বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘আমরা বিস্মিত হই নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল রায় দেওয়ার পরেও আমাদের ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের যিনি মেয়রের দায়িত্ব পেয়েছেন, প্রশাসনিক ক্ষমতায় তাঁকে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে না। যে নির্বাচন কমিশনকে এই অন্তর্বর্তী সরকার দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী নিয়োগ দিয়েছে, সেই কমিশন স্বাধীনভাবে মতামত ব্যক্ত করলেও তাদের (নির্বাচন কমিশন) হুমকি দেওয়ার জন্য ঘেরাও করার কর্মসূচি হচ্ছে। বিষয়গুলো ভালো দৃষ্টান্ত নয়।’

আজ বুধবার দুপুরে ময়মনসিংহ নগরের টাউন হলের তারেক স্মৃতি অডিটরিয়ামে বিএনপির প্রাথমিক সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথাগুলো বলেন নজরুল ইসলাম খান।

নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবিতে ঢাকার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের মূল ফটকে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা–কর্মীরা। আজ বেলা সোয়া একটার দিকে এনসিপির নেতারা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে কমিশন কার্যালয়ের মূল ফটকে অবস্থান নেন। ময়মনসিংহে দলের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে এর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন নজরুল ইসলাম খান।

বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘গত সাড়ে ৯ মাস তারা (অন্তর্বর্তী সরকার) দায়িত্ব পালন করে চলেছে। আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে বর্তমান সরকারের সাফল্য ও ব্যর্থতা নিয়ে এখনো প্রশ্ন তুলিনি। কিন্তু বেশ কিছু বিষয়ে জনগণের মধ্যে প্রশ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। সরকারে থেকে বিশেষ কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে কাজ করার অভিযোগ আমাদের ভালো লাগে না। কারণ, আমরা সরকারটাকে পছন্দ করি।’

বিভাগীয় বিএনপি আয়োজিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন দলের স্থায়ী কমিটির কোষাধ্যক্ষ এম রাশেদুজ্জামান। বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শরীফুল আলমের সভাপতিত্বে ও সহসাংগঠনিক সম্পাদক শাহ ওয়ারেস আলী ও আবু ওয়াহাব আকন্দের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এ কে এম শফিকুল ইসলাম, জেলা দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক জাকির হোসেন, উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক এনায়েত উল্লাহ কালাম প্রমুখ।

বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘ইতিহাসে প্রথমবারের মতো লজ্জাজনক পলায়ন করতে হয়েছে ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকারকে। যে কারণে আমরা প্রথম বলেছিলাম, গণতন্ত্র এখনো পুনঃপ্রতিষ্ঠা হয়নি। আর সেটা হতে পারে শুধু জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে। কারণ, ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, উপজেলা বা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে রাষ্ট্রক্ষমতার হাতবদল হয় না। এসব প্রতিষ্ঠানের আইন প্রণয়ন বা বদলের ক্ষমতা নেই। এগুলো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের মাধ্যম হতে পারে না। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের মাধ্যম হলো জাতীয় সংসদ নির্বাচন। যে জাতীয় সংসদ আইন বানাতে পারে, সংবিধান বদলাতে পারে। আমরা বলেছি, ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেওয়া হোক।’

নজরুল ইসলাম খান আরও বলেন, ‘আমরা সংস্কারও চাই। আমাদের চেয়ে বেশি সংস্কার আর কোনো দল চায় না। বিএনপি যখন সংস্কারের প্রস্তাব করে, তখন বহু রাজনৈতিক দল সংস্কারের দন্ত্য–স উচ্চারণ করেনি, আবার অনেকের জন্মও হয়নি।’

আরও পড়ুনইসি আর সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নেই, বিএনপির দলীয় কার্যালয় হয়েছে: নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী৩০ মিনিট আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: নজর ল ইসল ম খ ন ব ব এনপ র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

বিএনপির কি আকাল পড়েছে আ.লীগ থেকে সদস্য আমদানি করতে হবে

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বিএনপির কি এতো আকাল পড়েছে যে আওয়ামী লীগ থেকে সদস্য আমদানি করতে হবে? যেই আওয়ামী লীগের ডিএনএতে গণতন্ত্র নাই, তাদের কেন আহ্বান করতে হবে।

সোমবার বিকেলে সিলেট শিল্পকলা একাডেমি অডিটরিয়ামে বিভাগীয় বিএনপির নতুন সদস্য সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, বিএনপি জনগণের দল। বিএনপি থাকলে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব থাকবে, দুর্বল হলে বাংলাদেশ দুর্বল হবে। বিএনপির জন্ম না হলে দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তন হতো না, বিএনপি সুসংগঠিত না থাকলে দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হতো না, তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি চালু হতো না। তাই বিএনপি দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের পাহারাদার।

সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, যে মানুষ বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী, যিনি নিজেকে বাংলাদেশি পরিচয় দেবেন, তিনিই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের সদস্য হতে পারবে। এদেশের প্রতিটি ধূলিকণাকে বিএনপি ধারণ করে, লালন করে। বাংলাদেশে অফিসিয়ালি ১৮ কোটি জনগণ বলা হলেও প্রকৃতপক্ষে তা এখন ১৯ কোটি ছাড়িয়ে গেছে।

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট বাংলাদেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে বিতাড়িত করে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ ইতিহাসের জঘন্যতম গণহত্যাকারী। তাদের রাজনৈতিক মৃত্যু হয়েছে। আজ পর্যন্ত তারা নিজেদের অপকর্মের জন্য কোনও অনুশোচনা করেনি বা ক্ষমা প্রার্থনা করেনি। উল্টো তারা গণ-অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দুষ্কৃতকারী বলে আখ্যায়িত করছে।

জিয়াউর রহমান ১৯৮৯ সালে দ্বিতীয় জাতীয় সংসদে দেশের একনায়কতান্ত্রিক সংবিধান বাকশালকে বিলুপ্ত করে বহুদলীয় গণতান্ত্রিক সংবিধান প্রতিষ্ঠা করেছিলেন উল্লেখ করে বলেন সালাউদ্দিন আহমেদবলেন, তিনি সংবিধানে বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম সংযুক্ত করে মহান আল্লাহ তায়ার ওপর অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি দেশের সব ধর্মের মানুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করেছিলেন। সংবিধানে ধর্মের ভিত্তিতে সবার সম-অধিকার প্রতিষ্ঠা করে সব মানুষের ধর্মীয় চর্চার স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছিলেন।

বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক (সিলেট বিভাগ) জি কে গউছের সভাপতিত্বে ও সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ্ সিদ্দিকীর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন দলের নির্বাহী কমিটির কোষাধ্যক্ষ এম. রাসেদুজ্জামান মিল্লাত, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ড. এনামুল হক চৌধুরী, আরিফুল হক চৌধুরী ও এম.এ মালিক, জাতীয় কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন, সহ সমবায় বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আক্তার।

সভায় সূচনা বক্তব্য দেন দলেল নির্বাহী কমিটির সদস্য (দপ্তরে দায়িত্বে) তারিকুল আলম তেনজিন ও স্বাগত বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী।

অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সাবেক এমপি এম. নাসের রহমান, নির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান চৌধুরী, সাবেক এমপি শেখ সুজাত মিয়া, যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমদ, মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, মৌলভীবাজার জেলা আহ্বায়ক ফজলুল করিম ময়ুন, হবিগঞ্জ জেলা যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আরব বসন্ত যে কারণে ব্যর্থ হয়েছিল...
  • সংস্কার ও নির্বাচনকে মুখোমুখি করা আরেকটা অপরাধ: নজরুল ইসলাম
  • স্থানীয় নির্বাচন চাওয়া মানে জাতীয় নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টা: নজরুল ইসলাম
  • ধারাবাহিক অস্থিরতা ও জনসাধারণের মতামত
  • বিএনপির কি আকাল পড়েছে আ.লীগ থেকে সদস্য আমদানি করতে হবে
  • দাবি আদায় করব, না হয় মাটির নিচে শায়িত হব: ইশরাক
  • যারা একটি দলের প্রতিনিধির কাজ করেছে, তাদের অবিলম্বে পদত‍্যাগ করতে হবে: ইশরাক