুন:

নির্বাচনব্যবস্থার আমূল সংস্কার করে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে হবে: সিপিবি

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন (প্রিন্স) বলেছেন, নির্বাচনব্যবস্থার আমূল সংস্কার করে অন্তর্বর্তী সরকারকে নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। অতীতে নির্বাচন কমিশনকে ধ্বংস করা হয়েছে। কাজেই এখন জনগণ বুঝতে চায়, তারা ভোট দিতে পারবে কি না।

আজ সোমবার বিকেলে জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকের শুরুতে এ কথা বলেন রুহিন হোসেন। সংস্কার নিয়ে ঐকমত্য গঠনের লক্ষ্যে আজ বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সঙ্গে বর্ধিত আলোচনায় বসে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।

বিকেল তিনটায় আলোচনার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, দুই মাস ধরে চলা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার প্রথম ধাপ আজকে শেষ হচ্ছে। এরপর দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা শুরু হবে। প্রথম পর্বের আলোচনা শিগগিরই জনসমক্ষে তুলে ধরবেন তাঁরা।

সংস্কার নিয়ে এখন পর্যন্ত ৩৩টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, আনুষ্ঠানিক আলোচনার বাইরে অনেক রাজনৈতিক দল অনানুষ্ঠানিক মতামতও দিয়েছে। সবার মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে জাতীয় সনদ তৈরির দিকে এগিয়ে যাবেন তাঁরা।

নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কারের অনেক প্রস্তাব বইয়ে থাকলেও প্রশ্নমালায় নেই উল্লেখ করে রুহিন হোসেন বলেন, জনগণ শুধু নির্বাচন চায় না। তারা বুঝতে চায়, কারসাজি করে আবারও জনদৃষ্টি ভোট থেকে অন্যদিকে সরানো হবে কি না। পুরোনো ভয়ের রাজত্ব কায়েম হবে কি না।

সংস্কারের সুনির্দিষ্ট প্রশ্নগুলো জনগণের সামনে তুলে ধরার আহ্বান জানিয়ে সিপিবি সাধারণ সম্পাদক বলেন, জনগণ মতামত দিলে অনেক দ্বিধাদ্বন্দ্ব দূর হয়ে যাবে। সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য জনমতের প্রয়োজন।

স্বাস্থ্য খাত সংস্কার ও অন্য জনগুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের প্রস্তাবগুলো জনসমক্ষে আসছে না উল্লেখ করে রুহিন হোসেন বলেন, মুক্তিযুদ্ধ ও চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানের অর্জিত বাংলাদেশে বৈষম্য দূর হবে—সেই লক্ষ্যে কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছেন তাঁরা।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেনের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলে রয়েছেন সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অনিরুদ্ধ দাশ, কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, হাসান তারিক চৌধুরী, আবিদ হোসেন ও লুনা নূর।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় আলোচনায় আছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বদিউল আলম মজুমদার, বিচারপতি এমদাদুল হক, ইফতেখারুজ্জামান ও মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নির্বাচনব্যবস্থার আমূল সংস্কার করে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে হবে: সিপিবি
  • নুসরাত ফারিয়াকে গ্রেপ্তার ইস্যুতে বাঁধন বললেন, কী লজ্জার বিষয়!
  • করিডর ও বন্দর ইস্যুতে দুই দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা সিপিবির
  • সাংবাদিকদের সুরক্ষায় আইন প্রণয়নের প্রক্রিয়া চলছে: প্রেস কাউন্সিল চেয়ারম্যান