আপত্তি-প্রতিবাদ উপেক্ষা, মহেশখালীতে প্যারাবন উজাড় করে নির্মিত হচ্ছে নতুন জেটি
Published: 21st, May 2025 GMT
কক্সবাজারের মহেশখালীর গোরকঘাটা এলাকায় নতুন একটি জেটি নির্মাণের জন্য কাটা হয়েছে ২০ একরের প্যারাবনের হাজারো বাইনগাছ। এতে পাখি, কাঁকড়া, কাছিম, সাপ, মাছসহ অন্তত ২৬ প্রজাতির প্রাণীর আবাসস্থল ধ্বংস হয়ে গেছে বলে দাবি করেছেন পরিবেশবাদীরা।
নতুন জেটি নির্মাণ করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। প্রথমে রাস্তা, এরপর সেখানে নতুন জেটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। প্যারাবন উপকূলীয় বন বিভাগের এবং যে জায়গায় জেটি নির্মাণ করা হচ্ছে তা বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের ( বিআইডব্লিউটিএ) অধীন হলেও এই জেটি নির্মাণের আগে তাদের অনুমতি নেওয়া হয়নি।
১৯৮৯ সালে গোরকঘাটায় ৩ কোটি ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় একটি জেটি। ৬৯৫ মিটার দীর্ঘ এবং ৬ মিটার প্রস্থের ওই জেটির দুই পাশে প্রাকৃতিক দুর্যোগ রোধে কয়েক শ একর প্যারাবন গড়ে তোলা হয়েছিল। বর্তমানে নতুন যে জেটি নির্মাণ করা হচ্ছে, সেটি ৭০০ মিটার দীর্ঘ এবং ৭ দশমিক ৩ মিটার প্রস্থের। এই প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৬ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে ৩০০ মিটার সংযোগ সড়কও রয়েছে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জেটির নির্মাণকাজ শেষ করার কথা।
নতুন জেটির নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে। কিন্তু প্যারাবন কাটার কারণে পরিবেশ অধিদপ্তর ও বন বিভাগের আপত্তির মুখে ছয় মাস কাজ বন্ধ ছিল। এরপর ‘জনস্বার্থের’ কথা বলে আবার কাজ শুরু হয়। স্থানীয় পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো এই নির্মাণকে ‘সরকারি অর্থের অপচয়’ বলে উল্লেখ করছে।
বর্তমানে নতুন যে জেটি নির্মাণ করা হচ্ছে, সেটি ৭০০ মিটার দীর্ঘ ও ৭ দশমিক ৩ মিটার প্রস্থের। এই প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৬ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে ৩০০ মিটার সংযোগ সড়কও রয়েছে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জেটির নির্মাণকাজ শেষ করার কথা।বিআইডব্লিউটিএ-কক্সবাজার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক খায়রুজ্জামান বলেন, গত ২৪ এপ্রিল কক্সবাজার এলে নৌপরিবহন ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.
ঘটনাস্থলে উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, প্যারাবনের গাছপালা কেটে এ রকম একটি জেটি নির্মাণের আগে পরিবেশ অধিদপ্তর, বন ও বিআইডব্লিউটিএর অনুমতি নেওয়া প্রয়োজন ছিল। জেটি নির্মাণের জন্য এত গাছপালা কেটে ফেলার প্রয়োজন ছিল না।
নতুন জেটির নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে। ইতিমধ্যে নির্মিত হয়েছে জেটির পিলার। গতকাল দুপুরেউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন র ম ণ কর নত ন জ ট প য র বন পর ব শ
এছাড়াও পড়ুন:
এবার এক দফা আন্দোলনে যাওয়ার ইঙ্গিত কুয়েট শিক্ষকদের
শিক্ষকদের লাঞ্ছিতকারী শিক্ষার্থীদের শাস্তির দাবিতে মঙ্গলবার এক ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষকরা। তাদের সঙ্গে দ্বিতীয় দিনের মতো একাত্মতা জানিয়েছে শিক্ষার্থীদের একটি গ্রুপ।
বুধবার সাধারণ সভা করে উপাচার্যের বিরুদ্ধে এক দফা আন্দোলনে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে শিক্ষক সমিতি।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় শিক্ষকরা প্রশাসনিক ভবনে জড়ো হন। এরপর আধা ঘণ্টা তারা উপাচার্যের কক্ষে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে শিক্ষকরা দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবনের বারান্দায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
এ কর্মসূচি শেষে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. ফারুক হোসেন প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, নতুন উপাচার্য যোগদানের পর শিক্ষা কার্যক্রম স্বাভাবিক করার জন্য আমরা ৭ কার্যদিবস সময় দিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনা এবং একাডেমিক কার্যক্রম স্বাভাবিক করতে পারেননি। শিক্ষকদের লাঞ্ছিতকারীদের শাস্তি কার্যকর হয়নি।
তিনি বলেন, আমরা ২ দিন অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছি। উপাচার্যের কার্যালয়ে গিয়ে তাকে পাইনি। তিনি দাপ্তরিক কাজ দেখিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে রয়েছেন। আমরা উপাচার্যের সিদ্ধান্তহীনতার কারণে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করতে পারছি না। এর দায়ভার উপাচার্যকেই নিতে হবে। তিনি কবে ক্যাম্পাসে ফিরবেন শিক্ষকরা কেউ তা জানেন না।
ড. মো. ফারুক হোসেন বলেন, আমরা আল্টিমেটাম দিয়েছি বুধবার দুপুর ১টার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম স্বাভাবিক করতে হবে। তা না হলে আমরা শিক্ষার্থীদের নিয়ে কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো। এটা যদি এমন হয় যে উপাচার্যের একক সিদ্ধান্তের কারণে আমরা ক্লাসে ফিরতে পারব না, তাহলে আমাদের ১ দফা দাবি জানাতে হবে। উপাচার্য দায়িত্ব পালন করতে পারবেন কিনা এই সিদ্ধান্ত তাকেই নিতে হবে।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. সাহিদুল ইসলাম জানান, বুধবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে। এরপর দুপুর ১টায় সাধারণ সভা করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক বলেন, উপাচার্য বুধবার দুপুর ১টার মধ্যে শিক্ষকদের দাবি বাস্তবায়ন না করলে তার অপসারণের এক দফা দাবিতে ছাত্রদের সঙ্গে নিয়ে শিক্ষকরা আন্দোলনে নামবেন।
এদিকে শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে শিক্ষার্থীদের একটি গ্রুপ সেখানে গিয়ে সংহতি প্রকাশ করেন। তারা বলেন, নতুন করে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের প্রয়োজন নেই। আগের তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাপারে তারা একমত। তবে নিরাপরাধ কেউ যেন সাজা না পায়। তারা দ্রুত ক্লাস-পরীক্ষায় ফিরতে চান।
তবে গত ৩ মাস ধরে বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন করা শিক্ষার্থীরা গত ২ দিন কোনো কর্মসূচি পালন করেনি। তারা আপাতত চুপচাপ রয়েছে।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে সংঘর্ষের পর থেকে বন্ধ রয়েছে ক্লাস-পরীক্ষা। এ অবস্থায় সেশনজট বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন সাড়ে ৭ হাজার শিক্ষার্থী। শুরু হয়নি নতুন ব্যাচের ক্লাসও। ৪ মে থেকে ক্লাস শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ১৬ দিনেও ক্লাসে ফেরেনি শিক্ষকরা। এছাড়া ১৮ মে থেকে প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন থেকেও বিরত রয়েছেন শিক্ষকরা।
এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হযরত আলীকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।