রাজধানীর পান্থকুঞ্জ পার্ক রক্ষায় গণশুনানি আয়োজনের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারকে জনগণের মুখোমুখি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ গাছ রক্ষা আন্দোলন। বুধবার পান্থকুঞ্জ পার্ক রক্ষায় অবস্থান কর্মসূচির ১৫৮তম দিনে গাছ রক্ষা আন্দোলনের জরুরি সভায় এ গণশুনানি আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়। ‘পান্থকুঞ্জ মোকদ্দমা: জনগণ বনাম অন্তর্বর্তী সরকার’ শীর্ষক গণশুনানিটি ৩০ মে পান্থকুঞ্জ পার্কসংলগ্ন সার্ক ফোয়ারা মোড়ে অনুষ্ঠিত হবে।

বাংলাদেশ গাছ রক্ষা আন্দোলন এক বিবৃতিতে জানায়, গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর শুরু হওয়া পার্ক রক্ষায় অবস্থান কর্মসূচির ১১তম দিনে অন্তর্বর্তী সরকারের সড়ক ও সেতু উপদেষ্টা, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা পান্থকুঞ্জ উদ্যানে গিয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে একটি আলোচনা সভা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। আন্দোলনের পাঁচ মাস পার হয়ে গেলেও উপদেষ্টাদের দিক থেকে আলোচনার বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

বিবৃতিতে বলা হয়, পরে অবস্থান কর্মসূচির ১৪৩তম দিনে পান্থকুঞ্জ ও হাতিরঝিল ধ্বংসকারী ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের (দ্রুতগতির উড়ালসড়ক) এফডিসি থেকে পলাশী পর্যন্ত সংযোগ সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ বাতিল এবং এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের রাষ্ট্রীয় আইন অমান্য, অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা, জনভোগান্তি, হতাহতের ঘটনা, স্বেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতি উদ্‌ঘাটনে তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা এবং ওই তিন উপদেষ্টা বরাবর চিঠি দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ গাছ রক্ষা আন্দোলন বলেছে, ওই চিঠি দেওয়ার দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এ বিষয়ে কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি। তাই প্রকল্প প্রণয়নে দুর্নীতি ও অনিয়ম হয়েছে কি না, প্রকল্পটি জনস্বার্থ বিরোধী কি না, প্রকল্পের কারণে স্থানীয় পরিবেশ গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে কি না, নগরের যানজট বাড়বে কি না এবং ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ উদ্যানটি রক্ষায় অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেছে কি না—এসব বিষয়ে জানতে একটি উন্মুক্ত গণশুনানি আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শুনানিতে অংশ নিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি ও কর্মকর্তাদের চিঠি দিয়ে আহ্বান জানানো হবে।

আরও পড়ুনপান্থকুঞ্জ রক্ষায় প্রধান উপদেষ্টাকে গাছ রক্ষা আন্দোলনের চিঠি০৫ মে ২০২৫

এ ছাড়া গণশুনানিতে বিচারক হিসেবে অর্থনীতিবিদ, পরিবেশবিদ, আইনবিশেষজ্ঞ, পরিকল্পনাবিদ, স্থপতি, সমাজবিজ্ঞানী ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন। স্থানীয় মানুষ ও সর্বস্তরের জনগণের অংশগ্রহণ ও বিশেষজ্ঞ মতামতের ভিত্তিতে গণশুনানিতে প্রকাশ্য রায় ও সব পক্ষের করণীয় প্রস্তাব করা হবে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

গাছ রক্ষা আন্দোলনের জরুরি সভায় আন্দোলনের সমন্বয়ক আমিরুল রাজিব, নাঈম উল হাসানসহ সদস্য সৈয়দ মুহাম্মদ জাকির, ওয়ালিদ সাদ্দাম, শাহ নেওয়াজ সৈকত, আহাদুল সিরাজ, সংবিধান সংস্কার কমিশনের সদস্য ফিরোজ আহমেদ, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের সামিনা লুৎফা, আইনজীবী ও নীতি বিশ্লেষক সৈয়দ মাহবুবুল আলম, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী নিশাত মাহমুদ এবং বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সভাপতি আদিল মুহাম্মদ খান উপস্থিত ছিলেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প র ক রক ষ য় ন উপদ ষ ট গ ছ রক ষ প রকল প গণশ ন ন সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

একাত্তরের গণহত্যার জন্য জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে হবে: আলাল

বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেছেন, ‘‘বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি তোলা উচিত, চব্বিশ এবং আগের গণহত্যা, নির্যাতন-নিপীড়ন, ভোটাধিকার হরণ—এসবের জন্য যদি আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হতে পারে। তাহলে একাত্তরে গণহত্যা, ধর্ষণ, নারকীয় হত্যাযজ্ঞের জন্য জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করতে হবে। তাদের কার্যক্রমও নিষিদ্ধ করতে হবে। একই অপরাধে দুই রকমের বিচার হতে পারে না।’’

শনিবার (১ নভেম্বর) রাজধানী ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের আয়োজনে ‘স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষায় আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অপরিহার্য’ শীর্ষক মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আরো পড়ুন:

দ্রুত নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন: দুলু

নৌকা ডুবেছে, শাপলা ভাসবে: এনসিপির তুষার

মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘‘যদি আওয়ামী লীগের মতো একই ধরনের অপরাধে জামায়াতের বিচার না হয়, তাহলে সেটা হবে ইতিহাসের প্রতি অবিচার।’’

তিনি বলেন, ‘‘আজকে জামায়াত তাদের পোশাক-চেহারা, আচরণ পাল্টে নতুন রূপে হাজির হয়েছে। তারা হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে বৈঠক করছে। কিন্তু, মূল উদ্দেশ্য বিএনপিকে আক্রমণ করা। এই বহুরূপীদের চেহারা জনগণ চিনে ফেলেছে।’’

বিএনপির এই নেতা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে বিএনপিই একমাত্র শক্তি। অথচ এই শক্তিকে দুর্বল করার ষড়যন্ত্র চলছে। সরকার নিজের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে নির্বাচনের নামে প্রক্রিয়া চালালেও জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতা কেড়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

আলাল আরো বলেন, ‘‘বর্তমান সরকার মনে করেছে, দেশের সব অনাচারের মূলে সংবিধান। কিন্তু সমস্যার মূল সংবিধান নয়—ক্ষমতার অপব্যবহার ও জনগণের ভোটাধিকার হরণ। শেখ হাসিনার ১৬-১৭ বছরের শাসনে এই অন্যায়, নির্যাতন, দুর্নীতি ও অর্থ পাচারই হয়েছে সবচেয়ে বড় বাস্তবতা।’’

ঢাকা/রায়হান/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাই সনদ জনগণের নয়, কিছু উপদেষ্টার প্রয়োজন: হাফিজ
  • একাত্তরের গণহত্যার জন্য জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে হবে: আলাল
  • জ্বালানি সুবিচার নিশ্চিতে সংগ্রাম, শপথ যুব সংসদের সদস্যদের
  • বন্দরে বিএনপি নেতা তাওলাদের উপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে আল্টিমেটাম
  • বিএনপি ও জামায়াত কে কোন ফ্যাক্টরে এগিয়ে
  • অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে: ফখরুল
  • সরকার নিরপেক্ষতা হারালে জনগণ মাঠে নামবে: তাহের
  • সংস্কার ইস্যুতে সব দল ঐক্যবদ্ধ থাকলেও বিএনপি অবস্থান পরিবর্তন করে
  • বিএনপি-জামায়াত দেশকে অন্য এক সংকটের দিকে নিয়ে যাচ্ছে: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী
  • জনগণের সঙ্গে এটা প্রতারণা: মির্জা ফখরুল