চকরিয়ায় সাবেক এমপি জাফরের আইনজীবী আদালতে অবরুদ্ধ, পরে উদ্ধার
Published: 21st, May 2025 GMT
কক্সবাজার-১ (চকরিয়া–পেকুয়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) জাফর আলমের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেওয়ার কারণে এক আইনজীবীকে চকরিয়া আদালতে দেড় ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখার অভিযোগ উঠেছে। পরে সেনাবাহিনীর সহায়তায় তাঁকে উদ্ধার করা হয়।
বুধবার দুপুরে চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এই ঘটনা ঘটে। অবরুদ্ধ ওই আইনজীবীর নাম মো.
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর ১২টার দিকে শতাধিক ব্যক্তি আদালত চত্বরে জড়ো হয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে আইনজীবী তৌহিদুল এহেসান কোর্ট পরিদর্শকের কক্ষে আশ্রয় নেন। পরে সেনাবাহিনীর দুটি দল এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয় এবং তাঁকে উদ্ধার করে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, রাজধানীর একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার জাফর আলমকে চকরিয়া ও পেকুয়া থানার ছয়টি মামলায় গ্রেপ্তার দেখাতে ১৮ মে আদালতে হাজিরের নির্দেশ দেওয়া হয়। ওই দিন ঢাকার অন্য একটি মামলায় হাজিরা থাকায় তাঁকে আনা সম্ভব হয়নি। তবে সেদিন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীরা আদালত চত্বরে বিক্ষোভ করেন।
আইনজীবী তৌহিদুল এহেসান বলেন, ‘আগামী ২৭ মে শ্যোন অ্যারেস্ট শুনানির জন্য জাফর আলমকে আদালতে হাজির করার আদেশ রয়েছে। ১৮ মের ঘটনার আলোকে আদালতে একটি দরখাস্ত করেছিলাম, যাতে ভবিষ্যতে মব জাস্টিসের ঝুঁকি এড়ানো যায়।’
তৌহিদুল এহেসান আরও বলেন, ‘আজ শুনানি শেষে আদালত চত্বরে চকরিয়া পৌর বিএনপির সদস্য মো. হেলাল ও স্থানীয় যুবক মামুনের নেতৃত্বে এক দল লোক আমাকে ঘিরে ধরে। তাঁরা অশালীন ভাষায় গালিগালাজ ও হুমকি দেন। বিচারকের নির্দেশে কোর্ট পরিদর্শকের কক্ষে আশ্রয় নিই। পরে সেনাবাহিনীর একটি দল আমাকে উদ্ধার করে।’
এ ব্যাপারে চকরিয়া পৌর বিএনপির সদস্য মো. হেলাল বলেন, ‘শতাধিক নেতা–কর্মী জড়ো হয়েছিলেন। আমি বরং তাঁদের সরিয়ে দিয়েছি।’
এ বিষয়ে চকরিয়া অ্যাডভোকেটস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শহীদুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘একজন আসামির ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার রয়েছে। তাঁর পক্ষে আদালতে দাঁড়ানো আইনজীবীর ওপর হামলার চেষ্টা নিন্দনীয় ও দুঃখজনক।’
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জনগুরুত্বপূর্ণ ও সাংবিধানিক মামলার কার্যক্রম সরাসরি সম্প্রচারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ কেন নয়
সুপ্রিম কোর্টে জনগুরুত্বপূর্ণ ও সাংবিধানিক মামলার কার্যক্রম লাইভ (সরাসরি) সম্প্রচারের ব্যবস্থা প্রবর্তনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া প্রশ্নে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. হাবিবুল গনি ও বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তাজরুল হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার এ রুল দেন।
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের জনগুরুত্বপূর্ণ ও সাংবিধানিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ মামলার কার্যক্রম লাইভ স্ট্রিমিং ব্যবস্থা প্রবর্তনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং আইনসচিবসহ বিবাদীদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন।
পরে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, রিট আবেদনে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের উচ্চ আদালতের জনগুরুত্বপূর্ণ এবং সাংবিধানিক গুরুত্বপূর্ণ মামলাগুলো যেন সরাসরি সম্প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়—তা চাওয়া হয়। ২১টি দেশে এই ব্যবস্থা চালু আছে। শুনানি নিয়ে আদালত রুল দিয়েছেন। পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী ২৬ জুন দিন রেখেছেন আদালত।
চলতি বছরের শুরুতে পাঁচ আইনজীবী ও আইনের ছয় শিক্ষার্থী ওই রিট করেন। তাঁরা হলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সাদ্দাম হোসেন, মিজানুন হক, আব্দুল্লাহ সাদিক, আমিনুল ইসলাম শাকিল, জজকোর্টের আইনজীবী জায়েদ বিন আমজাদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের ছাত্র শাহনেওয়াজ সাকিব, মাহমুদুল হাসান, হাবিবুর রহমান আল হাসান, রাফিউর রাব্বি, শামিম শাহিদি এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের ছাত্র সাব্বির হাসান।