মানিকগঞ্জে কবরস্থান থেকে পাঁচটি কঙ্কাল চুরি
Published: 20th, May 2025 GMT
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় একটি কবরস্থান থেকে পাঁচটি মানবকঙ্কাল চুরি করে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে উপজেলার বেতিলা-মিতরা ইউনিয়নের বাংগড়া কবরস্থান থেকে এসব কঙ্কাল চুরির ঘটনা ঘটে।
এর আগে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার বোয়ালি ও ধুলুন্ডী এলাকার কবরস্থান থেকে বেশ কয়েকটি কঙ্কাল চুরির ঘটনা ঘটেছিল। তবে চোর চক্রের কাউকে শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করা যায়নি।
এলাকাবাসী ও কবরস্থান পরিচালনা কমিটি সূত্রে জানা গেছে, আজ মঙ্গলবার সকালে বাংগড়া কবরস্থানে নির্মাণাধীন পানির ট্যাংক স্থাপনের কাজ করতে গিয়ে কবরস্থানের প্রধান ফটক খোলা দেখতে পান শ্রমিকেরা। এরপর তাঁরা ভেতরে গিয়ে বেশ কয়েকটি কবর খোঁড়া অবস্থায় দেখতে পান। পরে তাঁরা বিষয়টি কবরস্থান পরিচালনা কমিটির লোকজনকে জানালে তাঁরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পাঁচটি কবর খোঁড়া দেখতে পান। কবরগুলোতে কোনো কঙ্কাল ছিল না।
কবরস্থানের কঙ্কাল চুরির ঘটনায় স্বজন ও এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন বেতিলা-মিতরা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য জাকির হোসেন। তিনি বলেন, যেসব কবর থেকে কঙ্কাল চুরি হয়েছে, সেখানে গত পাঁচ থেকে সাত মাসের মধ্যে মৃত মানুষকে কবর দেওয়া হয়েছিল। চুরি যাওয়া কঙ্কালের মধ্যে চারটি পুরুষের ও একটি নারীর কঙ্কাল ছিল।
মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আমান উল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, এলাকাবাসীর মাধ্যমে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কবরস থ ন থ ক ম ন কগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
বিদেশে গিয়েও সুদিন ফেরেনি, কলা চাষে এল সাফল্য
দীর্ঘদিনের পরিত্যক্ত এক একর জমি এখন সবুজে আচ্ছাদিত। সেখানে দেড় বছর আগে রোপণ করা হয় ৩২০টি কলা গাছ। সঠিক পরিচর্যা পেয়ে গাছগুলো সুস্থ ও সবল হয়ে বেড়ে উঠেছে। সারি সারি কলাগাছে ঝুলছে কলার ছড়া। মেহের সাগর জাতের এই কলা চাষে সুদিন ফিরেছে বিদেশ ফেরত আবু সিদ্দিকের।
আবু সিদ্দিক (৫৫) চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার বাসিন্দা। স্ত্রী ও পাঁচ সন্তানের পরিবারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তিনি। ২০১৭ সালে জীবিকার তাগিদে সৌদি আরবে পাড়ি জমান। সেখানে শারীরিক অসুস্থতার কারণে অধিকাংশ সময় বেকার থেকেছেন। তাই প্রবাসে গিয়েও সচ্ছলতার মুখ দেখেননি। ২০২৪ সালে দেশে ফিরে আসেন সিদ্দিক। স্থানীয় বাজারগুলোতে সারা বছর চাহিদা থাকায় কলা চাষের উদ্যোগ নেন, তবে তাঁর নিজের কোনো জমি নেই।
লোহাগাড়া উপজেলা সদর থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক হয়ে আট কিলোমিটার দক্ষিণে চুনতি শাহ সাহেব গেট। সেখান থেকে চুনতি ইসহাক মিয়া সড়ক ধরে গেলে হাতের ডানে একটি মাঠের পর চুনতি সুফি নগর বাগানপাড়া এলাকায় আবু সিদ্দিকের কলাবাগানটি চোখে পড়ে।
আবু সিদ্দিক বলেন, খুঁজতে খুঁজতে বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরে পরিত্যক্ত এক একর জমি চোখে পড়ে তাঁর। বছরে ছয় হাজার টাকায় ওই জমি ভাড়া নেন। কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ নিয়ে গত বছরের জুনে শুরু করেন কলা চাষ। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ৪০ টাকা দরে ৩২০টি চারা সংগ্রহ করেন তিনি। এতে তাঁর খরচ হয় ১৩ হাজার টাকা। রোপণের ১০ মাস পর কলা বিক্রির উপযোগী হয়। সাত মাস আগে থেকেই তিনি কলা বিক্রি শুরু করেছেন। শ্রমিকের মজুরি, সার, কীটনাশক ও নিয়মিত সেচ বাবদ এ পর্যন্ত তাঁর খরচ হয়েছে ৮০ হাজার টাকা। প্রতিটি ছড়া গড়ে ৫০০ টাকা দরে গত ৭ মাসে আড়াই লাখ টাকার কলা বিক্রি করেছেন তিনি। এখন খরচ বাদে কলা ও গাছের চারা বিক্রি করে প্রতি মাসে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা পান সিদ্দিক।
সম্প্রতি সরেজমিন দেখা যায়, ১ একর আয়তনের জমিতে ৬ ফুট দূরত্বে রোপণ করা হয়েছে ৩২০টি মেহের সাগর জাতের কলাগাছ। একটি গাছ থেকে নতুন চারা গজিয়ে আরও চার থেকে পাঁচটি গাছ হয়েছে। প্রায় প্রতিটি আট ফুট উচ্চতার প্রাপ্তবয়স্ক গাছে ঝুলছে কলার ছড়া। একেকটি ছড়ায় রয়েছে ৮০ থেকে ১৫০টি কলা। আবু সিদ্দিক সেখানে কলাগাছের আগাছা পরিষ্কার করছিলেন।
কলা চাষে সফলতার মুখ দেখে উৎসাহিত হয়ে এক মাস আগে আধা কিলোমিটার দূরত্বে নতুন করে ২ বিঘা জমিতে আরও ৬০০টি কলাগাছ লাগিয়েছেন সিদ্দিক। তিনি বলেন, কলা চাষে প্রথমবার চারা কিনতে যে ব্যয় হয়েছিল, পরের বার তা ব্যয় হবে না। খরচ অর্ধেকে নেমে আসবে। প্রতিবছর চারা বিক্রির টাকা দিয়ে খরচ মেটানো সম্ভব হবে। এতে এক একর এই বাগান থেকে খরচ বাদে প্রতিবছর সাড়ে তিন লাখ টাকা আয় হবে তাঁর। স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ীরা বাগানে এসে কলা নিয়ে যান। তাই বাড়তি শ্রম ও পরিবহন খরচ দিয়ে বাজারে নিয়ে যেতে হয় না। জমি পেলে কলা চাষের পরিধি বাড়াবেন বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে লোহাগাড়া উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সরোয়ার আলম প্রথম আলোকে বলেন, কঠোর পরিশ্রমের কারণে আবু সিদ্দিক সফল হয়েছেন। তাঁকে প্রণোদনা হিসেবে সার ও অর্থসহায়তা দেওয়া হচ্ছে। লোহাগাড়ার আবহাওয়া ও মাটি কলা চাষের জন্য উপযোগী। তা ছাড়া এ অঞ্চলে কলার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।