পান্থকুঞ্জ পার্ক রক্ষায় গণশুনানির সিদ্ধান্ত
Published: 21st, May 2025 GMT
রাজধানীর পান্থকুঞ্জ পার্ক রক্ষায় গণশুনানি আয়োজনের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারকে জনগণের মুখোমুখি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ গাছ রক্ষা আন্দোলন। বুধবার পান্থকুঞ্জ পার্ক রক্ষায় অবস্থান কর্মসূচির ১৫৮তম দিনে গাছ রক্ষা আন্দোলনের জরুরি সভায় এ গণশুনানি আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়। ‘পান্থকুঞ্জ মোকদ্দমা: জনগণ বনাম অন্তর্বর্তী সরকার’ শীর্ষক গণশুনানিটি ৩০ মে পান্থকুঞ্জ পার্কসংলগ্ন সার্ক ফোয়ারা মোড়ে অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলাদেশ গাছ রক্ষা আন্দোলন এক বিবৃতিতে জানায়, গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর শুরু হওয়া পার্ক রক্ষায় অবস্থান কর্মসূচির ১১তম দিনে অন্তর্বর্তী সরকারের সড়ক ও সেতু উপদেষ্টা, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা পান্থকুঞ্জ উদ্যানে গিয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে একটি আলোচনা সভা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। আন্দোলনের পাঁচ মাস পার হয়ে গেলেও উপদেষ্টাদের দিক থেকে আলোচনার বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
বিবৃতিতে বলা হয়, পরে অবস্থান কর্মসূচির ১৪৩তম দিনে পান্থকুঞ্জ ও হাতিরঝিল ধ্বংসকারী ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের (দ্রুতগতির উড়ালসড়ক) এফডিসি থেকে পলাশী পর্যন্ত সংযোগ সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ বাতিল এবং এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের রাষ্ট্রীয় আইন অমান্য, অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা, জনভোগান্তি, হতাহতের ঘটনা, স্বেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতি উদ্ঘাটনে তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা এবং ওই তিন উপদেষ্টা বরাবর চিঠি দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ গাছ রক্ষা আন্দোলন বলেছে, ওই চিঠি দেওয়ার দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এ বিষয়ে কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি। তাই প্রকল্প প্রণয়নে দুর্নীতি ও অনিয়ম হয়েছে কি না, প্রকল্পটি জনস্বার্থ বিরোধী কি না, প্রকল্পের কারণে স্থানীয় পরিবেশ গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে কি না, নগরের যানজট বাড়বে কি না এবং ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ উদ্যানটি রক্ষায় অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেছে কি না—এসব বিষয়ে জানতে একটি উন্মুক্ত গণশুনানি আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শুনানিতে অংশ নিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি ও কর্মকর্তাদের চিঠি দিয়ে আহ্বান জানানো হবে।
আরও পড়ুনপান্থকুঞ্জ রক্ষায় প্রধান উপদেষ্টাকে গাছ রক্ষা আন্দোলনের চিঠি০৫ মে ২০২৫এ ছাড়া গণশুনানিতে বিচারক হিসেবে অর্থনীতিবিদ, পরিবেশবিদ, আইনবিশেষজ্ঞ, পরিকল্পনাবিদ, স্থপতি, সমাজবিজ্ঞানী ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন। স্থানীয় মানুষ ও সর্বস্তরের জনগণের অংশগ্রহণ ও বিশেষজ্ঞ মতামতের ভিত্তিতে গণশুনানিতে প্রকাশ্য রায় ও সব পক্ষের করণীয় প্রস্তাব করা হবে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
গাছ রক্ষা আন্দোলনের জরুরি সভায় আন্দোলনের সমন্বয়ক আমিরুল রাজিব, নাঈম উল হাসানসহ সদস্য সৈয়দ মুহাম্মদ জাকির, ওয়ালিদ সাদ্দাম, শাহ নেওয়াজ সৈকত, আহাদুল সিরাজ, সংবিধান সংস্কার কমিশনের সদস্য ফিরোজ আহমেদ, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের সামিনা লুৎফা, আইনজীবী ও নীতি বিশ্লেষক সৈয়দ মাহবুবুল আলম, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী নিশাত মাহমুদ এবং বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সভাপতি আদিল মুহাম্মদ খান উপস্থিত ছিলেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প র ক রক ষ য় ন উপদ ষ ট গ ছ রক ষ প রকল প গণশ ন ন সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
আবু সাঈদ, মুগ্ধ বা ওয়াসিমরা রক্ত দিয়েছে শুধু স্থানীয় নির্বাচনের জন্য না: জাহিদ হোসেন
মানুষ গত চারটি টার্ম গেল ভোট দিতে পারেনি। জনগণ তাদের অধিকার চায়, জনগণ তার ভোটাধিকার চায়, জনগণ তার গণতন্ত্র ফেরত চায়। সে জন্যই ছিল ১৭ বছরের আন্দোলন, যার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছিল ৫ আগস্ট। আবু সাঈদ, মুগ্ধ বা ওয়াসিমরা রক্ত দিয়েছে বা আমাদের চৌধুরী আলম অথবা ইলিয়াস আলীরা হারিয়ে গেছেন শুধু স্থানীয় নির্বাচনের জন্য না, দেশের মানুষের গণতন্ত্র ফেরত দেওয়ার জন্য। সেই রক্তের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ থাকতে হবে।
আজ রোববার বেলা সাড়ে তিনটায় দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে বিএনপির উপজেলা ও পৌর শাখার উদ্যোগে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন হাকিমপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ফেরদৌস রহমান।
জাহিদ হোসেন তাঁর বক্তব্য বলেন, ‘আজকে যারা বিএনপির সমালোচনা করেন তাঁদের বলব, সমালোচনা না করে ঐক্যবদ্ধ হোন। কারণ, ঐক্যবদ্ধ জাতি ২০২৪ সালে ৫ আগস্ট তৈরি করতে পেরেছিল। যদি অনৈক্য হয়, তাহলে মনে রাখবেন ওই লুটেরার দল ওরা কিন্তু ভেগে গেছে মাত্র দুই-চার-দশজন। কিন্তু ওরা আপনার আশপাশেই আছে। কাজেই স্বৈরাচারের দোসরদের পথ বা ছিদ্রি দিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবেন না। আজকে যারা জাতীয় নির্বাচনকে দূরে ঠেলে স্থানীয় নির্বাচনের কথা বলেন, তাঁরা কিসের কথা বলেন। আপনি কি চান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও অবনতি হোক।’
জাহিদ হোসেন বলেন, ‘বিএনপি ভবিষ্যৎমুখী রাজনৈতিক দল। আমাদের নেতা তারেক রহমান উনি কত সুদূরপ্রসারী চিন্তা করেছেন। দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান উনি ১৯ দফা কর্মসূচি দিয়েছিলেন। দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ডালভাত কর্মসূচি দিয়েছিলেন। সর্বোপরি ভিশন ২০৩০। তারেক রহমান ওনাদের যোগ্য সন্তান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।’
সংস্কার প্রসঙ্গে জাহিদ হোসেন বলেন, আজকে সংস্কার নিয়ে অনেকে অনেক কথাই বলে। কেউ কেউ একটু বলার চেষ্টা করে। বিএনপি নাকি সংস্কারে বিশ্বাস করে না। আরে বাবারা যারা আপনারা কথা বলেন, আপনারা কি ভুলে গেছেন বিএনপি তো সেই দল, আপনারা যখন একদলীয় শাসনব্যবস্থায় আটকে গিয়েছিলেন, তখন কিন্তু বিএনপি বহুদলীয় গণতন্ত্র ফেরত দিয়েছিল। সেটি মনে থাকার কথা, শহীদ জিয়ার নেতৃত্বে। যখন আপনারা চারটি পত্রিকায় আটকে গিয়েছিলেন, তখন কিন্তু বিএনপি সংস্কারের মাধ্যমে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা উন্মুক্ত করে দিয়েছিল। যখন এই দেশে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ছিল, এই বিএনপি বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে তখন কিন্তু সংসদীয় গণতন্ত্র দিয়ে সংস্কার করেছিল। ১৯৭৪–এর কালাকানুন কে সরিয়েছে, বিএনপির নেতৃত্বে বেগম খালেদা জিয়া সরিয়েছেন।
জাহিদ হোসেন আরও বলেন, ‘শহীদের এই জুলাই মাসে দাঁড়িয়ে অহেতুক অনৈক্য সৃষ্টি করবেন না। ঐক্যবদ্ধ জাতি পারে বাংলাদেশকে আগামীর ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যেতে। অনৈক্য কোনো অবস্থাতেই আপনাকে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ উপহার দেবে না। বরং বিশৃঙ্খলা উপহার দিতে পারে। কাজেই সবাইকে বলব, দায়িত্বশীল আচরণ করুন। কথাবার্তা বলার সময় আয়নায় চেহারা দেখুন। অতীত থেকে শিক্ষা নিন, ভবিষ্যৎমুখী রাজনীতি করেন এবং জাতীয়তাবাদী দলের নেতা তারেক রহমানের নেতৃত্বে আজকে বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য ঐক্যবদ্ধ। যেকোনো ষড়যন্ত্র মোকাবিলার জন্য জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপি সব সময়ই প্রস্তুত। আগামী দিনে মানুষকে, জাতিকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য বিএনপি সামনের দিকে এগিয়ে যাবে ইনশা আল্লাহ।’
অনুষ্ঠানে উপজেলা বিএনপির উপদেষ্টা আকরাম হোসেন মণ্ডল, সাধারণ সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন শিল্পী, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজা আহমেদ, পৌর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফরিদ খান, পৌর বিএনপির সভাপতি ফরিদ খান, সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।