দেশের জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র উপস্থাপক হানিফ সংকেত বরাবরই নীতিনিষ্ঠ ও নির্লোভ অবস্থানে থেকেছেন। কখনো বিজ্ঞাপনে অংশ নেননি, কোনো পণ্যের সঙ্গে নিজের নাম বা কণ্ঠ জড়াননি। অথচ এবার সেই কণ্ঠই ব্যবহার করা হলো একটি ভুয়া বিজ্ঞাপনচিত্রে। তা-ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির মাধ্যমে। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন বরেণ্য ব্যক্তিত্ব।

মঙ্গলবার (২০ মে) নিজের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে তিনি লেখেন, “প্রযুক্তির এই যুগে সুবিধার পাশাপাশি অপব্যবহারও বেড়েছে। এখন এমন এক সময়, যেখানে প্রযুক্তি দিয়ে প্রতারণাও সম্ভব। আমি লক্ষ্য করেছি, একটি প্রতারক চক্র ইত্যাদি অনুষ্ঠানের উপস্থাপনার ভঙ্গি ও আমার কণ্ঠ অনুকরণ করে এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে একটি ডায়াবেটিস বিষয়ক ভুয়া বিজ্ঞাপন চালাচ্ছে। কণ্ঠ শুনলেই বোঝা যায়, এটা আসল নয়— বিদেশি উচ্চারণে নকল কণ্ঠ।”

আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়ে হানিফ সংকেত লেখেন, “আমি কখনো কোনো বিজ্ঞাপনে অংশ নিইনি। অনেকবার প্রস্তাব পেয়েছি, তবুও রাজি হইনি। তাই কেউ যেন বিভ্রান্ত না হন। এই প্রতারণার সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। আমি এই প্রতারণার বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি।”

আরো পড়ুন:

ঢাকার রাস্তাঘাটই এখন আমার র‌্যাম্প, বললেন ক্ষুব্ধ পিয়া

শিল্পীদের নিরাপত্তা, মর্যাদার দাবিতে অভিনয়শিল্পী সংঘের বিবৃতি

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) অপব্যবহার ঠেকাতে নীতিমালা প্রণয়নের দাবি জানিয়ে হানিফ সংকেত লেখেন, “শিল্প-সংস্কৃতিকে রক্ষায় এখনই এআই-এর অপব্যবহার ঠেকাতে নীতিমালা প্রণয়ন জরুরি। ব্রিটেনের অনেক শিল্পী, সাহিত্যিক কপিরাইট আইন হালনাগাদের দাবি তুলেছেন। ডুয়া লিপা, এলটন জন, ডেভিড হেয়ার, কাজুও ইশিগুরোর মতো ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে আমিও একমত।”

সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানগুলোর দৃষ্টিআকর্ষণ করে হানিফ সংকেত লেখেন, “এআই প্রযুক্তি যেন মানুষের অধিকার হরণ না করে, সেটা নিশ্চিত করতে সফটওয়্যার কোম্পানিগুলোর এখনই নীতিমালা করা উচিত।”

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ট ভ ন টক ব যবহ র

এছাড়াও পড়ুন:

অভিন্ন পারিবারিক আইন প্রণয়নে রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব রয়েছে

অভিন্ন পারিবারিক আইন প্রণয়নে বাধা দিতে একটি গোষ্ঠী অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। এই আইন প্রণয়নে রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব রয়েছে। আজ সোমবার বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কার্যালয়ে প্রস্তাবিত অভিন্ন পারিবারিক আইন (ইউএফসি) বিষয়ে তরুণ-তরুণীদের সঙ্গে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় তরুণ-তরুণীরা বলেন, ছোট থেকে নারীর প্রতি বৈষম্য দেখে আসছেন তাঁরা। ধর্মীয় বয়ানের মাধ্যমে অভিন্ন পারিবারিক আইন প্রণয়নে বাধা দিতে একটি গোষ্ঠী অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। হিন্দু রীতিনীতি বৈষম্যে পরিপূর্ণ। এসব রীতিনীতি আইন হিসেবে ব্যবহার করতে শেখানো হয়েছে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের মধ্যে। বিয়ে নিবন্ধন সবার জন্য বাধ্যতামূলক থাকতে হবে। সব ধর্মের ও সব শ্রেণির নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য অভিন্ন পারিবারিক আইন প্রণয়ন করা হলে তা কল্যাণকর হবে।

সভায় সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম বলেন, ১৯৮৯ সাল থেকে সমাজে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। প্রযুক্তির প্রসারের মধ্য নিয়ে নারীর যে ভাবমূর্তি তৈরি হয়েছে, তা বাংলাদেশেও হতে হবে। অভিন্ন পারিবারিক আইনের পক্ষে জনমত তৈরি করা সহজ কাজ নয়। এ জন্য সমাজের মধ্যে ইতিবাচক পরিস্থিতি তৈরি হতে হবে। তিনি আরও বলেন, ধর্মীয় ওয়াজে নারীবিদ্বেষী প্রচারণা বন্ধে এবং সমতা প্রতিষ্ঠায় তরুণদের সোচ্চার হতে হবে। নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য নারীকেই কথা বলতে হবে। সবাই নিজ নিজ স্বার্থ অনুসারে নারীকে ব্যবহার করছে। নারী অধিকার যেন কারও লক্ষ্য পূরণের হাতিয়ার না হয়, সে বিষয়ে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।

তরুণ–তরুণীদের প্রশ্নের জবাবে সংগঠনের লিগ্যাল অ্যাডভোকেসি ও লবি পরিচালক দীপ্তি শিকদার বলেন, অভিন্ন পারিবারিক আইন প্রণয়নের বিষয়টি ধর্মের দোহাই দিয়ে পিছিয়ে দেওয়া হয়। এখানে রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব ও রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি পূরণের অভাবও লক্ষ করা যায়। অভিন্ন পারিবারিক আইন প্রণয়নে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ ধারাবাহিকভাবে তৃণমূল থেকে জনমত তৈরির কাজ করছে।

সভায় লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাসুদা রেহানা বেগম। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন লিগ্যাল এইড সম্পাদক রেখা সাহা। তরুণ প্রতিনিধির মধ্যে বক্তব্য দেন শিউলি বিশ্বাস, মুমতাহিনা, রীতা জেসমিন, জারিন চৌধুরী, ফাহমিদা নাজনীন এবং প্রজ্ঞা লাবণী সাদিয়া।

সভা সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের লিগ্যাল কর্মকর্তা সিননোমে মারমা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অধ্যাপক ইউনূসের প্রতি সুনির্দিষ্ট নির্বাচনী রোডম্যাপ প্রণয়নের আহ্বান: অস্ট্রেলিয়ার সিনেটর ও এমপিদের চিঠি
  • ঈদে নিরবের ‘শিরোনাম’
  • এনবিআর দুই ভাগ নিয়ে আপত্তি নেই, আপত্তি পদ–পদবি নিয়ে
  • শিক্ষা ও স্বাস্থ্যে বরাদ্দ কমানোটা ভালো বার্তা নয়
  • অভিন্ন পারিবারিক আইন প্রণয়নে রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব রয়েছে